ইতিহাসের পাতা থেকে কখনই হারাবে না পারস্য উপসাগরের নাম
গত
৩০ এপ্রিল ইরানে পালিত হয়েছে 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস'। ১৬২২
খ্রিস্টাব্দের ৩০ এপ্রিল তৎকালীন উপনিবেশবাদী শক্তি পর্তুগালকে পারস্য
উপসাগর থেকে বহিষ্কার করেছিল সে সময়কার ইরান সরকার। সে উপলক্ষে ইরানের
ফার্সি ক্যালেন্ডারে এ দিবসের নাম করণ করা হয়েছে 'জাতীয় পারস্য উপসাগর
দিবস'।
ইরানের ফার্সি ক্যালেন্ডার বা বর্ষপঞ্জিতে বহু ঐতিহাসিক দিবস স্থান পেয়েছে। কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতায় 'জাতীয় পারস্য উপসাগর' নামক বিশেষ দিবস স্থান পাওয়ার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। 'পারস্য উপসাগর' নামটি ইরানসহ গোটা এই অঞ্চলে হাজার হাজার বছর ধরে একটি সুপরিচিত ও ঐতিহাসিক নাম। কিন্তু ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর লক্ষ্য করা গেছে বিদেশিরা ঐতিহাসিক এই নামকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করার জন্য ইংরেজি ৩০ এপ্রিল মোতাবেক ফার্সি ১০ উর্দিবেহেশকে 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস' হিসেবে নাম করণ করে ইরানের সাংস্কৃতিক বিপ্লবী উচ্চতর পরিষদ। পারস্য উপসাগর চারটি মহাসাগরের অংশ। প্রাচীন গ্রিকরা মনে করতেন, পারস্য উপসাগর সব মহাসাগরের মিলন কেন্দ্র এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ এই উন্মুক্ত পানি পথকে 'ফার্স' নামে চিনতো। বর্তমানে পারস্য উপসাগর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তেল সরবরাহের সবচেয়ে বড় ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে পরিচিত।
অতীতের বিভিন্ন দলিল দস্তাবেজ, চুক্তিনামা ও গ্রন্থ ঘাঁটলে দেখা যায় সারা বিশ্বের জাতিগুলোর কাছে এই সাগর "পারস্য উপসাগর" নামেই পরিচিত। পারস্য উপসাগর বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট লেখক মোহাম্মদ আজেম এই সাগর ও এর উপকূলীয় অঞ্চলের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, "সেই প্রাচীন কাল থেকেই আর্থ-রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের কাছে পারস্য উপসাগরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।" তিনি বলেন, "আরবি ভাষায় বহু পুরাতন যেসব দলিলপত্র লেখা হয়েছে তাতে পারস্য উপসাগরের নাম লেখা রয়েছে 'খালিজুল ফার্স' অর্থাৎ ফার্সি ভাষায় 'খালিজে ফার্স' বাংলায় যাকে বলা হয় 'পারস্য উপসাগর'। জাতিসংঘের ১১টি সনদেও পারস্য উপসাগরের নাম উল্লেখ রয়েছে।"
প্রাচীন পারস্য সাম্রাজ্যের ইতিহাস ও ভূখণ্ডের সঙ্গে পারস্য উপসাগরের নাম জড়িয়ে আছে। এই নামই এখানকার সভ্যতা ও ঐতিহ্যের পরিচয় তুলে ধরে। খালিজে ফার্স অর্থাৎ 'পারস্য উপসাগর' ছাড়া অন্য কোনো শব্দের ব্যবহার ইতিহাসকে অস্বীকার করার শামিল এবং এর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। বহু প্রাচীন কাল থেকেই পারস্য উপসাগর গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর ও ব্যবসায়ীক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেলেও শত শত বছর ধরে এর ব্যাপক রাজনৈতিক গুরুত্বও ছিল। বর্তমানেও সারা বিশ্বে পানি পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের বিরাট গুরুত্ব রয়েছে এবং সেইসঙ্গে রাজনৈতিক গুরুত্ব বহুগুণে বেড়েছে। পারস্য উপসাগরের ভৌগোলিক গুরুত্বের কারণে এটি বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। হরমুজ প্রণালী ও পারস্য উপসাগর অঞ্চলে ১৫০ বছর ধরে পর্তুগিজদের উপনিবেশ বজায় ছিল এবং ১৬২২ সালের ৩০ এপ্রিল তাদের উপনিবেশের অবসান ঘটে। ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্য দলিল-প্রমাণ অনুযায়ী পারস্য উপসাগর সবসময়ই ইরানের অংশ ছিল।
আড়াই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে বর্তমান ইরানে হাখামানেশিয় শাসনামলে এই সাগরকে দরিয়ায়ে পার্সা অথবা দরিয়ায়ে পার্স নামে অভিহিত করা হত। খ্রিস্টপূর্ব গ্রিসের হেরোডেটাস ও গাযানফুনের মতো ইতিহাসবিদরা এই সমুদ্রকে দরিয়ায়ে পার্সে নামে অভিহিত করেছেন। আরব ও মুসলিম গবেষকরাও তাদের বিভিন্ন লেখনীতে এই সাগরকে আল বাহার উল ফার্সি এবং আল খালিজ উল ফার্সি নামে অভিহিত করেছেন। এতোসব ঐতিহাসিক দলিল প্রমাণ থাকা সত্বেও গত প্রায় ৬০ এর দশক থেকে বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল এ অঞ্চলের রাজতন্ত্র শাসিত কোনো কোনো আরব দেশ পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। অবশ্য এ চেষ্টার পেছনে বিজাতীয়দের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে। তারা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের জাতিগত ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিকৃতি ঘটিয়ে এ অঞ্চলের জাতিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে এ অঞ্চলের কোনো কোনো দেশ বিজাতীয়দের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে তাদের রাজনৈতিক খেলার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
ইরানের ফার্সি ক্যালেন্ডার বা বর্ষপঞ্জিতে বহু ঐতিহাসিক দিবস স্থান পেয়েছে। কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতায় 'জাতীয় পারস্য উপসাগর' নামক বিশেষ দিবস স্থান পাওয়ার আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। 'পারস্য উপসাগর' নামটি ইরানসহ গোটা এই অঞ্চলে হাজার হাজার বছর ধরে একটি সুপরিচিত ও ঐতিহাসিক নাম। কিন্তু ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর লক্ষ্য করা গেছে বিদেশিরা ঐতিহাসিক এই নামকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দেয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ওই ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করার জন্য ইংরেজি ৩০ এপ্রিল মোতাবেক ফার্সি ১০ উর্দিবেহেশকে 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস' হিসেবে নাম করণ করে ইরানের সাংস্কৃতিক বিপ্লবী উচ্চতর পরিষদ। পারস্য উপসাগর চারটি মহাসাগরের অংশ। প্রাচীন গ্রিকরা মনে করতেন, পারস্য উপসাগর সব মহাসাগরের মিলন কেন্দ্র এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ এই উন্মুক্ত পানি পথকে 'ফার্স' নামে চিনতো। বর্তমানে পারস্য উপসাগর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তেল সরবরাহের সবচেয়ে বড় ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে পরিচিত।
অতীতের বিভিন্ন দলিল দস্তাবেজ, চুক্তিনামা ও গ্রন্থ ঘাঁটলে দেখা যায় সারা বিশ্বের জাতিগুলোর কাছে এই সাগর "পারস্য উপসাগর" নামেই পরিচিত। পারস্য উপসাগর বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট লেখক মোহাম্মদ আজেম এই সাগর ও এর উপকূলীয় অঞ্চলের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, "সেই প্রাচীন কাল থেকেই আর্থ-রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের কাছে পারস্য উপসাগরের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।" তিনি বলেন, "আরবি ভাষায় বহু পুরাতন যেসব দলিলপত্র লেখা হয়েছে তাতে পারস্য উপসাগরের নাম লেখা রয়েছে 'খালিজুল ফার্স' অর্থাৎ ফার্সি ভাষায় 'খালিজে ফার্স' বাংলায় যাকে বলা হয় 'পারস্য উপসাগর'। জাতিসংঘের ১১টি সনদেও পারস্য উপসাগরের নাম উল্লেখ রয়েছে।"
প্রাচীন পারস্য সাম্রাজ্যের ইতিহাস ও ভূখণ্ডের সঙ্গে পারস্য উপসাগরের নাম জড়িয়ে আছে। এই নামই এখানকার সভ্যতা ও ঐতিহ্যের পরিচয় তুলে ধরে। খালিজে ফার্স অর্থাৎ 'পারস্য উপসাগর' ছাড়া অন্য কোনো শব্দের ব্যবহার ইতিহাসকে অস্বীকার করার শামিল এবং এর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। বহু প্রাচীন কাল থেকেই পারস্য উপসাগর গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর ও ব্যবসায়ীক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেলেও শত শত বছর ধরে এর ব্যাপক রাজনৈতিক গুরুত্বও ছিল। বর্তমানেও সারা বিশ্বে পানি পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের বিরাট গুরুত্ব রয়েছে এবং সেইসঙ্গে রাজনৈতিক গুরুত্ব বহুগুণে বেড়েছে। পারস্য উপসাগরের ভৌগোলিক গুরুত্বের কারণে এটি বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। হরমুজ প্রণালী ও পারস্য উপসাগর অঞ্চলে ১৫০ বছর ধরে পর্তুগিজদের উপনিবেশ বজায় ছিল এবং ১৬২২ সালের ৩০ এপ্রিল তাদের উপনিবেশের অবসান ঘটে। ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্য দলিল-প্রমাণ অনুযায়ী পারস্য উপসাগর সবসময়ই ইরানের অংশ ছিল।
আড়াই হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে বর্তমান ইরানে হাখামানেশিয় শাসনামলে এই সাগরকে দরিয়ায়ে পার্সা অথবা দরিয়ায়ে পার্স নামে অভিহিত করা হত। খ্রিস্টপূর্ব গ্রিসের হেরোডেটাস ও গাযানফুনের মতো ইতিহাসবিদরা এই সমুদ্রকে দরিয়ায়ে পার্সে নামে অভিহিত করেছেন। আরব ও মুসলিম গবেষকরাও তাদের বিভিন্ন লেখনীতে এই সাগরকে আল বাহার উল ফার্সি এবং আল খালিজ উল ফার্সি নামে অভিহিত করেছেন। এতোসব ঐতিহাসিক দলিল প্রমাণ থাকা সত্বেও গত প্রায় ৬০ এর দশক থেকে বিদেশিদের ওপর নির্ভরশীল এ অঞ্চলের রাজতন্ত্র শাসিত কোনো কোনো আরব দেশ পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। অবশ্য এ চেষ্টার পেছনে বিজাতীয়দের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে। তারা পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের জাতিগত ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিকৃতি ঘটিয়ে এ অঞ্চলের জাতিগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। দুঃখজনকভাবে এ অঞ্চলের কোনো কোনো দেশ বিজাতীয়দের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে তাদের রাজনৈতিক খেলার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
পারস্য উপসাগরের পুরাতন মানচিত্র |
পারস্য
উপসাগরের পুরাতন মানচিত্র লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সেখানেও 'খালিজে ফার্স'
শব্দ লেখা আছে যার অর্থ পারস্য উপসাগর। জাতিসংঘের সচিবালয় থেকে প্রকাশিত এ
পর্যন্ত পৃথক দু'টি সদনে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় বিশাল এলাকাকে পারস্য
উপসাগরীয় অঞ্চল বলে অভিহিত করা হয়েছে। ১৯৮৪ সালের আগস্টে এ বিষয়ে একটি
প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং জাতিসংঘের সনদ হিসেবে ২২টি আরব দেশ তাতে সই করে। এ
ছাড়া, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ভৌগোলিক এলাকার নামকরণ সংক্রান্ত
জাতিসংঘের বার্ষিক সম্মেলনেও ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের এই সাগরকে পারস্য উপসাগর
নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ক গবেষক পিরুজ মোজতাহেদ যাদেহ
বলেছেন, পাশ্চাত্যের প্রচার মাধ্যমগুলো পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে
আরব উপসাগর করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু তারপরও বর্তমান বিশ্ব এ অঞ্চলকে
পারস্য উপসাগর নামেই চেনে।
মানচিত্র নির্মাণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ রেজা সাহাব বলেছেন, "নির্ভরযোগ্য দলিল প্রমাণ ঘাটলে দেখা যায় প্রাচীন গ্রিক ও আরবরাও শত শত বছর ধরে এই সাগরকে খালিজে ফার্স অর্থাৎ পারস্য উপসাগর কিংবা বাহার ফার্স নামে অভিহিত করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দশকগুলোতে এ অঞ্চলে সৃষ্ট নতুন দেশগুলো পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।"
এ অবস্থায় এতোসব দলিল প্রমাণ থাকার পরও ইরান কেন 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস' ঘোষণা করেছে তা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। এর উত্তর হচ্ছে, পারস্যের প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্য ধরে রাখা এ দিবস ঘোষণার অন্যতম লক্ষ্য। এ ছাড়া, ৩০ এপ্রিল উপনিবেশবাদী শক্তি পর্তুগালকে পারস্য উপসাগর থেকে বহিষ্কার করার দিনটিতে জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। এমন একটি দিবস পালনের অর্থ হচ্ছে, সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ শক্তিগুলোকে এ বার্তা পৌঁছে দেয়া যে, বহু প্রাচীনকাল থেকেই উপনিবেশবাদী শক্তিগুলো পারস্য উপসাগর ও এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
অতীত থেকে শুরু করে এখনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো এটা বিশ্বাস করে ভূ-কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পারস্য উপসাগরের ওপর যদি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায় তাহলে বিশ্বব্যাপী নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা যাবে। এ কারণে এ অঞ্চলের ওপর সবসময়ই বৃহৎ শক্তিগুলোর লোলুপ দৃষ্টি রয়েছে। ইরানের জনগণের প্রতিরোধ বহুবার প্রমাণ করেছে বিজাতীয়রা কখনই এ অঞ্চলের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। ইরানের সংসদ স্পিকার আলী লারিজানি বলেছেন, "পারস্য উপসাগর হচ্ছে তার দেশের ঐতিহাসিক সীমারেখা রক্ষায় একটি জাতির শক্তিমত্তা ও গৌরবের প্রতীক। ইরানের মুসলিম জাতি প্রমাণ করেছে, তারা জীবন বাজি রেখে হলেও তাদের জানমাল ও ভৌগোলিক সীমারেখা রক্ষা করবে।" ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা আলী আকবর বেলায়েতি বলেছেন, পারস্য উপসাগরের নাম যা আছে তাই থাকবে এবং কেউ এ নাম পরিবর্তন করতে পরবে না।
মানচিত্র নির্মাণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠানের প্রধান মোহাম্মদ রেজা সাহাব বলেছেন, "নির্ভরযোগ্য দলিল প্রমাণ ঘাটলে দেখা যায় প্রাচীন গ্রিক ও আরবরাও শত শত বছর ধরে এই সাগরকে খালিজে ফার্স অর্থাৎ পারস্য উপসাগর কিংবা বাহার ফার্স নামে অভিহিত করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক দশকগুলোতে এ অঞ্চলে সৃষ্ট নতুন দেশগুলো পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।"
এ অবস্থায় এতোসব দলিল প্রমাণ থাকার পরও ইরান কেন 'জাতীয় পারস্য উপসাগর দিবস' ঘোষণা করেছে তা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন রয়েছে। এর উত্তর হচ্ছে, পারস্যের প্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্য ধরে রাখা এ দিবস ঘোষণার অন্যতম লক্ষ্য। এ ছাড়া, ৩০ এপ্রিল উপনিবেশবাদী শক্তি পর্তুগালকে পারস্য উপসাগর থেকে বহিষ্কার করার দিনটিতে জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয়েছে। এমন একটি দিবস পালনের অর্থ হচ্ছে, সাম্রাজ্যবাদী বৃহৎ শক্তিগুলোকে এ বার্তা পৌঁছে দেয়া যে, বহু প্রাচীনকাল থেকেই উপনিবেশবাদী শক্তিগুলো পারস্য উপসাগর ও এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
অতীত থেকে শুরু করে এখনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো এটা বিশ্বাস করে ভূ-কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পারস্য উপসাগরের ওপর যদি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা যায় তাহলে বিশ্বব্যাপী নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা বিশ্বের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা যাবে। এ কারণে এ অঞ্চলের ওপর সবসময়ই বৃহৎ শক্তিগুলোর লোলুপ দৃষ্টি রয়েছে। ইরানের জনগণের প্রতিরোধ বহুবার প্রমাণ করেছে বিজাতীয়রা কখনই এ অঞ্চলের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। ইরানের সংসদ স্পিকার আলী লারিজানি বলেছেন, "পারস্য উপসাগর হচ্ছে তার দেশের ঐতিহাসিক সীমারেখা রক্ষায় একটি জাতির শক্তিমত্তা ও গৌরবের প্রতীক। ইরানের মুসলিম জাতি প্রমাণ করেছে, তারা জীবন বাজি রেখে হলেও তাদের জানমাল ও ভৌগোলিক সীমারেখা রক্ষা করবে।" ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা আলী আকবর বেলায়েতি বলেছেন, পারস্য উপসাগরের নাম যা আছে তাই থাকবে এবং কেউ এ নাম পরিবর্তন করতে পরবে না।
No comments