সোজা চলে যা, পেছনে তাকালেই মেরে ফেলবো
নিখোঁজের
৪৪ দিন পর বাড়ি ফিরেছেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান
সিজার। নিখোঁজ সাংবাদিক উৎপল দাস ফিরে আসার দুই দিনের মাথায় একইভাবে ফিরে
এলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক। মোবাশ্বারকে বৃহস্পতিবার রাতে বিমানবন্দর
সড়কে ফেলে রেখে যায় কে বা কারা। গতকাল গণমাধ্যমের কাছে সিজার জানিয়েছেন,
যারা তাকে তুলে নিয়েছিল তারা টাকা পয়সা নিয়ে কথা বলেছে। রেখে যাওয়ার সময়
তারা মোবাশ্বারকে বলে, সোজা চলে যা, পেছনে তাকালেই মেরে ফেলব। বৃহস্পতিবার
রাত ১টার দিকে বিমানবন্দর সড়কে মোবাশ্বারকে ছেড়ে দেয়ার পর তিনি নিজেই একটি
সিএনজি অটোরিকশা করে বনশ্রীর বাসায় আসেন।
তখন তার কাছে কোনো টাকা ছিল না। অটোরিকশা চালকের ফোনে তিনি প্রথম তার বাবাকে বাসায় ফিরছেন বলে জানান।
গতকাল সকালে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মোবাশ্বার। তিনি তাকে তুলে নেয়া এবং ছেড়ে দেয়ার বর্ণনা দেন। তাকে যেখানে রাখা হয়েছিল তারও একটা বর্ণনা আসে তার কাছ থেকে।
সিজার বলেন, আমাকে ধরে নেয়ার পর তারা আমাকে ছাড়বে, না মারবে এনিয়ে নিজেদের মধ্যে বাহাস করতো। তাদের মধ্যে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হতো। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা আমাকে এয়ারপোর্ট রোডে নামিয়ে দেয়।
নিখোঁজের দিনের বর্ণনা দিয়ে সিজার বলেন, সেদিন আমি আগারগাঁওয়ে এটুআইয়ের একটি প্রোগ্রাম শেষ করে উবারের একটি গাড়ি কল করি। গাড়িতে উঠে রওয়ানা দেয়ার কিছুক্ষণ পর কয়েকজন অপরিচিত লোক এসে আমাকে বলে, এটি চোরাই গাড়ি। তারা ওই গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়িতে যাওয়ার জন্য বলে। পরে আমি গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়ি খোঁজার চেষ্টা করি। ঠিক তখনই তারা পেছন থেকে আমার চোখে মলম লাগিয়ে দেয়। একপর্যায়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে অন্য একটা গাড়িতে তুলে নেয়। আমি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলি। যখন আমার জ্ঞান ফিরে তখন দেখি, আমি একটি বদ্ধ ঘরে বন্দি। ময়লা তোষক আর বাইরে থেকে সিলগালা করা একটি জানালা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। ঘরটি সমসয় অন্ধকার থাকতো। সেখানেই ঘুমাতাম। পাশেই আরেকটা ঘর ছিল। সেখান ৪-৫ জন লোকের কথাবার্তা প্রায়ই শোনা যেত। তারা আমাকে ঠাণ্ডা খাবার দিতো। মনে হয় সেগুলো হোটেলের খাবার ছিল। সিজার বলেন, ওদের নিজেদের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। গাড়ির মধ্যে একঘণ্টা বা দেড়ঘণ্টা হতে পারে, চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে একজনের কোলে শুইয়ে রাখে। আসার সময় তাদের মধ্যে অনেক ডিসকাশন হয়েছে। টাকা পয়সা বা আরো কোনো বিষয় থাকতে পারে। যা আমি দেখিনি, বুঝিনি। রাতে চোখে গামছা বাঁধা অবস্থায় ওরা আমাকে এয়ারপোর্ট রোডের কোনো এক জায়গায় নামিয়ে বলেছে তুই যা-গা, পেছনের দিকে তাকালে মাইরা ফালামু। এরপর আমি একটা সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে সিএনজিওয়ালার কাছ থেকে ফোন নিয়ে আব্বাকে ফোন করি। আব্বাকে ৫০০ টাকা নিয়ে বাসার নিচে নামতে বলি। পরে আমি বাসার নিচে পৌঁছলে আব্বা ভাড়া পরিশোধ করে। অপহরণকারীরা টাকা চেয়েছিল কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোবাশ্বার হাসান সিজার বলেন, অপহরণকারীরা আমার ফ্যামেলি প্রোফাইল না বুঝে অজ্ঞাতস্থানের একটি বদ্ধঘরে আটকে রেখেছিল। ওই টাকা-পয়সাই। ওরা বোধ হয় বুঝে নাই, আমাদের নরমাল ফ্যামেলি। এরা বোধ হয় প্রোফাইলটা বুঝতে পারে নাই। তারা একটা সময় বলছিল যে, তুই তো অনেক জায়গায় কাজ করস, কিছু টাকা পয়সা দে। এ ছাড়া তারা আমার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ প্রভাবশালী আছে কিনা জানতে চেয়েছিল। তারা মুক্তিপণ চেয়েছিল কিনা, আই ডোন্ট নো। একদিন মনে হয়, আমার ফ্যামেলিতে ফোন দিয়েছিল। আমার কাছে ২৭ হাজার ক্যাশ টাকা ছিল, তারা সেটা নিয়ে নিয়েছে। তবে ওইদিন আমি ক্রেডিট কার্ড নেইনি। সিজার বলেন, মানুষের জীবনে কিছু হিস্ট্রি থাকে, সমস্যা হয়েছে কিছু দেখতে পাই নাই। আমাদের নরমাল ফ্যামেলি, সাইক্লোনের মতো এটা হয়ে গেছে। আমাদের সবার জন্য দোয়া করবেন। আমি বলছি, কিডন্যাপ না হলে রিয়েলাইজড করা যাবে না, জিনিসটা কতটুকু অবিশ্বাস্য। অনেক দিন পর দিনের আলো দেখলাম।
আবেগতাড়িত হয়ে সিজার বলেন, গণমাধ্যমকর্মী, বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। সবাই আমার জন্য মানববন্ধন করেছে। এ ছাড়া সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে অনেক কভারেজ দিয়েছে। কথা বলার সময় সিজারকে মানসিকভাবে অনেকটা বিধ্বস্ত দেখা যাচ্ছিল। তার কথা জড়িয়ে আসছিল। একপর্যায়ে তার বাবা তাকে থামিয়ে দিয়ে ভেতরে নিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, ও অসুস্থ..। আর কথা বলতে পারবে না।
এ সময় মোবাশ্বারের বোন, তামান্না তাসনিম বলেন, আমার ভাই শারীরিকভাবে মোটামুটি ঠিক আছে, তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
এদিকে ছেলেকে ফিরে পেয়ে সিজারের বাবা মোতাহের হোসেন গণমাধ্যমের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে, আমরা নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। আমরা অনেক খুশি। আমি আর কিছু চাই না। তিনি বলেন, সিজার বাসায় আসার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ থেকে ১২ জন সদস্য এসেছিলেন। থানায় যে জিডি করেছিলাম সেই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা যা হবার তা হবে।
গত ৭ই নভেম্বর বিকাল থেকে সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না মোবাশ্বার হাসান সিজারের। ওই দিন বনশ্রীর বাসা থেকে বের হয়ে তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এরপর আগারগাঁওয়ের একটি অফিসে কাজ করে বের হওয়ার পর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন তার পরিবারের পক্ষ থেকে খিলগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর ঢাকা ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড স্যোসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণায়ও জড়িত।
তখন তার কাছে কোনো টাকা ছিল না। অটোরিকশা চালকের ফোনে তিনি প্রথম তার বাবাকে বাসায় ফিরছেন বলে জানান।
গতকাল সকালে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মোবাশ্বার। তিনি তাকে তুলে নেয়া এবং ছেড়ে দেয়ার বর্ণনা দেন। তাকে যেখানে রাখা হয়েছিল তারও একটা বর্ণনা আসে তার কাছ থেকে।
সিজার বলেন, আমাকে ধরে নেয়ার পর তারা আমাকে ছাড়বে, না মারবে এনিয়ে নিজেদের মধ্যে বাহাস করতো। তাদের মধ্যে প্রায়ই বাকবিতণ্ডা হতো। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা আমাকে এয়ারপোর্ট রোডে নামিয়ে দেয়।
নিখোঁজের দিনের বর্ণনা দিয়ে সিজার বলেন, সেদিন আমি আগারগাঁওয়ে এটুআইয়ের একটি প্রোগ্রাম শেষ করে উবারের একটি গাড়ি কল করি। গাড়িতে উঠে রওয়ানা দেয়ার কিছুক্ষণ পর কয়েকজন অপরিচিত লোক এসে আমাকে বলে, এটি চোরাই গাড়ি। তারা ওই গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়িতে যাওয়ার জন্য বলে। পরে আমি গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়ি খোঁজার চেষ্টা করি। ঠিক তখনই তারা পেছন থেকে আমার চোখে মলম লাগিয়ে দেয়। একপর্যায়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে অন্য একটা গাড়িতে তুলে নেয়। আমি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলি। যখন আমার জ্ঞান ফিরে তখন দেখি, আমি একটি বদ্ধ ঘরে বন্দি। ময়লা তোষক আর বাইরে থেকে সিলগালা করা একটি জানালা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। ঘরটি সমসয় অন্ধকার থাকতো। সেখানেই ঘুমাতাম। পাশেই আরেকটা ঘর ছিল। সেখান ৪-৫ জন লোকের কথাবার্তা প্রায়ই শোনা যেত। তারা আমাকে ঠাণ্ডা খাবার দিতো। মনে হয় সেগুলো হোটেলের খাবার ছিল। সিজার বলেন, ওদের নিজেদের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। গাড়ির মধ্যে একঘণ্টা বা দেড়ঘণ্টা হতে পারে, চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাকে একজনের কোলে শুইয়ে রাখে। আসার সময় তাদের মধ্যে অনেক ডিসকাশন হয়েছে। টাকা পয়সা বা আরো কোনো বিষয় থাকতে পারে। যা আমি দেখিনি, বুঝিনি। রাতে চোখে গামছা বাঁধা অবস্থায় ওরা আমাকে এয়ারপোর্ট রোডের কোনো এক জায়গায় নামিয়ে বলেছে তুই যা-গা, পেছনের দিকে তাকালে মাইরা ফালামু। এরপর আমি একটা সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে সিএনজিওয়ালার কাছ থেকে ফোন নিয়ে আব্বাকে ফোন করি। আব্বাকে ৫০০ টাকা নিয়ে বাসার নিচে নামতে বলি। পরে আমি বাসার নিচে পৌঁছলে আব্বা ভাড়া পরিশোধ করে। অপহরণকারীরা টাকা চেয়েছিল কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মোবাশ্বার হাসান সিজার বলেন, অপহরণকারীরা আমার ফ্যামেলি প্রোফাইল না বুঝে অজ্ঞাতস্থানের একটি বদ্ধঘরে আটকে রেখেছিল। ওই টাকা-পয়সাই। ওরা বোধ হয় বুঝে নাই, আমাদের নরমাল ফ্যামেলি। এরা বোধ হয় প্রোফাইলটা বুঝতে পারে নাই। তারা একটা সময় বলছিল যে, তুই তো অনেক জায়গায় কাজ করস, কিছু টাকা পয়সা দে। এ ছাড়া তারা আমার আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কেউ প্রভাবশালী আছে কিনা জানতে চেয়েছিল। তারা মুক্তিপণ চেয়েছিল কিনা, আই ডোন্ট নো। একদিন মনে হয়, আমার ফ্যামেলিতে ফোন দিয়েছিল। আমার কাছে ২৭ হাজার ক্যাশ টাকা ছিল, তারা সেটা নিয়ে নিয়েছে। তবে ওইদিন আমি ক্রেডিট কার্ড নেইনি। সিজার বলেন, মানুষের জীবনে কিছু হিস্ট্রি থাকে, সমস্যা হয়েছে কিছু দেখতে পাই নাই। আমাদের নরমাল ফ্যামেলি, সাইক্লোনের মতো এটা হয়ে গেছে। আমাদের সবার জন্য দোয়া করবেন। আমি বলছি, কিডন্যাপ না হলে রিয়েলাইজড করা যাবে না, জিনিসটা কতটুকু অবিশ্বাস্য। অনেক দিন পর দিনের আলো দেখলাম।
আবেগতাড়িত হয়ে সিজার বলেন, গণমাধ্যমকর্মী, বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। সবাই আমার জন্য মানববন্ধন করেছে। এ ছাড়া সাংবাদিকরা আমাকে নিয়ে অনেক কভারেজ দিয়েছে। কথা বলার সময় সিজারকে মানসিকভাবে অনেকটা বিধ্বস্ত দেখা যাচ্ছিল। তার কথা জড়িয়ে আসছিল। একপর্যায়ে তার বাবা তাকে থামিয়ে দিয়ে ভেতরে নিয়ে যেতে চান। তিনি বলেন, ও অসুস্থ..। আর কথা বলতে পারবে না।
এ সময় মোবাশ্বারের বোন, তামান্না তাসনিম বলেন, আমার ভাই শারীরিকভাবে মোটামুটি ঠিক আছে, তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।
এদিকে ছেলেকে ফিরে পেয়ে সিজারের বাবা মোতাহের হোসেন গণমাধ্যমের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে, আমরা নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। আমরা অনেক খুশি। আমি আর কিছু চাই না। তিনি বলেন, সিজার বাসায় আসার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ থেকে ১২ জন সদস্য এসেছিলেন। থানায় যে জিডি করেছিলাম সেই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা যা হবার তা হবে।
গত ৭ই নভেম্বর বিকাল থেকে সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না মোবাশ্বার হাসান সিজারের। ওই দিন বনশ্রীর বাসা থেকে বের হয়ে তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এরপর আগারগাঁওয়ের একটি অফিসে কাজ করে বের হওয়ার পর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন তার পরিবারের পক্ষ থেকে খিলগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নিখোঁজ হওয়ার পর ঢাকা ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড স্যোসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণায়ও জড়িত।
No comments