নতুন কোনও সংগঠনে যুক্ত হচ্ছি না: বাংলা ট্রিবিউনকে ব্যারিস্টার রাজ্জাক by সালমান তারেক শাকিল
জামায়াতে
ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারির পদ থেকে শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পদত্যাগ
করেছেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। পদত্যাগপত্রে বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে
তিনি জানিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রশ্নে দলকে ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং কয়েক দফা
উদ্যোগ নিলেও দলের হাইকমান্ড এতে কর্ণপাত না করায় তিনি পদত্যাগ বেছে
নিয়েছেন।
শুক্রবার দুপুরে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জামায়াত থেকে পদত্যাগ করে নতুন কোনও সংগঠনে যুক্ত হওয়ার কোনও ইচ্ছা আমার নেই।’ তার পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদকের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন। ব্যস্ততার কারণে তিনি স্বল্প সময় কথা বলেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক তার পদত্যাগপত্রে ইস্তফার কারণসহ এও জানিয়েছেন যে, তিনি তার নিজের পেশায় আত্মনিয়োগ করবেন।
বাংলা ট্রিবিউনের প্রশ্ন ছিল—আপনি এমন সময়ে ইস্তফা দিয়েছেন, যে সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্যরা দলের নাম পরিবর্তন ও নতুন নামে ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন সংগঠন তৈরির সম্মতি জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আপনার পদত্যাগ কী সেই নতুন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার পূর্বলক্ষণ? জবাবে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জামায়াত কী করবে কী করবে না, সেটা আমি বলতে পারবো না। পদত্যাগপত্রে বলেছি আমি আমার পেশায় যুক্ত থাকবো। নতুন কোনও সংগঠনে যুক্ত হচ্ছি না।’
আপনার পদত্যাগের পর জামায়াতের প্রতিক্রিয়া জেনেছেন কি? উত্তরে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি জামায়াতে ইসলামীতে ছিলাম। আজকে পদত্যাগপত্র দলের আমির মকবুল আহমাদের কাছে পাঠিয়েছি। আমি নিজে ফোনে কথা বলেছি তার সঙ্গে, দলের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সাহেবকে জানিয়েছি। আমরা বন্ধু ছিলাম। আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকবে আশা করি।’
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি আব্দুর রাজ্জাকের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যেকোনও সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আমরা আশা করি তার সঙ্গে আমাদের মহব্বতের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।’
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের কাছে শেষ প্রশ্ন ছিল—আপনি কী সহসা দেশে ফিরছেন? তিনি বললেন, ‘লন্ডনে আমি ভালো আছি। লন্ডনেই আপাতত প্র্যাক্টিস করছি।’
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ভূমিকা পালনের জন্য জামায়াতে ইসলামী থেকে কোনও নেতার সরাসরি পদত্যাগের ঘটনা এই প্রথম। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তার পদত্যাগপত্রে জানিয়েছেন— তিনি কয়েক দফায় জামায়াতকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দেন। ২০০১ সাল থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তার পরামর্শ অব্যাহত রাখেন। এরমধ্যে ২০০৭-০৮ সালে, ২০১১ সালে সর্বশেষ শুরার বৈঠকে, ২০১৬ সালের মার্চে, নভেম্বরে তিনি আমিরের কাছে লিখিতভাবে প্রস্তাব করেন।
জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের পরিবারের সদস্যদের অনেকে বলছেন, জামায়াতে সংস্কারের প্রস্তাব তুলে কোনও নেতাই দলে থাকতে পারেননি। তবে এবার ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ বড় ঘটনা। দলের অনেকেই এটাকে পরবর্তী নতুন সংগঠনের কৌশল হিসেবে দেখছেন। যদিও বিগত দিনে যারাই জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকা প্রসঙ্গে বা সংস্কার চেয়ে কথা বলেছেন, তাদের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
১৯৮২ সালে জামায়াতের অনুজ সংগঠন ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের। বর্তমানে ২০ দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিসের মহাসচিব তিনি। তার ভাষ্যে, ‘জামায়াতের ৭১ সালের ভূমিকা নিয়ে রিভিউ করেছিলাম। রিভিউ বলতে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা। প্রায় ২০/২৫টি প্রশ্ন ছিল আমাদের। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জামায়াতের অবস্থানের সিদ্ধান্ত জামায়াতের ফোরামে হয়নি। আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, এ সিদ্ধান্ত কোথায় হয়েছে? কার সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত জামায়াত শেখ মুজিবকে ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তাহলে এটা চাওয়া কীভাবে ঘুরে গেলো? আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, আপনারা ৭১ সালের এপ্রিলে যে বিবৃতি দিলেন, কোন সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দিলেন? আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, আপনারা আলবদর বাহিনী গঠন করলেন, এটা কোথায় করলেন, কে এই সিদ্ধান্ত নিলেন? এসব জামায়াত পছন্দ করেনি। জামায়াত ভুল করেছে। জামায়াত নাম-ই থাকা উচিত ছিল না।’
ওই সময়ে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন ফরীদ আহমদ রেজা। বর্তমানে তিনি লন্ডনে প্রবাস জীবনযাপন করছেন। ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এবং আলেম সমাজের বিরোধিতাকেও বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে বলে মনে করার কোনও কারণ দৃশ্যমান নয়।’
২০১৬ সালে জামায়াতে সংস্কারের প্রস্তাব এনেছিলেন প্রয়াত নেতা, রাজশাহী মহানগর আমির আতাউর রহমান। তিনি জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের শ্বশুর। ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আতাউর রহমানকে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমিরের পদ থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রকাশ হয় দলে। ওই সময় দলের গঠনতন্ত্র সংশোধিত হয়। জামায়াতের নেতাকর্মীরা বলছেন, আতাউর রহমানও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান ২০১০ সালে কারাগার থেকে নতুন কৌশল প্রণয়নের জন্য চিঠি দিলেও তা আমলে নেয়নি জামায়াতের নেতৃত্ব।
গত কয়েক বছর আগে দল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর মোজ্জাম্মেল হক। তিনি জামায়াতের ভেতরে সংস্কারের পক্ষে কাজ করলেও তা গৃহীত হয়নি। বর্তমানে তিনি নিজেই একটি নির্দিষ্ট পরিমণ্ডলে কাজ করছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত এক নেতার সন্তানের ভাষ্য, ‘জামায়াতে থেকে সংস্কার করা যাবে না। যারাই সংস্কার চেয়েছে, তাদেরকেই বেরিয়ে যেতে হয়েছে।’ তবে তার কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের বেরিয়ে যাওয়া কী নতুন কৌশল কিনা? জবাবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের একজন সদস্য বলছেন, ‘তার পদত্যাগ হঠাৎ করেই নয়।
প্রয়াত ওই নেতার ছেলের ভাষ্য, ‘হতে পারে। নতুন সংগঠনে যদি জামায়াতের নেতারাই যান, তাহলে তো ইস্যু একই থাকবে। সেক্ষেত্রে নতুন অবয়বে সংগঠন করতেই হয়তো এ সিদ্ধান্ত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ব্যারিস্টার রাজ্জাক সাহেবের পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি। আগে পুরো বিষয়টি আমি জেনে কথা বলতে পারবো।’
শুক্রবার দুপুরে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জামায়াত থেকে পদত্যাগ করে নতুন কোনও সংগঠনে যুক্ত হওয়ার কোনও ইচ্ছা আমার নেই।’ তার পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করলে তিনি এই প্রতিবেদকের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন। ব্যস্ততার কারণে তিনি স্বল্প সময় কথা বলেন।
ব্যারিস্টার রাজ্জাক তার পদত্যাগপত্রে ইস্তফার কারণসহ এও জানিয়েছেন যে, তিনি তার নিজের পেশায় আত্মনিয়োগ করবেন।
বাংলা ট্রিবিউনের প্রশ্ন ছিল—আপনি এমন সময়ে ইস্তফা দিয়েছেন, যে সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্যরা দলের নাম পরিবর্তন ও নতুন নামে ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন সংগঠন তৈরির সম্মতি জানিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আপনার পদত্যাগ কী সেই নতুন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার পূর্বলক্ষণ? জবাবে ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জামায়াত কী করবে কী করবে না, সেটা আমি বলতে পারবো না। পদত্যাগপত্রে বলেছি আমি আমার পেশায় যুক্ত থাকবো। নতুন কোনও সংগঠনে যুক্ত হচ্ছি না।’
আপনার পদত্যাগের পর জামায়াতের প্রতিক্রিয়া জেনেছেন কি? উত্তরে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি জামায়াতে ইসলামীতে ছিলাম। আজকে পদত্যাগপত্র দলের আমির মকবুল আহমাদের কাছে পাঠিয়েছি। আমি নিজে ফোনে কথা বলেছি তার সঙ্গে, দলের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সাহেবকে জানিয়েছি। আমরা বন্ধু ছিলাম। আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকবে আশা করি।’
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানে তিনি আব্দুর রাজ্জাকের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘তার পদত্যাগে আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। পদত্যাগ করা যেকোনও সদস্যের স্বীকৃত অধিকার। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আমরা আশা করি তার সঙ্গে আমাদের মহব্বতের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।’
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের কাছে শেষ প্রশ্ন ছিল—আপনি কী সহসা দেশে ফিরছেন? তিনি বললেন, ‘লন্ডনে আমি ভালো আছি। লন্ডনেই আপাতত প্র্যাক্টিস করছি।’
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ভূমিকা পালনের জন্য জামায়াতে ইসলামী থেকে কোনও নেতার সরাসরি পদত্যাগের ঘটনা এই প্রথম। ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক তার পদত্যাগপত্রে জানিয়েছেন— তিনি কয়েক দফায় জামায়াতকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দেন। ২০০১ সাল থেকে এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তার পরামর্শ অব্যাহত রাখেন। এরমধ্যে ২০০৭-০৮ সালে, ২০১১ সালে সর্বশেষ শুরার বৈঠকে, ২০১৬ সালের মার্চে, নভেম্বরে তিনি আমিরের কাছে লিখিতভাবে প্রস্তাব করেন।
জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের পরিবারের সদস্যদের অনেকে বলছেন, জামায়াতে সংস্কারের প্রস্তাব তুলে কোনও নেতাই দলে থাকতে পারেননি। তবে এবার ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ বড় ঘটনা। দলের অনেকেই এটাকে পরবর্তী নতুন সংগঠনের কৌশল হিসেবে দেখছেন। যদিও বিগত দিনে যারাই জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভূমিকা প্রসঙ্গে বা সংস্কার চেয়ে কথা বলেছেন, তাদের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
১৯৮২ সালে জামায়াতের অনুজ সংগঠন ছাত্রশিবিরের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদের। বর্তমানে ২০ দলীয় জোটের শরিক খেলাফত মজলিসের মহাসচিব তিনি। তার ভাষ্যে, ‘জামায়াতের ৭১ সালের ভূমিকা নিয়ে রিভিউ করেছিলাম। রিভিউ বলতে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা। প্রায় ২০/২৫টি প্রশ্ন ছিল আমাদের। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জামায়াতের অবস্থানের সিদ্ধান্ত জামায়াতের ফোরামে হয়নি। আমরা প্রশ্ন করেছিলাম, এ সিদ্ধান্ত কোথায় হয়েছে? কার সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৬ মার্চ পর্যন্ত জামায়াত শেখ মুজিবকে ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তাহলে এটা চাওয়া কীভাবে ঘুরে গেলো? আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, আপনারা ৭১ সালের এপ্রিলে যে বিবৃতি দিলেন, কোন সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে দিলেন? আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, আপনারা আলবদর বাহিনী গঠন করলেন, এটা কোথায় করলেন, কে এই সিদ্ধান্ত নিলেন? এসব জামায়াত পছন্দ করেনি। জামায়াত ভুল করেছে। জামায়াত নাম-ই থাকা উচিত ছিল না।’
ওই সময়ে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন ফরীদ আহমদ রেজা। বর্তমানে তিনি লন্ডনে প্রবাস জীবনযাপন করছেন। ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এবং আলেম সমাজের বিরোধিতাকেও বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে বলে মনে করার কোনও কারণ দৃশ্যমান নয়।’
২০১৬ সালে জামায়াতে সংস্কারের প্রস্তাব এনেছিলেন প্রয়াত নেতা, রাজশাহী মহানগর আমির আতাউর রহমান। তিনি জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুদের শ্বশুর। ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি আতাউর রহমানকে কেন্দ্রীয় নায়েবে আমিরের পদ থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত প্রকাশ হয় দলে। ওই সময় দলের গঠনতন্ত্র সংশোধিত হয়। জামায়াতের নেতাকর্মীরা বলছেন, আতাউর রহমানও মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান ২০১০ সালে কারাগার থেকে নতুন কৌশল প্রণয়নের জন্য চিঠি দিলেও তা আমলে নেয়নি জামায়াতের নেতৃত্ব।
গত কয়েক বছর আগে দল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর মোজ্জাম্মেল হক। তিনি জামায়াতের ভেতরে সংস্কারের পক্ষে কাজ করলেও তা গৃহীত হয়নি। বর্তমানে তিনি নিজেই একটি নির্দিষ্ট পরিমণ্ডলে কাজ করছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত এক নেতার সন্তানের ভাষ্য, ‘জামায়াতে থেকে সংস্কার করা যাবে না। যারাই সংস্কার চেয়েছে, তাদেরকেই বেরিয়ে যেতে হয়েছে।’ তবে তার কাছে প্রশ্ন ছিল, ‘ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের বেরিয়ে যাওয়া কী নতুন কৌশল কিনা? জবাবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের একজন সদস্য বলছেন, ‘তার পদত্যাগ হঠাৎ করেই নয়।
প্রয়াত ওই নেতার ছেলের ভাষ্য, ‘হতে পারে। নতুন সংগঠনে যদি জামায়াতের নেতারাই যান, তাহলে তো ইস্যু একই থাকবে। সেক্ষেত্রে নতুন অবয়বে সংগঠন করতেই হয়তো এ সিদ্ধান্ত।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি ব্যারিস্টার রাজ্জাক সাহেবের পদত্যাগের বিষয়টি শুনেছি। আগে পুরো বিষয়টি আমি জেনে কথা বলতে পারবো।’
No comments