দুর্নীতি দেশের মাটি এটা সহ্য করবে না : ড. কামাল
বিশিষ্ট আইনজীবি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, শহীদদের মাটি কোন দিন অন্যায় অত্যাচার মেনে নেবে না। তিনি দুর্নীতিবাজদের সর্তক করে দিয়ে বলেন,’বাবা তোমরা যারা দুর্নীতি করছ, শুনে রাখ বাংলাদেশের মাটি এটা সহ্য করবে না। দেখ তোমাদের পুর্ব পুরুষদের কি হয়েছে? রাগব বোয়াল যারা দুর্নীতি করেছে তারা কি ভালোআছে ? তাদের কি পরিনতি হয়েছে? তিনি সব্বাই আশ্বস্থ করে বলেন, অবশ্যই আমরা এদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পারব। সন্ত্রাসমুক্ত করতে পারব। আজ ৮১’ পা রাখলেন বিশিষ্ট এই আইনজীবি ড. কামাল হোসেনের। আর তার দল গণফেরারামের উদ্যোগে বেইলী রোডস্থ বাসভবনের সামনে এক অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখতে গিয়ে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। সকাল ৯’টায় নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় তার ৮০তম জন্মদিন পালন করেন তারা। এসময় তার পাশে ছিলেন বিশিষ্ট মানবাধিকার নেত্রী তার স্ত্রী ড. হামিদা হোসেন। সভায় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য নেতা মফিজুল ইসলাম খান কামাল, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ আ ও ম শফিক উল্লাহ , মোশতাক আহমেদ, ফজলুল কবির কাওসার প্রমুখ। ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, শহীদরা লুটপাটকারীদের রক্ষার জন্য শহীদ হননি। পাচারকারীদের বাঁচাতে রক্ত দেননি। জনগণকে এটা বোঝাতে হবে দেশের গুনগত পরিবর্তনের জন্য শহীদ জীবন দিয়েছেন। জনগণ যারা আয় করছে তা দিয়ে এদেশের মানুষ সুখেই থাকবে,হাসপাতালে ভালো চিকিৎসাও পাবে তারা। সভ্য রাষ্ট্র করতে যা লাগবে তার ঘাটতি হবে না। তিনি বলেন, নিরাশ হবার কোন কারণ নেই। দেশে ঘুষ দনীর্তি প্রাতিষ্টানিক রুপ নিতে দেয়া হবে না। অত্যাচার নির্যাতনমুক্ত বাংলাদেশ অবশ্যই আমরা গরবই। তিনি উপস্থিত তরুণ নেতাদের বলেন আমরা যতদিন বেচে থাকব আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাব। জন্মদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে এনেছেন। আমি আসতে চায়নি। তিনি আমাদের দলে যোগ দিতে বললে রাজি হয়নি,বলেছিলাম আমি তো আপনার কর্মী হিসাবে কাজ করতেই পানি,দলে যোগ দেবার কি আছে? এর উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, একজন সফল উকিল ব্যারিস্টার হয়ে টাকা কামাই করকে পারবে,মানুষের মন পাবে না। রাজনীতি হল মানুষের সেবা করা। ঝুকি নিয়ে তাদের জন্য লড়াই করা। সত্যিকারের রাজনীতিতে এলে মানুষের যে ভালোবাসা পাওয়া যায় এর তুলনা অন্য কিছুতে নেই।
মানুষের সত্যিকারের ভালোবাসা পেতে হলে রাজনীতিতে আসতে হবে। সত্যিই আমি আজ দেখছি বঙ্গবন্ধুর কথাই ঠিক,এটা একশত ভাগ সত্যিই। এখন আজ ষোল আনাই প্রমান হচ্ছে। আজ যে ভালোবাসা পাচ্ছি তা এক হাজার কোটি টাকা দিয়েও কেনা যায় না। রাজনীতি না করলে জনগণের জন্য সত্যিকারার্থেই কিছু করা যায় না। তিনি বলেন হাজার হাজার টাকা কামই করতে পারে,বিরাট বিরাট দালান কোট করতে পারে কিন্তু তাদের নাম মানুষ মনেও রাখতে পারবে না। ড. কামাল হোসেন যারা দেশের মানুষের মঙ্গলের জন্য ঝুকি নিয়েছে.ত্যাগ স্বীকার করেছে তাদেরকেই মনে রাখে। তিনি বলেনএই যে এখন গর্ব করে বলা হচ্ছে ছয় ভাগ সাত উন্নয়ণ হচ্ছে দেশে তার পেছনে কারা রয়েছে? শ্রমিকরা,গার্মেন্টস শ্রমিক মেয়েরা করছে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা করছে, রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে। আর জন্যগ্রণের এই টাকা কতিপয় লোক দেশের বাইরে পাচার করছে। প্রতিকায় এসেছে দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করে জানতে চান করা এই পাচারকারী। তিনি বলেন, যারা পাচার করছে তাদের নানানভাবে পুরস্কৃত হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষকে এখনও কষ্ট করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, দাবি দাওয়া আদায়ে গার্মেন্টস কর্মীরা রাস্তায় নেমেছে,শান্তিপুর্ণভাবে মিছিল মিটিং করে তারা। অথচ তাদের এক হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বিদেশী ক্রেতারা সরকারকে চাপ দিয়েছে ওদের ছেড়ে দিতে। এবং তাদের ছাড়া হয়। এটা কি লজ্জা না? ক্রেতাদের কথায় আমরা রাজি হলাম। এটাই রোগ শাসনব্যবস্থার রোগ,এ রোগ থেকেই জাতিকে মুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, বাঙালী জাতির একটা বৈশিষ্ট আছে। তারা অন্যায়কে মেনে নেয়নি। লোভের শিকার হয়ে অন্যায়কে আমরা সমর্থন করি না। এদেশে নিরানব্বই ভাগ মানুষের লোভে বিক্রি হয় না। বঙ্গবন্ধুও বলেছিলেন গরু ছাগলের মাথা বিক্রি হয়,মানুষের মাথা বিক্রি হয় না। স্বাধীনতার ফল ভোগ করতে হলে সবাইকে মানুষ হতে হবে। যারা মনে স্বাধীনতার অর্থ চুরি করা, অসৎভাবে টাকা অর্জন করা তা ভুল হবে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় বলা হয়েছি, ওকে ( এরশাদ) বাদ দিয়ে কি করে নির্বাচন হবে। কিন্তু সবাই দেকল কিভাবে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে।
No comments