তারুণ্যের সংকট: দেশ ছাড়ছে লাখো উচ্চশিক্ষিত তরুণ by হাফিজ মুহাম্মদ
আলামিন
হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগ থেকে স্নাতক ও
স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। অনেক চেষ্টা করেও সরকারি চাকরি ভাগ্যে
জুটেনি। পরে একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি নেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই আগপিছ
বলা ছাড়াই কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন আগামীকাল থেকে আর অফিসে আসতে হবে না। এরপর
আরো কিছুদিন অপেক্ষা করে কোনো ধরনের চাকরি না পেয়ে বিদেশে যান। পাড়ি দেন
ইউরোপের দেশ পর্তুগালে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগ থেকে
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে জয়শ্রী দেশে চাকরির চিন্তা বাদ দিয়ে পাড়ি
জমিয়েছেন সুইজারল্যান্ডে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও
স্নাতকোত্তর শেষে আয়ারল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন কাওসার মাহমুদ। ২০১৭ সালে
মালয়েশিয়া পাড়ি জমিয়েছেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের
শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ জনি। প্রতিবছর উচ্চশিক্ষিত এমন হাজারো তরুণ পাড়ি
জমাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বেকারত্ব ঘোচানো ও উন্নত জীবনের আশায়
বিদেশকেই বেছে নিচ্ছেন তারা।
বেকারত্বের ভয়াল চিত্র দেশে। হন্যে হয়ে নিজের শিক্ষার সমাঞ্জস্য একটি চাকরির সন্ধান মিলাতে পারছেন না কোনোভাবেই। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চাকরি না পাওয়ার সংখ্যাটা অনেক বেশি। একটি কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ। এ কারণে দেশে চাকরি পাওয়ার কোনো লক্ষণ না দেখে তারা পাড়ি দিচ্ছেন বিদেশে। ভালোভাবে জীবন-যাপনের উদ্দেশ্যে স্ব-ইচ্ছায় তারা দেশ ছাড়ছেন। এখানে আবার দেখা যায় উচ্চশিক্ষিত হয়েও অনেক তরুণ শ্রমিক ভিসায় চলে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে তরুণরা বলেছে দেশে বেকার থেকে পরিবারের জন্য বোঝা না হয়ে বাধ্য হয়েই কাজ করতে তারা চলে যান বিদেশে। দেশের ভেতরে যদি তারা একটি নির্ভরযোগ্য কাজ পেতেন তাহলে আর দেশ ছাড়তে হতো না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চশিক্ষিত তরুণদের জন্য দেশে নতুন কর্মসংস্থান খুব একটা সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে শিক্ষিত এসব তরুণদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। আর চাকরির আর্থিক নিরাপত্তা না থাকায় বেসরকারি সেক্টরেও আগ্রহ কমেছে তরুণদের। তাদের ধরে রাখতে হলে রাষ্ট্রকে তাদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে অনেক উচ্চশিক্ষিত তরুণ বলছে, সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার পরেও তাদের চাকরি হয় না। আবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সুযোগ-সুবিধাও কম, চাকরির নিশ্চয়তা তো নেই-ই। এসব কারণেই মূলত উচ্চশিক্ষিতরা বিদেশমুখী হচ্ছেন।
ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল ফ্লো অব টারশিয়ারি লেভেল স্টুডেন্টস’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষার নামে ২০১৬ সালে ৬০ হাজার ৩৯০ জন এবং ২০১৫ সালে ৩৩ হাজার ১৩৯ জন শিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়েছেন। ২০১৫ ও ১৬ সালের যে ৯৩ হাজার ৫৮০ জন শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এ পরিসংখ্যানই অনুসারে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের ধারণা এমনই।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এসব তরুণদের বেশিরভাগ বিদেশ গমনে উচ্চশিক্ষার ভিসায় বিদেশ গেছেন। তবে, এর বাইরে রয়েছে ভিন্ন কারণ। এসব তরুণদের বেশিরভাগ সেখানে গিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে নেমে পড়েন উপার্জনে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বিদেশ যাওয়ার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশে কর্মসংস্থান না হওয়া। আবার বিদেশ যেতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়েছে তাকে। অন্যদিকে বিদেশে বাসস্থান এবং খাওয়ার খরচও নিজেকে বহন করতে হয়। এসব তরুণদের সঙ্গে আলাপে উঠে আসে তারা বিদেশে যে বিভিন্ন কাজ করেন তার চিত্র। রেস্টুরেন্ট, হোটেল, হসপিটাল এবং সুপারশপে চাকরি করেন। তবে, যারা মেধাবৃত্তি পেয়ে বিদেশ যান তাদের বিষয়টি ভিন্ন। তবে, এই সংখ্যাটা খুবই অল্প। এসবের বাইরেও ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন শিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিত তরুণরা। ইউনেস্কোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালেও উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি তরুণদের শীর্ষ গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া। ২০১৬ সালের প্রতিবেদনে শীর্ষ স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়াই।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার গন্তব্য হিসেবে তরুণদের মালয়েশিয়াকে বেছে নেয়ার পেছনে মূল কারণ হিসেবে রয়েছে নিকটতম দূরত্ব, পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ ও তুলনামূলক কম খরচের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশি তরুণদের বিদেশে পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে অন্য যেসব দেশ এগিয়ে রয়েছে তারমধ্যে হচ্ছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সৌদি আরব, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পোল্যান্ড, তুরস্ক, আয়ারল্যান্ড ও ভারত। এ ছাড়াও রয়েছে সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া।
এ বিষয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম মানবজমিনকে বলেন, দেশের অভ্যন্তরে যদি যথেষ্ট কাজের সুযোগ থাকতো তাহলে দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বিদেশে চলে যাওয়া দেশের সম্পদের অপচয় হিসেবেই বিবেচিত হতো। যেহেতু আপনি তাদের জন্য দেশে কাজের সুযোগ করতে পারছেন না, দেশে থাকার ফলে আর্থিক দিক থেকেও তারা বোঝা হয়ে যায়, সামাজিকভাবেও কোনো কোনো সময় বোঝা হয়ে যায়। আবার কখনো সামাজিক সংকটও সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে দেশের চাকরির বাজারে নিজেকে দক্ষ প্রমাণ করেতে না পেরে অনেক উচ্চশিক্ষিত তরুণ বিদেশ চলে যায়। দেশের পরিবর্তে যদি তারা বিদেশে নিজেদের কাজের যোগান দিতে পারে তাহলে এটা বোঝা নয় বরং সম্পদ হিসেবেই ধরা হয়। এটাকে একটা উন্নয়নশীল দেশের জন্য খারাপ চোখে দেখার উপায় নেই। কেননা এসব তরুণরা দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে ভূমিকা রাখছে। নিজেদের খাওয়া-দাওয়া ওখান থেকেই করছে। আবার যে টাকা-পয়সা আসছে সেটা দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে এখনো যেহেতু একটি বিশাল জনগোষ্ঠী শিক্ষিত বেকার। সে বিবেচনায় তাদের বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারটাকে আমরা এখনো নেতিবাচক দেখতে পারি না। দেশের ভেতরে যদি তাদের জন্য উপযুক্ত কাজের সৃষ্টি করা যায় তাহলে বিদেশ যাওয়ার এই প্রবণতাটা থাকবে না।
শিক্ষিত তরুণদের সম্পর্কে এ গবেষক বলেন, বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বৈধভাবে যেতে হবে এবং কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটা সম্মানজনক কাজ পাওয়া যায় সেদিক লক্ষ্য রাখতে হবে। তরুণ শিক্ষিত অনেক নারীও এখন বিদেশ যাচ্ছেন। তাদের ক্ষেত্রেও একটা সম্মানজনক চাকরি পাওয়া এবং আমাদের বিদেশি লেবার কাউন্সিলরদের এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা দরকার।
বেকারত্বের ভয়াল চিত্র দেশে। হন্যে হয়ে নিজের শিক্ষার সমাঞ্জস্য একটি চাকরির সন্ধান মিলাতে পারছেন না কোনোভাবেই। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চাকরি না পাওয়ার সংখ্যাটা অনেক বেশি। একটি কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাওয়া যেন সোনার হরিণ। এ কারণে দেশে চাকরি পাওয়ার কোনো লক্ষণ না দেখে তারা পাড়ি দিচ্ছেন বিদেশে। ভালোভাবে জীবন-যাপনের উদ্দেশ্যে স্ব-ইচ্ছায় তারা দেশ ছাড়ছেন। এখানে আবার দেখা যায় উচ্চশিক্ষিত হয়েও অনেক তরুণ শ্রমিক ভিসায় চলে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে তরুণরা বলেছে দেশে বেকার থেকে পরিবারের জন্য বোঝা না হয়ে বাধ্য হয়েই কাজ করতে তারা চলে যান বিদেশে। দেশের ভেতরে যদি তারা একটি নির্ভরযোগ্য কাজ পেতেন তাহলে আর দেশ ছাড়তে হতো না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চশিক্ষিত তরুণদের জন্য দেশে নতুন কর্মসংস্থান খুব একটা সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে শিক্ষিত এসব তরুণদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। আর চাকরির আর্থিক নিরাপত্তা না থাকায় বেসরকারি সেক্টরেও আগ্রহ কমেছে তরুণদের। তাদের ধরে রাখতে হলে রাষ্ট্রকে তাদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যদিকে অনেক উচ্চশিক্ষিত তরুণ বলছে, সরকারি ও বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার পরেও তাদের চাকরি হয় না। আবার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সুযোগ-সুবিধাও কম, চাকরির নিশ্চয়তা তো নেই-ই। এসব কারণেই মূলত উচ্চশিক্ষিতরা বিদেশমুখী হচ্ছেন।
ইউনেস্কোর ‘গ্লোবাল ফ্লো অব টারশিয়ারি লেভেল স্টুডেন্টস’ শীর্ষক এ প্রতিবেদন অনুযায়ী, উচ্চশিক্ষার নামে ২০১৬ সালে ৬০ হাজার ৩৯০ জন এবং ২০১৫ সালে ৩৩ হাজার ১৩৯ জন শিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশে গিয়েছেন। ২০১৫ ও ১৬ সালের যে ৯৩ হাজার ৫৮০ জন শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এ পরিসংখ্যানই অনুসারে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ থেকে আগের বছরের চেয়ে দ্বিগুণ শিক্ষার্থী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের ধারণা এমনই।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এসব তরুণদের বেশিরভাগ বিদেশ গমনে উচ্চশিক্ষার ভিসায় বিদেশ গেছেন। তবে, এর বাইরে রয়েছে ভিন্ন কারণ। এসব তরুণদের বেশিরভাগ সেখানে গিয়ে পড়াশোনা ছেড়ে নেমে পড়েন উপার্জনে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বিদেশ যাওয়ার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশে কর্মসংস্থান না হওয়া। আবার বিদেশ যেতে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হয়েছে তাকে। অন্যদিকে বিদেশে বাসস্থান এবং খাওয়ার খরচও নিজেকে বহন করতে হয়। এসব তরুণদের সঙ্গে আলাপে উঠে আসে তারা বিদেশে যে বিভিন্ন কাজ করেন তার চিত্র। রেস্টুরেন্ট, হোটেল, হসপিটাল এবং সুপারশপে চাকরি করেন। তবে, যারা মেধাবৃত্তি পেয়ে বিদেশ যান তাদের বিষয়টি ভিন্ন। তবে, এই সংখ্যাটা খুবই অল্প। এসবের বাইরেও ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন শিক্ষিত ও উচ্চশিক্ষিত তরুণরা। ইউনেস্কোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৫ সালেও উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি তরুণদের শীর্ষ গন্তব্য ছিল মালয়েশিয়া। ২০১৬ সালের প্রতিবেদনে শীর্ষ স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়াই।
বিদেশে উচ্চশিক্ষার গন্তব্য হিসেবে তরুণদের মালয়েশিয়াকে বেছে নেয়ার পেছনে মূল কারণ হিসেবে রয়েছে নিকটতম দূরত্ব, পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ ও তুলনামূলক কম খরচের কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলাদেশি তরুণদের বিদেশে পাড়ি জমানোর ক্ষেত্রে অন্য যেসব দেশ এগিয়ে রয়েছে তারমধ্যে হচ্ছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সৌদি আরব, জাপান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পোল্যান্ড, তুরস্ক, আয়ারল্যান্ড ও ভারত। এ ছাড়াও রয়েছে সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে ও দক্ষিণ কোরিয়া।
এ বিষয়ে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম মানবজমিনকে বলেন, দেশের অভ্যন্তরে যদি যথেষ্ট কাজের সুযোগ থাকতো তাহলে দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বিদেশে চলে যাওয়া দেশের সম্পদের অপচয় হিসেবেই বিবেচিত হতো। যেহেতু আপনি তাদের জন্য দেশে কাজের সুযোগ করতে পারছেন না, দেশে থাকার ফলে আর্থিক দিক থেকেও তারা বোঝা হয়ে যায়, সামাজিকভাবেও কোনো কোনো সময় বোঝা হয়ে যায়। আবার কখনো সামাজিক সংকটও সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে দেশের চাকরির বাজারে নিজেকে দক্ষ প্রমাণ করেতে না পেরে অনেক উচ্চশিক্ষিত তরুণ বিদেশ চলে যায়। দেশের পরিবর্তে যদি তারা বিদেশে নিজেদের কাজের যোগান দিতে পারে তাহলে এটা বোঝা নয় বরং সম্পদ হিসেবেই ধরা হয়। এটাকে একটা উন্নয়নশীল দেশের জন্য খারাপ চোখে দেখার উপায় নেই। কেননা এসব তরুণরা দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে ভূমিকা রাখছে। নিজেদের খাওয়া-দাওয়া ওখান থেকেই করছে। আবার যে টাকা-পয়সা আসছে সেটা দেশে বিনিয়োগ হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশে এখনো যেহেতু একটি বিশাল জনগোষ্ঠী শিক্ষিত বেকার। সে বিবেচনায় তাদের বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারটাকে আমরা এখনো নেতিবাচক দেখতে পারি না। দেশের ভেতরে যদি তাদের জন্য উপযুক্ত কাজের সৃষ্টি করা যায় তাহলে বিদেশ যাওয়ার এই প্রবণতাটা থাকবে না।
শিক্ষিত তরুণদের সম্পর্কে এ গবেষক বলেন, বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বৈধভাবে যেতে হবে এবং কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একটা সম্মানজনক কাজ পাওয়া যায় সেদিক লক্ষ্য রাখতে হবে। তরুণ শিক্ষিত অনেক নারীও এখন বিদেশ যাচ্ছেন। তাদের ক্ষেত্রেও একটা সম্মানজনক চাকরি পাওয়া এবং আমাদের বিদেশি লেবার কাউন্সিলরদের এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা দরকার।
No comments