আমি কোন নির্বাচন দেখিনি -নুরুল কবীর
সাম্প্রতিক
সময়ে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দ্যা নিউ এজের সম্পাদক নুরুল
কবীর বলেছেন, আমি কোন নির্বাচন দেখিনি। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি’র সুলতানা
রহমানের উপস্থাপনায় ‘বাংলাদেশ এখন’ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি
বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন অন্তর্ধান করেছে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের ৫
তারিখে। যেদিন নির্বাচন ছাড়াই অনেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েছিল। যে
নির্বাচন বাংলাদেশে ৭০ সালে হয়েছিল, সেখানেও এদেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট
দিতে পেরেছিল। আর স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পেরেছিল বলেই বাংলাদেশের মানুষ
বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদকে সামনে নিয়ে তার পছন্দের প্রতিনিধিকে নিরঙ্কুশভাবে
নির্বাচিত করতে পেরেছিল। এ ব্যাপারটা তখনকার পশ্চিম পাকিস্তান মেনে নেয়নি
বলেই বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ নির্ভয়ে
নির্বিবাদে তার পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। আর যখনই বাংলাদেশের মানুষ
তার পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য একটি পরিপূর্ণ নিরপেক্ষ রাজনৈতিক
পরিস্থিতি বা পরিবেশ পায়নি প্রকৃতপক্ষে তখনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা
সংগ্রামের যেটা অন্যতম প্রধাণ স্তম্ভ বা অঙ্গীকার ছিল সেটা ধুলোর সাথে মিশে
গেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস টেনে নুরুল কবীর আরও বলেন,
১৯৭১ সালের অগাস্ট মাসে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খানরা স্বাধীনতা যুদ্ধ বানচাল
করার জন্য একটা উপনির্বাচন দিয়েছিল, সেই নির্বাচনেও পাকিস্তানি সামরিক
শাসকরা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় ৫০ জন প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করেছিল। অপরদিকে
স্বাধীন বাংলাদেশেও ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখে ১৫৩ জন প্রতিনিধি
নির্বাচিত হয়েছিল কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই। এছাড়া নির্বাচন শুরুর আগে
বহু অভিযোগ নির্বাচন কমিশনারের কাছে গেলেও তিনি এসব অভিযোগ আমলে নেননি।
তিনি আরও বলেন, যেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল
স্লোগান দেয় যে উন্নয়ন আগে, গণতন্ত্র পরে। সেদিনই মূলত বাংলাদেশের আত্মাকে
হত্যা করা হয়। এই ভাষা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলের নয়,
বরং এই ভাষা ছিল আইয়ুব খানের। নুরুল কবীর বলেন, হ্যা, নির্বাচন অনিয়মের এই
ধারাবাহিকতা বিএনপি আমলেও হয়েছে, এরশাদের আমলেও হয়েছে, এরশাদের আমলের আগেও
হয়েছে। কিন্তু আজকে যারা ক্ষমতায় আছেন তারা যদি পূর্বের ধারার সাথে বয়ে
চলেন তাহলে তাদের মুখে আর স্বাধীনতা চেতনার কথা মানায় না। এটা বাংলাদেশের
স্বাধীনতা চেতনা ও অঙ্গীকারের বিরুদ্ধে হয়ে যায়।
No comments