দুর্নীতি মামলায় পার্ক জিউন গ্রেফতার
দুর্নীতির
অভিযোগে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাইকে
গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সিউলের প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে
তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে দক্ষিণ সিউলের একটি কারাগারে নেয়া হয়। সেখানে
পার্ককে সাধারণ বন্দির মর্যাদা দেয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়,
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত পার্কের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
মঞ্জুর করার পর তাকে কারাগারে নেয়া হয়। ৬৫ বছরের পার্ককে রাজধানী সিউলের
দক্ষিণের একটি ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। পার্কের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক
অভিযোগ দায়েরের আগে তাকে সর্বোচ্চ ২০ দিন আটক করে রাখা যাবে। যদি পার্ক
দোষী সাব্যস্ত হন তবে তার ১০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। বৃহস্পতিবার
সিউল সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে প্রায় নয় ঘণ্টার শুনানি শেষে আদালত
পার্কের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আদালতের রায়ে বলা হয়,
‘পার্কের বিরুদ্ধে আনা প্রধান অভিযোগগুলো ন্যায্য এবং যেহেতু এখানে প্রমাণ
নষ্ট করার ঝুঁকি রয়েছে তাই তাকে গ্রেফতার প্রয়োজন এবং সমর্থনযোগ্য।’
টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারে দেখা যায়, কালো রঙের একটি সেডান গাড়িতে করে
কৌঁসুলির কার্যালয়ে অপেক্ষারত পার্ককে ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
মধ্যরাতের পরপর পার্ককে নিয়ে যাওয়া হলেও ওই সময় কৌঁসুলির কার্যালয়ের
সামনে তার প্রায় ৫০ জন সমর্থক জাতীয় পতাকা হাতে নেতার মুক্তির দাবি জানান।
রাজপ্রাসাদের বিলাসবহুল জীবন থেকে এখন কারাগারের ছোট্ট কুঠুরিতে সময় কাটছে
পার্ক জিউন হাইয়ের। এএফপি জানিয়েছে, পার্ককে কারাগারে সাধারণ বন্দির
মর্যাদা দেয়া হয়েছে। কারাগারের একজনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সারা রাত
পার্ক নির্ঘুম ছিলেন, এমনকি রাতের খাবারও গ্রহণ করেননি। নিউইয়র্ক টাইমসের
প্রতিবেদনে বলা হয়, পার্ককে রাতে সাধারণ মানের সস্তা খাবার দেয়া হয়, ওই
খাবারের দাম মাত্র ১.৩০ ডলার (১০৪ টাকা)। খাওয়ার পর নিজের প্লেট নিজেকেই
ধুয়ে নিতে হয়। ঘুমানোর জন্য সাধারণ বিছানা দেয়া হয়েছে, যার ভাঁজ খুলে
ফ্লোরেই পাততে হয়। ব্যক্তিগত লাভের লক্ষ্যে বান্ধবীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে
রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি ব্যবহার করেছেন- এমন অভিযোগে গত বছরের
মাঝামাঝি সময়ে সংসদে ও রাজপথে পার্কের ?বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। গত
ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পার্ককে অভিশংসনের পক্ষে
রায় দেয় পার্লামেন্ট। মার্চে দেশটির সাংবিধানিক আদালত ওই রায় বহাল রাখেন।
তবে যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পার্ক। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে
অভিযোগ তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
No comments