জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা আজ শুরু

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে। জেএসসিতে ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৪২২ জন এবং জেডিসিতে তিন লাখ ২৩ হাজার ৬৯১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮ লাখ ৬১ হাজার ১১৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে তিন লাখ ৬৮ হাজার ৩১১। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা চলবে আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত।


এ দুটি পরীক্ষায় এবার ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা এক লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৫ জন বেশি। জেএসসিতে ছেলের সংখ্যা সাত লাখ ১৫ হাজার ২১৪, আর মেয়ের সংখ্যা আট লাখ ২২ হাজার ২০৮ জন। জেডিসিতে ছাত্রের সংখ্যা এক লাখ ৪৬ হাজার ৫৫০, ছাত্রী এক লাখ ৭৭ হাজার ১৪১। মোট ছাত্রের সংখ্যা আট লাখ ৬১ হাজার ৭৬৪ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৯ জন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, 'এবারের পরীক্ষায় মেয়েদের সংখ্যা অভাবনীয় বেশি। ছেলেদের চেয়ে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫৮৫ জন বেশি ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। শিক্ষা খাতে যে মেয়েরা এগিয়ে আসছে, এটা তারই প্রমাণ।' মন্ত্রী আরো বলেন, 'এ অগ্রগতি এমন নয় যে, আজ অর্জন করলাম আর কাল থাকবে না। মেয়েদের এই অগ্রগতির হার বাড়তেই থাকবে।'
দেশে দ্বিতীয়বারের মতো শুরু হতে যাওয়া এই পরীক্ষাকে সামনে রেখে গতকাল সোমবার দুপুরে মন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তিনি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তিন লাখ ৬৮ হাজার ৩১১ জন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া মোট কেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ৮০৪ থেকে দুই হাজার ৯টি অর্থাৎ ২০৫টি কেন্দ্র বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে মোট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩৬০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭ হাজার ৩৬০ হয়েছে। একইভাবে ২০১১ সালে জেএসডি পরীক্ষায় অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর দুই লাখ ৪১ হাজার ৮০১ জন এবং জেডিসিতে ৩২ হাজার ৫৪৮ জন অর্থাৎ মোট দুই লাখ ৭৪ হাজার ৩৪৯ জন অনিয়মিত পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এবার পরীক্ষায় বাংলা দ্বিতীয়পত্র, ইংরেজি প্রথমপত্র, ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র ও গণিত ছাড়া সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে হবে। গতবারের মতো এবারও পরীক্ষায় যারা তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য হবে তাদের ৯ম শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ থাকছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সময়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অবশ্যই পাস করতে হবে। গত বছর যারা এক বিষয় ও দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছিল তারা বিশেষ বিবেচনায় নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে। এবার জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় তাদের ওই অকৃতকার্য বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে কৃতকার্য হতে হবে। নতুবা নবম শ্রেণীর ভর্তি বাতিল হয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মানবিক দিক দেখে অকৃতকার্যদের পাস করিয়ে দেওয়ার উপায় নেই। তিনি বলেন, যোগ্যতা প্রমাণ করেই সবাইকে পাস করতে হবে। এখানে বিকল্প কোনো পদ্ধতি নেই।
মন্ত্রী আরো বলেন, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্র ও মূল্যায়ন পদ্ধতির ফলে সারা দেশে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার মানে যে ভিন্নতা রয়েছে তাতে সমতা আসবে। তিনি বলেন, এ পরীক্ষার ফলে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভীতি কমে যাবে এবং পরীক্ষা পাসের একটি সনদ পেয়ে শিক্ষার্থীরা আরো উৎসাহিত হবে। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন, পরীক্ষা বেড়েছে। কিন্তু জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চালু হওয়ার ফলে পরীক্ষার হার কমেছে। আগে আলাদাভাবে স্কুলের পরীক্ষা ও বৃত্তি পরীক্ষা দিতে হতো। কিন্তু এ পরীক্ষার মাধ্যমে স্কুলের পরীক্ষা দিতে হবে না। সব শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে এবং এ পরীক্ষার মাধ্যমে বৃত্তি পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া এবার পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের বাড়তি সময় ৫ মিনিট বাড়িয়ে ২০ মিনিট করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.