১০৮ কোটি টাকার জমি নিয়ে জালিয়াতি by দীন ইসলাম
জাতীয়
গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ৩০৮ কাঠা জমি। বাজার মূল্য ১০৮ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের
ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেটের উচ্চ মূল্যের এ জমি জালিয়াতির মাধ্যমে ২৮
ব্যক্তির নামে রেকর্ড করে দেয়া হয়েছে। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছে শক্তিশালী
সিন্ডিকেট। জেলা প্রশাসন থেকে জমি বন্দোবস্ত এবং রেকর্ড সব কিছুই হয়েছে
টর্নেডো গতিতে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি এর
দালিলিক প্রমাণ পেয়েছে। এ কমিটি তাদের রিপোর্টে শত কোটি টাকার জমি নিয়ে
ভয়ঙ্কর জালিয়াতির তথ্য বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছে। রিপোর্টে তারা জমি
বেহাতের জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ
নন্দীকে (বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী গণপূর্ত অধিদপ্তর) দায়ী করেছেন।
এজন্য তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি মর্মে মত দিয়েছেন তারা।
পাশাপাশি তদন্ত কমিটি চট্টগ্রাম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার মোর্শেদের বিরুদ্ধে মূল নথি গোপন, কমিটির চাহিদামতো কাগজপত্র সরবরাহ না করা এবং তদন্ত কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর সুপারিশ করে বলা হয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের রেকর্ডীয় ৪ নং খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে ২৮ জন ব্যক্তির নামে বন্দোবস্ত দেয়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রিপোর্টে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও সার্কেলের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মশিউর রহমান ও এ কে এম রেজাউর রহমানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী’র কাছে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন শোনার পরই চুপ মেরে যান। তিন মিনিট ধরে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোনে কথা বলেননি। চট্টগ্রাম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার মোর্শেদকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিষয়টি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১৯৫তম বোর্ড সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য উঠানো হয়। ওই সভায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম ডিভিশনের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) ওম প্রকাশ নন্দীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দায়ী অন্যদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠানো হবে। এদিকে নিজের জালিয়াতির এসব তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ায় এখন নিজের স্বাক্ষরকেও অস্বীকার করছেন ওম প্রকাশ নন্দী। আবোল তাবোল বকছেন তিনি। তদন্ত কমিটির কাছে সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী ছাড়পত্র প্রদান প্রসঙ্গে বলেন, ছাড়পত্রে আমি স্বাক্ষর করিনি। এ বিষয়ে অফিস সহকারী সুব্রত বড়ুয়া ও বাবুল হোসেন বিশ্বাস তদন্ত কমিটির কাছে তাদের বক্তব্যে জানান, ছাড়পত্রের চিঠিতে ওম প্রকাশ নন্দী স্বাক্ষর করেছেন। তারা জানান, জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য সার্ভেয়ার নিজেই একটি খসড়া পত্র তৈরি করে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে উপস্থাপন করেন। ওই পত্রের খসড়া টাইপ করেন সাবেক কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রেজা চৌধুরী। পরিচ্ছন্ন কপি নথিতে নোট আকারে উপস্থাপন করা হয়। ৫ দশমিক ১৩ একর জমি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নয় মর্মে এনওসি দেয়া হয়েছিল। যেহেতু নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে পরিচ্ছন্ন কপি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে তাই তিনি হেড ক্লার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকায় পত্রের নিচে স্বাক্ষর করেন। অর্থাৎ পত্রটি সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দীই স্বাক্ষর করেছেন মর্মে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফিরোজশাহ হাউজিং এস্টেটের জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১২৬ দশমিক ১৩ একর অধিগ্রহণকৃত জমি রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নামে ১০৬ দশমিক ৯৪ একর জমি রেকর্ডভুক্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের রেকর্ডকৃত জমি থেকেই ২৮ জনের নামে ৫ দশমিক ১৩ একর বা ৩০৮ কাঠা জমি বরাদ্দ দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। তবে জমিটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত থাকায় ২০০৯ সাল পর্যন্ত জমিটি নামজারি করতে পারেনি জেলা প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দকৃতরা। এ জন্য ওই বছর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে ৫ দশমিক ১৩ একর জমি রেকর্ডের বিষয়ে মতামত জানতে চায়। ২০০৯ সালের ২৭শে জুলাই জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী এক চিঠিতে জানান, নতুন মনসুরাবাদ জমি অধিগ্রহণজনিত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও ১৫৯/৪৯-৫০ নং এল, এ কেসের জমি দখল হস্তান্তরকারীদের আরএস,পিএস ও বিএস দাগগুলোর আলোকে ৪ নং খতিয়ান গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হাউজিং নাম থেকে অবমুক্ত করা যেতে পারে। সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলীর মতামতের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নতুন খতিয়ান সৃষ্টি এবং কর আদায়ের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে নির্দেশনা দেন। ওই অনুযায়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২৮ জন বরাদ্দ গ্রহীতার নামে নামজারি করে দেন। এরপরই জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১০৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায়।
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ দশমিক ১৩ একর বা ৩০৮ কাঠা জমি কোন খাস খতিয়ানভুক্ত জমি নয়। এরপরও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নামে রেকর্ড করা জমি জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বরাদ্দ দেয়ার এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের নেই। জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ পাওয়া ২৮ জন তদন্ত কমিটিকে জানায়, আগ্রাবাদ সিএসডি গোডাউন করার জন্য তাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য তারা ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ৫ দশমিক ১৩ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছেন। তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, সিএসডি গোডাউন নির্মাণের সঙ্গে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। জেলা প্রশাসক কোনো ক্ষতিগ্রস্তকে পুনর্বাসন হিসেবে জমি দিতে চাইলে তা তার আওতাধীন ১ নং খতিয়ানভুক্ত জমি থেকে দিতে পারেন। কিন্তু জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পত্তি জেলা প্রশাসক বরাদ্দ দিতে পারেন না। এজন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী কর্তৃক জারি করা অনাপত্তি পত্র বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এজন্য তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি মর্মে মত দিয়েছেন তারা।
পাশাপাশি তদন্ত কমিটি চট্টগ্রাম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার মোর্শেদের বিরুদ্ধে মূল নথি গোপন, কমিটির চাহিদামতো কাগজপত্র সরবরাহ না করা এবং তদন্ত কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ এনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রামের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর সুপারিশ করে বলা হয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের রেকর্ডীয় ৪ নং খতিয়ানভুক্ত সম্পত্তি অবৈধভাবে ২৮ জন ব্যক্তির নামে বন্দোবস্ত দেয়ায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রিপোর্টে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও সার্কেলের সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ মশিউর রহমান ও এ কে এম রেজাউর রহমানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী’র কাছে মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্ন শোনার পরই চুপ মেরে যান। তিন মিনিট ধরে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোনে কথা বলেননি। চট্টগ্রাম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার মোর্শেদকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিষয়টি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১৯৫তম বোর্ড সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য উঠানো হয়। ওই সভায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম ডিভিশনের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) ওম প্রকাশ নন্দীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দায়ী অন্যদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এজন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে চিঠি পাঠানো হবে। এদিকে নিজের জালিয়াতির এসব তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়ায় এখন নিজের স্বাক্ষরকেও অস্বীকার করছেন ওম প্রকাশ নন্দী। আবোল তাবোল বকছেন তিনি। তদন্ত কমিটির কাছে সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী ছাড়পত্র প্রদান প্রসঙ্গে বলেন, ছাড়পত্রে আমি স্বাক্ষর করিনি। এ বিষয়ে অফিস সহকারী সুব্রত বড়ুয়া ও বাবুল হোসেন বিশ্বাস তদন্ত কমিটির কাছে তাদের বক্তব্যে জানান, ছাড়পত্রের চিঠিতে ওম প্রকাশ নন্দী স্বাক্ষর করেছেন। তারা জানান, জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য সার্ভেয়ার নিজেই একটি খসড়া পত্র তৈরি করে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে উপস্থাপন করেন। ওই পত্রের খসড়া টাইপ করেন সাবেক কম্পিউটার অপারেটর সোহেল রেজা চৌধুরী। পরিচ্ছন্ন কপি নথিতে নোট আকারে উপস্থাপন করা হয়। ৫ দশমিক ১৩ একর জমি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নয় মর্মে এনওসি দেয়া হয়েছিল। যেহেতু নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে পরিচ্ছন্ন কপি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে তাই তিনি হেড ক্লার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত থাকায় পত্রের নিচে স্বাক্ষর করেন। অর্থাৎ পত্রটি সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দীই স্বাক্ষর করেছেন মর্মে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ফিরোজশাহ হাউজিং এস্টেটের জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১২৬ দশমিক ১৩ একর অধিগ্রহণকৃত জমি রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নামে ১০৬ দশমিক ৯৪ একর জমি রেকর্ডভুক্ত হয়। মন্ত্রণালয়ের রেকর্ডকৃত জমি থেকেই ২৮ জনের নামে ৫ দশমিক ১৩ একর বা ৩০৮ কাঠা জমি বরাদ্দ দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। তবে জমিটি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নামে রেকর্ডভুক্ত থাকায় ২০০৯ সাল পর্যন্ত জমিটি নামজারি করতে পারেনি জেলা প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দকৃতরা। এ জন্য ওই বছর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে ৫ দশমিক ১৩ একর জমি রেকর্ডের বিষয়ে মতামত জানতে চায়। ২০০৯ সালের ২৭শে জুলাই জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী এক চিঠিতে জানান, নতুন মনসুরাবাদ জমি অধিগ্রহণজনিত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা ও ১৫৯/৪৯-৫০ নং এল, এ কেসের জমি দখল হস্তান্তরকারীদের আরএস,পিএস ও বিএস দাগগুলোর আলোকে ৪ নং খতিয়ান গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হাউজিং নাম থেকে অবমুক্ত করা যেতে পারে। সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলীর মতামতের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নতুন খতিয়ান সৃষ্টি এবং কর আদায়ের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে নির্দেশনা দেন। ওই অনুযায়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ২৮ জন বরাদ্দ গ্রহীতার নামে নামজারি করে দেন। এরপরই জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১০৮ কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত হয়ে যায়।
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ দশমিক ১৩ একর বা ৩০৮ কাঠা জমি কোন খাস খতিয়ানভুক্ত জমি নয়। এরপরও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নামে রেকর্ড করা জমি জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ বরাদ্দ দেয়ার এখতিয়ার জেলা প্রশাসনের নেই। জেলা প্রশাসন থেকে বরাদ্দ পাওয়া ২৮ জন তদন্ত কমিটিকে জানায়, আগ্রাবাদ সিএসডি গোডাউন করার জন্য তাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য তারা ক্ষতিগ্রস্ত হিসেবে ৫ দশমিক ১৩ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছেন। তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টে বলেছে, সিএসডি গোডাউন নির্মাণের সঙ্গে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। জেলা প্রশাসক কোনো ক্ষতিগ্রস্তকে পুনর্বাসন হিসেবে জমি দিতে চাইলে তা তার আওতাধীন ১ নং খতিয়ানভুক্ত জমি থেকে দিতে পারেন। কিন্তু জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পত্তি জেলা প্রশাসক বরাদ্দ দিতে পারেন না। এজন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সভায় জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী কর্তৃক জারি করা অনাপত্তি পত্র বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
No comments