অন্ধ হয়ে গেলেন সিলেটের জাহেদ by ওয়েছ খছরু
নির্জন
এলাকা। বিদঘুটে অন্ধকার। সুরমার তীর। হাত-পা বাঁধা জাহেদ বার বার চিৎকার
করে বলছিলেন ভাই- ‘আমার হাত-পা ভেঙ্গে দিন। চোখ দুটো নিবেন না। আমি আর
দেখতো পারবো না।’ তার এই চিৎকারে মন গলেনি পাষণ্ড ছানু মিয়ার। নিজ হাতে
জাহেদের চোখে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে চুন ঢুকিয়ে দেয়। তীব্র যন্ত্রণা শুরু হয়
জাহেদের।
কিন্তু কারো কানে পৌঁছেনি তার আর্তনাদ। দু’চোখের যন্ত্রণায় এক সময় সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। হঠাৎ ঠাহর করেন- কেউ তার পায়ে আগুন দিয়েছে। আবার চিৎকার করে উঠেন। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করা জাহেদ এ সময় একটু পানি চান। কিন্তু তার মুখে তুলে দেয়া হয় চুন মেশানো পানি।
এমন ঘটনা ঘটেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জের নদী তীরবর্তী রুস্তুমপুর গ্রামে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত জাহেদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু চোখে দৃষ্টি ফেরাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ডাক্তাররা। বলেছেন- হয়তো জীবনের মতো অন্ধ হয়ে গেছে জাহেদ। গতকাল জাহেদের ভাই আল আমিন শেষবারের মতো ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডাক্তাররা চার দিনের চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকার চক্ষু হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন। সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাঘা এলাকার জাহেদের ওপর চলা নির্মম এ অত্যাচারের ঘটনায় গোটা উপজেলাজুড়ে চলছে ক্ষোভ।
পৌর মেয়র রাবেলসহ গুণীজনেরা সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ধিক্কার জানিয়েছেন। জাহেদের বাড়ি গোলাপগঞ্জের বাঘা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে। আর পাশের গ্রাম হচ্ছে জাহেদের ওপর নির্যাতনকারী ছানু মিয়ার। এ কারণে নগরীর আম্বরখানার সোনালী ব্যাংকের নিচতলায় ছানু মিয়ার মালিকানাধীন মাহি এক্সচেঞ্জে চাকরি করতো জাহেদ। প্রায় সময় টাকার বড় বড় চালান দিয়ে ছানু মিয়া জাহেদকে পাঠাতো এখানে-ওখানে। জাহেদও কোনো প্রশ্ন না করে চাকরির খাতিরে টাকা গন্তব্যে পৌঁছে দিতো। ৪ মাস আগে সিলেট নগরীর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন জাহেদ। সশস্ত্র ছিনতাইকারীরা জাহেদের কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এরপর থেকে ছানুর সঙ্গে জাহেদের বিরোধ বাধে। জাহেদ জানতে পারেন- ছানু তাকে দিয়ে হুন্ডি ব্যবসা করাতো। আর যে টাকাগুলো ছিনতাইকারীরা নিয়ে গেছে সেই টাকা ছিল হুন্ডির। এরপর থেকে জাহেদ চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে আসেন।
ছানু মিয়া গত ৯ই ফেব্রুয়ারি রাতে তার এক আত্মীয় জুবেরকে জাহেদের বাড়ি পাঠায়। জাহেদকে ছানুর বাড়িতে জরুরি প্রয়োজনে আসতে বলেন। কথা মতো রাত ৯টার দিকে জুবেরের সঙ্গে ছানু মিয়ার রুস্তুমপুরের বাড়িতে যান জাহেদ। বাড়ি আসার পর ছানু মিয়াসহ কয়েকজন অজ্ঞাত যুবক জাহেদ ও জুবেরের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর তারা জাহেদকে নিয়ে যায় সুরমা নদীর তীরে নির্জন স্থানে। ওখানে নিয়ে যাওয়ার পর ছানু তার আগের কর্মচারী জাহেদকে জুবেরের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য বলে। জানায়- সে সাক্ষ্য দেবে জুবেরই তার টাকা ছিনতাই করেছে। এতে রাজি হয়নি জাহেদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছানু মিয়া। সে প্রথমে মারধর করে জাহেদকে। পাশাপাশি জাহেদের গায়ে থাকা সুয়েটার দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি জাহেদের বুকের ওপর উঠে মাথা শক্ত করে ধরে রাখে। আর ছানু মিয়া হাত দিয়ে চুন মাখিয়ে দেয় চোখের ভেতর। চুন মেশানো পানিও খাওয়ানো হয় জাহেদকে। ঘটনার পর ছানুসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে ধরাধরি করে ছানুর বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। ওখানে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে।
পরে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিয়ে লোকজনকে জড়ো করে। গ্রামের লোকজন ছানু ও জাহেদকে স্থানীয় বাঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যান। চেয়ারম্যান পুলিশ ডেকে জাহেদ ও ছানুকে তুলে দেন। পুলিশ জাহেদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চতুর্থ তলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করে। জাহেদের পিতা বাছন মিয়ার দায়ের করা মামলায় ছানু মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। এদিকে- ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা চার দিন চিকিৎসা হয় জাহেদের। যন্ত্রণা কমলেও চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেছে জাহেদ। এই দৃষ্টি আর ফিরবে কী না- এ নিয়ে সন্দিহান ওসমানীর ডাক্তাররা। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য জাহেদকে ঢাকায় রেফার্ড করেছেন। আজ-কালের মধ্যে জাহেদকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার ভাই মো. আল আমিন আহমদ। তিনি জানান- সিলেটের ডাক্তার জাহেদের চোখে দৃষ্টি ফেরাতে পারেননি। ঢাকায় নেয়ার পর আবার চিকিৎসা শুরু করা হবে। তবে- জাহেদের চোখে দৃষ্টি ফিরে আসার সম্ভাবনা কম বলে ডাক্তাররা মত দিয়েছেন।
জাহেদকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও চোখে চুন ঢেলে অন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছানু মিয়ার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল ছানু মিয়াকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাকন দের আদালতে হাজির করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়- ছানু মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যাবে। এদিকে- গোলাপগঞ্জে নিরীহ যুবক জাহেদ আহমদের ওপর নির্যাতন ও চোখ নষ্ট করার প্রতিবাদে সর্বস্তরের জনতার উদ্যোগে দক্ষিণ বাঘা বটর তল বাজারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঘা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজসেবী হাবিবুর রহমান হাবিবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন গোলাপগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আবদুল আহাদ, কাপ্তাই সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন, বাঘা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল কাদির সেলিম, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি সেলিম আহমদ প্রমুখ। দরিদ্র পরিবারের সন্তান জাহেদ আহমদকে অমানুষিক নির্যাতন ও চোখে চুন দিয়ে দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নেয়ার বিষয়টি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এর আগে গত বুধবার গোলাপগঞ্জের পৌর মেয়র রাবেল আহমদসহ সুধীজনেরা সংবাদ সম্মেলন করে বর্বরোচিত এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
জাহেদের পাশে মানবাধিকার কমিশন: সন্ত্রাসী হামলায় আহত জাহেদ আহমদকে দেখতে যান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ। বিকালে নেতৃবৃন্দ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহেদকে দেখতে যান ও চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, অমানবিক এই নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে জাহেদ আহমদের পাশে থাকবেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সদর দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারুক আহমদ শিমুল, সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও মহানগর সভাপতি আবদুল মান্নান, সিলেট জেলার সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন, মহানগরের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন, জেলা শাখার অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রুবেল আহমদ মাসুম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এনামুল হক এনাম প্রমুখ।
কিন্তু কারো কানে পৌঁছেনি তার আর্তনাদ। দু’চোখের যন্ত্রণায় এক সময় সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। হঠাৎ ঠাহর করেন- কেউ তার পায়ে আগুন দিয়েছে। আবার চিৎকার করে উঠেন। তীব্র যন্ত্রণায় ছটফট করা জাহেদ এ সময় একটু পানি চান। কিন্তু তার মুখে তুলে দেয়া হয় চুন মেশানো পানি।
এমন ঘটনা ঘটেছে সিলেটের গোলাপগঞ্জের নদী তীরবর্তী রুস্তুমপুর গ্রামে। এই ঘটনায় গুরুতর আহত জাহেদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু চোখে দৃষ্টি ফেরাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ডাক্তাররা। বলেছেন- হয়তো জীবনের মতো অন্ধ হয়ে গেছে জাহেদ। গতকাল জাহেদের ভাই আল আমিন শেষবারের মতো ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ডাক্তাররা চার দিনের চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকার চক্ষু হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন। সিলেটের গোলাপগঞ্জের বাঘা এলাকার জাহেদের ওপর চলা নির্মম এ অত্যাচারের ঘটনায় গোটা উপজেলাজুড়ে চলছে ক্ষোভ।
পৌর মেয়র রাবেলসহ গুণীজনেরা সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ধিক্কার জানিয়েছেন। জাহেদের বাড়ি গোলাপগঞ্জের বাঘা ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে। আর পাশের গ্রাম হচ্ছে জাহেদের ওপর নির্যাতনকারী ছানু মিয়ার। এ কারণে নগরীর আম্বরখানার সোনালী ব্যাংকের নিচতলায় ছানু মিয়ার মালিকানাধীন মাহি এক্সচেঞ্জে চাকরি করতো জাহেদ। প্রায় সময় টাকার বড় বড় চালান দিয়ে ছানু মিয়া জাহেদকে পাঠাতো এখানে-ওখানে। জাহেদও কোনো প্রশ্ন না করে চাকরির খাতিরে টাকা গন্তব্যে পৌঁছে দিতো। ৪ মাস আগে সিলেট নগরীর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন জাহেদ। সশস্ত্র ছিনতাইকারীরা জাহেদের কাছ থেকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এরপর থেকে ছানুর সঙ্গে জাহেদের বিরোধ বাধে। জাহেদ জানতে পারেন- ছানু তাকে দিয়ে হুন্ডি ব্যবসা করাতো। আর যে টাকাগুলো ছিনতাইকারীরা নিয়ে গেছে সেই টাকা ছিল হুন্ডির। এরপর থেকে জাহেদ চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়ি চলে আসেন।
ছানু মিয়া গত ৯ই ফেব্রুয়ারি রাতে তার এক আত্মীয় জুবেরকে জাহেদের বাড়ি পাঠায়। জাহেদকে ছানুর বাড়িতে জরুরি প্রয়োজনে আসতে বলেন। কথা মতো রাত ৯টার দিকে জুবেরের সঙ্গে ছানু মিয়ার রুস্তুমপুরের বাড়িতে যান জাহেদ। বাড়ি আসার পর ছানু মিয়াসহ কয়েকজন অজ্ঞাত যুবক জাহেদ ও জুবেরের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর তারা জাহেদকে নিয়ে যায় সুরমা নদীর তীরে নির্জন স্থানে। ওখানে নিয়ে যাওয়ার পর ছানু তার আগের কর্মচারী জাহেদকে জুবেরের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার জন্য বলে। জানায়- সে সাক্ষ্য দেবে জুবেরই তার টাকা ছিনতাই করেছে। এতে রাজি হয়নি জাহেদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছানু মিয়া। সে প্রথমে মারধর করে জাহেদকে। পাশাপাশি জাহেদের গায়ে থাকা সুয়েটার দিয়ে মুখ বেঁধে ফেলে। একপর্যায়ে অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি জাহেদের বুকের ওপর উঠে মাথা শক্ত করে ধরে রাখে। আর ছানু মিয়া হাত দিয়ে চুন মাখিয়ে দেয় চোখের ভেতর। চুন মেশানো পানিও খাওয়ানো হয় জাহেদকে। ঘটনার পর ছানুসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে ধরাধরি করে ছানুর বাড়ির পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। ওখানে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে।
পরে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিয়ে লোকজনকে জড়ো করে। গ্রামের লোকজন ছানু ও জাহেদকে স্থানীয় বাঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে নিয়ে যান। চেয়ারম্যান পুলিশ ডেকে জাহেদ ও ছানুকে তুলে দেন। পুলিশ জাহেদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের চতুর্থ তলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করে। জাহেদের পিতা বাছন মিয়ার দায়ের করা মামলায় ছানু মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। এদিকে- ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টানা চার দিন চিকিৎসা হয় জাহেদের। যন্ত্রণা কমলেও চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেছে জাহেদ। এই দৃষ্টি আর ফিরবে কী না- এ নিয়ে সন্দিহান ওসমানীর ডাক্তাররা। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য জাহেদকে ঢাকায় রেফার্ড করেছেন। আজ-কালের মধ্যে জাহেদকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তার ভাই মো. আল আমিন আহমদ। তিনি জানান- সিলেটের ডাক্তার জাহেদের চোখে দৃষ্টি ফেরাতে পারেননি। ঢাকায় নেয়ার পর আবার চিকিৎসা শুরু করা হবে। তবে- জাহেদের চোখে দৃষ্টি ফিরে আসার সম্ভাবনা কম বলে ডাক্তাররা মত দিয়েছেন।
জাহেদকে তুলে নিয়ে নির্যাতন ও চোখে চুন ঢেলে অন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার ছানু মিয়ার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। গতকাল ছানু মিয়াকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাকন দের আদালতে হাজির করে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়- ছানু মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যাবে। এদিকে- গোলাপগঞ্জে নিরীহ যুবক জাহেদ আহমদের ওপর নির্যাতন ও চোখ নষ্ট করার প্রতিবাদে সর্বস্তরের জনতার উদ্যোগে দক্ষিণ বাঘা বটর তল বাজারে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঘা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও তরুণ সমাজসেবী হাবিবুর রহমান হাবিবের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন গোলাপগঞ্জ প্রেস ক্লাব সভাপতি আবদুল আহাদ, কাপ্তাই সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন, বাঘা ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল কাদির সেলিম, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সেক্রেটারি সেলিম আহমদ প্রমুখ। দরিদ্র পরিবারের সন্তান জাহেদ আহমদকে অমানুষিক নির্যাতন ও চোখে চুন দিয়ে দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নেয়ার বিষয়টি মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এর আগে গত বুধবার গোলাপগঞ্জের পৌর মেয়র রাবেল আহমদসহ সুধীজনেরা সংবাদ সম্মেলন করে বর্বরোচিত এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।
জাহেদের পাশে মানবাধিকার কমিশন: সন্ত্রাসী হামলায় আহত জাহেদ আহমদকে দেখতে যান বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ। বিকালে নেতৃবৃন্দ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহেদকে দেখতে যান ও চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, অমানবিক এই নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে জাহেদ আহমদের পাশে থাকবেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সদর দপ্তরের বিশেষ প্রতিনিধি ফারুক আহমদ শিমুল, সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক সমন্বয়কারী ও মহানগর সভাপতি আবদুল মান্নান, সিলেট জেলার সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন, মহানগরের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন, জেলা শাখার অনুসন্ধান ও পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রুবেল আহমদ মাসুম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এনামুল হক এনাম প্রমুখ।
No comments