বাবরি মসজিদ ধ্বংস : যেভাবে রং পাল্টেছিলেন বাজপেয়ী
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের আগের দিন তার বিস্ফোরক বক্তৃতা যেমন শিহরণ জাগিয়েছিল, তেমনই বাবরি ধ্বংসের পর তা নিয়ে দুঃখপ্রকাশও আলোড়ন জাগিয়েছিল৷ আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিটি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী৷ ২৫ বছর পর সুপ্রিম কোর্ট যখন বাবরি ধ্বংস মামলায় লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলি মনোহর যোশী ও উমা ভারতীর বিরুদ্ধে শুনানি শুরুর নির্দেশ দিয়েছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে বাজপেয়ীর নামও৷ ১৯৯২-এ বাবরি ধ্বংসের আগের দিন ভজন, কীর্তন গেয়ে হিন্দু করসেবকদের রাম জন্মভূমি কেড়ে নেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন বাজপেয়ীও৷ দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধেও উঠেছিল৷ সে দিন জলপ্লাবনের মতো জনসমাগমকে উদ্দেশ করে বাজপেয়ী বলেছিলেন, ‘অযোধ্যায় করসেবা করা আদালতের নির্দেশের অবমাননা নয়৷ বরং কর সেবা করেই আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মান্য করব৷’ বিতর্কিত ভূমিতে কোনো ধরনের নির্মাণের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল কোর্ট৷ তা মেনে নিয়েই বাজপেয়ীর পরামর্শ ছিল, অন্যভাবে ওই ভূমিতে অধিকার স্থাপন করতে হবে৷
গান, ভজন, যজ্ঞের মাধ্যমে সেই মঞ্চ প্রস্ত্তত করতে হবে৷ বাবরি মসজিদ ভেঙে দেওয়ার পরোক্ষ ইঙ্গিতেই বলেছিলেন, ‘ধারালো পাথর বেরিয়ে এসেছে, সেখানে কেউ বসতে পারবেন না৷ সেই ভূমিকে সমান করা প্রয়োজন, বসার উপযুক্ত করে গড়ে তোলা প্রয়োজন৷’ এর পর দিনই, ৬ ডিসেম্বর বাবরি ধ্বংস৷ আর তার পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্পূর্ণ অন্য সুর শোনা গিয়েছিল বাজপেয়ীর গলায়৷ বলেছিলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক৷ এটা ঘটা উচিত ছিল না৷ আমরা এই ঘটনা আটকানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্ত্ত সফল হয়নি৷ আমরা দুঃখিত৷’ বাবরি ধ্বংস আটকাতে না পারার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন সাংবাদিক৷ উত্তর মিলেছিল, ‘করসেবকদের একাংশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল৷ বিতর্কিত নির্মাণের কোনো ক্ষতি ওরা করবে না বলে যে আশ্বাস দিয়েছিল, তা পালন করেনি৷’ বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় কী ভাবে রাজনীতিকরা সুর বদলেছেন, তার অন্যতম প্রমাণ হিসেবে বাজপেয়ীর এই ভিডিওকে তুলে ধরা হয়৷ মামলার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনে ফিরে এল সেই স্মৃতিই৷
No comments