মেধাকেই প্রাধান্য দিতে হবে by মাহবুবুল হুদা জামেদ

সরকারি চাকরিজীবী, নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। হঠাৎ করে কোটা পদ্ধতি বাতিল করা ঠিক হবে না। আর মুক্তিযোদ্ধা কোটা অবশ্যই রাখা প্রয়োজন। কারণ মুক্তিযোদ্ধারা এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের প্রতি রাষ্ট্রের কিছু করণীয় আছে। তবে কোটা পদ্ধতিতে কিছুটা সংস্কার করা যেতে পারে। বিভিন্ন কোটার শতকরা হার কিছুটা কমিয়ে এনে তা মেধাবীদের জন্য সমন্বয় করা যেতে পারে।
মোঃ আবদুল হালিম
যাত্রাবাড়ী, ঢাকা, ছাত্র
সরকারের চাকরিতে কোটা পদ্ধতি থাকার কারণে লাখ লাখ মেধাবী প্রার্থীর জীবন আজ ধ্বংস হচ্ছে। আবার কোটা পদ্ধতির সুযোগে মেধাবীর পরিবর্তে সরকার সমর্থক অযোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছে। এ কারণে দেশ আজ ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। তাই দেশ ও মেধাবী ছাত্রদের বাঁচাতে হলে কোটা পদ্ধতি অবশ্যই বাতিল করতে হবে।
গোলাম ইসা হোসাইন
চাকরি প্রত্যাশী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
আমি সরকারের এই কোটা পদ্ধতি সমর্থন করি না। কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে মেধাবী প্রার্থীদের চাকরির ব্যবস্থা করলে তাতে দেশ ও দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
নাঈম হাসান
লালমাটিয়া, চাকরি
কোটা পদ্ধতির কারণে মেধাবীরা চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত হয়। দেশ বঞ্চিত হয় মেধাবীদের সেবা থেকে, তাই আমি কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার জন্য জোর দাবি করছি।
আবদুল জব্বার
বরিশাল, চাকরি
কোটা পদ্ধতির ফলে মেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে না। আমি কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই।
সুমন আহমেদ
চট্টগ্রাম, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার
কোটা পদ্ধতির কারণে যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীরা সরকারি চাকরি থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে তাই কোটা পদ্ধতি না থাকাই উচিত। মেধাবীদের দেশের কাজে সুযোগ দেয়া প্রয়োজন।
ডা. নাদিরা জলিল
বিডিবিএল, ঢাকা, চাকরি
কোটা পদ্ধতি বাতিল করে সরকারি চাকরিতে মেধাবীদের পদায়ন করা জরুরি। কোটা পদ্ধতির সুবিধায় সরকারি চাকরিতে অমেধাবী, কমমেধাবী সর্বোপরি মেধাহীন লোকজন ঢুকে পড়ছে।
প্রমোশন পেয়ে পেয়ে তারা উচ্চপদস্থও হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কার্যক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা নিতে পারছেন না। প্রশাসন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চললে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। কোটা পদ্ধতি তুলে নিলে যোগ্য প্রার্থীরাই চাকরির সুযোগ পাবেন এবং দেশ রক্ষা পাবে।
আমীরুল
ময়মনসিহ, চাকরি
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বহাল রাখা হোক। যেহেতু আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আমি চাই কোটা পদ্ধতি থাকুক।
হাসান কারার
কিশোরগঞ্জ, ছাত্র
কোটা পদ্ধতি বাতিল করুন। মেধাবীদের সুযোগ দিন।
নূর উন নবী অনতু
ভোলা, ছাত্র
কোটা পদ্ধতি তুলে নেয়ার সাম্প্রতিক যে আন্দোলন তাতে জামায়াত-শিবিরের লোকজনের আধিপত্য দেখা যাচ্ছে, যারা মূলত কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রয়াস পাচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা পাকিস্তান আমলের এনএসএফের সব পেটোয়া বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যা নিন্দার্হ।
কোটা পদ্ধতির ওপর সংসদীয় বিতর্ক এবং সিদ্ধান্ত কাম্য। বিষয়টি যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ সেহেতু রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত আসা প্রয়োজন। তবে কোটা ১০ শতাংশের বেশি থাকা উচিত নয় বলেই আমি মনে করি।
সাজ্জাদ হোসেন
মাদারীপুর, সমাজকর্মী
অতীতের ইংরেজি শিখবো না শিখাবো না নীতি আর বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা জাতির মেধাশূন্যতার জন্য যথেষ্ট। চরমুগুরিয়ার একজন শিক্ষক আমাকে বলেন, এখন নকল করার প্রয়োজন হয় না। কুইজ টাইপের প্রশ্নের জন্য। তাই আÍঘাতী কোটা পদ্ধতি নিয়ে দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই।
কাউসার আহমেদ
কুমিল্লা, শিক্ষকতা
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের জন্য কোটা পদ্ধতি অবশ্যই বাতিল করতে হবে। কেননা কোটা পদ্ধতির কারণে সরকার সমর্থকরাই চাকরি পাচ্ছে। অপরদিকে লাখ লাখ মেধাবী প্রার্থী যোগ্যতা সত্ত্বেও চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
শফিউল্লাহ
কুমিল্লা, শিক্ষক
কোটা পদ্ধতি বাতিলের পক্ষে আমি। কোটা পদ্ধতির সুযোগে প্রশাসনে মেধাহীন লোক ঢুকে পড়ছে। দেশ মেধাশূন্যতায় পড়ছে। কোটা পদ্ধতি বাতিল হলে মেধাবীরা মূল্যায়িত হবে, দেশ উপকৃত হবে।
মোঃ বাছির চৌধুরী
কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আমরা চাই কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হোক। তাতে মেধাবীরা অগ্রাধিকার পাবেন। কোটার কারণে মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তারা উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পাচ্ছে না। ফলে জাতির মেধার অপচয় ঘটছে। জাতি মেধাশূন্যতায় ভুগছে।
মোঃ ফারুক আহমেদ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাকরি
কোটা প্রথা আমরা সমর্থন কখনোই করিনি। যদিও আমি চাকরিরত। বর্তমান সরকারের প্রতি অনুরোধ তারা যেন তাদের শেষ সময়ে কোটা প্রথা বাতিল করে মেধাবীদের মূল্যায়ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইন
ব্যাংকার, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
সরকারি চাকরিতে দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতিকে আমি সমর্থন করি। কিন্তু বর্তমানে বিসিএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে যে অনুপাতে কোটা সংরক্ষিত হচ্ছে, তা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। বিসিএস পরীক্ষাকে পুরোপুরি কোটামুক্ত করে অন্যান্য ক্ষেত্রে যৌক্তিক সংখ্যায় (সর্বোচ্চ ২০%) কোটা সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
মোঃ সালাহ উদ্দিন
ব্যবসায়ী, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ
আমি কোটা পদ্ধতি বাতিল করার পক্ষে। কোটা পদ্ধতি থাকলে মেধার সঠিক মূল্যায়ন হবে না। এতে দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে।
মোঃ আজহারুল ইসলাম
চাকরিজীবী, মহাখালী, ঢাকা
সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ কোটা পদ্ধতি বাতিল করুন। দ্বিতীয় কথা চাকরিতে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। কাজেই চাকরিতে প্রবেশের সীমা সর্বোচ্চ ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর করা উচিত।
মোঃ হুমায়ূন কবীর ইনু
ব্যবসায়ী, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ
কোটা পদ্ধতি সম্পূর্ণরূপে তুলে দেয়া উচিত। এ পদ্ধতি বহাল থাকলে প্রকৃত মেধাবীদের মূল্যায়ন হবে না। সবার জন্য সমান সুযোগ থাকা উচিত।
মকুল চন্দ্র ছাত্র, ফার্মগেট, ঢাকা
কোটা সম্পূর্ণরূপে উঠিয়ে দেয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, আমাদের অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করতে ২৭-২৮ বছর চলে যায়। সরকার সরকারি চাকরিজীবীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা দুই বছর বৃদ্ধি করেছে। অনুরূপভাবে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমাও ৩০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩২ বছর করা উচিত।
এম আবদুল জলিল তালুকদার
পরিচালক, ঝালকাঠি চেম্বার অ্যান্ড কমার্স ইন্ড্রাস্টি
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি থাকার প্রয়োজন মনে করি না। মেধা অনুযায়ী প্রার্থীদের নিয়োগ দেয়া উচিত। তা না হলে মেধাবী প্রার্থীরা চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত হবে। মেধাবীরাই যোগ্য ব্যক্তি আমি মনে করি। অবশ্যই সরকারের উচিত এক্ষেত্রে সুদৃষ্টি রাখা।
আলভি
ব্যাংক কর্মকর্তা, মিরপুর, ঢাকা
বর্তমানে সব মিলিয়ে সরকারি চাকরির ৫৬ ভাগ কোটা প্রথার দখলে। বাকি ৪৪ ভাগ পদের জন্য সারাদেশের মেধাবীরা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। আমার জানা মতে, বিশ্বের কোথাও এ ধরনের নিয়ম প্রচলিত নেই। জেলা কোটার ব্যাপারে বলা যায়, সংবিধানে বলা আছে, অনগ্রসর অংশ; এখানে কিন্তু অনগ্রসর বলা হয়নি। কাজেই জেলা কোটা অনুসরণ করা যুক্তিযুক্ত নয়। তারপর নারী কোটার ব্যাপারে বলা যায়, বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমান এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীরা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। তারপরও নারী কোটা অনুসরণ করার যুক্তি কী? উপজাতি কোটা অনুসরণ করার সময় শুধু চাকমাদের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। দেশে তো আরও প্রায় ৪৪-৪৫টি উপজাতি রয়েছে। কোটা প্রথার চাকমাদের প্রাধান্য দেয়ায় অন্যদের অধিকার খর্ব হচ্ছে নাকি? মুক্তিযোদ্ধা কোটার ব্যাপারে আমার বক্তব্য হল- মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তারা নিজে তাদের সম্মানের পর এখন নাতি-পুতিরাও যদি এ সুযোগ ভোগ করতে থাকে তাহলে এদেশে জন্মগ্রহণ করাটাই কি আমাদের অপরাধ? তারা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় অতিরিক্ত বয়সের সুবিধাও পাবে, আবার কোটা সুবিধাও ভোগ করবে এটা তো হতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে সরকার যদি সাহায্য-সহযোগিতা করতে চায় তবে অন্যভাবে করুক। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেধাবীদের বঞ্চিত করে তা করতে হবে কেন?
কোটা যদি দিতে হয় তবে সমাজে অনেক অনগ্রসরমান জনগোষ্ঠী আছে যেমন হিজড়াসহ অন্য প্রতিবন্ধীদের কোটা প্রথার আওতায় আনা যেতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও কোটা থাকতে পরে। আমার বিবেচনায় কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে ১০ শতাংশের বেশি নিয়োগ দেয়ার বিধান কোনোমতেই থাকা উচিত নয়।
মোঃ ফারুক হোসেন
ব্যবসায়ী, কুমিল্লা
সংবিধান অনুযায়ী দেশের নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। সেই অধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়া একান্তই অবশ্য করণীয়। কোটা পদ্ধতির কারণে মেধাবীরা সুযোগ বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের বিপক্ষে আমি।
আমি মনে করি, এই কোটার অপব্যবহার করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা বজায় রাখতেই এটা তুলে দেয়ার সময় হয়েছে।
নূর মোহাম্মদ
চাকরি প্রত্যাশী, চাঁদপুর
মাস্টার্স পরীক্ষা সম্পন্ন করে গত ৩ বছরে আমি চাকরির জন্য ৫০টির অধিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েও কোটা পদ্ধতির কারণে এখনও চাকরির সোনার হরিণটি ধরতে পারিনি। আমার মতো আরও অনেক মেধাবী প্রার্থীও হন্যে হয়ে চাকরির পেছনে ছুটছেন। হয়তো কোটা পদ্ধতি না থাকলে আমার চাকরি এতদিনে হয়ে যেত।
মোঃ আলাউদ্দীন মিয়া
চিফ পারসোনেল অফিসার, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
আমার বিবেচনায় মেধাবী কোটা ৮০ শতাংশ করা দরকার। আর উপজাতীয়দের জন্য ৫ শতাংশ কোটা জনসংখ্যার অনুপাতে রাখা প্রয়োজন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪০ বছর পর পূরণের লোক না পাওয়ায় সরকারি কাজে বিঘœ ঘটছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৫ বা ১০ শতাংশ রাখা যেতে পারে। শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য। নারীদের জন্য ১০ শতাংশ আরও ৫-১০ বছর রাখা যেতে পারে। প্রতিবন্ধী কোটায় কার্যোপযোগী ক্ষেত্রে প্রায়োগিক বিবেচনায় ১ শতাংশ রাখা যেতে পারে। আমি ২৮ বছরের অভিজ্ঞতায় অনেক কোটার ভুল ব্যাখ্যা করে চাকরিতে নিয়োগ করার ঘটনা দেখেছি। তাই মেধাবীদের জন্য ৮০ শতাংশ রেখে বাকিটা কোটাভিত্তিক বণ্টন করা উচিত।
মোঃ আনু মিয়া
কুমিল্লা
আমার সন্তান আজ ৩ বছর ধরে চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে যাচ্ছ। কোটার কারণে চাকরি বঞ্চিত হচ্ছে। আমি চাই কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে প্রকৃত মেধাবী ও যোগ্যদের চাকরি দেয়া হোক।
আবদুল কাইউম ঠাকুর
অতিরিক্ত সচিব, ধানমণ্ডি
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল হওয়া দরকার। কারণ কোটা পদ্ধতির ফলে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় ভালো ফল করা সত্ত্বেও চাকরি পাওয়ার সুযোগ থেকে বাদ পড়ে যায়। এর ফলে মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। যার ফলে মেধা বিকশিত হওয়ার সুযোগ সংকুচিত হয়। সুতরাং কোটা পদ্ধতি বাতিল হওয়া প্রয়োজন। কারণ মেধার এই অবমূল্যায়ন দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
দেলোয়ার হোসেন দেলু
নিউ খানপুর, নারায়ণগঞ্জ
প্রকৃতপক্ষে চাকরির নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কোনো বিকল্প নেই। কোটা প্রথাকে অগ্রাধিকার দেয়ায় প্রকৃত যোগ্য ও মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রশাসনে নিয়োগ পাচ্ছেন অযোগ্য ও কম মেধাবীরা। এটা কোনোমতেই কাক্সিক্ষত নয়। এর প্রভাব পড়ছে প্রশাসনসহ সামগ্রিকভাবে সরকারি কর্মক্ষেত্রে, যার প্রকাশ ঘটছে নানাভাবেই। তাছাড়া এর ফলে ক্যাডার সার্ভিসের প্রতি মেধাবীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এমনও দেখা গেছে, কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে পদ শূন্য থেকে যায়। এর ফলেও মেধাশূন্য হয়ে পড়েছে প্রশাসন। অর্থাৎ কোটার প্রাধান্য রাষ্ট্রের জন্য খারাপ ছাড়া ভালো কোনো ফল বয়ে আনছে না। কাজেই এটা যতটা সম্ভব পরিহার করাই মঙ্গল।
আমরা মনে করি, স্বাধীনতার ৪২ বছর পর বিসিএসের বর্তমান কোটা পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। কারণ কোটা পদ্ধতির লক্ষ্য ছিল সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সামনে এগিয়ে আনা। সেই কাজ করতে গিয়ে মেধাবী পরীক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা যাবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পিএসসি ক্যাডার সার্ভিসে কোটা পদ্ধতির পুনর্বিন্যাসের যে উদ্যোগ নিয়েছিল, তা বাস্তবায়িত হলে পরীক্ষার্থীদের যেমন রাস্তায় নামতে হতো না, তেমনি জনপ্রশাসনের দক্ষতা ও যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতো না। আন্দোলনের নামে রাস্তা বন্ধ কিংবা গাড়ি ভাংচুর করার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদ করতে সমস্যা কোথায়? জনজীবন ব্যাহত হয় এমন কোনো কর্মসূচি নেয়া অনুচিত। যারা রাষ্ট্রের জনপ্রশাসনের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী, তাদের কাছ থেকে দেশবাসী বিশৃংখলা নয়, দায়িত্বশীল আচরণই প্রত্যাশা করে।
মোঃ শামীম বাহার খান
চাকরিজীবী, মনতলা, হবিগঞ্জ
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার নানাভাবে হয়রানি ও অবহেলিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের হাতে। বিগত জোট সরকারের আমলে নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধার কোটা অনুসরণ করা হয়েছে নামে মাত্র।
কোটা পদ্ধতি বাতিল হলে গোটা জাতির জন্য একটা কলংকিত অধ্যায়ের সূচনা হবে এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার, প্রতিবন্ধী, মহিলা ও উপজাতীয়দের প্রতি অন্যায় করা হবে।
আমি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি কোটা অব্যাহত রাখার জন্য।

No comments

Powered by Blogger.