অর্থ ফেরেনি, বিচারও হয়নি
২০১৬
সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ছিল বৃহস্পতিবার। পরের দুই দিন সরকারি ছুটি হওয়ায়
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে অর্থ বের করতে সেদিন রাতকেই বেছে
নেওয়া হয়েছিল। ওই রাতেই ১৯৪ কোটি ডলার বের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে সব
আদেশ কার্যকর না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত চুরি হয় ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। এর মধ্যে
শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার কিছুদিনের মধ্যেই ফিরে আসে। আর ফিলিপাইনে
যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে ফিরে এসেছে মাত্র ১ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
ফলে চুরির দুই বছরেও ফিলিপাইনে থাকা বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ (৫৪৪ কোটি টাকা)
ডলার ফেরত আসেনি। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়নি, মামলা হলেও
এখন পর্যন্ত কাউকে আসামি করা হয়নি। ফলে এখন পর্যন্ত কারও শাস্তিও হয়নি।
টাকা ফেরাতে এখন কী উদ্যোগ নিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক? এমন প্রশ্নের জবাবে
সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, দুই বছরেও অর্থ ফেরত না
পাওয়ায় এখন আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। তার আগে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করতে হবে। এটা না হলে আন্তর্জাতিক কোনো
অভিজ্ঞ আইনি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মামলায় যেতে হবে।
এদিকে কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ফিলিপাইনের সরকার পরিবর্তনের ফলে
আগের মতো সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে দফায় দফায় ফিলিপাইনে গিয়েও টাকা
ফেরতের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এ জন্য এখন আইনি প্রক্রিয়ায় কীভাবে
অর্থ ফেরত পাওয়া যায়, এসব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গেছে, ফিলিপাইনের
ক্যাসিনো থেকে স্থানান্তরিত ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের আদালত জব্দ
করেছেন। এ বিষয়টি বর্তমানে সে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন আছে। ২০১৬
সালের ফেব্রুয়ারিতে অর্থ চুরির ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ পায় পরের মাসে। এ
ঘটনায় পদত্যাগ করতে হয় তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমানকে। ঘটনা তদন্তে সাবেক
গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে কমিটি করে সরকার। বারবার আশ্বাস
দিলেও সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এদিকে এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মতিঝিল থানায় করা মামলার তদন্ত
করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডি এ
পর্যন্ত ২০ বার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালতের কাছ থেকে সময় চেয়ে
নিয়েছে।
No comments