সম্মান চেয়ে নেওয়ার জিনিস নয় -পদক by সুমনা শারমীন
১৯৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর ভোরের কাগজ-এর প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছিল ছবিটি। বহু বছর পর পুরোনো পত্রিকার ফাইল খুলে সাদা-কালো ছবিটি দেখলাম। নাকে এসে লাগল পুরোনো নিউজপ্রিন্টের নস্টালজিয়ার ঝাপটা। ছবির নিচের ক্যাপশনে লেখা ছিল—‘গতকাল বেগম রোকেয়া দিবসে রাষ্ট্রীয় রোকেয়া পদক ’৯৬ প্রদান করা হয়।...প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসুস্থ কবি বেগম সুফিয়া কামালকে তাঁর বাসায় গিয়ে পদক পরিয়ে দেন।’
সাংবাদিকতার পাঠ্যপুস্তকে পড়ে এসেছি—‘আজকের সংবাদপত্র কালকের দলিল’। দলিলই বটে, একই দিনে ভোরের কাগজ-এর শেষ পৃষ্ঠার শেষ কলামের খবর—‘বাসায় গিয়ে সুফিয়া কামালকে পদক দিলেন প্রধানমন্ত্রী’; একেই বুঝি বলে শ্রদ্ধা, সম্মান। সংবাদপত্রের সংবাদ ও সুফিয়া কামালের মেয়ে সুলতানা কামালের কাছ থেকে জানলাম, সে বছর বেগম রোকেয়া পদক পান শিক্ষাবিদ নীলিমা ইব্রাহিম এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় কবি সুফিয়া কামাল। সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অসুস্থ কবির পক্ষ থেকে পদক নেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন কবির আরেক মেয়ে সাঈদা কামাল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির মেয়ের হাতে পদক তুলে না দিয়ে সেই অনুষ্ঠানেই ঘোষণা দেন, তিনি নিজে কবির বাসায় গিয়ে পদক দিয়ে আসবেন। সেদিনই বিকেলবেলা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ‘সাঁঝের মায়া’য় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুফিয়া কামালের গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন পদক। খবরের এ পর্যায়ে লেখা আছে, “মায়ের মতন বয়োবৃদ্ধ কবিকে পরম উষ্ণতায় জড়িয়ে ধরে শেখ হাসিনা বললেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন।’ মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে কাঁপা কাঁপা হাত প্রধানমন্ত্রীর মাথায় ছোঁয়ালেন কবি। বললেন—‘আল্লাহ তোমার ভালো করুন’।” রাষ্ট্রীয়ভাবে কাউকে যদি সম্মান দিতে হয়, এর চেয়ে আন্তরিক শ্রদ্ধা আর সম্মানের চিত্র কী-ই বা হতে পারে!
অথচ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় একুশে পদক ২০১০-এর পুরস্কার দেওয়ার জন্য যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে (২৭ সেপ্টেম্বর, দৈনিক ইত্তেফাক-এ প্রকাশিত), তাতে বলা হয়েছে, একুশে পদকের জন্য ‘আবেদন’ করতে হবে! বিজ্ঞপ্তির তিন নম্বর নিয়মটি শুধু তুলে দিলাম, ‘আবেদনকারীকে নির্ধারিত ছক পূরণপূর্বক সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের বিষয়ে প্রমাণপত্র ও আলাদা জীবনবৃত্তান্তসহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।’
একুশে পদক রাষ্ট্রীয় সম্মান। সম্মান কি চেয়ে নেওয়ার জিনিস? সংবাদপত্রের পাতায় প্রায়ই চোখে পড়ে অমুক সংগঠন, তমুক শিল্পীগোষ্ঠী, তমুক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য গুণীজনকে সম্মাননা দিয়েছে। তবে যে ছবিটি ছাপা হয়, তাতে দেখা যায় আয়োজকেরা বসে আছেন চেয়ারে আর বয়োজ্যেষ্ঠ গুণীজনেরা পদক হাতে পেছনে দাঁড়িয়ে। হায় রে সম্মান! এর চেয়ে অসম্মান আর কী হতে পারে!
আমাদের আর আছে কী, আত্মসম্মান ছাড়া? এ ছোট্ট দুঃখী দেশটার যা কিছু অর্জন, এর পেছনে একটিই শক্তি—আত্মসম্মান। বাংলায় কথা বলতে দেবে না! স্বাধীনতা দেবে না! আমাদের পূর্বপুরুষের আত্মসম্মানবোধে লাগল। গানের উক্তিতে-পঙিক্ততে বলি, ‘যদি ভাবো কিনছো আমায় ভুল ভেবেছ।’
আর আজ স্বাধীন দেশে আমরা ভাবছি, যান্ত্রিক উন্নয়ন ঘটাব? একটা পদক দেওয়া দরকার, তাই বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করব? কাজটা সোজা হয়ে যাবে? কিন্তু সত্যিকার আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মানুষ নিজে সম্মান চেয়ে নিতে পারে? প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুরস্কার দেওয়া আর কাউকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া কি একই কথা? অনেক বড় বড় আয়োজনের প্রতিযোগিতা হয় দেশে। শিল্পী, সাংবাদিকেরা এতে অংশগ্রহণও করেন। পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে পান সম্মান। সেটি ভিন্ন প্রক্রিয়া। কিন্তু রাষ্ট্র যখন কাউকে পদক দিয়ে সম্মানিত করবে, তখন তার প্রক্রিয়া নিশ্চয়ই আলাদা হবে। একটি বড় কাজ প্রদানের স্বচ্ছতার প্রক্রিয়া আর রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানের প্রক্রিয়াতেও নিশ্চয়ই ভিন্নতা কাম্য। অসুস্থ ছিলেন বলে ১৯৮৯ সালে সত্যজিত্ রায়কে কলকাতায় এসে তত্কালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে ‘লিজিয়ন অব অনার’ খেতাব দিয়ে গিয়েছিলেন। কাউকে সম্মান দিতে হলে ‘সম্মানই’ দিতে হয়।
এ বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ দেশের প্রথিতযশা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। রামেন্দু মজুমদার বলেছেন, ‘এটা বিস্ময়কর, আমাদের অবাক করেছে।’ নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেছেন, ‘সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের পাশাপাশি কুরুচি ও সৌজন্যবোধের অভাবই প্রকাশ পেয়েছে।’
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল জানিয়েছেন, ‘বিগত বছরে পর পর দুইবার আমাকে রোকেয়া পদকের জন্য আবেদন করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। আমি করিনি। আবেদন করে পুরস্কার নেব কেন?’ তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, আগে বিশিষ্টজনের কাছে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন চাওয়া হতো। এটা ভালো। মনে আছে, সিকান্দার আবু জাফরকে একবার একটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের জন্য মা (সুফিয়া কামাল) মনোনয়ন করে পাঠিয়েছিলেন।’
মনোনয়নের বিষয়টি অবশ্য এবারের বিজ্ঞপ্তিতেও আছে। বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নম্বর নিয়মে আছে, ‘একুশে পদকপ্রাপ্ত সম্মানিত সুধীবৃন্দ এবং দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারি সংস্থা/শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করতে পারবেন।’ ঘুরেফিরে আসি আত্মসম্মানবোধের জায়গায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একুশে পদক দেওয়া হবে একজন সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক, ভাষাবিদ ও ভাষাসংগ্রামী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী সামাজিক ব্যক্তিকে।’ এবার বলুন, আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন কোন কবি নিজের জন্য নির্ধারিত তারিখের মধ্যে একুশে পদকের জন্য আবেদন করবেন? বলবেন, আমি যোগ্য, এ-ই প্রমাণ! আমাকে একুশে পদক দিন! নাকি এ বিজ্ঞপ্তি দেখে তাঁর মনে পড়বে, আরেক আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন বাঙালি কবির কবিতার পঙিক্ত—‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ...’।
সুমনা শারমীন: সাংবাদিক।
সাংবাদিকতার পাঠ্যপুস্তকে পড়ে এসেছি—‘আজকের সংবাদপত্র কালকের দলিল’। দলিলই বটে, একই দিনে ভোরের কাগজ-এর শেষ পৃষ্ঠার শেষ কলামের খবর—‘বাসায় গিয়ে সুফিয়া কামালকে পদক দিলেন প্রধানমন্ত্রী’; একেই বুঝি বলে শ্রদ্ধা, সম্মান। সংবাদপত্রের সংবাদ ও সুফিয়া কামালের মেয়ে সুলতানা কামালের কাছ থেকে জানলাম, সে বছর বেগম রোকেয়া পদক পান শিক্ষাবিদ নীলিমা ইব্রাহিম এবং সর্বজনশ্রদ্ধেয় কবি সুফিয়া কামাল। সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অসুস্থ কবির পক্ষ থেকে পদক নেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন কবির আরেক মেয়ে সাঈদা কামাল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কবির মেয়ের হাতে পদক তুলে না দিয়ে সেই অনুষ্ঠানেই ঘোষণা দেন, তিনি নিজে কবির বাসায় গিয়ে পদক দিয়ে আসবেন। সেদিনই বিকেলবেলা ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ‘সাঁঝের মায়া’য় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুফিয়া কামালের গলায় পরিয়ে দিয়েছিলেন পদক। খবরের এ পর্যায়ে লেখা আছে, “মায়ের মতন বয়োবৃদ্ধ কবিকে পরম উষ্ণতায় জড়িয়ে ধরে শেখ হাসিনা বললেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন।’ মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে কাঁপা কাঁপা হাত প্রধানমন্ত্রীর মাথায় ছোঁয়ালেন কবি। বললেন—‘আল্লাহ তোমার ভালো করুন’।” রাষ্ট্রীয়ভাবে কাউকে যদি সম্মান দিতে হয়, এর চেয়ে আন্তরিক শ্রদ্ধা আর সম্মানের চিত্র কী-ই বা হতে পারে!
অথচ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় একুশে পদক ২০১০-এর পুরস্কার দেওয়ার জন্য যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে (২৭ সেপ্টেম্বর, দৈনিক ইত্তেফাক-এ প্রকাশিত), তাতে বলা হয়েছে, একুশে পদকের জন্য ‘আবেদন’ করতে হবে! বিজ্ঞপ্তির তিন নম্বর নিয়মটি শুধু তুলে দিলাম, ‘আবেদনকারীকে নির্ধারিত ছক পূরণপূর্বক সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের বিষয়ে প্রমাণপত্র ও আলাদা জীবনবৃত্তান্তসহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।’
একুশে পদক রাষ্ট্রীয় সম্মান। সম্মান কি চেয়ে নেওয়ার জিনিস? সংবাদপত্রের পাতায় প্রায়ই চোখে পড়ে অমুক সংগঠন, তমুক শিল্পীগোষ্ঠী, তমুক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য গুণীজনকে সম্মাননা দিয়েছে। তবে যে ছবিটি ছাপা হয়, তাতে দেখা যায় আয়োজকেরা বসে আছেন চেয়ারে আর বয়োজ্যেষ্ঠ গুণীজনেরা পদক হাতে পেছনে দাঁড়িয়ে। হায় রে সম্মান! এর চেয়ে অসম্মান আর কী হতে পারে!
আমাদের আর আছে কী, আত্মসম্মান ছাড়া? এ ছোট্ট দুঃখী দেশটার যা কিছু অর্জন, এর পেছনে একটিই শক্তি—আত্মসম্মান। বাংলায় কথা বলতে দেবে না! স্বাধীনতা দেবে না! আমাদের পূর্বপুরুষের আত্মসম্মানবোধে লাগল। গানের উক্তিতে-পঙিক্ততে বলি, ‘যদি ভাবো কিনছো আমায় ভুল ভেবেছ।’
আর আজ স্বাধীন দেশে আমরা ভাবছি, যান্ত্রিক উন্নয়ন ঘটাব? একটা পদক দেওয়া দরকার, তাই বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করব? কাজটা সোজা হয়ে যাবে? কিন্তু সত্যিকার আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মানুষ নিজে সম্মান চেয়ে নিতে পারে? প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুরস্কার দেওয়া আর কাউকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া কি একই কথা? অনেক বড় বড় আয়োজনের প্রতিযোগিতা হয় দেশে। শিল্পী, সাংবাদিকেরা এতে অংশগ্রহণও করেন। পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে পান সম্মান। সেটি ভিন্ন প্রক্রিয়া। কিন্তু রাষ্ট্র যখন কাউকে পদক দিয়ে সম্মানিত করবে, তখন তার প্রক্রিয়া নিশ্চয়ই আলাদা হবে। একটি বড় কাজ প্রদানের স্বচ্ছতার প্রক্রিয়া আর রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানের প্রক্রিয়াতেও নিশ্চয়ই ভিন্নতা কাম্য। অসুস্থ ছিলেন বলে ১৯৮৯ সালে সত্যজিত্ রায়কে কলকাতায় এসে তত্কালীন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে ‘লিজিয়ন অব অনার’ খেতাব দিয়ে গিয়েছিলেন। কাউকে সম্মান দিতে হলে ‘সম্মানই’ দিতে হয়।
এ বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদ জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ দেশের প্রথিতযশা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। রামেন্দু মজুমদার বলেছেন, ‘এটা বিস্ময়কর, আমাদের অবাক করেছে।’ নাসির উদ্দীন ইউসুফ বলেছেন, ‘সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের পাশাপাশি কুরুচি ও সৌজন্যবোধের অভাবই প্রকাশ পেয়েছে।’
মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল জানিয়েছেন, ‘বিগত বছরে পর পর দুইবার আমাকে রোকেয়া পদকের জন্য আবেদন করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। আমি করিনি। আবেদন করে পুরস্কার নেব কেন?’ তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে, আগে বিশিষ্টজনের কাছে রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন চাওয়া হতো। এটা ভালো। মনে আছে, সিকান্দার আবু জাফরকে একবার একটি রাষ্ট্রীয় পুরস্কারের জন্য মা (সুফিয়া কামাল) মনোনয়ন করে পাঠিয়েছিলেন।’
মনোনয়নের বিষয়টি অবশ্য এবারের বিজ্ঞপ্তিতেও আছে। বিজ্ঞপ্তির ৫ ও ৬ নম্বর নিয়মে আছে, ‘একুশে পদকপ্রাপ্ত সম্মানিত সুধীবৃন্দ এবং দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারি সংস্থা/শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করতে পারবেন।’ ঘুরেফিরে আসি আত্মসম্মানবোধের জায়গায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘একুশে পদক দেওয়া হবে একজন সাহিত্যিক, শিল্পী, সাংবাদিক, ভাষাবিদ ও ভাষাসংগ্রামী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী সামাজিক ব্যক্তিকে।’ এবার বলুন, আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন কোন কবি নিজের জন্য নির্ধারিত তারিখের মধ্যে একুশে পদকের জন্য আবেদন করবেন? বলবেন, আমি যোগ্য, এ-ই প্রমাণ! আমাকে একুশে পদক দিন! নাকি এ বিজ্ঞপ্তি দেখে তাঁর মনে পড়বে, আরেক আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন বাঙালি কবির কবিতার পঙিক্ত—‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ...’।
সুমনা শারমীন: সাংবাদিক।
No comments