ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু: ধরন পাল্টানোয় চিন্তিত চিকিৎসকরা by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
রাজধানী
থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু জ্বর। রাজধানীর
প্রায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগীর খবর পাওয়া যাচ্ছে। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ঢাকায়
ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু রোগে অনেকের মৃত্যু হলেও সরকারি হিসাবে সবার
তথ্য আসছে না। চলতি বছরের ১৮ই জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যুর
তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্র বলছে আরও
অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২০১
জন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘণ্টায়
ভর্তি হচ্ছেন ৮ জনের উপরে।
সরকারি হিসাবে চলতি বছরের এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দেশের অন্যান্য জেলা থেকেও ডেঙ্গু রোগীর খবর আসছে। জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন ১৯২ জনের উপরে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন। ১৮ই জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৪৬১ জন। বেসরকারি হিসাবে এটা কয়েকগুণ বেশি।
জুন মাসে ১৭৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজার ২০৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র বলছেন, এতদিন শুধুমাত্র রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও এখন ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলা, খুলনা ও চট্টগ্রাম জেলাতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলা থেকে ২৬ জন, চট্টগ্রাম থেকে ৭ জন এবং খুলনা থেকে ১৫ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, ডেঙ্গুতে মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়েছে। এটা খুবই বিরল। কিন্তু এখন আমরা প্রায়ই এই ধরনের ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি। তিনি একে বলছেন ডেঙ্গুর ‘ব্যতিক্রমী’ চেহারা। এই অধ্যাপক বলেন, এখন ডেঙ্গু মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, যকৃত ও কিডনির মতো নানা অঙ্গ আক্রান্ত করছে। খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে দেখছি। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পরও অনেকে অসুস্থ পড়ছে। আগের চেয়ে মারাত্মক চেহারা নিয়ে ডেঙ্গু রোগী আসার কথা জানিয়েছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এল ই ফাতমীও। মধ্য জুনে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর প্রথম হলি ফ্যামিলিতে এই রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালু করেছিলেন অধ্যাপক ফাতমী। তিনি বলেন, এবার শুধু সংখ্যায়ই বেশি না। এবার প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমারজিক ফিভারে আক্রান্ত। এদের পঞ্চাশ ভাগেরই শক সিন্ড্রোম। এবার ডেঙ্গুর প্যাটার্নটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এদের সবার প্ল্যাটিলেট কমে যাচ্ছে, সবাই শকে চলে যাচ্ছে। আগে সামান্য ডেঙ্গু হয়েই ভালো হয়ে যেত। এবার সবারই রক্ত লাগছে। এই পরিস্থিতিতে জ্বর হলে গাফিলতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। জ্বর সেরে যাওয়ার পরও কিছু দিন চিকিৎসকের ফলো আপে থাকুন।
এ বিষয়ে দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর ধরন পাল্টে গেছে। আগে যেমন তীব্র জ্বরের সঙ্গে গায়ে রেশ ওঠা, ঠোট ফেটে রক্ত বের হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেত, এবার সে সব লক্ষণ ছাড়াও অনেক রোগীই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে জ্বর হলে ঘরে বসে চিকিৎসা না নিয়ে যত দ্রত সম্ভব দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিৎ।
আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজধানীর ধানমন্ডি সেন্টাল হাসপাতালে ৭১ জন, ইবনে সিনা হাসপাতালে ৩৬ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ৫৫ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ৪ জন, গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ৩৫ জন, ইসলামী হাসপাতাল কাকরাইলে ৬৩ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১৩ জন, খিদমা হাসপাতালে ১২ জন, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ৩৭ জন, সালাউদ্দিনে ৩০ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জন, এ্যাপোলো হাসপাতালে ২৬ জন, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৪৩ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪৬ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৪১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৪০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৮৫ জন, বারডেম হাসপাতালে ১৭ জন, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ৫০ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৭৩ জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কন্ট্রোল রুম সূত্র জানা গেছে, জানুয়ারিতে ৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফের্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৮৪ জন, জুন মাসে এক হাজার ৭৭০ জন এবং জুলাই মাসে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৬১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সরকারি হিসাবে চলতি বছরের এ পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বেশি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দেশের অন্যান্য জেলা থেকেও ডেঙ্গু রোগীর খবর আসছে। জুলাই মাসে গড়ে প্রতিদিন ১৯২ জনের উপরে ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছেন। ১৮ই জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৪৬১ জন। বেসরকারি হিসাবে এটা কয়েকগুণ বেশি।
জুন মাসে ১৭৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিহ্নিত হয়েছেন। গতকাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজার ২০৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ৩৩৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম সূত্র বলছেন, এতদিন শুধুমাত্র রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও এখন ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলা, খুলনা ও চট্টগ্রাম জেলাতেও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ঢাকা শহর ছাড়া ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলা থেকে ২৬ জন, চট্টগ্রাম থেকে ৭ জন এবং খুলনা থেকে ১৫ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, ডেঙ্গুতে মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়েছে। এটা খুবই বিরল। কিন্তু এখন আমরা প্রায়ই এই ধরনের ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি। তিনি একে বলছেন ডেঙ্গুর ‘ব্যতিক্রমী’ চেহারা। এই অধ্যাপক বলেন, এখন ডেঙ্গু মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, যকৃত ও কিডনির মতো নানা অঙ্গ আক্রান্ত করছে। খারাপ অবস্থায় হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে জ্বর চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে দেখছি। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পরও অনেকে অসুস্থ পড়ছে। আগের চেয়ে মারাত্মক চেহারা নিয়ে ডেঙ্গু রোগী আসার কথা জানিয়েছেন হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এল ই ফাতমীও। মধ্য জুনে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর প্রথম হলি ফ্যামিলিতে এই রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালু করেছিলেন অধ্যাপক ফাতমী। তিনি বলেন, এবার শুধু সংখ্যায়ই বেশি না। এবার প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমারজিক ফিভারে আক্রান্ত। এদের পঞ্চাশ ভাগেরই শক সিন্ড্রোম। এবার ডেঙ্গুর প্যাটার্নটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এদের সবার প্ল্যাটিলেট কমে যাচ্ছে, সবাই শকে চলে যাচ্ছে। আগে সামান্য ডেঙ্গু হয়েই ভালো হয়ে যেত। এবার সবারই রক্ত লাগছে। এই পরিস্থিতিতে জ্বর হলে গাফিলতি না করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। জ্বর সেরে যাওয়ার পরও কিছু দিন চিকিৎসকের ফলো আপে থাকুন।
এ বিষয়ে দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, এ বছর ডেঙ্গুর ধরন পাল্টে গেছে। আগে যেমন তীব্র জ্বরের সঙ্গে গায়ে রেশ ওঠা, ঠোট ফেটে রক্ত বের হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেত, এবার সে সব লক্ষণ ছাড়াও অনেক রোগীই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে জ্বর হলে ঘরে বসে চিকিৎসা না নিয়ে যত দ্রত সম্ভব দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিৎ।
আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজধানীর ধানমন্ডি সেন্টাল হাসপাতালে ৭১ জন, ইবনে সিনা হাসপাতালে ৩৬ জন, বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ৫৫ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ৪ জন, গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ৩৫ জন, ইসলামী হাসপাতাল কাকরাইলে ৬৩ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১৩ জন, খিদমা হাসপাতালে ১২ জন, সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলে ৩৭ জন, সালাউদ্দিনে ৩০ জন, পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০ জন, এ্যাপোলো হাসপাতালে ২৬ জন, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৪৩ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৪৬ জন, মিটফোর্ড হাসপাতালে ১৪১ জন, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ৪০ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৮৫ জন, বারডেম হাসপাতালে ১৭ জন, মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ৫০ জন, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ৭৩ জন, বিজিবি হাসপাতালে ২৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কন্ট্রোল রুম সূত্র জানা গেছে, জানুয়ারিতে ৩৮ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফের্রুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৮৪ জন, জুন মাসে এক হাজার ৭৭০ জন এবং জুলাই মাসে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৬১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
No comments