জনগণ জঙ্গিবাদ বিশ্বাস করে না : গয়েশ্বর
বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘দেশে জঙ্গি-টঙ্গি শুনছি।
তো এটা ভালো-মন্দ বুঝি না। হয়তো বা আছে। কিন্তু জনগণ বিশ্বাস করে না।
মানুষে নানা ধরনের কথা বলে। কিন্তু তাদের সব কথা তো আর পত্রিকায় লেখা হয়
না।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন,
এখনও সময় আছে আপনি দেশের সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সামরিক বিশেষজ্ঞদের
নিয়ে আলোচনায় বসুন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে ভারত সফরে যান এবং দেশটাকে বাঁচাতে
চেষ্টা করুন, আমাদের ন্যায্য দাবি আদায় করুন। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা
রিপোর্টার্স ইউনিটি (সাগর-রুনি) মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির
বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়
গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) অঙ্গসংগঠন যুব জাগপা এ আলোচনাসভার আয়োজন করে।
ভারত বাংলাদেশ সামরিক চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘চুক্তিটা যে
যৌক্তিকতা বুঝানোর জন্যই দেশে কয়েকটি ঘটনা ঘটবে বলে সাধারণ মানুষের ভাবনা।’
‘এই মুহূর্তে দেশে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হচ্ছে হাসানুল হক ইনু। সে গণতন্ত্রে
বিশ্বাস করে না। ওরা সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্যদিয়ে গণবাহিনীকে ব্যবহার করে
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছে। তারা সুযোগ নিয়েছে, ব্যর্থ হয়েছে। এগুলো
ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে।’ তিনি বলেন, আজকে যত সমস্যার কথা আমরা বলি না
কেনো সব সমস্যার সমাধান একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। যা আমরা ১৯৭১ সালে
স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে করেছিলাম। জনগণ অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিল।
গণতান্ত্রিক চেতনা নিয়েই একটি সমাজ ও রাষ্ট্রগঠনের জন্য কিন্তু সেদিন
স্বাধীনতা যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছিলাম। গয়েশ্বর বলেন, ‘আজকে
রাজনৈতিক অঙ্গনে আমরা যত সমস্যাই দেখি না কেনো, সকল সমস্যার সমাধান কিন্তু
একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। অর্থাৎ জনগণকে জনগণের ক্ষমতা দিতে হবে। জনগণকেই
তার ভবিষ্যত প্রতিনিধি নির্বাচনের কথা বলতে হবে। সুতরাং যে দেশে জনগণের
ক্ষমতা কিছু ব্যক্তি ব্যবহার করে সেদেশে কখনো শান্তি আসতে পারে না।’ তিনি
বলেন, ‘জঙ্গি-টঙ্গি শুনছি। তো এটা ভালো-মন্দ বুঝি না। হয়তোবা আছে। কিন্তু
জনগণ বিশ্বাস করে না। মানুষে নানা ধরনের কথা বলে।
কিন্তু তাদের সব কথা তো
আর পত্রিকায় লেখা হয় না। এখন আমরা যদি তাদের কথা বলি সেগুলোও কেউ বিশ্বাস
করবে না। বলবে যা- এটার কোনো ভিত্তি নাই।’ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর
প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর আমাদের জন্য কি বার্তা
নিয়ে আসবে তা কিন্তু আমাদেরকে সরকারের পক্ষে বলা হয়নি। একটি স্বাধীন দেশের
সাথে আরেকটি দেশের চুক্তি হতেই পারে। কিন্তু কি চুক্তি হবে? কার সঙ্গে, কী
প্রয়োজনে চুক্তি হবে? সেই চুক্তি দেশের জন্য কতটুকু মঙ্গল বয়ে আনবে? সেই
বিষয়গুলো জানার অধিকার কিন্তু জনগণের আছে।’ গয়েশ্বর বলেন, ‘চুক্তি তো
অনৈতিক কিছু নয়। দুইটি দেশের মাঝে সামরিক চুক্তি হবে। কিন্তু একটি দেশ তো
আমাদের তিনদিকে ঘেরাও করা। আর দক্ষিণ অঞ্চলে তো সাগর। সুতরাং সামরিক চুক্তি
কার বিরুদ্ধে? এই মুহূর্তে বাংলাদেশকে আক্রমণ করতে পারে এমন সীমান্ত
কোথায়? ভারতই তো আমাদের তিনদিকে। তাহলে ভারতের সাথে তো আমাদের যুদ্ধ হওয়ার
সম্ভাবনা নেই।’ ‘এজন্যই আমার জানতে ইচ্ছা হয়, বাংলাদেশ এই মুহূর্তে কী
সামরিক চুক্তি করবে? বাংলাদেশের সেনাবাহিনী কি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে? তারা
কি কোনো আক্রমণের আশঙ্কা আছে? সুতরাং সামরিক চুক্তি করতে গেলে সেনাবাহিনী,
সামরিক বিশেষজ্ঞ আছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো আছে তাদেরকে অজ্ঞ রেখে
গোপনে আড়ালে-আবডালে এতো দৌড়ঝাঁপ কেনো?’ সংগঠনের সভাপতি ফাইজুর রহমানের
সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ
সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান। সঞ্চালনা করেন শেখ ফরিদউদ্দিন।
No comments