তুরস্কে ঐতিহাসিক গণভোট আজ
তুরস্কের প্রেসিডেন্টশাসিত ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে আজ রোববার দেশটিতে ঐতিহাসিক গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির প্রস্তাবিত সংবিধান অনুমোদনের প্রশ্নে এ গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের জন্য মরিয়া এরদোগান সমর্থকরা। শেষ দিনের মতো শনিবার জোর প্রচার চালান তারা। অপরদিকে ‘না’ ভোটের জন্য প্রচারণা চালান তার বিরোধীরা। খবর আল-জাজিরার। গণভোটের রায়ে সংবিধান অনুমোদনের প্রস্তাব পাস হলে দেশটিতে চালু হবে পূর্ণ প্রেসিডেন্টশাসিত সরকার ব্যবস্থা। এতে নির্বাহী ক্ষমতার একচ্ছত্র মালিক হবেন প্রেসিডেন্ট। থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর কোনো পদ। তবে ভাইস প্রেসিডেন্টের পদ তৈরি করা হবে। ফলে ‘হ্যাঁ’ ভোট জিতলে ১৯২৩ সালে প্রজাতন্ত্র ঘোষণার পর এই প্রথম তুরস্কের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে প্রচারণাকারীদের মতে, তুরস্ককে আরও স্থিতিশীল এবং নিরাপদ করতেই সংবিধানের প্রস্তাবিত পরিবর্তন দরকার। তবে বিরোধীরা মনে করছেন, সংবিধানের প্রস্তাবিত সংশোধনী তুরস্ককে একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিয়ে যাবে। এতে দেশটির গণতান্ত্রিক ভাবধারা ক্ষুন্ন হবে। সংবিধান সংশোধন হলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন এরদোগান।
তুরস্কের সংবিধান সংশোধনের পক্ষে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) এবং তুর্কি কট্টর ডানপন্থী দল ন্যাশনালিস্ট অ্যাকশন পার্টি (এমএইচপি)। এর আগে ইস্তাম্বুলে এক সমাবেশে এরদোগান বলেন, ‘এ গণভোট প্রয়োজন, কারণ শুধু ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে যাতে আর কেউ তুরস্কের রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসতে না পারে।’ তবে বিরোধী দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (এইচডিপি) দাবি, এ গণভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছেন এরদোগান। এছাড়া আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক প্রতিষ্ঠিত ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিকে ধীরে ধীরে দুর্বল ও অকার্যকর করে দেয়া হবে। একই সঙ্গে পশ্চিমা গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতার মূল্যবোধ থেকেও দূরে সরে যাবে তুরস্ক। সংবিধানের এ সংশোধনীকে কেন্দ্র করে ইউরোপের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না তুরস্কের। এর মাধ্যমে এরদোগান কর্তৃত্বশালী হয়ে উঠতে চাইছেন বলে মনে করছে ইউরোপের দেশগুলো। সংবিধান সংশোধনের পক্ষে এরদোগান প্রশাসনকে প্রচারণা চালাতে দেয়নি নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ড সরকার। এতে ইউরোপের ওপর চটেছেন এরদোগান। নেদারল্যান্ডস ও জার্মানিকে ‘নাৎসিদের অবশিষ্টাংশ এবং ফ্যাসিবাদী’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
No comments