হার বাড়ছে, মান বাড়ছে কি? by মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার

রেকর্ডসংখ্যক পাসের মধ্য দিয়ে মে মাসের ১৭ তারিখে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে এত বেশিসংখ্যক ছাত্রছাত্রী এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেনি। পায়নি এত বেশিসংখ্যক জিপিএ-৫ বা গোল্ডেন জিপিএ। শিক্ষাঙ্গনের ধস যে ক্রমান্বয়ে গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে, তা ঘন ঘন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং অতি আকর্ষণীয় পরীক্ষার ফলাফল দেখে নাগরিক মনে স্পষ্ট হয়েছে। একেকটি পাবলিক পরীক্ষার ফল বের হচ্ছে, আর সবাই চমকে উঠছেন। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে একই রকম বিস্ময়- ওরে বাবা, এত ভালো ফলাফল! এত পাস! এত জিপিএ-৫! এত গোল্ডেন জিপিএ! অসতর্ক নাগরিকরা ভাবছেন, হয়তো আমাদের শিক্ষার মান বাড়ছে। হয়তো আমাদের ছেলেমেয়েরা আগের চেয়ে আরও বেশি লেখাপড়ায় মনোযোগী হচ্ছেন। হয়তো স্কুল-কলেজে লেখাপড়ার পরিবেশ ক্রমান্বয়ে উন্নততর হচ্ছে বলেই ছেলেমেয়েরা এত ভালো ফলাফল করছে।

সাধারণ নাগরিকদের এমন ভাবনা সত্য হলে তা হতো খুবই খুশির বিষয়। কিন্তু সুশীল সমাজ এমন আকর্ষণীয় ফলাফল দেখে খুশি না হয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তারা যখন দেখছেন, ক্লাসের যেসব ছাত্রছাত্রী স্কুলের পরীক্ষায় ভালো করতে পারত না, জিপিএ-৩, বা ৪ পাওয়ার জন্য চেষ্টারত ছিল, এমন ছাত্রছাত্রীরা বোর্ডের পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ পেয়ে বসে আছে, তখন তো তারা চিন্তিত হবেনই। অনেক ছাত্রছাত্রী পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো না হওয়ায় পরের বার পরীক্ষা দেবে কি-না এমন ভাবতে ভাবতে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
যেমন পাসের হার বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা। এসএসসির সার্বিক পাসের হার শতকরা ৯১.৩৪ ভাগ। এর মধ্যে কয়েকটি শিক্ষা বোর্ডে আবার শতকরা ৯৩-৯৪ ভাগেরও বেশি ছাত্রছাত্রী পাস করেছে। সারা দেশে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৭৬ জন ছাত্রছাত্রী জিপিএ-৫ পাওয়ায় প্রকৃত মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মন খারাপ। তারা বলছে, যেসব ছাত্র ক্লাসে ভালো ছিল না, তারাও জিপিএ-৫ পাওয়ায় জিপিএ-৫-এর ওজন কমে গেছে। সরকার ও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এরকম ভালো ফলাফলের পেছনে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কৃতিত্ব, সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতির বাস্তবায়ন, শিক্ষাদান পদ্ধতিতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, শিক্ষক প্রশিক্ষণে গুরুত্বারোপ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কঠিন বিষয়গুলোতে বিশেষ যত্ন নিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ নাগরিক ও অভিভাবকদের অনুসন্ধানে পরীক্ষার ফলাফল অতি ভালো হওয়ার পেছনে এসব কারণ ছাড়াও কিছু নেতিবাচক কারণ ধরা পড়েছে। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে- পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে পরীক্ষার্থীদের হাতে চলে যাওয়া, পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর বলে দেয়া এবং পরীক্ষকদের পরীক্ষার উত্তরপত্র উদারভাবে দেখার নির্দেশনা প্রদান করার অভিযোগ। আমাদের স্কুল-কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষকরাও হয়তো নির্দেশ পালনে উদার। তাদের যদি বলা হয় ৩০ পেলে সেক্ষেত্রে ৩৩ দিয়ে পাস করিয়ে দিতে, তাহলে দেখা যাবে তিনি হয়তো মন্ত্রণালয়ের মনোভাব বুঝতে পেরে ২৩ পেলেও তাকে ৩৩ দিয়ে পাস করিয়ে দিচ্ছেন। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে অনেক ন্যায়-নীতিপরায়ণ সম্মানিত শিক্ষক এখন বোর্ডের খাতা দেখা ছেড়ে দিচ্ছেন। কারণ যেভাবে খাতায় মার্কিং করতে মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে, তাতে পাস করার যোগ্যতা না থাকলেও অনেক পরীক্ষার্থী ভালোভাবে পাস করে যাচ্ছে। আর সঠিকভাবে খাতায় নম্বর দিলে সেই পরীক্ষককে ডেকে পাঠানো হচ্ছে এবং তাকে উদারভাবে খাতায় নম্বর দিতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ন্যায়-নীতিপরায়ণ শিক্ষকরা খাতা দেখতে গিয়ে মর্মপীড়ায় ভুগছেন। অনেকে নিজেদের দোষী ভাবছেন। এ কারণেই অনেক শিক্ষক আর খাতা দেখছেন না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকার পাসের উচ্চহারে খুব খুশি বলে তাদের বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রতীয়মান হয়। সেখানে পরিসংখ্যান উল্লেখ করে অতীতের চেয়ে এবার ফলাফল আরও ভালো হয়েছে- এমন কৃতিত্ব দাবি করা হয়। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের মান বাড়ছে কি-না সে বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কখনও পরীক্ষা করে দেখা হয় না। অনেক উন্নত দেশে ছাত্রছাত্রীদের অর্জিত ডিগ্রি অনুযায়ী তারা প্রত্যাশিত মান অর্জন করত পারছে কি-না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। সেখানে কোনো ঘাটতি লক্ষ্য করা গেলে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার মানের সে ঘাটতি পূরণে নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেবল পাসের এবং জিপিএ-৫-এর সংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়ে মাতামাতি করছে; পাস করা ছাত্রছাত্রীদের মান নিয়ে মোটেও মাথা ঘামাচ্ছে না। ফলে ছাত্রছাত্রীরা পাস করার পর কোনো রকমভাবে একটি সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়তো গ্রাজুয়েশনও করছে। তখনও হয়তো তার ফলাফল আকর্ষণীয় হচ্ছে। কিন্তু এরা পাস করার পর আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় শামিল হলে সুবিধা করতে পারছেন না। আমাদের এই আকর্ষণীয় ফলাফলধারী গ্রাজুয়েটরা যখন আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে অন্য দেশের গ্রাজুয়েটদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হচ্ছেন, তখন তারা তাদের লেখাপড়ার মান এবং আকর্ষণীয় ফলাফলের দৌড় বুঝতে পারছেন। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অনেক ক্ষেত্রে আমাদের গ্রাজুয়েটদের মান যাচাই করার পর যখন তাদের সরি বলে বিদায় করে বলছেন, তোমার পরীক্ষার ফলাফল খুবই আকর্ষণীয় হলেও আমরা তোমাকে নির্বাচিত করতে পারলাম না বলে দুঃখিত; তখন এসব যুবক ভালো রেজাল্টের জারিজুরি বুঝতে সক্ষম হচ্ছেন।
প্রশ্ন হল, স্কুল-কলেজ থেকে মানসম্মত ছাত্রছাত্রী না এলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভালো ছাত্র পাবে কেমন করে? আর বিশ্ববিদ্যালয় যদি ভালো ছাত্রছাত্রী না পায়, তাহলে সেখান থেকে ভালো গ্রাজুয়েট বের হবে কীভাবে? আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাসম্পন্ন গ্রাজুয়েট তৈরি না করতে পারলে দেশ পরিচালনার ভার পড়বে অমেধাবীদের হাতে। আর এসব অমেধাবী অথচ আকর্ষণীয় ফলাফলধারী যুবক চাকরি বাজারে সুবিধা করতে না পেরে দেশের বেকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। উল্লেখ্য, এসব তথাকথিত উচ্চশিক্ষিতরা না পারেন সাধারণ কাজকর্ম করতে, না পারেন উচ্চতর পদে চাকরি জোগাড় করতে। ফলে এরা চরম হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে সমাজের বোঝা হয়ে পড়েন এবং তাদের অনেকে অনৈতিক পথে চলে যান, যা দেশ ও সমাজের জন্য মারাÍক পরিণতি বয়ে আনে। সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় আশাতীত ভালো ফলাফল দেখিয়ে সরকার কৃতিত্ব নিতে চাইলেও এতে শিক্ষার্থীদের মান নিুগামী হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সার্বিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্কুল-কলেজ পর্যায়ের এ ধরনের তথাকথিত ভালো ফলাফলে দেশের সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীরা চিন্তিত হয়ে পড়লেও খুশি হচ্ছেন মিষ্টির দোকানদার এবং মুনাফালোভী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকরা। পরীক্ষায় একরকম প্রায় সবাই পাস করায় ফলাফল বের হওয়ার পর কয়েকদিন মিষ্টির ব্যবসা ভালো হয়। আর যে অখ্যাত ছাত্র-বুভুক্ষু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যলয়গুলো একসময় নানা রকম আকর্ষণীয় অফার (টিউশন ফি ওয়েভার, ভর্তি হলেই ফ্রি ল্যাপটপ ইত্যাদি) দিয়ে ছাত্র ধরার চেষ্টা করত, তাদের এখন আর ছাত্র পেতে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে না। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চুটিয়ে ব্যবসা করে প্রচুর মুনাফা করতে পারবে। হাতেগোনা দু-তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিলে বাকি বেসরকারি বিশ্ববিদালয়গুলো থেকে যেসব ছাত্রছাত্রী পাস করে বের হচ্ছে, তাদের মান যাচাইয়ের ব্যবস্থা থাকলে বোঝা যেত এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রত্যাশিত মানসম্পন্ন গ্রাজুয়েট বের করছে নাকি আর্থিক মুনাফা অর্জনের বিনিময়ে সনদপত্রের ব্যবসা করছে।
এ ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো দেখভাল আছে বলে মনে হয় না। উচ্চশিক্ষার মান ও শৃংখলা দেখভালের জন্য দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি একটি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়ার শৃংখলা ও মান দেখভালের ক্ষেত্রে ইউজিসি মোটেও প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দলীয় রাজনীতির প্রবণতা কমিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ও একাডেমিক কর্মতৎপরতা বৃদ্ধির জন্য ইউজিসির উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় একাডেমিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক দুর্নীতি ব্যাপকতা পেলেও ওইসব ক্ষেত্রে শৃংখলা প্রতিষ্ঠায় ইউজিসির ভূমিকা একেবারেই অনুল্লেখযোগ্য। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় রকমের অনিয়ম গণমাধ্যমে নগ্নভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়লে ইউজিসি তদন্ত কমিটি করে তা অনেক ক্ষেত্রে খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা করে। কিন্তু ওইসব তদন্ত প্রতিবেদনে যাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করতে না পারায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দুর্নীতিচর্চা নিরুৎসাহিত হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের মান বাড়াতে ইউজিসি উল্লেখযোগ্য অবদান না রাখতে পারলেও প্রতিষ্ঠানটির সম্মানিত চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা তাদের নিজেদের মান উন্নয়নে যথেষ্ট সচেতন। যতদূর জানা যায়, ইউজিসি এখন উচ্চশিক্ষা কমিশন নাম নিয়ে বর্ধিত ক্ষমতা ও কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছে। এতে ইউজিসির চেয়ারম্যান মহোদয় নাকি পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা ভোগ করবেন এবং এর সম্মানিত সদস্যদেরও নাকি ক্ষমতা ও মর্যাদা বাড়বে। এর ফলে সরকারি দল সমর্থিত শিক্ষকদের মধ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান-মেম্বার হওয়ার প্রতিযোগিতা নিঃসন্দেহে অধিকতর তীব্র হবে। তবে ইউজিসির নাম পরিবর্তন হলে বা এর চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ক্ষমতা ও কার্যক্রম বৃদ্ধি পেলে দেশের সাধারণ মানুষের কিছুই এসে যায় না। নাগরিকরা চান, ইউজিসি প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে একাডেমিক ক্যালেন্ডার চালু করুক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতির লেজুড়বৃত্তি থেকে বের করে একাডেমিক চর্চায় মনোযোগী করে তুলুক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠন, শিক্ষক ও গবেষণা এমন মানের হোক যেন বিশ্বব্যাপী ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যে র‌্যাংকিং তৈরি করা হয়, সে র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুঁজতে গেলে শক্তিশালী দূরবীনের প্রয়োজন না হয়।
সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে মনে রাখতে হবে, এসএসসি ও এইচএসসিতে আমাদের ছেলেমেয়েরা যদি প্রত্যাশিত মান অর্জন করার পর শতকরা ৯০-৯৫ ভাগ পাস করে, তাহলে দেশবাসীর তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাফল্য দেখানোর জন্য উদারভাবে নম্বর দেয়ায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন না করে ছাত্রছাত্রীরা যদি শতকরা ১০০ ভাগও পাস করে, তাতে নাগরিক সম্প্রদায়ের আপত্তি আছে। সরকারকে মনে রাখতে হবে, ফাঁসকৃত প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে শতকরা ১০০ ভাগ ছাত্রছাত্রী গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার চেয়ে প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তারা যদি প্রত্যাশিত মান অর্জন করে শতকরা ৫ ভাগ গোল্ডেন জিপিএ বা ১৫ ভাগ জিপিএ-৫ পায় তবে সে ফলাফলটিই অধিক গ্রহণীয়।
দেশবাসী ছাত্রছাত্রীদের পাসের সংখ্যা বৃদ্ধি চান না, তারা তাদের মান বৃদ্ধি দেখতে চান। কোনো অভিভাবকই চান না তার সন্তান জ্ঞান-গরিমায় অজ্ঞ ও অন্তঃসারশূন্য হয়ে পরীক্ষায় আকর্ষণীয় ফলাফল করে পাস করুক। বরং অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতি বিনীত অনুরোধ, দয়া করে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের পাসের সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে মনোযোগ না দিয়ে তাদের মান বৃদ্ধির দিকে মনোযোগী হন। কারণ আমরা চাই না আমাদের ছাত্রছাত্রীরা প্রকৃত মান অর্জন না করে পরীক্ষায় আকর্ষণীয় ফলাফল করে প্রতিযোগিতামূলক আন্তর্জাতিক চাকরি বাজারে পিছিয়ে পড়ুক। আমরা মানসম্পন্ন গ্রাজুয়েট চাই; মানের দিক দিয়ে অন্তঃসারশূন্য আকর্ষণীয় ফলাফলধারী গ্রাজুয়েট চাই না।
ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার : অধ্যাপক, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
akhtermy@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.