মোবাইল কোর্টে শিশুদের বিচার হয়! by উদিসা ইসলাম
আটক কিশোর অপরাধী |
অপরাধের
জড়িয়ে পড়া শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু সাবধানতা অবলম্বনের কথা
আইনে থাকলেও বাস্তবে তা কতটা মানা হচ্ছে, এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন
মানবাধিকারকর্মীরা। মোবাইল কোর্টে শিশুদের বিচার করা যায় কিনা তা নিয়েও
অনেকের প্রশ্ন আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ কারণেই শিশু আদালতের ব্যবস্থা
আছে। সেখানে না নিয়ে মোবাইল কোর্টে শিশুদের দণ্ড দিয়ে এবং তাদের ছবি
গণমাধ্যমে প্রকাশ করলে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয় না। তবে ম্যাজিস্ট্রেট
চাইলে মোবাইল কোর্টকে শিশু আদালত ঘোষণা দিয়ে বিচার করতে পারেন। সেক্ষেত্রেও
শিশু আইনের অন্যান্য সুরক্ষাগুলোর দিকে নজর দিতে হবে।
গত ২৬ আগস্ট সোমবার রাতে রাজধানীর মান্ডা থেকে বিভিন্ন অপরাধে কিশোর গ্যাংয়ের ২৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে ২০ জনকে তিন মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাকি তিনজনকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, রাজধানীর রায়েরবাজারে গত ২৩ আগস্ট শুক্রবার ‘স্টার বন্ড’ নামে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। শনিবার (২৪ আগস্ট) স্টার বন্ডের ১৭ সদস্যকে আটকের পর একবছরের সাজা দিয়ে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
আইন বলছে, ‘বিদ্যমান অন্য কোনও আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন,এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, অনূর্ধ্ব ১৮ (আঠার) বৎসর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তি শিশু হিসাবে গণ্য হইবে।’
রায়েরবাজারে আটক হওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনের বয়স ছিল ১৮ বছরের নিচে। তাদের বিচার হয়েছে প্রকাশ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে। অথচ এমন বয়সীদের বিচারের জন্য বেশ কিছু বিষয়ে বাড়তি যত্ন নিতে বলা হয়েছে শিশু আইন-২০১৩ তে। সুরক্ষা দিতে শিশুর সঙ্গে প্রবেশন কর্মকর্তা যুক্ত হবেন, তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিশুর মাতা-পিতার সন্ধান করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পুলিশকে সহায়তা করতে হবে। শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে শিশুর জামিনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট মামলার প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন করে বিকল্পপন্থা গ্রহণ করতে পারে।
শিশু-আদালতের কার্যক্রমের গোপনীয়তা প্রসঙ্গে বলা আছে,শিশু-আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় জড়িত বা সাক্ষ্য প্রদানকারী কোনও শিশুর ছবি বা এমন কোনও বর্ণনা,সংবাদ বা রিপোর্ট প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম অথবা ইন্টারনেটে প্রকাশ বা প্রচার করা যাবে না যা সংশ্লিষ্ট শিশুকে শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। এমনকি শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশ করা শিশুর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে না মর্মে শিশু-আদালতের নিকট প্রতীয়মান হলে কেবল উক্ত আদালত সংশ্লিষ্ট শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশের অনুমতি প্রদান করতে পারবে। কিন্তু শিশু কিশোরদের প্রায়শই আটক করে সংশোধনাগারে পাঠানোর সময় গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করা হয়।
অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া শিশুর আটক করার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তদন্ত এবং পরবর্তীতে বিচার পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাড়তি সতর্কতা ও ভিন্ন নিয়ম তৈরি করে দেওয়া আছে। এর বাইরে গিয়ে মোবাইল কোর্ট দণ্ড দিতে পারে কিনা প্রশ্নে সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস গভর্নেন্স অ্যান্ড চাইল্ড প্রোটেকশন সেক্টরের পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন বলেন, আইন ২০১৩ অনুসারে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানো এই শিশু-কিশোরদের শিশু আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের যে অধিকার ছিল, তা কতটুকু মানা হয়েছে তা নিশ্চিত হতে হবে। এই ঘটনায় গণমাধ্যমে এই শিশুদের ছবি প্রকাশ, বিচার চলাকালীন কোনও সংস্থার ইউনিফর্ম পরে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই কিশোরদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত ও মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শিশু আইনের যথাযথ প্রয়োগ শিশু অধিকার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। আর তাতেই সংরক্ষিত হবে শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ।
কিশোর আদালতের বাইরে তাদের বিচার করা যায় কিনা প্রশ্নে ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সওকত আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পরিচালনা করেছেন তিনি আদালত ভাল জানেন নিশ্চয়। শিশু কিশোরদের মামলা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় মানার কথা বলা আছে। তার সেই সুরক্ষাটুকু দেওয়া আমাদের সকলের কর্তব্য।
পরিচালনাকারী র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে আমরা ছবি তোলা ও প্রকাশের বিষয়ে সতর্ক থাকি। আমি নিজে ছবি সরবরাহ করি না কোথাও। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে সবার হাতে স্মার্ট ফোন অভিযানের সময়েই অনেকে ছবি তুলে থাকে। মোবাইল কোর্ট শিশু কিশোরদের বিচার করতে পারে কিনা প্রশ্নে তিনি বলতে পারেন। আটককৃতদের একজনের বয়স ১৮ এর বেশি হওয়ায় তাকে কারাগারে ও বাকিদের সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২৬ আগস্ট সোমবার রাতে রাজধানীর মান্ডা থেকে বিভিন্ন অপরাধে কিশোর গ্যাংয়ের ২৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে ২০ জনকে তিন মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাকি তিনজনকে গাজীপুরের কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, রাজধানীর রায়েরবাজারে গত ২৩ আগস্ট শুক্রবার ‘স্টার বন্ড’ নামে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা র্যাব সদস্যদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। শনিবার (২৪ আগস্ট) স্টার বন্ডের ১৭ সদস্যকে আটকের পর একবছরের সাজা দিয়ে কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
আইন বলছে, ‘বিদ্যমান অন্য কোনও আইনে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন,এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, অনূর্ধ্ব ১৮ (আঠার) বৎসর বয়স পর্যন্ত সকল ব্যক্তি শিশু হিসাবে গণ্য হইবে।’
রায়েরবাজারে আটক হওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনের বয়স ছিল ১৮ বছরের নিচে। তাদের বিচার হয়েছে প্রকাশ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে। অথচ এমন বয়সীদের বিচারের জন্য বেশ কিছু বিষয়ে বাড়তি যত্ন নিতে বলা হয়েছে শিশু আইন-২০১৩ তে। সুরক্ষা দিতে শিশুর সঙ্গে প্রবেশন কর্মকর্তা যুক্ত হবেন, তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিশুর মাতা-পিতার সন্ধান করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পুলিশকে সহায়তা করতে হবে। শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে শিশুর জামিনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট মামলার প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন করে বিকল্পপন্থা গ্রহণ করতে পারে।
শিশু-আদালতের কার্যক্রমের গোপনীয়তা প্রসঙ্গে বলা আছে,শিশু-আদালতে বিচারাধীন কোন মামলায় জড়িত বা সাক্ষ্য প্রদানকারী কোনও শিশুর ছবি বা এমন কোনও বর্ণনা,সংবাদ বা রিপোর্ট প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম অথবা ইন্টারনেটে প্রকাশ বা প্রচার করা যাবে না যা সংশ্লিষ্ট শিশুকে শনাক্তকরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সাহায্য করে। এমনকি শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশ করা শিশুর স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে না মর্মে শিশু-আদালতের নিকট প্রতীয়মান হলে কেবল উক্ত আদালত সংশ্লিষ্ট শিশুর ছবি, বর্ণনা, সংবাদ বা রিপোর্ট প্রকাশের অনুমতি প্রদান করতে পারবে। কিন্তু শিশু কিশোরদের প্রায়শই আটক করে সংশোধনাগারে পাঠানোর সময় গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করা হয়।
অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়া শিশুর আটক করার প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে তদন্ত এবং পরবর্তীতে বিচার পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাড়তি সতর্কতা ও ভিন্ন নিয়ম তৈরি করে দেওয়া আছে। এর বাইরে গিয়ে মোবাইল কোর্ট দণ্ড দিতে পারে কিনা প্রশ্নে সেভ দ্য চিলড্রেনের চাইল্ড রাইটস গভর্নেন্স অ্যান্ড চাইল্ড প্রোটেকশন সেক্টরের পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন বলেন, আইন ২০১৩ অনুসারে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানো এই শিশু-কিশোরদের শিশু আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের যে অধিকার ছিল, তা কতটুকু মানা হয়েছে তা নিশ্চিত হতে হবে। এই ঘটনায় গণমাধ্যমে এই শিশুদের ছবি প্রকাশ, বিচার চলাকালীন কোনও সংস্থার ইউনিফর্ম পরে অংশগ্রহণ করা ইত্যাদি শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হয়েছে। আমরা আশা করছি, এই কিশোরদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্ত ও মামলার পরবর্তী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শিশু আইনের যথাযথ প্রয়োগ শিশু অধিকার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। আর তাতেই সংরক্ষিত হবে শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ।
কিশোর আদালতের বাইরে তাদের বিচার করা যায় কিনা প্রশ্নে ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সওকত আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট পরিচালনা করেছেন তিনি আদালত ভাল জানেন নিশ্চয়। শিশু কিশোরদের মামলা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় মানার কথা বলা আছে। তার সেই সুরক্ষাটুকু দেওয়া আমাদের সকলের কর্তব্য।
পরিচালনাকারী র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে আমরা ছবি তোলা ও প্রকাশের বিষয়ে সতর্ক থাকি। আমি নিজে ছবি সরবরাহ করি না কোথাও। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে সবার হাতে স্মার্ট ফোন অভিযানের সময়েই অনেকে ছবি তুলে থাকে। মোবাইল কোর্ট শিশু কিশোরদের বিচার করতে পারে কিনা প্রশ্নে তিনি বলতে পারেন। আটককৃতদের একজনের বয়স ১৮ এর বেশি হওয়ায় তাকে কারাগারে ও বাকিদের সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে।
No comments