ব্যাংক লুটেরাদের বিচার দাবি জাতীয় সংসদে
ব্যাংক লুটেরাদের বিচার দাবি করেছে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দলটির সংসদ সদস্যরা বলেছেন, সরকার ব্যাংক লুটেরাদের বিচার করার পরিবর্তে উল্টো নানাভাবে করারোপের নামে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের কঠোর সমালোচনা করে তারা আরও বলেন, আগে ব্যাংকে সুদ থেকে শুল্ক কাটা হতো, এবারের বাজেটে জনগণের গচ্ছিত আসল টাকাতেই হাত দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের শুধু ইমেজই (ভাবমূর্তি) ক্ষুণ্ণ হয়নি, ভোটব্যাংকেও আঘাত হানবে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির তিনজন সংসদ সদস্য এসব কথা বলেন। এ সময় সরকারি দলের কোনো কোনো সদস্য তাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রায় একই সুরে বক্তব্য রাখেন। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশীদ, ফখরুল ইমাম ও নুরুল ইসলাম ওমর। সরকারি দলের আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, সোহরাব হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আবদুল ওয়াহাব। সংসদ সদস্যরা বলেন, আবগারি শুল্ক আরোপে সাধারণ আমানতকারীরা আতঙ্কে আছেন। এতে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখবেন না। এছাড়া দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সহজে বিদেশে পাচার করছে। কিন্তু প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
আইন থাকলেও বাস্তবায়ন নেই। ব্যাংকিং খাতে চলছে লুটপাট। কিন্তু মূল হোতারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিনিয়োগে চলছে স্থবিরতা। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে বিনিয়োগ হচ্ছে না। প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থান হচ্ছে না। এসব বিষয়ে সমাধান না হলে দেশের অর্থনীতি এগোবে না। এদিকে আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন- অর্থ পাচার যেটা হয়, সেটা বেআইনি, সেটা রুদ্ধ করার সুযোগ নেই। তবে পাচারের সুযোগ কমাতে আগামী মাসেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আস্তিক, নাস্তিক, বামপন্থী-চরমপন্থী হাইব্রিড- সবাইকে নৌকায় তুলেছেন। এত পরিমাণ লোক নৌকায় উঠেছে যে, নৌকা এখন ডুবো ডুবো। এ আস্তিক-নাস্তিক নিয়া সাগর পাড়ি দিবেন ক্যামনে? নির্বাচনই বা কিভাবে পাড়ি দেবেন? তিনি আরও বলেন, ’৭০ সালের নৌকা আর এখনকার নৌকা এক নয়। ’৭০ সালের নৌকা ছিল ছোট। ছোট নৌকা নিয়েই কিন্তু বঙ্গবন্ধু সাড়ে ৭ কোটি লোক নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। এখন বাজেট অনেক বড়, নৌকাও অনেক বড়। নৌকায় কারে উঠিয়েছেন এখন? কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, যেখানে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা উঠতে পারেননি। ভোট দেন- দেখবেন, এই আস্তিক-নাস্তিক আর হাইব্রিড আওয়ামী লীগারদের সঙ্গে ত্যাগী আওয়ামী লীগারদের দূরত্ব বেড়ে গেছে। পাশে এদের কাউকে পাবেন না। তিনি বলেন, ‘টাকা খরচ তো হয়েই গেছে। এখন আইছেন সংসদে, কেন? এই টাকা হচ্ছে জনগণের টাকা। জনগণের ট্যাক্সের টাকা। খরচ কইর্যা আইছেন আমাদের বৈধতা দেন। আমাদের বৈধতা তো দিতেই হবে। কারণ সরকারি দল হ্যাঁ-না ভোটে জিতে যাবে। বৈধতা হয়েই গেল। এটা অনৈতিক, অসাংবিধানিক।’ বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় পুতুলকে মানুষ ভেবে খেলি। আরও একটু বড় হলে মানুষকে পুতুল ভেবে খেলি। মাননীয় অর্থমন্ত্রী। দেশের সমস্ত জনগণকে মনে করেছেন পুতুল। পুতুলের যেমন বাকশক্তি নাই। এই দেশের ১৬ কোটি মানুষও বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছে, তাদের কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তাদের বোধশক্তি নেই। তাহলে কি এখানে এ বাজেট আসে? ৪৯টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ২৭টি মন্ত্রণালয় বেশি খরচ করে ফেলেছে। একজন বলেছে, ১৮ হাজার কোটি টাকা মাত্র। এক লাখ কোটি টাকা যেহেতু পাচার হয়ে গেছে দেশ থেকে। তা হলে ওই ১৮ হাজার কোটি টাকা কিছুই না। সেইজন্য এটা বলে।’ জাতীয় পার্টির এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘কালকে একজন হুইপ বললেন, দ্রব্যমূল্য যা বেড়েছে তাতেও মানুষ খুশি। একথা শুনলে মানুষ হাসে।
আপনি তো আলো-বাতাস সবকিছু ফ্রি পান। আপনারা বুঝতে পারবেন না। মানুষের ইনকাম বাড়ে নাই। রাজপথে ইফতারি খেয়ে রোজা ভাঙতে হয়। সেজন্য তাদের ব্যথার কথা বুঝবেন না। জনগণের টাকা ভাঙলেন, সংসদের কাছে আইছেন বৈধতা নিতে।’ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী এই টাকা খরচ করার পিছনে যুক্তি দেখান। মন্ত্রীরা বিরাট বিরাট বহর নিয়ে বিদেশে যান। এমন এমন মন্ত্রী আছেন বছরে ৯ মাস বিদেশ থাকেন। কারণ কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই।’ তিনি বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময় তিনি (আবুল মাল আবদুল মুহিত) ২টি বাজেট দিয়েছেন। খুব ভালো বাজেট দিয়েছেন। ৫ হাজার ৮০০ কোটির বাজেট। এ বাজেট দিয়েই আমরা ৪৬০টি উপজেলা করেছিলাম, জেলা পরিষদ করেছিলাম।’ অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে আমানত রাখবেন আবগারি শুল্ক বসিয়েছেন। আগে সুদ থেকে টাকা কাটা হতো এখন কাটবেন আসল থেকে। ভোটের আগে বাজেট... ভোট যে কি পরিমাণ নষ্ট হয়েছে রাস্তায় না গেলে বুঝবেন না।’ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘সরকারে গেলে দুই ধরনের লোকের অভাব হয় না। একটি হল তেল দেওয়া, আরেকটি হল বাঁশ দেওয়া। ব্যাংক লুট যারা করেছে তাদের বিচার না করে জনগণকে...। জনগণকে পুতুল ভাববেন না।’ জাপার আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘একজন সিনিয়র মন্ত্রী বলেছেন, সমুদ্র কি নৌকা দিয়ে পাহারা দেওয়া যায়? যায় না। সমুদ্র পাহারা দিতে হলে জাহাজ কিনতে হবে। আমিও তাই বলব। নৌকা দিয়ে কিছুই করা যাবে না। নৌকায় আপনারা সবাই উঠে পড়েছেন। নৌকা এখন ডুবো ডুবো। তাই আমি আরও বলব, নৌকা দিয়ে সমুদ্র পাহারা দেয়া যাবে না। নৌকা দিয়ে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নেয়া যাবে না। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে হলে আরও কিছু লাগবে। কি লাগবে? লাঙল লাগবে। এর আগেও লাঙ্গলকে লেগেছে।’ ফখরুল ইমাম আরও বলেন, গত ৩ বার লাঙল দিয়ে আমরা আপনাদের সাহায্য করেছি। তবে প্রবলেম কোথায় জানেন? আপনাদের সাহায্য করার পর ভুলে যান। এবারও ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের কি ভূমিকা ছিল। সেটা ভুলে গেছেন। ৩ জনকে দিয়ে সহায়তা করছি। আরও চাইলে সামনে বসে আছেন, দেওয়া যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এক লাখ টাকার ওপরে ট্যাক্স-আবগারি শুল্ক ধরা হলে মূলধন কমে যায়। মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে চায় না। বালিশের নিচে, মাটির নিচেও প্রবলেম আছে। সেটা নাকি সরকারের। আকারে-প্রকারে অর্থমন্ত্রী রেকর্ড করতে চান। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে খাজনা বেশি আদায় করতে হবে। সরকার মানেই খাজনা আদায়কারী, জনগণ মানেই খাজনা দেওনওয়ালা।’ পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেই জানিয়ে ফখরুল ইমাম বলেন, ‘অর্থ পাচার রোধে আইন করেছেন। কিন্তু যথাযথ প্রয়োগ করছেন না। বিদেশে অর্থ পাচার করে কথিত শিল্পোদ্যোক্তারা গাড়ি-বাড়ি করেছেন।’ রেমিটেন্স কম আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মেগা প্রকল্প নিয়ে মেগাজটে পড়েছে সরকার। সামনে নির্বাচন। আগামী ২ বছরের মধ্যে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না। প্রবৃদ্ধি বাড়লেও কর্মসংস্থান বাড়ছে না। পার ক্যাপিটা ইনকাম...। অর্থনীতি ভয়াবহ অবস্থায় আছে। আশা করি, অর্থমন্ত্রী সবকিছু উতরে এগিয়ে নেবেন দেশকে।’ জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ওমর ব্যাংক আমানতের ওপর আরোপিত আবগারি শুল্ক আরোপের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখা নিয়ে দেশের জনগণের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যেভাবে বিষয়টি প্রচার হয়েছে তাতে আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার করে নিলেও সরকারের যে ইমেজ ক্ষুণœ হয়েছে, তা পূরণ হবে না। তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেন পৃথিবীর সব দেশে নাকি ব্যাংকে চুরির ঘটনা ঘটে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো কোথাও এভাবে সাগরচুরির ঘটনা ঘটে না। ব্যাংক লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো আরও তিনি তাদের পুরস্কৃত করছেন।’ সরকারি দলের সংসদ সদস্য সোহরাব হোসেন বলেন, বিনিয়োগ না থাকায় অর্থনীতি সচল হচ্ছে না। বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন উদ্যোক্তাদের নগদ প্রণোদনা দিতে হবে। ১৯৯৬ সালে এ ধরনের একটি সুযোগ ছিল। ফলে ওই সময় ব্যাপক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। অভ্যন্তরীণ শিল্পায়নের জন্য এ সুবিধা দিতে হবে। তিনি বলেন, কালো টাকা বিদেশ চলে যাচ্ছে। আইন করে অপ্রদর্শিত আয় প্রকাশের সুযোগ দেয়া উচিত। বর্তমান বৈধ আয় (কলো টাকা) প্রকাশের সুযোগ নেই। এ সুযোগ দেয়া হলে টাকা সরবরাহ বাড়বে। এতে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক গ্রাহকের আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক আরোপের ফলে প্রান্তিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি মনে করি না, প্রধানমন্ত্রী এতে সমর্থন দেবেন। তা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অর্থ পাচার রোধে আগামী মাসেই ব্যবস্থা : দেশ থেকে মুদ্রা পাচারের সুযোগ কমাতে জুলাইয়ে নতুন কিছু ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। তবে কী ধরনের ব্যবস্থা নেবেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অর্থ পাচার যেটা হয় সেটা বেআইনি, সেটা রুদ্ধ করার সুযোগ নেই। তবে যেটা আমরা করতে পারি তা হচ্ছে পাচারের সুযোগ কমানো। আমরা টাকা পাচারের সুযোগ কমানো বা কালো টাকা সৃষ্টির সুযোগ কমানোর ব্যবস্থা করতে পারি। কিছু ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আগামী মাসের মধ্যে দেখবেন কী কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। তবে নিয়মিতভাবে কালো টাকা সাদা করার আইন দেশে আছে। সেক্ষেত্রে ২০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ আছে এবং ভবিষ্যতে থাকবে।’ বর্ধিত আবগারি শুল্ক নিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘ব্যাংকের আমানতের ওপর কর ধার্য নতুন কিছু নয়, আগেই ছিল। আপনারা বহু বছর ধরে অনবরত দিয়ে যাচ্ছেন। আমি করের হারটা একটুখানি বাড়িয়েছি মাত্র।’ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কিছুটা কমানো হবে। সাধারণত সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বাজারের সুদের হারের থেকে একটু বেশি রাখা হয়। তবে খুব বেশি রাখা উচিত নয়।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সামগ্রিক একটি হিসাব হল, মার্কেট ইন্টারেস্ট রেটের থেকে কমপক্ষে দুই শতাংশ বা তার বেশি রাখা দরকার। সেই অনুযায়ী এ রেট নির্ধারণ করা হবে। তবে এজন্য একটু সময় লাগবে।’ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ছাড়া প্রত্যেকটি দেশেরই রেমিটেন্স কমেছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিটেন্স কমার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। রেমিটারদের অনেকেই এখন বিদেশে বাসস্থান গড়ছেন। তারা বিদেশের নাগরিক হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। এজন্য সেখানে তারা যথেষ্ট সম্পদ রাখেন।’ আগামী অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘এবারের বাজেট, একটি অত্যন্ত ভালো বাজেট। আমার ৮৪ বছরের যে অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা বা ব্যর্থতা সব কিছু নিয়েই তৈরি করেছি। সম্পূরক বাজেটে সেরকম কৃতিত্ব দাবি করি নাই।’ প্রসঙ্গ জাতীয় পার্টি : জাতীয় পার্টির মন্ত্রী থাকা অবস্থায় দুইবার বাজেট পেশ করেছেন- বিভিন্ন মহলের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘অনেকে বলেছেন, আমি নাকি জাতীয় পার্টির মন্ত্রী হিসেবে সংসদে প্রথম বাজেট দিয়েছি। বাস্তবে এটি ঠিক নয়। আমি কখনও জাতীয় পার্টি করিনি, জাতীয় পার্টির সদস্য বা মন্ত্রীও ছিলাম না। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান হন, তখন ওই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করি। ওই সময় আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল, আমি কোনো দলের সদস্য হব না। এরশাদ দল করলে মন্ত্রী থেকে চলে যাব। দেশের একমাত্র মন্ত্রী হিসেবে আমি পদত্যাগপত্র দিয়ে পদত্যাগ করেছি। এর আগে জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদ পদত্যাগ করেছিলেন।’ এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৮৩ সালে এরশাদ আমাকে বললেন, আমি একটি পার্টি করব। আপনি থাকেন। আমি বলেছি, আমার আগের সিদ্ধান্তেই আমি অটল। রাজনৈতিক দলে থাকতে পারব না। তখন তিনি আমাকে বললেন, আপনি যেতে পারেন। আমি পদত্যাগ করলাম। তখন আমাকে বলা হল, দল গঠনে আরও কিছুদিন বিলম্ব হবে। আপনি মন্ত্রী থাকেন। আমি থাকলাম। পরে ১৯৮৪ সালের ৮ জানুয়ারি আমাকে এরশাদ বিদায় দিলেন। অত্যন্ত সদয় বিদায় দিয়েছিলেন মন্ত্রিসভায় অনুষ্ঠান করে।’ এজন্য সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ধন্যবাদ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি ভালো মানুষ, সজ্জন মানুষ।’
No comments