সরকার উদার হোক, মূল কারণ শনাক্ত করুক -বিরোধী দলের সংসদে ফেরা
নতুন বছরের শুরুতে ৪ জানুয়ারি নবম জাতীয় সংসদের চতুর্থ অধিবেশন বসছে। অথচ বিরোধী দলের এতে অংশ নেওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। এমনকি নৈতিক অর্থে বিরোধীদলীয় নেত্রীর সাংসদ পদ খারিজ হয়ে ইতিমধ্যেই ১৭ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না। কারণ, বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারে বলা আছে, টানা ৩০ দিন সংসদ বর্জন করলে সদস্যপদ খারিজের পক্ষে আইন করবে তারা। দেশে সংসদীয় সংস্কৃতি গড়ে না ওঠার কারণে বিএনপিকে অবশ্য এ জন্য সমালোচনারও মুখোমুখি হতে হচ্ছে না। ভ্রান্তি এমনই, বিরোধী দলে থাকলে আর আইন করার দায় বর্তায় না। অথচ বেসরকারি সদস্য বিল হিসেবে এ রকম জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট বিল আনার অনুশীলনই সংসদীয় গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে, বিএনপির প্রতিশ্রুতি ও নিজ দলের বিবেচনায়ও ওই ধরনের সংশোধনী আনতে পারে সরকারি দল। তারা এ যুক্তি মুখেও আনছে না। কারণ, তাহলে তাদের ওপর আইন করার নৈতিক দায়িত্ব বর্তায়। এটা তারা হয়তো করবে না, কিন্তু তাদের তা করা উচিত। এ রকম আইন বাঞ্ছনীয়।
সামনের সারিতে আসন, বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা জোরদার, তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে না দেওয়ার মতো বিষয়ে লাগাতার সংসদ বয়কট একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ এসব বিষয় সুরাহা করলেই বিএনপি সংসদে ফিরবে বলে ধারণা মিলছে। টিপাইমুখ বাঁধ, এশিয়ান হাইওয়ে, জনপ্রশাসন দলীয়করণ ইত্যাদি ইস্যুতে কথা বলা, যথাযথ ভূমিকা রাখার চেষ্টা একান্তভাবে সংসদেই সাজে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বিরোধী দল সংসদ বয়কট করে এসব নিয়ে সংসদে কথা বলার অধিকার চাইছে। এই স্ববিরোধিতা ও আত্মঘাতী অনুশীলনে বাংলাদেশের রাজনীতি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে স্পিকারের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনায় একটি আসন বৃদ্ধি, খালেদা জিয়ার বাড়িতে যাতায়াতে কড়াকড়ি শিথিল ও তাঁর নিরাপত্তা জোরদার—এই তিন দাবি পূরণকে বিএনপি আপাতত গুরুত্ব দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা মনে করি, এটা ন্যূনতম দাবি এবং সরকারি দলের তা পূরণ করা উচিত। বিরোধী দলকে সংসদে ফেরাতে সরকারি দলকে অবশ্যই আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। যদিও আমরা জানি যে বিরোধী দল একবার ফিরলেই তারা সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে সংসদেই থাকবে, তা নিশ্চিত নয়। কিংবা সরকারি দলের আচরণ সুশীল থাকবে, তাও ধরে নেওয়া যায় না।
১৯৯১ সালের পরের নির্বাচিত সংসদগুলো আইন প্রণয়ন এবং আলাপ-আলোচনা করে নীতি প্রণয়নের যে ধারা তৈরি করেছে তা এককথায় সমৃদ্ধ নয়, বরং দীনতায় আকীর্ণ। সংসদ বয়কট, কোরাম-সংকট, মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি নিয়ে স্বয়ং স্পিকারের কটাক্ষ প্রভৃতি ঘটনা প্রমাণ দেয়, যে সংসদকে আমরা চলমান দেখছি তা আসলে নিষ্প্রাণ, অনেক ক্ষেত্রে অন্তঃসারশূন্য। সাংসদ মানেই সংশ্লিষ্ট আসনের সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন রাজনীতিকের উপস্থিতি নয়। দুই দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র শক্তিশালী করার তোড়জোড় নেই। যে পরিবর্তনের আশায় নির্বাচনী আইনে দলগুলোর নির্বাচিত কাউন্সিল আমরা আশা করেছিলাম, তা অকার্যকর রয়ে গেছে। তাই আগামী নির্বাচনেও যে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিরা মনোনয়ন পাবেন, তা নিশ্চিত নয়। মূল সংকট মনোনয়ন-প্রক্রিয়ায়। দলে নেতা যোগ্য আসন পেলে সংসদে আসনসংকট তৈরি হবে না। ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধনীর প্রশ্নটি যতটা না সংসদের জন্য, তার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য। দলের গণতন্ত্রায়ণ আগে, পরে সংসদ। আমরা আপাতত আশা করব, সরকার বিরোধী দলের ওই তিনটি দাবি পূরণের নির্দিষ্ট ঘোষণা দেবে। আর সংসদ জাতীয় জীবনে কতটা কার্যকর, সে বিষয়ে সংসদেই একটি সাধারণ আলোচনায় সরকারি দল উদ্যোগী হবে।
সামনের সারিতে আসন, বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা জোরদার, তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে না দেওয়ার মতো বিষয়ে লাগাতার সংসদ বয়কট একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ এসব বিষয় সুরাহা করলেই বিএনপি সংসদে ফিরবে বলে ধারণা মিলছে। টিপাইমুখ বাঁধ, এশিয়ান হাইওয়ে, জনপ্রশাসন দলীয়করণ ইত্যাদি ইস্যুতে কথা বলা, যথাযথ ভূমিকা রাখার চেষ্টা একান্তভাবে সংসদেই সাজে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, বিরোধী দল সংসদ বয়কট করে এসব নিয়ে সংসদে কথা বলার অধিকার চাইছে। এই স্ববিরোধিতা ও আত্মঘাতী অনুশীলনে বাংলাদেশের রাজনীতি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে স্পিকারের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলোচনায় একটি আসন বৃদ্ধি, খালেদা জিয়ার বাড়িতে যাতায়াতে কড়াকড়ি শিথিল ও তাঁর নিরাপত্তা জোরদার—এই তিন দাবি পূরণকে বিএনপি আপাতত গুরুত্ব দিচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আমরা মনে করি, এটা ন্যূনতম দাবি এবং সরকারি দলের তা পূরণ করা উচিত। বিরোধী দলকে সংসদে ফেরাতে সরকারি দলকে অবশ্যই আন্তরিক উদ্যোগ নিতে হবে। যদিও আমরা জানি যে বিরোধী দল একবার ফিরলেই তারা সংসদের অবশিষ্ট মেয়াদে সংসদেই থাকবে, তা নিশ্চিত নয়। কিংবা সরকারি দলের আচরণ সুশীল থাকবে, তাও ধরে নেওয়া যায় না।
১৯৯১ সালের পরের নির্বাচিত সংসদগুলো আইন প্রণয়ন এবং আলাপ-আলোচনা করে নীতি প্রণয়নের যে ধারা তৈরি করেছে তা এককথায় সমৃদ্ধ নয়, বরং দীনতায় আকীর্ণ। সংসদ বয়কট, কোরাম-সংকট, মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি নিয়ে স্বয়ং স্পিকারের কটাক্ষ প্রভৃতি ঘটনা প্রমাণ দেয়, যে সংসদকে আমরা চলমান দেখছি তা আসলে নিষ্প্রাণ, অনেক ক্ষেত্রে অন্তঃসারশূন্য। সাংসদ মানেই সংশ্লিষ্ট আসনের সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন রাজনীতিকের উপস্থিতি নয়। দুই দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র শক্তিশালী করার তোড়জোড় নেই। যে পরিবর্তনের আশায় নির্বাচনী আইনে দলগুলোর নির্বাচিত কাউন্সিল আমরা আশা করেছিলাম, তা অকার্যকর রয়ে গেছে। তাই আগামী নির্বাচনেও যে জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিরা মনোনয়ন পাবেন, তা নিশ্চিত নয়। মূল সংকট মনোনয়ন-প্রক্রিয়ায়। দলে নেতা যোগ্য আসন পেলে সংসদে আসনসংকট তৈরি হবে না। ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধনীর প্রশ্নটি যতটা না সংসদের জন্য, তার চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য। দলের গণতন্ত্রায়ণ আগে, পরে সংসদ। আমরা আপাতত আশা করব, সরকার বিরোধী দলের ওই তিনটি দাবি পূরণের নির্দিষ্ট ঘোষণা দেবে। আর সংসদ জাতীয় জীবনে কতটা কার্যকর, সে বিষয়ে সংসদেই একটি সাধারণ আলোচনায় সরকারি দল উদ্যোগী হবে।
No comments