ইরানের সাথে জ্বালানি পাইপলাইন স্থাপনে পাকিস্তানের আশা মিলিয়ে গেছে by জাফর ইকবাল
ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করায় এর কিছু অপ্রত্যাশিত প্রভাব
পাকিস্তানের উপরও পড়েছে। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্মুখ এবং
অর্থনৈতিক সমস্যাপীড়িত পাকিস্তান তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ইরানের সাথে
জ্বালানি পাইপলাইন স্থাপনের আশা করেছিল। কিন্তু মার্কিন ড্রোনের মতোই,
পাকিস্তানের এই পাইপলাইন স্থাপনের আশাও বড় ধরনের আঘাতের মুখে পড়েছে।
পাকিস্তানী কর্মকর্তারা যদিও প্রকাশ্যে বলছেন যে, ইরান-পাকিস্তান পাইপলাইন স্থাপনের বিষয়ে খুব সামান্যই আশা রয়েছে, তবে একই সাথে তারা নিরবে চীন ও রাশিয়ার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন এই আশায় যে, কোন তৃতীয় পক্ষ হয়তো তাদেরকে টেনে তুলতে পারবে। কিন্তু ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় তাদের সে পরিকল্পনাও বড় বাধার মুখে পড়েছে।
চীনা দৃষ্টিকোণঃ
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পাকিস্তান ও চীন একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির অধীনে দরপত্রের মাধ্যমে গোয়াদর ও নওয়াবশাহের মধ্যে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন এবং একটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হবে। ঠিকাদারির কাজ করবে এখানে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশান (সিএনপিসি)। এ প্রকল্পের জন্য অর্থায়নের ৮৫% দেয়ার কথা চীনের এক্সিম ব্যাংকের।
গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের এটা ছিল একটা বিকল্প মডেল। সিএনপিসি’র অধীনে বালুচিস্তানের গোয়াদর থেকে ইরান সীমান্ত পর্যন্ত পাইপলাইন সম্প্রসারণেরও কথা ছিল, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এক কর্মকর্তা বলেন, “সিএনপিসি এখনও এই প্রকল্পের কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহী”। তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তান ও ইরানের জন্য গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এটিই একমাত্র উপায়।
কিন্তু পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. গুলফ্রাজ আহমেদ বলেছেন যে, পাকিস্তান এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তিনি এশিয়া টাইমসকে বলেন, “ফিনান্সিয়াল অ্যাকশান টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) কারণে পাকিস্তানও সমস্যায় আছে। এই পরিস্থিতিতে তারা এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তারা ইরানের কাছে এটা জিজ্ঞাসা করতে পারে যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় কি না”।
রাশিয়ান উপায়ঃ
দ্বিতীয় বিকল্প হলো ইরান-পাকিস্তান গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ গ্যাস উপকূলীয় পাইপলাইনে দিয়ে দেয়া, যেটার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। রাশিয়ান ফার্ম গ্যাজপ্রম ইরান থেকে ভারত পর্যন্ত অফশোর পাইপলাইন প্রকল্পের জন্য একটা জরিপ করছে যেটা গোয়াদর দিয়ে যাবে।
পাকিস্তান ও রাশিয়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটা সমঝোতা স্মারকে সাক্ষর করেছে। ১০ বিলিয়ন ডলারের অফশোর গ্যাস পাইপলাইন বাস্তবায়নের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনকি সেই সুযোগটাও অসম্ভব মনে হচ্ছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে আইনি বিশেষজ্ঞসহ ইরানের একটি টিম পাকিস্তানে এসেছিল এবং সে সময় তারা গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে আলোচনা করে।
স্বাভাবিভাবেই ইরানের টিম মনে করেছে যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এই প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে, পাকিস্তানের আশঙ্কা হলো এই প্রকল্প নিয়ে এগুলো তারাও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। ট্রাম্প প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে যাতে তারা ইরানের সাথে গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে।
এদিকে, ইরানি প্রতিনিধিরা পাকিস্তানের সাথে জোর যোগাযোগ চালাচ্ছেন যাতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এখানে মূল অংশীদার হবে ইরান, পাকিস্তান ও ভারত, আর রাশিয়া থাকবে পর্যবেক্ষক। তবে, পাকিস্তান বলেছে যে, আইপি গ্যাস পাইপলাইন এবং অফশোর গ্যাস পাইপলাইন দুটাতেই গ্যাস আসবে ইরান থেকে, তাই পাকিস্তানের একটি মাত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করা উচিত। সেটা হবে হয় অফশোর গ্যাস পাইপলাইন, নতুবা আইপি গ্যাস পাইপলাইন।
ইরান অফশোর গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে। নতুন মডেলের অধীনে আইপি গ্যাস পাইপলাইনের অধীনে বরাদ্দকৃত গ্যাস অফশোর পাইপলাইন প্রকল্পে দিয়ে দেয়া হবে। ইরান এই মডেল অনুসরণে সম্মত হয়েছে এবং কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন যে, তারা এই মডেলকে সমর্থন করবেন।
পাকিস্তানী কর্মকর্তারা যদিও প্রকাশ্যে বলছেন যে, ইরান-পাকিস্তান পাইপলাইন স্থাপনের বিষয়ে খুব সামান্যই আশা রয়েছে, তবে একই সাথে তারা নিরবে চীন ও রাশিয়ার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন এই আশায় যে, কোন তৃতীয় পক্ষ হয়তো তাদেরকে টেনে তুলতে পারবে। কিন্তু ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় তাদের সে পরিকল্পনাও বড় বাধার মুখে পড়েছে।
চীনা দৃষ্টিকোণঃ
২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পাকিস্তান ও চীন একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির অধীনে দরপত্রের মাধ্যমে গোয়াদর ও নওয়াবশাহের মধ্যে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন এবং একটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করা হবে। ঠিকাদারির কাজ করবে এখানে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশান (সিএনপিসি)। এ প্রকল্পের জন্য অর্থায়নের ৮৫% দেয়ার কথা চীনের এক্সিম ব্যাংকের।
গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের এটা ছিল একটা বিকল্প মডেল। সিএনপিসি’র অধীনে বালুচিস্তানের গোয়াদর থেকে ইরান সীমান্ত পর্যন্ত পাইপলাইন সম্প্রসারণেরও কথা ছিল, যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়। এক কর্মকর্তা বলেন, “সিএনপিসি এখনও এই প্রকল্পের কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহী”। তিনি আরও বলেন যে, পাকিস্তান ও ইরানের জন্য গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এটিই একমাত্র উপায়।
কিন্তু পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. গুলফ্রাজ আহমেদ বলেছেন যে, পাকিস্তান এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তিনি এশিয়া টাইমসকে বলেন, “ফিনান্সিয়াল অ্যাকশান টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) কারণে পাকিস্তানও সমস্যায় আছে। এই পরিস্থিতিতে তারা এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তারা ইরানের কাছে এটা জিজ্ঞাসা করতে পারে যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় কি না”।
রাশিয়ান উপায়ঃ
দ্বিতীয় বিকল্প হলো ইরান-পাকিস্তান গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ গ্যাস উপকূলীয় পাইপলাইনে দিয়ে দেয়া, যেটার পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। রাশিয়ান ফার্ম গ্যাজপ্রম ইরান থেকে ভারত পর্যন্ত অফশোর পাইপলাইন প্রকল্পের জন্য একটা জরিপ করছে যেটা গোয়াদর দিয়ে যাবে।
পাকিস্তান ও রাশিয়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটা সমঝোতা স্মারকে সাক্ষর করেছে। ১০ বিলিয়ন ডলারের অফশোর গ্যাস পাইপলাইন বাস্তবায়নের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এমনকি সেই সুযোগটাও অসম্ভব মনে হচ্ছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে আইনি বিশেষজ্ঞসহ ইরানের একটি টিম পাকিস্তানে এসেছিল এবং সে সময় তারা গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে আলোচনা করে।
স্বাভাবিভাবেই ইরানের টিম মনে করেছে যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে এই প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে, পাকিস্তানের আশঙ্কা হলো এই প্রকল্প নিয়ে এগুলো তারাও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। ট্রাম্প প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে পাকিস্তানকে সতর্ক করেছে যাতে তারা ইরানের সাথে গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে।
এদিকে, ইরানি প্রতিনিধিরা পাকিস্তানের সাথে জোর যোগাযোগ চালাচ্ছেন যাতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। এখানে মূল অংশীদার হবে ইরান, পাকিস্তান ও ভারত, আর রাশিয়া থাকবে পর্যবেক্ষক। তবে, পাকিস্তান বলেছে যে, আইপি গ্যাস পাইপলাইন এবং অফশোর গ্যাস পাইপলাইন দুটাতেই গ্যাস আসবে ইরান থেকে, তাই পাকিস্তানের একটি মাত্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করা উচিত। সেটা হবে হয় অফশোর গ্যাস পাইপলাইন, নতুবা আইপি গ্যাস পাইপলাইন।
ইরান অফশোর গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্মত হয়েছে। নতুন মডেলের অধীনে আইপি গ্যাস পাইপলাইনের অধীনে বরাদ্দকৃত গ্যাস অফশোর পাইপলাইন প্রকল্পে দিয়ে দেয়া হবে। ইরান এই মডেল অনুসরণে সম্মত হয়েছে এবং কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন যে, তারা এই মডেলকে সমর্থন করবেন।
No comments