'রোল মডেল' হতে চান ইউনিস খান
একজন ‘টিম ম্যান’ হিসেবে স্মরণীয় হতে চান শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলার অপেক্ষায় থাকা পাকিস্তানের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ইউনিস খান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন তিন টেস্টের সিরিজ শেষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেয়া এই পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানের কাছে কেবলমাত্র দলের পারফরমেন্সই সব। তিনি একজন ‘টিম ম্যান’ হিসেবে স্মরণীয় হওয়ার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছেন। ৩৯ বছর বয়সী ইউনিস বলেন, তিনি চান টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর তরুণ ক্রিকেটাররা তাকে তাদের রোল মডেল হিসেবে গ্রহণ করুক। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ফেসবুক একাউন্টে দেয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে ইউনিস বলেন, ‘আমি যখন ড্রেসিং রুমে থাকবো না, আমি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবো না, আমি চাই তরুণ ক্রিকেটাররা তখন আমাকে তাদের একজন রোল মডেল হিসেবে বিবেচনা করুক। ইউনিস ভাই ভিন্নধর্মী অবস্থানে কি করতেন- আমি চাই তারা (তরুণরা) এমনটা চিন্তা করুক। আমি অবসরে যাওয়ার পর তারা আমাকে নিয়ে ভাবুক আমি সেটা চাই। আমি এমন একটা উত্তরাধিকার রেখে যেতে চাই।’ আগামী ২২ এপ্রিল বারবাডোজে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে শুরু হওয়া সিরিজের আগে তিনি বলেন, ‘আমি চাই একজন টিম-ম্যান হিসেবে সবাই আমাকে স্মরণ করুক, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে যিনি সবসময় পাকিস্তান ও দলের জন্য খেলেছেন।’ প্রিয় ইনিংসের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিস ২০০০ সালে নিজের অভিষেক ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইনিংসটি সবচেয়ে স্মরণীয় বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ‘আমার প্রথম টেস্ট রানটি ছিল আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি। এটি ছিল স্মরণীয়। রাওয়ালপিন্ডিতে ২০০০ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমি এটা করেছিলাম।
আল্লাহর ইচ্ছায় আমি একটি সেঞ্চুরি (দ্বিতীয় ইনিংসে) করেছিলাম।’ নিজের ক্যারিয়ারের আরো কিছু স্মরণীয় মুহূর্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অকল্যান্ডে ১৪৯ রানের ইনিংসটি, ভারতের বিপক্ষে কলকাতায় প্রথম ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর ব্যাঙ্গালুরুতে ২০০, ইংল্যান্ডের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৭৫ এবং ত্রিপল সেঞ্চুরি অবশ্যই স্মরণীয়। পাকিস্তানের তরুণ খেলোয়াড়দের সে সময়ের কাউকে ফলো করতে হবে। যে ইনিংসের মাধ্যমে আমি তৃতীয় পাকিস্তানী হিসেবে ত্রিপল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলাম।’ দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক সাফল্য পেয়েছেন ইউনিস। তার অনেক বড় অর্জনের মধ্যে একটি ছিল ২০০৯ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে শিরোপা এনে দেয়া। টেস্টে গড় রান ৫০ প্লাস, ভারতের বিপক্ষে একটি ত্রিপল, একটি ডাবল সেঞ্চুরি এবং তার ব্যাটিং নৈপুণ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ই ইউনিসের ক্যারিয়ারের কথা বলে দেয়। টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ইউনিস এ পর্যন্ত ১১৫ ম্যাচে ৯,৯৭৭ রান সংগ্রহ করেছেন। আর মাত্র ২৩ রান করলেই দেশের পক্ষে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে দশ হাজার রান পূর্ণ হবে তার। গত জানুযারিতে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের ৩৪তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ১১ দেশের বিপক্ষে তিন অংকের মাইলফলক স্পর্শ করা প্রথম ক্রিকেটার হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেন ইউনিস।
No comments