তুরস্কে গণভোটে সংবিধানে কী পরিবর্তন, কেন পরিবর্তন?
সংবিধান সংশোধনে আজ তুরস্কে গণভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশটির প্রায় সাড়ে ৫কোটি ভোটার আজ এ ব্যাপারে তাদের সুনির্দিষ্ট মতামত দেবেন। এতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ও তার দল একেপি হ্যাঁ ভোট দেয়ার জন্য ব্যাপক প্রচারাভিযান চালিয়েছেন। আর বিরোধী দল ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি) হ্যাঁ ভোটে সমর্থন জানালেও প্রধান বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) না ভোটের পক্ষে ক্যাম্পেইন চালিয়েছে।
কেন এই পরিবর্তন?
এরদোগান সমর্থকরা বলছেন, হ্যাঁ ভোট জয়ী হলে এরদোগান হবেন আধুনিক তুরস্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা। তবে তার বিরোধিরা বলছেন, এর ফলে তিনি কর্তৃত্বপরায়ণ শাসক হতে পারেন। ২০০৩ সাল থেকে তুরস্ক শাসন করছে এরদোগানের প্রতিষ্ঠিত জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি। ধর্মপরায়ণ এরদোগানের শাসনে তুরস্কে ইসলামীকরণ দৃশ্যমান। এতে শঙ্কিত দেশটির প্রভাবশালী সেক্যুলাররা। এরদোগানের সমর্থকরা বলছেন, তার শাসনে তুর্কিরা এখন ‘স্বর্ণযুগ’ পার করছেন। তিনি তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশকে এখন ইউরোপের মানে উন্নীত করেছেন এবং সেক্যুলার এলিটদের সঙ্গে লড়াই করে ধর্মভীরুদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইস্তাম্বুলে এরদোগানের একটি সমাবেশে ইয়েস ক্যাপ মাথায় তাগচু নামের এক সমর্থক বলেন, ‘তাকে আরও ক্ষমতা দেয়া দরকার। তার ক্ষমতা যথেষ্ট নয়। তুরস্ক এখন সোনালী যুগ পার করছে এবং তায়েপ এরদোগানের সমর্থনে জনগণ সম্ভব সবকিছু করবে।’ নাজিমেত সিলোগ্লু নামের আরেক এরদোগান ভক্ত আরও একধাপ এগিয়ে। তিনি বলেন, ‘খোদাকে ধন্যবাদ যে তিনি এরদোগানকে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন। তার পিতামাতাকে ধন্যবাদ যে তারা আমাদের দেশের জন্য তাকে লালনপালন করে বড় করেছেন।’ কিন্তু এরদোগান বিরোধীরা বলছেন, এতে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘন্টা বাজবে। এরদোগানের স্বৈরশাসন কায়েম হবে।
কী পরিবর্তন আনতে চান এরদোগান?
প্রস্তাবিত সাংবিধানিক পরিবর্তন যদি এরদোগানের পক্ষে যায়, তাহলে তুরস্কের শাসনপদ্ধতিতে এক মৌলিক পরিবর্তন ঘটবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
♦ সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হবে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ক্ষমতার ব্যাপক বৃদ্ধি। এজন্য তার বিরোধীরা প্রবলভাবে চেষ্টা করেছেন এটা ঠেকানোর জন্য।
♦ এই সাংবিধানিক পরিবর্তনে তুরস্কের পার্লামেন্টারি পদ্ধতি বদলে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার প্রবর্তন হবে। প্রেসিডেন্ট হবেন নির্বাহী প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান, এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও তার সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকবে।
♦ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বিলুপ্ত করে দুই বা তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে।
♦ এমপিদের সংখ্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে।
♦ প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিনে হবে। প্রেসিডেন্ট দু মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
♦ প্রেসিডেন্ট হাতে পাবেন নতুন ক্ষমতা। তিনি মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন, বাজেট তৈরি করবেন, সিনিয়র বিচারপতিদের অধিকাংশকে নিয়োগও দেবেন তিনিই, এবং ডিক্রি জারি করে কিছু বিষয়ে আইনও করতে পারবেন।
♦ প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন।
♦ পার্লামেন্ট আর মন্ত্রীদের ব্যাপারে তদন্ত করতে পারবে না। এসব পরিবর্তন প্রেসিডেন্টকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটেএমপিরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টর বিচারের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন লাগবে। এরদোগানের যুক্তি: নতুন ব্যবস্থায় নির্বাহী প্রেসিডেন্ট পদ সৃষ্টি হবে, যা সরকারের নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগের কর্মকাণ্ড আরও স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে। তিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থায় তুরস্ক সরকার আরও শক্তিশালী হবে। এ ব্যবস্থায় স্বল্পমেয়াদি কোয়ালিশন সরকারের পুরনো ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তন হবে না। তিনি জানান, তুরস্কে এর আগে কোয়ালিশন সরকার সর্বনিন্ম ২৫ দিন আর গড়ে ১৬ মাস টিকেছে। কিন্তু সেইদিন এখন অতীত।
এরদোগানের দিকেই পাল্লা ভারি: তুরস্কের আসন্ন গণভোটে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের পাল্লাই ভারি বলে জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে। পৃথক দুটি জরিপে দেখা যায়, নির্বাহী প্রেসিডেন্সি চালু করার পক্ষে (হ্যাঁ ভোট) ৫১ থেকে ৫২ শতাংশ ভোট পড়তে পারে। আগামী রোববারের গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে তুরস্ক হবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রেসিডেন্টশাসিত দেশ। এর আগে তুরস্কে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। জরিপকারী সংস্থা আনারের ৫-১০ এপ্রিল দেশটির ২৬টি প্রদেশে পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, ৫২ শতাংশ ভোটার হ্যাঁ ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন। ৪০০০ লোকের মুখোমুখি সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে জরিপটি পরিচালিত হয়। আনার বলছে, মার্চের শুরুতে তাদের জরিপে হ্যাঁ ভোটের পক্ষে যে সমর্থন ছিল এবারের জরিপে সেটা দুই ভাগ বেড়েছে। তবে ৮ ভাগ ভোটার এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। জরিপটি শুধু তুরস্কে বসবাসকারীদের ওপর চালানো হয়েছে। প্রবাসী তুর্কিরাও ভোটার।
কেন এই পরিবর্তন?
এরদোগান সমর্থকরা বলছেন, হ্যাঁ ভোট জয়ী হলে এরদোগান হবেন আধুনিক তুরস্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা। তবে তার বিরোধিরা বলছেন, এর ফলে তিনি কর্তৃত্বপরায়ণ শাসক হতে পারেন। ২০০৩ সাল থেকে তুরস্ক শাসন করছে এরদোগানের প্রতিষ্ঠিত জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি। ধর্মপরায়ণ এরদোগানের শাসনে তুরস্কে ইসলামীকরণ দৃশ্যমান। এতে শঙ্কিত দেশটির প্রভাবশালী সেক্যুলাররা। এরদোগানের সমর্থকরা বলছেন, তার শাসনে তুর্কিরা এখন ‘স্বর্ণযুগ’ পার করছেন। তিনি তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশকে এখন ইউরোপের মানে উন্নীত করেছেন এবং সেক্যুলার এলিটদের সঙ্গে লড়াই করে ধর্মভীরুদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইস্তাম্বুলে এরদোগানের একটি সমাবেশে ইয়েস ক্যাপ মাথায় তাগচু নামের এক সমর্থক বলেন, ‘তাকে আরও ক্ষমতা দেয়া দরকার। তার ক্ষমতা যথেষ্ট নয়। তুরস্ক এখন সোনালী যুগ পার করছে এবং তায়েপ এরদোগানের সমর্থনে জনগণ সম্ভব সবকিছু করবে।’ নাজিমেত সিলোগ্লু নামের আরেক এরদোগান ভক্ত আরও একধাপ এগিয়ে। তিনি বলেন, ‘খোদাকে ধন্যবাদ যে তিনি এরদোগানকে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন। তার পিতামাতাকে ধন্যবাদ যে তারা আমাদের দেশের জন্য তাকে লালনপালন করে বড় করেছেন।’ কিন্তু এরদোগান বিরোধীরা বলছেন, এতে গণতন্ত্রের মৃত্যুঘন্টা বাজবে। এরদোগানের স্বৈরশাসন কায়েম হবে।
কী পরিবর্তন আনতে চান এরদোগান?
প্রস্তাবিত সাংবিধানিক পরিবর্তন যদি এরদোগানের পক্ষে যায়, তাহলে তুরস্কের শাসনপদ্ধতিতে এক মৌলিক পরিবর্তন ঘটবে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
♦ সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হবে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ক্ষমতার ব্যাপক বৃদ্ধি। এজন্য তার বিরোধীরা প্রবলভাবে চেষ্টা করেছেন এটা ঠেকানোর জন্য।
♦ এই সাংবিধানিক পরিবর্তনে তুরস্কের পার্লামেন্টারি পদ্ধতি বদলে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার প্রবর্তন হবে। প্রেসিডেন্ট হবেন নির্বাহী প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান, এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও তার সরাসরি সম্পৃক্ততা থাকবে।
♦ প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা বিলুপ্ত করে দুই বা তিন জন ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে।
♦ এমপিদের সংখ্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ করা হবে।
♦ প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিনে হবে। প্রেসিডেন্ট দু মেয়াদের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
♦ প্রেসিডেন্ট হাতে পাবেন নতুন ক্ষমতা। তিনি মন্ত্রীদের নিয়োগ দেবেন, বাজেট তৈরি করবেন, সিনিয়র বিচারপতিদের অধিকাংশকে নিয়োগও দেবেন তিনিই, এবং ডিক্রি জারি করে কিছু বিষয়ে আইনও করতে পারবেন।
♦ প্রেসিডেন্ট একাই জরুরি অবস্থা জারি করতে পারবেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে পারবেন।
♦ পার্লামেন্ট আর মন্ত্রীদের ব্যাপারে তদন্ত করতে পারবে না। এসব পরিবর্তন প্রেসিডেন্টকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া দ্রুততর করবে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটেএমপিরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন। প্রেসিডেন্টর বিচারের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন লাগবে। এরদোগানের যুক্তি: নতুন ব্যবস্থায় নির্বাহী প্রেসিডেন্ট পদ সৃষ্টি হবে, যা সরকারের নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগের কর্মকাণ্ড আরও স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে। তিনি বলেন, নতুন ব্যবস্থায় তুরস্ক সরকার আরও শক্তিশালী হবে। এ ব্যবস্থায় স্বল্পমেয়াদি কোয়ালিশন সরকারের পুরনো ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তন হবে না। তিনি জানান, তুরস্কে এর আগে কোয়ালিশন সরকার সর্বনিন্ম ২৫ দিন আর গড়ে ১৬ মাস টিকেছে। কিন্তু সেইদিন এখন অতীত।
এরদোগানের দিকেই পাল্লা ভারি: তুরস্কের আসন্ন গণভোটে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগানের পাল্লাই ভারি বলে জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে। পৃথক দুটি জরিপে দেখা যায়, নির্বাহী প্রেসিডেন্সি চালু করার পক্ষে (হ্যাঁ ভোট) ৫১ থেকে ৫২ শতাংশ ভোট পড়তে পারে। আগামী রোববারের গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে তুরস্ক হবে যুক্তরাষ্ট্রের মতো প্রেসিডেন্টশাসিত দেশ। এর আগে তুরস্কে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। জরিপকারী সংস্থা আনারের ৫-১০ এপ্রিল দেশটির ২৬টি প্রদেশে পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, ৫২ শতাংশ ভোটার হ্যাঁ ভোটের পক্ষে মত দিয়েছেন। ৪০০০ লোকের মুখোমুখি সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে জরিপটি পরিচালিত হয়। আনার বলছে, মার্চের শুরুতে তাদের জরিপে হ্যাঁ ভোটের পক্ষে যে সমর্থন ছিল এবারের জরিপে সেটা দুই ভাগ বেড়েছে। তবে ৮ ভাগ ভোটার এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। জরিপটি শুধু তুরস্কে বসবাসকারীদের ওপর চালানো হয়েছে। প্রবাসী তুর্কিরাও ভোটার।
এরদোগান মঙ্গলবার বলেছেন যে, প্রবাসী তুর্কিরা বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে কনসেনসাস নামের আরেকটি জরিপকারী সংস্থার জরিপে দেখা যায়, হ্যাঁ ভোটের পক্ষে সমর্থন ৫১.২ ভাগ। ২-৮ এপ্রিল ২০০০ লোকের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়। এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে জয়ের জন্য যদি কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা থাকত তবে এরদোগান হতেন বিশ্বসেরা। তিনি অপরাজিত। ২০০৩ সাল থেকে দল ক্ষমতায় আসার পর এরদোগান ১১টি নির্বাচনে- পাঁচটি সংসদ নির্বাচন, দুটি গণভোট, তিনটি স্থানীয় নির্বাচন ও একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোগান লড়াই করেছেন এবং প্রতিটিতেই জয়ী হয়েছেন। মঞ্চে তিনি অতুলনীয়, তার বাগ্মিতার কৌশলও প্রায় অনন্য। এ নির্বাচন এরদোগানের সামনে দ্বাদশ চ্যালেঞ্জ। এএফপি বলছে, এরদোগানের শাসনে তুরস্কে মাথাপিছু আয় বেড়ে তিনগুণ হয়েছে।
No comments