পাঠক চোখে যুগান্তর by মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
আঠারো
পেরিয়ে উনিশে পড়েছে যুগান্তর। নিঃসন্দেহে এটি পাঠক, লেখক এবং সব যুগান্তর
কর্মীর জন্য আনন্দের বিষয়। নানারকম চ্যালেঞ্জ ছিল। সব চ্যালেঞ্জ সফলতার
সঙ্গে মোকাবেলা করেছে যুগান্তর। সততা, নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা যুগান্তর
ত্যাগ করেনি। এ কারণেই পাঠকরা পত্রিকাটির সঙ্গে আছে। ভালোবাসা ও মায়ার জালে
তারা পত্রিকাটি আগলে রেখেছে। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বুড়ো-বুড়ি সবার
প্রিয় পত্রিকায় পরিণত হয়েছে যুগান্তর। শুধু সংবাদই নয়, সম্পাদকীয় ও ফিচার
পাতাগুলো যুগান্তরকে পাঠকপ্রিয় করেছে। প্রাত্যহিক জীবনের সব বিষয়ই
পত্রিকাটিতে উঠে আসে। মফস্বলের মানুষদের সুখ-দুঃখ, সমস্যার কথা যুগান্তর
প্রাধান্য দেয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের খবর যুগান্তরে পাওয়া যায়। উপকৃত হয়
গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ। কৃষকদের স্বার্থে যুগান্তর অনন্য ভূমিকা রেখে
আসছে শুরু থেকেই। সামাজিক অপরাধ যেমন- চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, নারী
নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি দমনে যুগান্তর সাহসী
ভূমিকা রাখছে। বেশির ভাগ পত্রিকা পরিবেশ-প্রকৃতির ক্ষতিকে গুরুত্ব দিতে চায়
না। যুগান্তরের ‘প্রকৃতি ও জীবন’ পাতাটি বন, পরিবেশ, প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী,
পাখি, গাছপালা, নদ-নদী রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে। বিশেষজ্ঞদের লেখা
কেবল পাঠক চাহিদাই মেটায় না, সরকারি নানা মহলকে ভাবতে ও সিদ্ধান্ত নিতে
সহায়তা করে। যুগান্তরকে অবশ্যই পাঠকবান্ধব পত্রিকা বলা যায়। দৃষ্টিপাত,
চিঠিপত্র, সম্পাদকীয় পাতায় পাঠকরা লিখতে পারেন। দেশকে সুন্দর করতে কাজ করে
যুগান্তরের স্বজন সমাবেশ। সমাজকল্যাণমূলক কাজ করে স্বজন সমাবেশ অনন্য
দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দুঃখী-অসহায় মানুষদের পাশে স্বজনরা দাঁড়ায়।
ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর নিবন্ধ পড়া যায় ‘ইসলাম ও জীবন’
পাতায়।
খুঁটিনাটি দরকারি নানা বিষয়ে পাঠক জানতে পারে। প্রবাসীদের প্রিয়
পত্রিকা যুগান্তর। যুগান্তরে প্রবাসীরা তাদের সুখ-দুঃখের কথা লিখতে পারেন।
বিষয়ভিত্তিক পাতা প্রতিমঞ্চ। এ পাতায় নানা এলাকার পিছিয়ে পড়া পেশাজীবীদের
নিয়ে অনুসন্ধানী ও তথ্যনির্ভর সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়, যা ইতিমধ্যে অনেক
পেশাজীবীর ভাগ্য পরিবর্তনে সক্ষম হয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত, অসহায় মানুষের কথা
এখানে উঠে আসছে। অর্থনীতি অনেক দুর্বোধ্য বিষয় অনেকের কাছেই। তবে
যুগান্তরের অর্থনীতি পাতায় সহজবোধ্য লেখা পাওয়া যায়, যা পাঠক বুঝতে পারেন।
নারীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা যুগান্তরের সুরঞ্জনা পাতায় যেভাবে উঠে আসে, তা
অন্যত্র কমই দেখা যায়। নারী অধিকারের পক্ষে যুগান্তর বরাবরই সোচ্চার।
লাইফস্টাইল বিষয়ক ‘ঘরে বাইরে’ পাতাটিও সবার প্রিয়। হাসিঠাট্টার মাধ্যমেও
অনেক কিছু বলা যায়। যুগান্তরের রম্য ম্যাগাজিন ‘বিচ্ছু’ তার উজ্জ্বল
প্রমাণ। সমসাময়িক নানা অসঙ্গতি বিচ্ছুতে উঠে আসে, যা পাঠকদের হাসায়, কিন্তু
কর্তৃপক্ষের বোধ জাগিয়ে তোলে। যুগান্তরের প্রতিটি ফিচার পাতার মেকআপ-গেটআপ
আকর্ষণীয়। শুধু সংবাদ জানার জন্য এখন আর কেউ পত্রিকা পড়ে না। সংবাদ জানার
মাধ্যমেরও শেষ নেই। পাঠক সংবাদের চেয়েও বেশি কিছু চায়, প্রত্যাশা করে, যা
পূরণ করতে যুগান্তর সক্ষম হয়েছে। তাই পত্রিকাটির জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা
পড়েনি। পাঠকপ্রিয় যুগান্তর বস্তুনিষ্ঠতা, সততা, ভিন্নধর্মী নানা আয়োজন নিয়ে
বেঁচে থাকুক হাজার বছর। শুরু থেকে পত্রিকাটির পাঠক ও লেখক হিসেবে সেটাই
প্রত্যাশা করছি।
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান : যুগান্তরের পাঠক
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান : যুগান্তরের পাঠক
No comments