সেই ৫০ মিনিট
বেলা ১১টায় লেনদেন শুরু হওয়ার পরপরই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একটি ব্রোকারেজ হাউসে একজন বিনিয়োগকারী দ্রুত কিছু শেয়ার বিক্রির আদেশ দেন। আরও কয়েকজনও তাঁকে অনুসরণ করেন।
কিন্তু তাঁদের কিছুটা অবাক করে দিয়ে ১৫ মিনিটের মাথায় একজন বিনিয়োগকারী বেশ কিছু শেয়ার কেনেন। ততক্ষণে ডিএসইর সাধারণ মূল্যসূচক ছয় হাজার ৭০০ পয়েন্টের নিচে নেমে গেছে। অথচ বাজারে লেনদেন শুরু হয়েছিল সাত হাজার ১৫৩ পয়েন্ট মূল্যসূচক নিয়ে।
আর তাই অনেকেই মাথায় হাত দিয়ে বসেছেন। আগের দিনের ধসের ধারা যেন সোমবারও চলছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সবগুলো ব্রোকারেজ হাউসে একই দৃশ্য।
পরের ২০ মিনিটে অবশ্য সূচক কমেছে আরও ১০০ পয়েন্ট। এতে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরা যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কী করবেন।
বিপরীতে কোনো কোনো বিনিয়োগকারী শেয়ার কেনার পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। তাঁদের কারও কারও ভেতর একটা চাপা উল্লাসও কাজ করছিল। তবে তা ছিল নিতান্তই ক্ষণস্থায়ী।
১০ মিনিট পর ঘড়ির কাঁটায় যখন দুপুর পৌনে ১২টা (১১.৪৫), তখন মূল্যসূচক সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্টের সামান্য ওপরে এসে ঠেকেছে। এর মধ্যে শেয়ার বেচা ও কেনা দুটোই বেড়ে গেছে অনেকখানি।
ঠিক পাঁচ মিনিট পর লেনদেনসম্পন্নকারী কম্পিউটারের পর্দায় ভেসে উঠল একটি বার্তা। এতে বলা হয়: ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দেশ অনুসারে আজকের (১০ জানুয়ারি) বাজারের লেনদেন স্থগিত করা হলো। পরবর্তী সময়ে ঘোষণা দিয়ে লেনদেন আবার শুরু করা হবে।’ তখন ১১টা ৫০।
ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকজন বিনিয়োগকারী এসইসিকে গালমন্দ শুরু করেন। কারণ, লেনদেন চালু থাকলে শেয়ারের দর আরও পড়ত। এ সুযোগে তাঁরা শেয়ার কিনতেন। কিন্তু এসইসির কারণে তাঁদের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে।
কিন্তু বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীর চোখেমুখে আতঙ্ক ও হতাশা চেপে বসেছে। হাউস থেকে বেরিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা।
লেনদেন অবশ্য ততক্ষণে ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। তবে সবমিলিয়ে আগের দিনের চেয়ে ৬৬০ পয়েন্টের বেশি মূল্যসূচক পড়ে যায়। ডিএসই কর্তৃপক্ষ অবশ্য দিবসের লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত দরপতনের ধারাকে হিসাবে নিয়ে দিন শেষে মূল্যসূচক ছয় হাজার ৪৯৯ পয়েন্টে শেষ করেছে।
No comments