প্রতি ৫ মৃত্যুর একটি ডায়েটের কারণে
বিশ্বে
প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর মধ্যে একটি মৃত্যু ঘটছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের
কারণে। ২০১৭ সালে এ কারণে ১ কোটি ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। মেডিকেল
জার্নাল দ্য ল্যানচেটে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, অধিক সুগার, লবণ বা প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস খাওয়ার কারণে
দুনিয়াজুড়ে মানুষ হৃদরোগসহ ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। এর ফলে
স্বাভাবিক সময়ের আগেই তাদের আয়ু শেষ হচ্ছে। এমনকি ধূমপানের কারণে যত মানুষ
মারা যায়, তার চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষের আয়ু শেষ হয় দৈনন্দিন খাদ্য
তালিকার কারণে। ল্যানচেটের গবেষণায় বিশ্বের ১৯৫টি দেশে এ ধরনের মৃত্যুর হার
যাচাই করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে সবচেয়ে
বেশি সংখ্যক মানুষ মারা যায় উজবেকিস্তানে।
আর ইসরাইলে এ ধরনের মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। ঘনবসতিপূর্ণ শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে জাপানে খাদ্যাভ্যাসের কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম।
বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, ‘দ্যা গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজেস স্টাডি’- শীর্ষক ওই গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের কারণে কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ মারা যাচ্ছে। গবেষণা রিপোর্টে অতিরিক্ত লবণ ও কম দানাদার শস্য খাওয়া এবং ফলমূল কম খাওয়াকে স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার করণে বিশ্বে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কম দানাদার শস্য খাওয়ার ফলে মৃত্যু ঘটেছে আরো ৩০ লাখ মানুষের। এছাড়া, ২০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ ফলমূল কম খাওয়া। একই সঙ্গে বাদাম, বীজ, শাক-সবজি, সমুদ্র থেকে পাওয়া ওমেগা-৩ এবং আঁশ জাতীয় খাবারের পরিমাণ কম হওয়াটাও মৃত্যুর বড় কারণগুলোর অন্যতম।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর হেল্থ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। ওই ইন্সটিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টোফার মুরে বলেন, ডায়েটকেই (খাদ্যাভ্যাস) আমরা স্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান পরিচালক হিসেবে পেয়েছি। এটা সত্যিই অনেক গভীর। কিভাবে মানুষকে হত্যা করছে? এক কোটি দশ লাখ ডায়েট সমপর্কিত মৃত্যুর মধ্যে এক কোটির মৃত্যু হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে যা স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হার্টে ও রক্ত বহনকারী ধমনীর ওপর লবণের প্রভাব পড়ে সরাসরি যা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের ঝুঁকি তৈরি করে। তিনি আরো বলেন, আমরা কি সঠিক খাবার সঠিক পরিমাণে খাচ্ছি- এটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার দিনে ২৫ গ্রাম খাওয়ার কথা বলা হলেও গড়ে মানুষ খাচ্ছে মাত্র ৩ গ্রাম। আবার দুধ খাওয়া উচিত ৪৪৩ গ্রাম অথচ মানুষ গ্রহণ করছে ৭১ গ্রাম। একই ভাবে দানাদার শস্য জাতীয় খাবার ১২৬ গ্রামের জায়গায় ২৯ গ্রাম খাচ্ছে। অথচ লাল মাংস ২২ গ্রাম খাওয়া উচিত হলেও সেটি খাচ্ছে ২৭ গ্রাম, লবণ ৩.২ গ্রামের ওপর খাওয়া উচিত নয় কিন্তু সেটি গ্রহণ করছে ৬ গ্রাম আর প্রক্রিয়াজাত মাংস ২.১ গ্রামের স্থানে ৪ গ্রাম।
এ গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী যে স্বাস্থ্যকর খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বেশি বাদ যাচ্ছে তা হলো- বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নিতা ফরোউহি বলছেন, ধারণা করা হয় যে, এসব খাবারের ছোট একটি প্যাকেট একজনকে মোটা বানাতে পারে অথচ এগুলো সব ভালো ফ্যাটে ভর্তি। আর বেশির ভাগ লোকই এটাকে প্রধান খাবার ভাবতে পারে না।
এছাড়া, রেড মিট বা লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত করা মাংসের সঙ্গে ক্যান্সারের সমপর্ক নিয়ে প্রতিবছর অনেক সংবাদ হয়। প্রফেসর মুরে বলেন, এটা শস্য, দানাদার ও আঁশজাতীয় খাবার ও ফলমূল কম খাওয়ার চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষকরাও তাই মনে করেন, স্বাস্থ্য নিয়ে যারা সচেতনতা তৈরি করেন তাদের চর্বি কিংবা সুগারের কথা কম বলে স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা বেশি বলা উচিত।
বর্তমানে ফ্রান্স, স্পেন এবং ইসরায়েলের মতো কিছু দেশে ডায়েট সমপর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। আর দক্ষিণ পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার চিত্র উল্টো। ইসরাইলে যেখানে প্রতি এক লাখে এ ধরনের মৃত্যুর হার মাত্র ৮৯, সেখানে উজবেকিস্তানে ৪৯২ জন। তবে প্রফেসর মুরে বলছেন, জাপানে আগে ব্যাপক লবণ খাওয়ার প্রবণতা থাকলেও সেটি এখন নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে।
চীনারা প্রচুর পরিমাণে লবণ খায় এবং খাদ্য তালিকায় লবণ দিয়ে সস বেশি পছন্দ করে তারা।
আর যুক্তরাজ্য এ বিষয়ে এখনো ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও বেলজিয়ামের পেছনে আছে। তবে এজন্য ফলমূল বা দানাদার ও শস্যজাতীয় খাবারের স্বল্পতাও কম দায়ী নয়। দেশটিতে ডায়েট সমপর্কিত মৃত্যু প্রতি লাখে ১২৭ জন। প্রফেসর মুরে বলছেন, মানসম্মত খাবার হলো আসল কথা, আপনার ওজন কতো সেটা এখানে বিবেচ্য নয়। তিনি সবজি, আঁশজাতীয় খাবার ও ফলমূল খাওয়া বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় বিষয় হলো টাকা। প্রফেসর ফরউহি বলছেন, মানুষ জানলে ও সামর্র্থ্য থাকলে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে পারে।
তবে তারা দু’জনই একমত যে ফ্যাট, সুগার বা সল্ট, এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে মানুষের উচিত ভালো খাবারের দিকে মনোযোগ দেয়া।
আর ইসরাইলে এ ধরনের মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম। ঘনবসতিপূর্ণ শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে জাপানে খাদ্যাভ্যাসের কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম।
বিবিসি’র খবরে বলা হয়েছে, ‘দ্যা গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজেস স্টাডি’- শীর্ষক ওই গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের কারণে কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ মারা যাচ্ছে। গবেষণা রিপোর্টে অতিরিক্ত লবণ ও কম দানাদার শস্য খাওয়া এবং ফলমূল কম খাওয়াকে স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার করণে বিশ্বে ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। কম দানাদার শস্য খাওয়ার ফলে মৃত্যু ঘটেছে আরো ৩০ লাখ মানুষের। এছাড়া, ২০ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ ফলমূল কম খাওয়া। একই সঙ্গে বাদাম, বীজ, শাক-সবজি, সমুদ্র থেকে পাওয়া ওমেগা-৩ এবং আঁশ জাতীয় খাবারের পরিমাণ কম হওয়াটাও মৃত্যুর বড় কারণগুলোর অন্যতম।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর হেল্থ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন এ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে। ওই ইন্সটিটিউটের পরিচালক ক্রিস্টোফার মুরে বলেন, ডায়েটকেই (খাদ্যাভ্যাস) আমরা স্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান পরিচালক হিসেবে পেয়েছি। এটা সত্যিই অনেক গভীর। কিভাবে মানুষকে হত্যা করছে? এক কোটি দশ লাখ ডায়েট সমপর্কিত মৃত্যুর মধ্যে এক কোটির মৃত্যু হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। অতিরিক্ত লবণ উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে যা স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হার্টে ও রক্ত বহনকারী ধমনীর ওপর লবণের প্রভাব পড়ে সরাসরি যা হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের ঝুঁকি তৈরি করে। তিনি আরো বলেন, আমরা কি সঠিক খাবার সঠিক পরিমাণে খাচ্ছি- এটিই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেমন, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার দিনে ২৫ গ্রাম খাওয়ার কথা বলা হলেও গড়ে মানুষ খাচ্ছে মাত্র ৩ গ্রাম। আবার দুধ খাওয়া উচিত ৪৪৩ গ্রাম অথচ মানুষ গ্রহণ করছে ৭১ গ্রাম। একই ভাবে দানাদার শস্য জাতীয় খাবার ১২৬ গ্রামের জায়গায় ২৯ গ্রাম খাচ্ছে। অথচ লাল মাংস ২২ গ্রাম খাওয়া উচিত হলেও সেটি খাচ্ছে ২৭ গ্রাম, লবণ ৩.২ গ্রামের ওপর খাওয়া উচিত নয় কিন্তু সেটি গ্রহণ করছে ৬ গ্রাম আর প্রক্রিয়াজাত মাংস ২.১ গ্রামের স্থানে ৪ গ্রাম।
এ গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী যে স্বাস্থ্যকর খাবার খাদ্য তালিকা থেকে বেশি বাদ যাচ্ছে তা হলো- বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার। ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর নিতা ফরোউহি বলছেন, ধারণা করা হয় যে, এসব খাবারের ছোট একটি প্যাকেট একজনকে মোটা বানাতে পারে অথচ এগুলো সব ভালো ফ্যাটে ভর্তি। আর বেশির ভাগ লোকই এটাকে প্রধান খাবার ভাবতে পারে না।
এছাড়া, রেড মিট বা লাল মাংস ও প্রক্রিয়াজাত করা মাংসের সঙ্গে ক্যান্সারের সমপর্ক নিয়ে প্রতিবছর অনেক সংবাদ হয়। প্রফেসর মুরে বলেন, এটা শস্য, দানাদার ও আঁশজাতীয় খাবার ও ফলমূল কম খাওয়ার চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ। গবেষকরাও তাই মনে করেন, স্বাস্থ্য নিয়ে যারা সচেতনতা তৈরি করেন তাদের চর্বি কিংবা সুগারের কথা কম বলে স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা বেশি বলা উচিত।
বর্তমানে ফ্রান্স, স্পেন এবং ইসরায়েলের মতো কিছু দেশে ডায়েট সমপর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। আর দক্ষিণ পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার চিত্র উল্টো। ইসরাইলে যেখানে প্রতি এক লাখে এ ধরনের মৃত্যুর হার মাত্র ৮৯, সেখানে উজবেকিস্তানে ৪৯২ জন। তবে প্রফেসর মুরে বলছেন, জাপানে আগে ব্যাপক লবণ খাওয়ার প্রবণতা থাকলেও সেটি এখন নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে।
চীনারা প্রচুর পরিমাণে লবণ খায় এবং খাদ্য তালিকায় লবণ দিয়ে সস বেশি পছন্দ করে তারা।
আর যুক্তরাজ্য এ বিষয়ে এখনো ফ্রান্স, ডেনমার্ক ও বেলজিয়ামের পেছনে আছে। তবে এজন্য ফলমূল বা দানাদার ও শস্যজাতীয় খাবারের স্বল্পতাও কম দায়ী নয়। দেশটিতে ডায়েট সমপর্কিত মৃত্যু প্রতি লাখে ১২৭ জন। প্রফেসর মুরে বলছেন, মানসম্মত খাবার হলো আসল কথা, আপনার ওজন কতো সেটা এখানে বিবেচ্য নয়। তিনি সবজি, আঁশজাতীয় খাবার ও ফলমূল খাওয়া বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে বড় বিষয় হলো টাকা। প্রফেসর ফরউহি বলছেন, মানুষ জানলে ও সামর্র্থ্য থাকলে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে পারে।
তবে তারা দু’জনই একমত যে ফ্যাট, সুগার বা সল্ট, এসব চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে মানুষের উচিত ভালো খাবারের দিকে মনোযোগ দেয়া।
No comments