অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার শ্রমিক নেতাকে ছিনিয়ে নিল সহযোগীরা
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা শ্রমিক লীগের এক নেতাকে গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরের আমিন জুট এলাকা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর বাড়িতে আরও অস্ত্রের মজুত রয়েছে এমন তথ্য তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানান। তাঁর নাম মো. সাইফুদ্দিন ওরফে বাপ্পী। পরে রাতেই তাঁকে নিয়ে বোয়ালখালীতে অভিযানে যায় পুলিশ। বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার শেষ করার পরই পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে চার পুলিশ সদস্য আহত হন। এ সময় শ্রমিকনেতাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান হামলাকারীরা। গত বৃহস্পতিবার রাতে বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের হোরারবাগ গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আসামি সাইফুদ্দিন বোয়ালখালী উপজেলা শ্রমিক লীগের সহসভাপতি। তাঁর বড় ভাই বেলাল হোসেন সারোয়াতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এইচ এম এরশাদ উল্লাহ, আইয়ুব উদ্দিন ও সঞ্জয় পাল এবং চান্দগাঁও থানার এসআই মফিজ উদ্দিন। তাঁরা চট্টগ্রাম পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ অঞ্চল) এস এম মোবাশ্বের হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার শহীদনগর ও আতুরার ডিপো এলাকায় গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। গ্রেপ্তার আসামিরা অস্ত্রের জোগানদাতা হিসেবে সাইফুদ্দিনের নাম জানান।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর-হাটহাজারী সড়কের আমিন জুট এলাকা থেকে সাইফুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুদ্দিন পুলিশকে জানান, তাঁর গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালীর সারোয়াতলীতে অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম রয়েছে। তাঁর দেওয়া ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে নিয়ে বোয়ালখালীতে যায়। সেখানে সাইফুদ্দিনের খাটের নিচ থেকে একটি বিদেশি রিভলবার, একটি শাটারগান, একটি এয়ারগান, একটি চায়নিজ কুড়াল, চারটি বিভিন্ন সাইজের ধামা, ১৬টি বিভিন্ন আকৃতির ছুরি ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। সাইফুদ্দিনের বড় ভাই সারোয়াতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলাল হোসেন গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই সাইফুদ্দিনকে সাদাপোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা ধরে নিয়ে যেতে চাইলে এলাকাবাসী বাধা দেন। সাইফুদ্দিনের বিরুদ্ধে আগের তিনটি অস্ত্র মামলা সম্পর্কে তাঁর দাবি, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করতে মামলাগুলো করা হয়েছিল। তবে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা অস্ত্রের বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের পাঁচলাইশ অঞ্চলের সহকারী কমিশনার বলেন, অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে ফেরার সময় বাড়ির আঙিনাতেই সাইফুদ্দিনের ছোট ভাই সালাউদ্দিনের নেতৃত্বে ৫০ থেকে ৬০ জন লোক পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
No comments