মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের হিসেব রাখতে চায়, সাহায্য করতে চায় না by আজিম ইব্রাহিম
শরণার্থীদের
জন্য কাগজপত্র গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো সীমানা পেরুতে সাহায্য করে, নিজ দেশে
ফিরতে পারবেন কি না, সেটা নিশ্চিত করে, এবং এই কাগজগুলোর ভিত্তিতে নিখোঁজ ও
নিহতদের হিসাব ঠিক করা হয়।
কিন্তু দলিলপত্র আসলে দুধারী তলোয়ার। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার যে দীর্ঘ গণহত্যার চেষ্টা চালিয়ে আসছে, সেই প্রচেষ্টার একটা অংশ হলো এই কাগজপত্র, যেখানে জন্মের রেকর্ড থাকে, সত্যায়নের তথ্য থাকে, এবং আবাসস্থলের ঠিকানা থাকে। মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকে বহু বছর ধরে পুরো সামরিক আমলটাতে রোহিঙ্গাদের কাগজপত্রের বিষয়টি জোর করে নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে তাদের আবাসস্থলের হদিস রয়েছে, কিন্তু কখনও তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। এই কাগজগুলোকে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের জন্মভূমিতে অধিকার থেকে দিনের পর দিন বঞ্চিত করা হয়েছে। কুখ্যাত এই হোয়াইট কার্ডের মাধ্যমেই মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের জনসংখ্যা সম্পর্কে হিসেব রেখেছে এবং সে অনুযায়ী গণহত্যার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
এটা নতুন কিছু নয়। ইউরোপে হলোকাস্টের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় ব্যক্তির জন্য কাগজপত্র জরুরি হতে পারে। একদিকে এই কাগজের ভিত্তিতে ভুক্তভোগি নিজের অধিকার দাবি করতে পারে। অন্যদিকে, এগুলিকে ব্যবহার করে একটা সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠির বিরুদ্ধে বৈষম্য ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাতে পারে রাষ্ট্র। কোন এলাকায় কতজন মানুষ বাস করছে, সেটা জানা গেলে তাদের জন্য হিসেব করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যায়, আবার তাদের হত্যা করার জন্য একত্র করাও সহজ হয়।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জন্য যে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশান কার্ডের প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা সম্প্রতি মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিযুক্ত বিশেষ দূত ক্রিস্টিন বার্গেনারের মনোযোগ কেড়েছে। রাখাইন রাজ্যের মন্ত্রীর এই ধরনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে তিনি বলেছেন যে, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার পথে এটা প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। বার্গেনার হিসেবে একটা ভুল করছেন, যেটার সম্ভাব্য পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।
মিয়ানমারের দিক থেকে রোহিঙ্গারা যেটা চায়, সেটা খুব সাদাসিধে: আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের যে অধিকার প্রাপ্য এবং যে অধিকার থেকে তাদের এতদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, সেই অধিকার চায় তারা। এবং সেই সাথে যেখানে তারা ও তাদের পূর্বপুরুষরা জন্মগ্রহণ করেছে, সেখান আর সবার মতো সমান অধিকার এবং রাজনৈতিক সুবিধা চায় তারা।
রোহিঙ্গাদের একমাত্র দাবি হলো মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের অধিকার পূরণ করবে এবং তাদেরকে মিয়ানমারের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ওই দেশে জন্মগ্রহণকারী অন্যান্য নাগরিকের মতো একই মর্যাদা দেবে তারা।
জাতিসংঘ এই দাবিকে সমর্থন করে। কিন্তু এই কার্ডকে হয়তো এক ধাপ অগ্রগতি মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে তা নয়।
বার্গেনার হয়তো মনে করেছেন তিনি বাস্তবসম্মত কাজ করছেন এবং রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত করে কিছুটা পেপারওয়ার্ক করা গেলে সেটা মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থী হিসেবে তাদের স্ট্যাটাসকে মজবুত করবে এবং এটা একেবারে কোন কাগজপত্র না থাকার চেয়ে ভালো, তাই কি?
যে কোন চিন্তাশীল পর্যবেক্ষক বুঝতে পারবেন যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশান কার্ডের মাধ্যমে যে অন্তর্বর্তীকালীন স্ট্যাটাস দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে, এটা বিগত সামরিক জান্তা সরকারগুলোর দেয়া হোয়াইট কার্ডের মতো হুবহু একই জিনিস। কোন অন্তর্বর্তীকালীন স্ট্যাটাস তাদেরকে দেয়া হবে না, এবং কোন ধরনের নাগরিকত্বের প্রক্রিয়ার কাছাকাছিও তারা যাবে না। বরং এটা হলো জনসংখ্যার হিসেব রাখার একটা জরুরি সিস্টেম, যেটা ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেয়া আরও সহজ হবে।
কিন্তু দলিলপত্র আসলে দুধারী তলোয়ার। রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার যে দীর্ঘ গণহত্যার চেষ্টা চালিয়ে আসছে, সেই প্রচেষ্টার একটা অংশ হলো এই কাগজপত্র, যেখানে জন্মের রেকর্ড থাকে, সত্যায়নের তথ্য থাকে, এবং আবাসস্থলের ঠিকানা থাকে। মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকে বহু বছর ধরে পুরো সামরিক আমলটাতে রোহিঙ্গাদের কাগজপত্রের বিষয়টি জোর করে নিশ্চিত করা হয়েছে, যেখানে তাদের আবাসস্থলের হদিস রয়েছে, কিন্তু কখনও তাদের নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। এই কাগজগুলোকে ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদেরকে তাদের জন্মভূমিতে অধিকার থেকে দিনের পর দিন বঞ্চিত করা হয়েছে। কুখ্যাত এই হোয়াইট কার্ডের মাধ্যমেই মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের জনসংখ্যা সম্পর্কে হিসেব রেখেছে এবং সে অনুযায়ী গণহত্যার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।
এটা নতুন কিছু নয়। ইউরোপে হলোকাস্টের অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায় ব্যক্তির জন্য কাগজপত্র জরুরি হতে পারে। একদিকে এই কাগজের ভিত্তিতে ভুক্তভোগি নিজের অধিকার দাবি করতে পারে। অন্যদিকে, এগুলিকে ব্যবহার করে একটা সুনির্দিষ্ট গোষ্ঠির বিরুদ্ধে বৈষম্য ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাতে পারে রাষ্ট্র। কোন এলাকায় কতজন মানুষ বাস করছে, সেটা জানা গেলে তাদের জন্য হিসেব করে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যায়, আবার তাদের হত্যা করার জন্য একত্র করাও সহজ হয়।
মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জন্য যে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশান কার্ডের প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা সম্প্রতি মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিযুক্ত বিশেষ দূত ক্রিস্টিন বার্গেনারের মনোযোগ কেড়েছে। রাখাইন রাজ্যের মন্ত্রীর এই ধরনের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে তিনি বলেছেন যে, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ার পথে এটা প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। বার্গেনার হিসেবে একটা ভুল করছেন, যেটার সম্ভাব্য পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।
মিয়ানমারের দিক থেকে রোহিঙ্গারা যেটা চায়, সেটা খুব সাদাসিধে: আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের যে অধিকার প্রাপ্য এবং যে অধিকার থেকে তাদের এতদিন বঞ্চিত করা হয়েছে, সেই অধিকার চায় তারা। এবং সেই সাথে যেখানে তারা ও তাদের পূর্বপুরুষরা জন্মগ্রহণ করেছে, সেখান আর সবার মতো সমান অধিকার এবং রাজনৈতিক সুবিধা চায় তারা।
রোহিঙ্গাদের একমাত্র দাবি হলো মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের অধিকার পূরণ করবে এবং তাদেরকে মিয়ানমারের পূর্ণাঙ্গ নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ওই দেশে জন্মগ্রহণকারী অন্যান্য নাগরিকের মতো একই মর্যাদা দেবে তারা।
জাতিসংঘ এই দাবিকে সমর্থন করে। কিন্তু এই কার্ডকে হয়তো এক ধাপ অগ্রগতি মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে তা নয়।
বার্গেনার হয়তো মনে করেছেন তিনি বাস্তবসম্মত কাজ করছেন এবং রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন। রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিশ্চিত করে কিছুটা পেপারওয়ার্ক করা গেলে সেটা মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থী হিসেবে তাদের স্ট্যাটাসকে মজবুত করবে এবং এটা একেবারে কোন কাগজপত্র না থাকার চেয়ে ভালো, তাই কি?
যে কোন চিন্তাশীল পর্যবেক্ষক বুঝতে পারবেন যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে ন্যাশনাল ভেরিফিকেশান কার্ডের মাধ্যমে যে অন্তর্বর্তীকালীন স্ট্যাটাস দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে, এটা বিগত সামরিক জান্তা সরকারগুলোর দেয়া হোয়াইট কার্ডের মতো হুবহু একই জিনিস। কোন অন্তর্বর্তীকালীন স্ট্যাটাস তাদেরকে দেয়া হবে না, এবং কোন ধরনের নাগরিকত্বের প্রক্রিয়ার কাছাকাছিও তারা যাবে না। বরং এটা হলো জনসংখ্যার হিসেব রাখার একটা জরুরি সিস্টেম, যেটা ব্যবহার করে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেয়া আরও সহজ হবে।
No comments