ওরা ফেরে রহস্যের জট খোলে না
একের
পর এক নিখোঁজ। দিনের পর দিন খোঁজাখুঁজি। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় স্বজনদের দিন
পার। কেউ ফিরছে তো কেউ ফিরছে না। সম্প্রতি কিছুদিনের ব্যবধানে একে একে ফিরে
আসেন কয়েকজন নিখোঁজ। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মোবাশ্বার হাসান সিজার,
সাংবাদিক উৎপল দাস, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায় ও গিয়াস উদ্দিন।
তাদের নিখোঁজ হওয়া ও ফেরার ধরন প্রায় অভিন্ন। অবরুদ্ধ থাকার বর্ণনাও কাছাকাছি। কিন্তু ফেরার পরও মিলছে না নিখোঁজ ও অবরুদ্ধ থাকার নানা প্রশ্নের উত্তর। অধরা রয়ে গেছে কেন কীভাবে অপহরণ হয়ে কোথায় অবরুদ্ধ ছিলেন তারা, সেসব প্রশ্নের জবাব।
গত ৭ই নভেম্বর নিখোঁজ হয়েছিলেন নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান সিজার। ওইদিন তিনি সরকারের এটুআই প্রকল্পের এক সভায় যোগ দিতে গিয়ে গুম হন। এর প্রায় দেড় মাসের মাথায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কে বা কারা তাকে বিমানবন্দর এলাকায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। এরপর বনশ্রীর বাসায় ফেরেন তিনি। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেছিল পরিবার। ওই জিডি তদন্তের দায়িত্ব পড়ে একই থানার উপ-পরিদর্শক নগেন্দ্র কুমার দাসের উপর। তার সন্ধানে জিডি’র সুরাহা হলেও এখন পর্যন্ত রহস্যের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তিনিও জানাতে পারেননি তেমন কিছু।
মানবজমিনকে ওই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও সিআইডিসহ পুলিশের একাধিক বিভাগ প্রায় দেড় মাস ধরে তার অনুসন্ধান চালায়। কিন্তু কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। সিজার ফিরে আসার পর তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও এতদিন কোথায় কীভাবে অবরুদ্ধ ছিলেন তার কিছুই জানাতে পারেননি। প্রথমদিন তাকে অপহরণের সময় দু’টা চড় থাপ্পড় দিলেও তারপর কোন খারাপ ব্যবহার করেনি বলে জানান। মুক্তিপণও চাওয়া হয়নি। এখন তিনি কিছু বলতে না পারলে আমরা কী করবো।
এই রহস্য কী কোন দিন জানা যাবে না এমন প্রশ্নের উত্তরে নগেন্দ্র বলেন, জিডি’র কার্যকারিতা তো এখানেই শেষ। এখন পরিবার যদি কাউকে দায়ী করে মামলা করতে চায় তা নেয়া হবে। তা না হলেও সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে পুলিশের ছায়া তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে গত ১০ই অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিল থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উৎপল দাস। গত ২২শে অক্টোবর তার সন্ধান চেয়ে মতিঝিল থানায় জিডি করেছিল ওই সংবাদ মাধ্যম কর্তৃপক্ষ। পরদিন তার পিতা চিত্তরঞ্জন দাসও একটি জিডি করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পুলিশ তার কিনারা করতে পারেনি। অবশেষে নিখোঁজের ২ মাস ৯ দিন পর গত মঙ্গলবার রাতে একইভাবে তাকে পাওয়া যায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ভূলতায়। পরে তিনিও একইভাবে পরিবারের কাছে ফেরেন। নিখোঁজ থাকতে যেমন পুলিশ তার খোঁজ বা রহস্যের সন্ধান দিতে পারেনি, তেমনি ফিরে আসার পরও রহস্যের কিনারা করতে পরেনি। এতদিন কোথায় কীভাবে তাকে অবরুদ্ধ রাখা হয় সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে পারেনি। জানাতে পারেনি। একইভাবে এই ঘটনাও রহস্যাবৃত রয়ে গেছে।
সাংবাদিক উৎপলের জিডি’র তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মাহমুদ মানবজমিনকে বলেন, তাকে ফিরে পাওয়ার একদিন আগে থেকে আমি ছুটিতে। তাকে কোথায় কীভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যমে যা জেনেছি, তার বাইরে আমার কিছু জানা নেই। তবে আমরা রহস্য জানার চেষ্টা করবো।
এদিকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের ৮১ দিন পর গত ১৬ নভেম্বর দিবাগত গভীর রাতে গুলশানের বাসার কাছে একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয় ব্যবসায়ী ও বেলারুশের অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ কুমার রায়কে। গত ২৭শে আগস্ট গুলশান-১ থেকে নিখোঁজ হন আরএমএম লেদার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাতবার সিআইপি মনোনীত এই অনিরুদ্ধ। দীর্ঘ সময় তাকেও কোথায় কেন আটকে রাখা হয়েছিল সেই রহস্য অধরা রয়ে গেছে। তিনি নিজে যেমন কিছুই বলতে পারেননি, পুলিশও উদঘাটন করতে পারেনি সেই রহস্যের জট।
ওই জিডি তদন্তের দায়িত্ব পালন করেন গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, অনিরুদ্ধ ফিরে আসার পর আমাদেরকে তেমন কিছুই জানাতে পারেননি। প্রথম নিখোঁজ ডায়েরি করা কল্লোল হাজারা গত ২০শে নভেম্বর আরো একটি জিডি করে জানান যে, ১৭ তারিখ অনিরুদ্ধ ফিরে আসেন এবং আমাদের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। মামলাও করা হবে না। তবু আমরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু জানতে পারিনি।
কোন প্রশ্নে উত্তর জানা যায়নি রাজধানীর শাজাহানপুর থেকে সম্প্রতি নিখোঁজের তিনদিন পর পরিবারের কাছে ফিরে আসা বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিনের বিষয়েও। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিখোঁজ হওয়া ওই ব্যক্তিদের সন্ধান মিললেও অধরা রয়ে যাচ্ছে কে কেন আপহরণ ও জিম্মির শিকার। ঠিক কোথায় তাদের আটকে রাখা হয়। স্বয়ং নিখোঁজ ব্যক্তিও জানতে পারছে না তা। তারা কেবল খণ্ড খণ্ড ধারণা দিতে পারছেন। চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। বলছেন এক কক্ষে আটকে রাখার কথা। কিন্তু তা কোন এলাকায় তা কেউ জানাতে পারেননি। তবে ভাগ্য তাদের সহায় হওয়ায় হাতে চাঁদ ফিরে পেয়েছে পরিবার। কিন্তু তাদের মতো নিখোঁজ অনেকের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। গুলশান-২ থেকে নিখোঁজ প্রকাশক তানভীর ইয়াছিন করিমসহ অনেকের পরিবার এখনও উৎকণ্ঠায়। এর মধ্যে রয়েছেন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষকসহ অনেকেই। তারা ফিরে আসার আশায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে তাদের স্বজনরা।
তাদের নিখোঁজ হওয়া ও ফেরার ধরন প্রায় অভিন্ন। অবরুদ্ধ থাকার বর্ণনাও কাছাকাছি। কিন্তু ফেরার পরও মিলছে না নিখোঁজ ও অবরুদ্ধ থাকার নানা প্রশ্নের উত্তর। অধরা রয়ে গেছে কেন কীভাবে অপহরণ হয়ে কোথায় অবরুদ্ধ ছিলেন তারা, সেসব প্রশ্নের জবাব।
গত ৭ই নভেম্বর নিখোঁজ হয়েছিলেন নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বার হাসান সিজার। ওইদিন তিনি সরকারের এটুআই প্রকল্পের এক সভায় যোগ দিতে গিয়ে গুম হন। এর প্রায় দেড় মাসের মাথায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কে বা কারা তাকে বিমানবন্দর এলাকায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। এরপর বনশ্রীর বাসায় ফেরেন তিনি। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পর উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে খিলগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেছিল পরিবার। ওই জিডি তদন্তের দায়িত্ব পড়ে একই থানার উপ-পরিদর্শক নগেন্দ্র কুমার দাসের উপর। তার সন্ধানে জিডি’র সুরাহা হলেও এখন পর্যন্ত রহস্যের কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। তিনিও জানাতে পারেননি তেমন কিছু।
মানবজমিনকে ওই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি ও সিআইডিসহ পুলিশের একাধিক বিভাগ প্রায় দেড় মাস ধরে তার অনুসন্ধান চালায়। কিন্তু কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। সিজার ফিরে আসার পর তার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও এতদিন কোথায় কীভাবে অবরুদ্ধ ছিলেন তার কিছুই জানাতে পারেননি। প্রথমদিন তাকে অপহরণের সময় দু’টা চড় থাপ্পড় দিলেও তারপর কোন খারাপ ব্যবহার করেনি বলে জানান। মুক্তিপণও চাওয়া হয়নি। এখন তিনি কিছু বলতে না পারলে আমরা কী করবো।
এই রহস্য কী কোন দিন জানা যাবে না এমন প্রশ্নের উত্তরে নগেন্দ্র বলেন, জিডি’র কার্যকারিতা তো এখানেই শেষ। এখন পরিবার যদি কাউকে দায়ী করে মামলা করতে চায় তা নেয়া হবে। তা না হলেও সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে পুলিশের ছায়া তদন্ত অব্যাহত থাকবে।
এদিকে গত ১০ই অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিল থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উৎপল দাস। গত ২২শে অক্টোবর তার সন্ধান চেয়ে মতিঝিল থানায় জিডি করেছিল ওই সংবাদ মাধ্যম কর্তৃপক্ষ। পরদিন তার পিতা চিত্তরঞ্জন দাসও একটি জিডি করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘদিন পুলিশ তার কিনারা করতে পারেনি। অবশেষে নিখোঁজের ২ মাস ৯ দিন পর গত মঙ্গলবার রাতে একইভাবে তাকে পাওয়া যায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ভূলতায়। পরে তিনিও একইভাবে পরিবারের কাছে ফেরেন। নিখোঁজ থাকতে যেমন পুলিশ তার খোঁজ বা রহস্যের সন্ধান দিতে পারেনি, তেমনি ফিরে আসার পরও রহস্যের কিনারা করতে পরেনি। এতদিন কোথায় কীভাবে তাকে অবরুদ্ধ রাখা হয় সে সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের উত্তর জানতে পারেনি। জানাতে পারেনি। একইভাবে এই ঘটনাও রহস্যাবৃত রয়ে গেছে।
সাংবাদিক উৎপলের জিডি’র তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মাহমুদ মানবজমিনকে বলেন, তাকে ফিরে পাওয়ার একদিন আগে থেকে আমি ছুটিতে। তাকে কোথায় কীভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা জানা যায়নি। সংবাদমাধ্যমে যা জেনেছি, তার বাইরে আমার কিছু জানা নেই। তবে আমরা রহস্য জানার চেষ্টা করবো।
এদিকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের ৮১ দিন পর গত ১৬ নভেম্বর দিবাগত গভীর রাতে গুলশানের বাসার কাছে একটি গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয় ব্যবসায়ী ও বেলারুশের অনারারি কনসাল অনিরুদ্ধ কুমার রায়কে। গত ২৭শে আগস্ট গুলশান-১ থেকে নিখোঁজ হন আরএমএম লেদার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাতবার সিআইপি মনোনীত এই অনিরুদ্ধ। দীর্ঘ সময় তাকেও কোথায় কেন আটকে রাখা হয়েছিল সেই রহস্য অধরা রয়ে গেছে। তিনি নিজে যেমন কিছুই বলতে পারেননি, পুলিশও উদঘাটন করতে পারেনি সেই রহস্যের জট।
ওই জিডি তদন্তের দায়িত্ব পালন করেন গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, অনিরুদ্ধ ফিরে আসার পর আমাদেরকে তেমন কিছুই জানাতে পারেননি। প্রথম নিখোঁজ ডায়েরি করা কল্লোল হাজারা গত ২০শে নভেম্বর আরো একটি জিডি করে জানান যে, ১৭ তারিখ অনিরুদ্ধ ফিরে আসেন এবং আমাদের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। মামলাও করা হবে না। তবু আমরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু জানতে পারিনি।
কোন প্রশ্নে উত্তর জানা যায়নি রাজধানীর শাজাহানপুর থেকে সম্প্রতি নিখোঁজের তিনদিন পর পরিবারের কাছে ফিরে আসা বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিনের বিষয়েও। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নিখোঁজ হওয়া ওই ব্যক্তিদের সন্ধান মিললেও অধরা রয়ে যাচ্ছে কে কেন আপহরণ ও জিম্মির শিকার। ঠিক কোথায় তাদের আটকে রাখা হয়। স্বয়ং নিখোঁজ ব্যক্তিও জানতে পারছে না তা। তারা কেবল খণ্ড খণ্ড ধারণা দিতে পারছেন। চোখ বেঁধে নিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। বলছেন এক কক্ষে আটকে রাখার কথা। কিন্তু তা কোন এলাকায় তা কেউ জানাতে পারেননি। তবে ভাগ্য তাদের সহায় হওয়ায় হাতে চাঁদ ফিরে পেয়েছে পরিবার। কিন্তু তাদের মতো নিখোঁজ অনেকের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। গুলশান-২ থেকে নিখোঁজ প্রকাশক তানভীর ইয়াছিন করিমসহ অনেকের পরিবার এখনও উৎকণ্ঠায়। এর মধ্যে রয়েছেন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষকসহ অনেকেই। তারা ফিরে আসার আশায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছে তাদের স্বজনরা।
No comments