মিশরের অভ্যন্তরে ইসরাইলের শতাধিক বিমান অভিযান! গোপন যুদ্ধসন্ধি!!
মিশরের
সিনাই উপত্যকা ভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী নির্মূলে ব্যর্থ হয়ে প্রতিবেশী
ইসরাইলের শরণাপন্ন হয় দেশটির সেনাবাহিনী। ইসরাইলও নিজ সীমান্তের অপরপাশে
সৃষ্ট এই নিরাপত্তা হুমকি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। তাই দেশটিও সানন্দে সাড়া দেয়
মিশরের প্রস্তাবে। দুই পক্ষের যৌথ সম্মতিতে ইসরাইলের ড্রোন, হেলিকপ্টার ও
যুদ্ধবিমান হামলা চালায় মিশরের অভ্যন্তরে সিনাই উপত্যকার জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর
অবস্থান লক্ষ্য করে। ২০১৫ সাল থেকে মিশরের অভ্যন্তরে ইসরাইলের এমন বিমান
অভিযানের সংখ্যা ছিল শতাধিক। এমন বিস্ফোরক খবর প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক
টাইমস।
খবরে বলা হয়, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের চিহ্নবিহীন হেলিকপ্টার, ড্রোন ও যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে মিশরের অভ্যন্তরে। পুরো বিষয়টিতে পূর্ণ সায় ছিল মিশরের প্রেসিডেন্ট ফাতাহ আল সিসির।
এক সময় মিশর ও ইসরাইল ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুই দেশ কমপক্ষে তিনটি যুদ্ধে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়েছে। তারপর শান্তি আলোচনার টেবিলেও মুখোমুখি ছিল দুই প্রতিবেশী। কিন্তু এখন মিশর ও ইসরাইল এক অভিন্ন শত্রু অর্থাৎ জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গোপন মিত্রতা গড়েছে। জড়িয়েছে এক গোপন যুদ্ধে। এতে লাভবান হয়েছে দু’ পক্ষই। ইসরাইলি হস্তক্ষেপের ফলে সিনাই উপত্যকায় ৫ বছর ধরে চলা জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে প্রথমবারের মতো চালকের আসনে বসে মিশরের সেনাবাহিনী। অপরদিকে, বিমান হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন করায় সুরক্ষিত হয়েছে ইসরাইলের সীমানা।
ইরান, জঙ্গি গোষ্ঠী আইসিস ও মুসলিম ব্রাদারহুডকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে ইসরাইল। ঠিক তেমনি অনেক আরব দেশও তাদেরকে শত্রু হিসেবে গণ্য করে। এই অভিন্ন শত্রুদের বিরুদ্ধে অনেক আরব দেশই এখন ইসরাইলের সঙ্গে গোপনে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছে। অথচ, আরব দেশগুলোর সরকারি কর্মকর্তা ও সংবাদ মাধ্যমে নিয়মিতই ইসরাইলের কড়া সমালোচনা করা হয়।
আমেরিকান কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইলের এই ভূমিকার ফলে মিশরের সামরিক বাহিনী এখন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ভালো অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এই হস্তক্ষেপের অন্যরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি আলোচনায়। কারণ, ইসরাইলি কর্মকর্তারা এখন মনে করেন, মিশর এখন খোদ নিজের ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতেও ইসরাইলের ওপর নির্ভরশীল। ফলে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় মিশরের কার্ড তেমন একটা নেই।
তবে মিশরের ভেতর ইসরাইলি বিমান অভিযানের খবর এবারই প্রথম এসেছে তা নয়। এর আগে বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছিল, সিনাই উপত্যকায় ইসরাইলি ড্রোনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫ জঙ্গি নিহত হয়েছে। তবে সেবার মিশর এই দাবি অস্বীকার করেছিল।
এই ঘটনার দুই বছর পর সিনাই উপত্যকার জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ততদিনে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকশ’ সদস্য ও সেনা নিহত হয়েছে জঙ্গি হামলায়। ২০১৪ সালের নভেম্বরে এই জঙ্গিরা ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে। পরের বছর জুলাইয়ে শেখ জুয়াইদ নামে একটি শহর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দখলে নেয় তারা। অক্টোবরের শেষের দিকে রাশিয়ার একটি চার্টার বিমান ভূপাতিত করে জঙ্গিরা। এতে নিহত হয় ২২৪ জন যাত্রী।
জঙ্গিদের ঠেকাতে যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন সিসি, তখনই তিনি ইসরাইলের শরণাপন্ন হন।
মূলত, অভ্যন্তরীণভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি শুধু খুব অল্প ক’জন জেনারেলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন সিসি। অপরদিকে ইসরাইলও সামরিক সেন্সরশিপের মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যমকে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত রাখে। ২০১৬ সালে অবশ্য মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে, ইসরাইল মিশরের অভ্যন্তরে ড্রোন অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমসের এই প্রতিবেদনেই ইসরাইলের অভিযানের ব্যাপক আকারের বিস্তৃতি সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অভিযানের ফলে মিশরের উপকার হয়েছে বটে। তবে ইসরাইলের কাছ থেকে এই ধরণের সাহায্য নেওয়ায়, ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি আলোচনায় মিশরের ঐতিহ্যগত প্রভাব ও অবস্থান খর্ব হয়েছে। যেমন, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জর্দানে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে ছিলেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু, মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি ও জর্দানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ।
কেরি একটি চুক্তি প্রস্তাব করেন। চুক্তি অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে ইসরাইলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে জর্দান ও মিশর। এই প্রস্তাব হেসেই উড়িয়ে দেন নেতানিয়াহু। উপহাসের সুরে তিনি বলেন, মিশর নিজের ভূখ-ই রক্ষা করতে পারছে না। মিশরের স্বার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। আর সেই মিশর দেবে ইসরাইলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা?
খবরে বলা হয়, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের চিহ্নবিহীন হেলিকপ্টার, ড্রোন ও যুদ্ধবিমান হামলা চালিয়েছে মিশরের অভ্যন্তরে। পুরো বিষয়টিতে পূর্ণ সায় ছিল মিশরের প্রেসিডেন্ট ফাতাহ আল সিসির।
এক সময় মিশর ও ইসরাইল ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। দুই দেশ কমপক্ষে তিনটি যুদ্ধে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়েছে। তারপর শান্তি আলোচনার টেবিলেও মুখোমুখি ছিল দুই প্রতিবেশী। কিন্তু এখন মিশর ও ইসরাইল এক অভিন্ন শত্রু অর্থাৎ জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গোপন মিত্রতা গড়েছে। জড়িয়েছে এক গোপন যুদ্ধে। এতে লাভবান হয়েছে দু’ পক্ষই। ইসরাইলি হস্তক্ষেপের ফলে সিনাই উপত্যকায় ৫ বছর ধরে চলা জঙ্গি-বিরোধী অভিযানে প্রথমবারের মতো চালকের আসনে বসে মিশরের সেনাবাহিনী। অপরদিকে, বিমান হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের নিশ্চিহ্ন করায় সুরক্ষিত হয়েছে ইসরাইলের সীমানা।
ইরান, জঙ্গি গোষ্ঠী আইসিস ও মুসলিম ব্রাদারহুডকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে ইসরাইল। ঠিক তেমনি অনেক আরব দেশও তাদেরকে শত্রু হিসেবে গণ্য করে। এই অভিন্ন শত্রুদের বিরুদ্ধে অনেক আরব দেশই এখন ইসরাইলের সঙ্গে গোপনে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলেছে। অথচ, আরব দেশগুলোর সরকারি কর্মকর্তা ও সংবাদ মাধ্যমে নিয়মিতই ইসরাইলের কড়া সমালোচনা করা হয়।
আমেরিকান কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরাইলের এই ভূমিকার ফলে মিশরের সামরিক বাহিনী এখন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ভালো অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এই হস্তক্ষেপের অন্যরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। বিশেষ করে, মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি আলোচনায়। কারণ, ইসরাইলি কর্মকর্তারা এখন মনে করেন, মিশর এখন খোদ নিজের ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণ ঠিক রাখতেও ইসরাইলের ওপর নির্ভরশীল। ফলে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনায় মিশরের কার্ড তেমন একটা নেই।
তবে মিশরের ভেতর ইসরাইলি বিমান অভিযানের খবর এবারই প্রথম এসেছে তা নয়। এর আগে বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছিল, সিনাই উপত্যকায় ইসরাইলি ড্রোনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫ জঙ্গি নিহত হয়েছে। তবে সেবার মিশর এই দাবি অস্বীকার করেছিল।
এই ঘটনার দুই বছর পর সিনাই উপত্যকার জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ততদিনে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকশ’ সদস্য ও সেনা নিহত হয়েছে জঙ্গি হামলায়। ২০১৪ সালের নভেম্বরে এই জঙ্গিরা ইসলামিক স্টেটের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা করে। পরের বছর জুলাইয়ে শেখ জুয়াইদ নামে একটি শহর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য দখলে নেয় তারা। অক্টোবরের শেষের দিকে রাশিয়ার একটি চার্টার বিমান ভূপাতিত করে জঙ্গিরা। এতে নিহত হয় ২২৪ জন যাত্রী।
জঙ্গিদের ঠেকাতে যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন সিসি, তখনই তিনি ইসরাইলের শরণাপন্ন হন।
মূলত, অভ্যন্তরীণভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কায় বিষয়টি শুধু খুব অল্প ক’জন জেনারেলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখেন সিসি। অপরদিকে ইসরাইলও সামরিক সেন্সরশিপের মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যমকে এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত রাখে। ২০১৬ সালে অবশ্য মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে, ইসরাইল মিশরের অভ্যন্তরে ড্রোন অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমসের এই প্রতিবেদনেই ইসরাইলের অভিযানের ব্যাপক আকারের বিস্তৃতি সম্পর্কে বিশদ ধারণা পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব অভিযানের ফলে মিশরের উপকার হয়েছে বটে। তবে ইসরাইলের কাছ থেকে এই ধরণের সাহায্য নেওয়ায়, ফিলিস্তিন-ইসরাইল শান্তি আলোচনায় মিশরের ঐতিহ্যগত প্রভাব ও অবস্থান খর্ব হয়েছে। যেমন, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জর্দানে এক গোপন বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে ছিলেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু, মিশরের প্রেসিডেন্ট সিসি ও জর্দানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ।
কেরি একটি চুক্তি প্রস্তাব করেন। চুক্তি অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিনিময়ে ইসরাইলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে জর্দান ও মিশর। এই প্রস্তাব হেসেই উড়িয়ে দেন নেতানিয়াহু। উপহাসের সুরে তিনি বলেন, মিশর নিজের ভূখ-ই রক্ষা করতে পারছে না। মিশরের স্বার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। আর সেই মিশর দেবে ইসরাইলের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা?
No comments