ভুয়া দূতাবাস
জরাজীর্ণ একটি ভবন। দেয়ালের রং গোলাপি। সামনের রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। ভেতরের দেয়ালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার একটা ছবি ঝুলছে। এটাই নাকি মার্কিন দূতাবাস! তবে সেখানকার কর্মীরা তুর্কি নাগরিক। তারা ইংরেজি ও ডাচ্ ভাষায় কথা বলে। তাদের সহযোগিতা করে ঘানার কয়েকজন ব্যক্তি। ঘানার রাজধানী শহর আক্রায় প্রায় এক দশক ধরে কাজ করেছে এই ভুয়া মার্কিন দূতাবাস। একদল প্রতারক সেখানে ব্যবসা খুলে বসেছিল। তারা জাল ভিসা প্রিন্ট করে বিক্রি করত। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মার্ক টোনার গত সোমবার এ খবর দিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব জাল ভিসা নিয়ে কেউ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পেরেছে বলে জানা যায়নি। আসল ভিসা ও ভ্রমণসংক্রান্ত কাগজপত্র দেখেই ভুয়া ভিসা তৈরি করত ওই প্রতারকেরা। তবে এখনকার দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা জাল করা খুবই কঠিন।
তাই ওদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ভিসার জন্য লোকজন ঘানার রাজধানীতে গিয়ে ওই ভুয়া দূতাবাসে ধরনা দিত না। বরং জালিয়াত চক্রের কর্মীরাই গ্রাহকের খোঁজে পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত যেত। তারপর লোকজনকে ধরে আক্রার একটি হোটেলে রেখে ভুয়া মার্কিন ভিসা দেওয়ার নাম করে প্রত্যেকের কাছ থেকে ছয় হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত আদায় করত। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ওই ভুয়া দূতাবাসের একটি ছবিও প্রকাশ করেছে। আক্রায় আসল মার্কিন দূতাবাসটা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত। চারপাশে কড়া নিরাপত্তা। কাছাকাছি আরও কয়েকটি দেশের কূটনৈতিক দপ্তর আছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ওই ভুয়া দূতাবাস চালাতে প্রতারকেরা দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করত। কিন্তু কীভাবে এ রকম একটা ভুয়া দূতাবাস এত দীর্ঘদিন ধরে কাজ চালিয়ে গেল? টোনার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন পুলিশকে এই অপরাধের কথা জানাতে বিব্রতবোধ করত। কেউ তো পুলিশকে গিয়ে বলবে না যে তিনি অবৈধভাবে মার্কিন ভিসা পেয়েছেন। কারণ, এটা তো ভয়ংকর। আক্রায় নাকি নেদারল্যান্ডসেরও একটি ভুয়া দূতাবাস আছে। এ বিষয়ে ডাচ্ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড্যাফনে কেরেমানস বলেছেন, এখনো এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
No comments