পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহর সঙ্গে অংশীদারিত্বের বিশ্বাস গুরুতর জুলুম
১০৫. ওয়া কাআয়্যিম মিন আ-য়াতিন ফিস
সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি য়ামুর্রূনা 'আলাইহা- ওয়া হুম 'আনহা মু'রিদোন। ১০৬.
ওয়া মা- য়ু'মিনু আকছারুহুম বিল্লাহি ইল্লা ওয়া হুম মুশরিকূন। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ
: ১০৫. আসমান ও জমিনের পরতে পরতে অসংখ্য নিদর্শন রয়েছে, যেগুলোর ওপর দিয়ে
তারা চলাচল করে অথচ তারা এসব থেকেও মুখ ফিরিয়ে রাখে (শিক্ষা গ্রহণ করে
না।)।* ১০৬. তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকই এমন যে তারা আল্লাহর ওপর ইমান রাখলেও
তাঁর সঙ্গে শরিক স্থির করে।*
তাফসির : * এখানে আল্লাহ তায়ালার তাওহিদ তথা একত্ববাদের পক্ষে যুক্তি ও প্রমাণ পেশ করে বলা হয়েছে, তিনি আসমান ও জমিন তথা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছুর স্রষ্টা। চাঁদ, সূর্য ও তারাগুলোর মধ্যে কিছু আছে স্থির, কিছু চলমান এবং চলমান তারাগুলোর জন্য তিনি গতিপথ সৃষ্টি করে রেখেছেন। পৃথিবীকেও তিনি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে রেখেছেন। কোথাও পাহাড়, কোথাও সাগর-নদী, কোথাও ফসলি জমি, কোথাও বন-জঙ্গল, কোথাও আবাসভূমি ইত্যাদি রূপগুলো তাঁরই নির্দেশে অস্তিত্ব লাভ করেছে। ফল, ফুল, খাদ্য, জীব-জন্তু, গাছ-গাছালি সবই তাঁর সৃষ্টি। জীবন ও মৃত্যু দান করাও তাঁরই এখতিয়ারভুক্ত। আল্লাহ তায়ালার গুণগান গেয়ে শেষ করার নয়। এমন মহান স্রষ্টা অবশ্যই এক এবং অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো অংশীদার বা সহযোগী নেই। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি চিরন্তন, চিরজীবী হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ তাঁর এসব গুণ ও ক্ষমতা বিষয়ে চিন্তা-গবেষণা করে না। এসব থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে না। ফলে তারা তাঁর প্রতি ইমানও আনে না। এটি প্রত্যেক মানুষের জন্যও ধ্বংসাত্মক দোষ।
* যেসব মানুষ আল্লাহর প্রতি ইমান এনেছে, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মুশরিক। অর্থাৎ তারা আল্লাহর অস্তিত্ব ও ক্ষমতায় বিশ্বাসী হলেও এককভাবে তা করে না। আল্লাহর সঙ্গে ছায়া আল্লাহ, আল্লাহর স্ত্রী, পুত্র, সহযোগী, পরিবার ইত্যাদি ভুল ধারণা ও মতবাদে বিশ্বাস করে। এগুলোকে ইসলামী পরিভাষায় শিরক বলা হয়। শিরক করলে কোনো ব্যক্তি তখন আর মুমিন থাকে না। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মুশরিকরা আসমান জমিনের স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহকে বিশ্বাস করলেও তাঁর সঙ্গে আরো অনেক কিছুর অংশীদারিত্বে বিশ্বাস করে। সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরিফে উল্লেখ করা হয়েছে, মুশরিকরাও হজ পালন করত। হজের সময়ে তারা তালবিয়ার বাক্য পাঠ শেষে বলত, হে আল্লাহ, তোমার কোনো শরিক নেই। আমরা যাদের তোমার শরিক বলে বিশ্বাস করি, তাদের মালিকও তুমিই। মুসলিম শরিফে উল্লেখ হয়েছে, মুশরিকরা যখন এতটুকু বলত, হে আল্লাহ, আমি তোমার দরবারে হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই- ....এ পর্যন্ত উচ্চারণ করতেই প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.) বলতেন, ব্যস, এখানেই থেমে যাও। কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, 'অবশ্যই শিরক হলো গুরুতর জুলুম।' আল্লাহর সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগিতে অন্য কোনো কিছুর অংশীদারিত্ব বিশ্বাস করা সবচেয়ে বড় শিরক। হাসান বসরি (রহ.) আলোচ্য আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে বলেন, মুনাফিকরাও মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত। যারা কেবল লোক দেখানোর মানসিকতায় ইবাদত-বন্দেগি-নেক আমল করে, তাদের এই লৌকিকতাও শিরক বলে গণ্য হবে।
তাফসিরে ইবনে কাছির অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * এখানে আল্লাহ তায়ালার তাওহিদ তথা একত্ববাদের পক্ষে যুক্তি ও প্রমাণ পেশ করে বলা হয়েছে, তিনি আসমান ও জমিন তথা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছুর স্রষ্টা। চাঁদ, সূর্য ও তারাগুলোর মধ্যে কিছু আছে স্থির, কিছু চলমান এবং চলমান তারাগুলোর জন্য তিনি গতিপথ সৃষ্টি করে রেখেছেন। পৃথিবীকেও তিনি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে রেখেছেন। কোথাও পাহাড়, কোথাও সাগর-নদী, কোথাও ফসলি জমি, কোথাও বন-জঙ্গল, কোথাও আবাসভূমি ইত্যাদি রূপগুলো তাঁরই নির্দেশে অস্তিত্ব লাভ করেছে। ফল, ফুল, খাদ্য, জীব-জন্তু, গাছ-গাছালি সবই তাঁর সৃষ্টি। জীবন ও মৃত্যু দান করাও তাঁরই এখতিয়ারভুক্ত। আল্লাহ তায়ালার গুণগান গেয়ে শেষ করার নয়। এমন মহান স্রষ্টা অবশ্যই এক এবং অদ্বিতীয়, তাঁর কোনো অংশীদার বা সহযোগী নেই। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি চিরন্তন, চিরজীবী হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ তাঁর এসব গুণ ও ক্ষমতা বিষয়ে চিন্তা-গবেষণা করে না। এসব থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে না। ফলে তারা তাঁর প্রতি ইমানও আনে না। এটি প্রত্যেক মানুষের জন্যও ধ্বংসাত্মক দোষ।
* যেসব মানুষ আল্লাহর প্রতি ইমান এনেছে, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মুশরিক। অর্থাৎ তারা আল্লাহর অস্তিত্ব ও ক্ষমতায় বিশ্বাসী হলেও এককভাবে তা করে না। আল্লাহর সঙ্গে ছায়া আল্লাহ, আল্লাহর স্ত্রী, পুত্র, সহযোগী, পরিবার ইত্যাদি ভুল ধারণা ও মতবাদে বিশ্বাস করে। এগুলোকে ইসলামী পরিভাষায় শিরক বলা হয়। শিরক করলে কোনো ব্যক্তি তখন আর মুমিন থাকে না। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মুশরিকরা আসমান জমিনের স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহকে বিশ্বাস করলেও তাঁর সঙ্গে আরো অনেক কিছুর অংশীদারিত্বে বিশ্বাস করে। সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরিফে উল্লেখ করা হয়েছে, মুশরিকরাও হজ পালন করত। হজের সময়ে তারা তালবিয়ার বাক্য পাঠ শেষে বলত, হে আল্লাহ, তোমার কোনো শরিক নেই। আমরা যাদের তোমার শরিক বলে বিশ্বাস করি, তাদের মালিকও তুমিই। মুসলিম শরিফে উল্লেখ হয়েছে, মুশরিকরা যখন এতটুকু বলত, হে আল্লাহ, আমি তোমার দরবারে হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই- ....এ পর্যন্ত উচ্চারণ করতেই প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.) বলতেন, ব্যস, এখানেই থেমে যাও। কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে, 'অবশ্যই শিরক হলো গুরুতর জুলুম।' আল্লাহর সঙ্গে ইবাদত-বন্দেগিতে অন্য কোনো কিছুর অংশীদারিত্ব বিশ্বাস করা সবচেয়ে বড় শিরক। হাসান বসরি (রহ.) আলোচ্য আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে বলেন, মুনাফিকরাও মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত। যারা কেবল লোক দেখানোর মানসিকতায় ইবাদত-বন্দেগি-নেক আমল করে, তাদের এই লৌকিকতাও শিরক বলে গণ্য হবে।
তাফসিরে ইবনে কাছির অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments