ইয়াবা ব্যবসা: কাল আত্মসমর্পণ, বদিসহ অনেকের নাম নেই by শেখ সাবিহা আলম ও গিয়াসউদ্দিন
- • কাল আত্মসমর্পণ করছেন ১২০ জন ইয়াবা কারবারি।
- • উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
- • রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের নাম নেই তালিকায়।
- • ইতিমধ্যে এসব নেতাদের অনেকে গা ঢাকা দিয়েছেন।
কক্সবাজারে
বহুল আলোচিত ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান আগামীকাল শনিবার।
টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সকাল ১০টায় ১২০ জন ইয়াবা কারবারি
আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ছাড়াও
মন্ত্রণালয় ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুষ্ঠানে থাকার কথা রয়েছে।
তবে মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত, এমন রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের নাম নেই এই তালিকায়। ইতিমধ্যে তাঁদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া মাদক-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের পর কেবল বদলি ছাড়া অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আইন অনুযায়ী যখন ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার হবে, তখন নেওয়া হবে।
কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদির নামও আত্মসমর্পণের তালিকায় নেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৭৩ শীর্ষ মাদক কারবারির তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। যদিও ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণে তিনি ভূমিকা রেখেছেন বলে প্রচার আছে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণও পাননি তিনি।
গত বছরের ৪ মে থেকে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নেয়। পাশাপাশি দেশজুড়ে চলা ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে প্রায় ৩০০ ইয়াবা কারবারি নিহত হন। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় মারা গেছেন ৪৪ জন। গত ডিসেম্বর থেকে মাদক নির্মূলে ইয়াবা কারবারিদের ‘স্বাভাবিক জীবনে’ ফিরে আসা ও পুনর্বাসনে সরকার উদ্যোগ নেবে এমন ইঙ্গিত আসে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে আত্মসমর্পণের জন্য ইয়াবা কারবারিরা কক্সবাজার পুলিশ লাইনসে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৭৩ শীর্ষ মাদক কারবারির মধ্যে যাঁরা আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁদের মধ্যে আরও রয়েছেন আবদুর রহমান বদির ভাই টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ টেকনাফ উপজেলার সভাপতি মুজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মো. আলীর বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ও রাশেদ মোহাম্মদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাফর আহমদ ও তাঁর ছেলে টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ও তাঁর ছোট ভাই বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজ উদ্দিন, সাবেক জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কালাম, হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান ও হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ কে আনোয়ার ও সাবরাং ইউপি সদস্য ও শাহপরীর দ্বীপ সাংগঠনিক শাখা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম।
সর্বশেষ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের করা ১১৫১ জনের তালিকায় পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ ইকবালসহ দলটির সহযোগী সংগঠনের ২৩ জন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাফর আলমসহ দলটির ১৭ জন এবং জামায়াত নেতা ও টেকনাফ পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মো. ইসমাঈল আত্মসমর্পণ করেননি বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
আত্মসমর্পণকারীদের তালিকায় আবদুর রহমানের ৪ ভাইসহ অন্তত ১২ জন নিকটাত্মীয় রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযুক্ত সদস্যদের কী হবে?
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, ১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে মাদক-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে ৩৮৮ পুলিশের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে কনস্টেবল ২১৬ জন, নায়েক ১১ জন, সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ৮১ জন, ট্রাফিকের সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ৩ জন, সার্জেন্ট ১ জন, উপপরিদর্শক ৭৫ জন ও পরিদর্শক ১ জন। এই পুলিশ সদস্যদের কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার, সাময়িক বরখাস্ত ও বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার খবর পুলিশ সদর দপ্তরের কাছে নেই। যদিও গত বছর একাধিক ঘটনায় ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানায়, কাল সকালে কক্সবাজারে পুলিশের হেফাজতে থাকা প্রায় ১২০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে সড়কপথে টেকনাফের অনুষ্ঠানস্থলে আনা হবে। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ইয়াবা তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন কারবারিরা। এ সময় তাঁরা ইয়াবা ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করবেন। অনুষ্ঠান শেষে আত্মসমর্পণকারীদের পুনরায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।
তবে মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত, এমন রাজনৈতিক নেতাদের অনেকের নাম নেই এই তালিকায়। ইতিমধ্যে তাঁদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া মাদক-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের পর কেবল বদলি ছাড়া অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আইন অনুযায়ী যখন ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার হবে, তখন নেওয়া হবে।
কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদির নামও আত্মসমর্পণের তালিকায় নেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৭৩ শীর্ষ মাদক কারবারির তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। যদিও ইয়াবা কারবারিদের আত্মসমর্পণে তিনি ভূমিকা রেখেছেন বলে প্রচার আছে। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণও পাননি তিনি।
গত বছরের ৪ মে থেকে সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নেয়। পাশাপাশি দেশজুড়ে চলা ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে প্রায় ৩০০ ইয়াবা কারবারি নিহত হন। এর মধ্যে কক্সবাজার জেলায় মারা গেছেন ৪৪ জন। গত ডিসেম্বর থেকে মাদক নির্মূলে ইয়াবা কারবারিদের ‘স্বাভাবিক জীবনে’ ফিরে আসা ও পুনর্বাসনে সরকার উদ্যোগ নেবে এমন ইঙ্গিত আসে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে আত্মসমর্পণের জন্য ইয়াবা কারবারিরা কক্সবাজার পুলিশ লাইনসে আশ্রয় নিতে শুরু করেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ৭৩ শীর্ষ মাদক কারবারির মধ্যে যাঁরা আত্মসমর্পণ করেননি, তাঁদের মধ্যে আরও রয়েছেন আবদুর রহমান বদির ভাই টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ টেকনাফ উপজেলার সভাপতি মুজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মো. আলীর বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ ও রাশেদ মোহাম্মদ আলী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাফর আহমদ ও তাঁর ছেলে টেকনাফ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ও তাঁর ছোট ভাই বাহারছড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজ উদ্দিন, সাবেক জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবুল কালাম, হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান ও হ্নীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ কে আনোয়ার ও সাবরাং ইউপি সদস্য ও শাহপরীর দ্বীপ সাংগঠনিক শাখা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম।
সর্বশেষ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের করা ১১৫১ জনের তালিকায় পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ ইকবালসহ দলটির সহযোগী সংগঠনের ২৩ জন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাফর আলমসহ দলটির ১৭ জন এবং জামায়াত নেতা ও টেকনাফ পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র মো. ইসমাঈল আত্মসমর্পণ করেননি বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
আত্মসমর্পণকারীদের তালিকায় আবদুর রহমানের ৪ ভাইসহ অন্তত ১২ জন নিকটাত্মীয় রয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযুক্ত সদস্যদের কী হবে?
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে, ১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে মাদক-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে ৩৮৮ পুলিশের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে কনস্টেবল ২১৬ জন, নায়েক ১১ জন, সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ৮১ জন, ট্রাফিকের সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ৩ জন, সার্জেন্ট ১ জন, উপপরিদর্শক ৭৫ জন ও পরিদর্শক ১ জন। এই পুলিশ সদস্যদের কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার, সাময়িক বরখাস্ত ও বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার খবর পুলিশ সদর দপ্তরের কাছে নেই। যদিও গত বছর একাধিক ঘটনায় ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানায়, কাল সকালে কক্সবাজারে পুলিশের হেফাজতে থাকা প্রায় ১২০ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে সড়কপথে টেকনাফের অনুষ্ঠানস্থলে আনা হবে। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ইয়াবা তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন কারবারিরা। এ সময় তাঁরা ইয়াবা ব্যবসা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করবেন। অনুষ্ঠান শেষে আত্মসমর্পণকারীদের পুনরায় কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।
No comments