বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য তবে উচ্চাভিলাষী
আগামী ২০১১-১২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘বাস্তবায়নযোগ্য, তবে উচ্চাভিলাষী’ হিসেবে অভিহিত করেছে অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। পাশাপাশি আগামী অর্থবছর উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাতে তারল্য-সংকট এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিপণ্যের দাম বাড়ার চাপ অর্থনীতির প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক এই মতামত দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রধান সঞ্জয় কাঠুরিয়া, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। ভবিষ্যতে এই দাম কমার সম্ভাবনা কম। আমদানিপণ্যের দামও চড়া থাকবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে। এতে দরিদ্র মানুষের ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতিও উচ্চ মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
আগামী বাজেটকে ‘সম্প্রসারণমূলক’ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক বলেছে, জিডিপিতে প্রস্তাবিত বাজেট ব্যয়ের অনুপাত কিছুটা বেড়ে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছর ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে প্রস্তাবিত বাজেট ২৮ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। আবার বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে পাঁচ শতাংশ।
সম্প্রসারণমূলক বাজেটকে টেকসই করতে টাকা কখন, কোথায় ও কীভাবে খরচ হচ্ছে, সেটার ওপর জোর দিতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাকে ‘উচ্চাভিলাষী’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্বব্যাংক। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছে, চলতি অর্থবছর এত ভালো প্রবৃদ্ধির পরের বছর একই হারে অর্জন কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বব্যাংক। বলছে, অতীতে রাজস্ব আদায়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পরের বছর আর সেই তুলনায় উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়নি।
উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে কর প্রশাসন শক্তিশালীকরণের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া কর অবকাশসুবিধা অব্যাহত রাখা, সিমকার্ডে করহার কমানো, করমুক্ত সীমা বৃদ্ধি, সঞ্চয়পত্রের উৎসে করহার কমানোর কারণে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিকে (এডিপি) উচ্চাভিলাষী ও বিশাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিশ্বব্যাংক। বলছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে চলমান প্রকল্প অনেক বেশি। সমাপ্ত প্রকল্প ও নতুন প্রকল্পের মধ্যে ভারসাম্য কম। যে পরিমাণ প্রকল্প শেষ হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এতে করে এডিপিতে অর্থ বরাদ্দ সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক অবশ্য আগামী বাজেটকে বেশ দরিদ্রবান্ধব উল্লেখ করে বলেছে, দারিদ্র্য বিমোচনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫৩ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বলেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপির ৯ দশমিক ২ শতাংশই বা নয় হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ভর্তুকি হিসেবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে ও স্থানীয় বাজারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কী নির্ধারণ করা হয় অর্থাৎ বাজারমূল্য কত হয়, তার ওপর নির্ভর করবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান।
বিশ্বব্যাংক আরও অভিমত দেয়, শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সব মানুষ এখন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ভর্তুকি পায়। এই ভর্তুকি আরও বেশি লক্ষ্যনির্ভর হওয়া উচিত। অর্থাৎ ভর্তুকির সুবিধাভোগী আরও সীমিত করা উচিত। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সিএনজি ও ইউরিয়া সারের দাম আবারও সমন্বয়ের সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনযোগ্য নয় তা বলছি না। তবে জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, ব্যবসায় বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, কৃষিতে আবার বাম্পার ফলনের ওপর করছে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন।’
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, রাজনীতি সমঝোতাপূর্ণ হলে এবং আগামী অর্থবছরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।
সঞ্জয় কাঠুরিয়া বলেন, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব না হলে সরকারের ওপর টাকা ধার করার চাপ সৃষ্টি হবে। অথচ ব্যাংকিং খাতে এখন তারল্য-সংকট রয়েছে। তাই অভ্যন্তরীণ খাত থেকে অর্থ সংগ্রহ কমিয়ে বিদেশি সহায়তা বেশি ব্যবহারের দিকে নজর দিতে।
শেয়ারবাজার সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির তুলনায় শেয়ারবাজারের আকার ছোট। তবে ব্যাংকের বিপুল বিনিয়োগ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী অর্থবছরের বাজেট সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক এই মতামত দিয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রধান সঞ্জয় কাঠুরিয়া, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। ভবিষ্যতে এই দাম কমার সম্ভাবনা কম। আমদানিপণ্যের দামও চড়া থাকবে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, কয়েক মাস ধরে মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের ঘরে রয়েছে। এতে দরিদ্র মানুষের ওপর বেশি প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতিও উচ্চ মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
আগামী বাজেটকে ‘সম্প্রসারণমূলক’ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংক বলেছে, জিডিপিতে প্রস্তাবিত বাজেট ব্যয়ের অনুপাত কিছুটা বেড়ে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ হয়েছে। ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছর ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে প্রস্তাবিত বাজেট ২৮ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। আবার বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে পাঁচ শতাংশ।
সম্প্রসারণমূলক বাজেটকে টেকসই করতে টাকা কখন, কোথায় ও কীভাবে খরচ হচ্ছে, সেটার ওপর জোর দিতে পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাকে ‘উচ্চাভিলাষী’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্বব্যাংক। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছে, চলতি অর্থবছর এত ভালো প্রবৃদ্ধির পরের বছর একই হারে অর্জন কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বব্যাংক। বলছে, অতীতে রাজস্ব আদায়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পরের বছর আর সেই তুলনায় উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়নি।
উল্লেখ্য, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে কর প্রশাসন শক্তিশালীকরণের পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া কর অবকাশসুবিধা অব্যাহত রাখা, সিমকার্ডে করহার কমানো, করমুক্ত সীমা বৃদ্ধি, সঞ্চয়পত্রের উৎসে করহার কমানোর কারণে রাজস্ব আদায়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিকে (এডিপি) উচ্চাভিলাষী ও বিশাল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিশ্বব্যাংক। বলছে, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে চলমান প্রকল্প অনেক বেশি। সমাপ্ত প্রকল্প ও নতুন প্রকল্পের মধ্যে ভারসাম্য কম। যে পরিমাণ প্রকল্প শেষ হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এতে করে এডিপিতে অর্থ বরাদ্দ সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক অবশ্য আগামী বাজেটকে বেশ দরিদ্রবান্ধব উল্লেখ করে বলেছে, দারিদ্র্য বিমোচনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫৩ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বলেছে, আগামী অর্থবছরের জন্য জিডিপির ৯ দশমিক ২ শতাংশই বা নয় হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে ভর্তুকি হিসেবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে ও স্থানীয় বাজারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম কী নির্ধারণ করা হয় অর্থাৎ বাজারমূল্য কত হয়, তার ওপর নির্ভর করবে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর লোকসান।
বিশ্বব্যাংক আরও অভিমত দেয়, শহর ও গ্রাম নির্বিশেষে সব মানুষ এখন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ভর্তুকি পায়। এই ভর্তুকি আরও বেশি লক্ষ্যনির্ভর হওয়া উচিত। অর্থাৎ ভর্তুকির সুবিধাভোগী আরও সীমিত করা উচিত। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সিএনজি ও ইউরিয়া সারের দাম আবারও সমন্বয়ের সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনযোগ্য নয় তা বলছি না। তবে জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি, ব্যবসায় বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, কৃষিতে আবার বাম্পার ফলনের ওপর করছে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন।’
জাহিদ হোসেন আরও বলেন, রাজনীতি সমঝোতাপূর্ণ হলে এবং আগামী অর্থবছরের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব।
সঞ্জয় কাঠুরিয়া বলেন, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব না হলে সরকারের ওপর টাকা ধার করার চাপ সৃষ্টি হবে। অথচ ব্যাংকিং খাতে এখন তারল্য-সংকট রয়েছে। তাই অভ্যন্তরীণ খাত থেকে অর্থ সংগ্রহ কমিয়ে বিদেশি সহায়তা বেশি ব্যবহারের দিকে নজর দিতে।
শেয়ারবাজার সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, অর্থনীতির তুলনায় শেয়ারবাজারের আকার ছোট। তবে ব্যাংকের বিপুল বিনিয়োগ অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে।
No comments