দেশ বাঁচান বিচার বিভাগকে বাঁচান -আলোচনায় সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী
সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে গতকাল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির আলোচনা সভা -নয়া দিগন্ত |
সাবেক
প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী বলেছেন, দেশের বিচার বিভাগ এখন
ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি দেশকে বাঁচাতে
চান, বিচার বিভাগকে বাঁচাতে চান, তাহলে এখনো সময় আছে, আন্দোলন করুন; বিচার
বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রধান বিচারপতি যে অবস্থান নিয়েছেন তা সমর্থন
করুন। তিনি বলেন, অবসরের পর রায় লেখাকে বেআইনি মনে করেন না তিনি। তবে সে
ক্ষেত্রে কোনোভাবেই রায়ের অর্ডার পোরশন পরিবর্তন করা যাবে না। রায়ের অর্ডার
পোরশন পরিবর্তন করা ফৌজদারি অপরাধ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিরাজমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, হাইকোর্ট বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ড. শাহদীন মালিক, অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারি, অ্যাডভোকেট খসরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক।
বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী বলেন, দেশের বিচার বিভাগ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যদি দেশকে বাঁচাতে চান, বিচার বিভাগকে বাঁচাতে চান, তাহলে এখনো সময় আছে, আন্দোলন করুন। তিনি আইনজীবী নেতা শামসুল হক চৌধুরীর কথা স্মরণ করিয়ে দেন আইনজীবীদের। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রধান বিচারপতি যে অবস্থান নিয়েছেন তা সমর্থন করুন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি হয়তো বছর তিনেক থাকবেন। এটা খুব বেশি সময় না। তবে এই সময়ে তিনি হয়তো সিস্টেমটা চালু করে যেতে পারবেন।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগকে সঠিক রাস্তায় নেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি যখন বললেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায় লেখা বেআইনি, তখন পার্লামেন্টে আলোচনার কিছু ছিল না।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, পার্লামেন্টে এই বিচারককে স্যাডিস্ট বলা হয়েছে। একজন নেতা সেখানে এই বিচারককে স্যাডিস্ট বলেছেন। তাহলে স্যাডিস্ট বিচারপতিকে তারা আবার আপিল বিভাগে নিলেন কেন? তিনি যে স্যাডিস্ট, আজ তা প্রমাণ হচ্ছে। এই বিচারপতি বর্তমান প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে নানা কথা বলে যাচ্ছেন। উনি কি ভাবছেন যে, এতে তার সম্মান বাড়বে? বাড়বে না। লোকে তাকে স্যাডিস্টই মনে করবে।
তিনি বলেন, বিচার কেবল করলেই হবে না। জনগণের কাছে এটি সঠিক বিচার বলে প্রতীয়মান হতে হবে। একটা মামলায় দেখলাম প্রসিকিউশন ৪০ জন সাক্ষ্য দিচ্ছে, আর ডিফেন্সকে চারজন সাক্ষী নির্ধারণ করে দেয়া হলো। এসব করে জুডিশিয়ারি নিচে নামছে। ওপরে উঠছে না। তিনি বলেন, যখন আইয়ুব খানের সামরিক শাসন ছিল, তখনো বঙ্গবন্ধুকে জামিন দেয়া হয়েছে। অথচ সে সময় কোনো বিচারককে বদলি করা হয়নি।
অবসরের পর রায় লেখাকে বেআইনি মনে করেন না সাবেক এই প্রধান বিচারপতি। তবে তা অবসরের পর গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সময়টা এক মাস বা তার কাছাকাছি হতে পারে বলে তিনি মত দেন। তবে তিনি আরো বলেন, পরে পূর্ণাঙ্গ রায় লিখলেও কোনোভাবেই ‘মূল আদেশ’ পরির্বতন করা যাবে না। রাতের আঁধারে যারা মূল আদেশ (অর্ডার পোরশন) পরিবর্তন করেন তারা ফৌজদারি অপরাধ করেন। এখন সেটা হচ্ছে। সে জন্যই হয়তো প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেছেন।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন বলেন, পরাধীন আমলেও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জামিন পেয়েছেন। আইয়ুবের মার্শাল ল’য়ের সময়ও এটা পেয়েছি। কিন্তু এখন জামিন পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। সংবিধান আর এই প্রতিষ্ঠানকে (বিচার বিভাগ) যারা চায় না তাদেরকে আমরা দেখেছি। এই প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে রক্ষা করা যায় সেটা ভাবতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তির নয়, এটা ১৬ কোটি মানুষের। আমি বিশ্বাস করি, আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, যারা এই প্রতিষ্ঠান চায় না, যারা বিচার বিভাগ চায় না, ’৭৫-এ আমরা কি দেখি নাই যে, সংবিধান নেই? এখনতো তাও সাংবিধান আছে। তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ে অসুস্থ হয়ে আছে, আর যারা তাদের আনুগত্য করে এসব ভুলে আছে, আল্লাহ তাদের সুস্থ করে দিন।
হাইকোর্ট বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। আমরা দেখছি, আর নীরব দর্শকের মতো চুপ করে বসে আছি। তিনি বলেন, সমস্যা কেবল চিহ্নিত করলেই হবে না, সমাধানের উপায় নিয়েও আলোচনা করতে হবে। আইনজীবীদের উদ্দেশে এই বিচারপতি বলেন, আপনারা ন্যায়বিচারের মশাল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মশাল। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আপনাদের দল থাকবে, কিন্তু যখন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন আসবে তখন আপনাদের ঐক্যবদ্ধ না থাকার কোনো কারণ দেখি না।
নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, বিচারকদের সাহস থাকতে হয়। সাহস না থাকলে তাদের এখানে আসা উচিত না। হাইকোর্টে ১৫ বছরের মতো বিচারক ছিলাম। কেউ কোনো দিন তদবির করার সাহস করেনি।
অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, বিচারকদের রায় নিয়ে এখন প্রায় প্রত্যেক বিচারপ্রার্থী অভিযোগ করে থাকেন। এই অভিযোগের কিছু বাস্তব ভিত্তিও রয়েছে। নি¤œ আদালতে পেশকাররা সবচেয়ে শক্তিশালী। তারা সেখানে কোর্ট চালায়। আর উচ্চ আদালতে বেঞ্চ অফিসাররা রাজা। বিচার বিভাগের পরিস্থিতি যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তাতে অচিরেই বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। বিচারকদের প্রমোশনের ক্ষেত্রে কারো আত্মীয়, কারো ঘনিষ্ঠজন, কারো পরিবারের সদস্যÑ এই হলো যোগ্যতা।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় নয়। বর্তমান পরিস্থিতি বিব্রতকর। তিনি আরো বলেন, শিশু আবদুল্লাহ হত্যার সাথে জড়িত একজনকে ক্রয়ফায়ারে হত্যা করা হলো। টিভিতে দেখলাম- এলাকাবাসী উল্লাস করছে, বলছে- ন্যায়বিচার হয়েছে। তাহলে আমাদের অবস্থান কোথায়? জনগণ মনে করছে- এটাই বিচার। তিনি বলেন, আমি মনে করি- এটা জনগণকে মনে করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এর অর্থ দাঁড়ায়, আমরা আইজীবীরা ব্যর্থ। আমাদের ওপর জনগণের আস্থা নেই।
আইনের এই শিক্ষক আরো বলেন, যে সমাজে বিচার নেই, সেই সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়। তিনি আফগানিস্তান থেকে লিবিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমরাও সে পথে হাঁটছি কি না? কারণ, আমরা মানুষ মারার পর উল্লাস করছি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে মূল কথা হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। এর জন্য ’৭২-এর সংবিধানের ষষ্ঠ অধ্যায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও বিরাজমান পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, হাইকোর্ট বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ড. শাহদীন মালিক, অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারি, অ্যাডভোকেট খসরুজ্জামান, অ্যাডভোকেট এ বি এম ওয়ালিউর রহমান খান প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক।
বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী বলেন, দেশের বিচার বিভাগ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। যদি দেশকে বাঁচাতে চান, বিচার বিভাগকে বাঁচাতে চান, তাহলে এখনো সময় আছে, আন্দোলন করুন। তিনি আইনজীবী নেতা শামসুল হক চৌধুরীর কথা স্মরণ করিয়ে দেন আইনজীবীদের। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষায় প্রধান বিচারপতি যে অবস্থান নিয়েছেন তা সমর্থন করুন। বর্তমান প্রধান বিচারপতি হয়তো বছর তিনেক থাকবেন। এটা খুব বেশি সময় না। তবে এই সময়ে তিনি হয়তো সিস্টেমটা চালু করে যেতে পারবেন।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগকে সঠিক রাস্তায় নেয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি যখন বললেন, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের রায় লেখা বেআইনি, তখন পার্লামেন্টে আলোচনার কিছু ছিল না।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, পার্লামেন্টে এই বিচারককে স্যাডিস্ট বলা হয়েছে। একজন নেতা সেখানে এই বিচারককে স্যাডিস্ট বলেছেন। তাহলে স্যাডিস্ট বিচারপতিকে তারা আবার আপিল বিভাগে নিলেন কেন? তিনি যে স্যাডিস্ট, আজ তা প্রমাণ হচ্ছে। এই বিচারপতি বর্তমান প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে নানা কথা বলে যাচ্ছেন। উনি কি ভাবছেন যে, এতে তার সম্মান বাড়বে? বাড়বে না। লোকে তাকে স্যাডিস্টই মনে করবে।
তিনি বলেন, বিচার কেবল করলেই হবে না। জনগণের কাছে এটি সঠিক বিচার বলে প্রতীয়মান হতে হবে। একটা মামলায় দেখলাম প্রসিকিউশন ৪০ জন সাক্ষ্য দিচ্ছে, আর ডিফেন্সকে চারজন সাক্ষী নির্ধারণ করে দেয়া হলো। এসব করে জুডিশিয়ারি নিচে নামছে। ওপরে উঠছে না। তিনি বলেন, যখন আইয়ুব খানের সামরিক শাসন ছিল, তখনো বঙ্গবন্ধুকে জামিন দেয়া হয়েছে। অথচ সে সময় কোনো বিচারককে বদলি করা হয়নি।
অবসরের পর রায় লেখাকে বেআইনি মনে করেন না সাবেক এই প্রধান বিচারপতি। তবে তা অবসরের পর গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে সময়টা এক মাস বা তার কাছাকাছি হতে পারে বলে তিনি মত দেন। তবে তিনি আরো বলেন, পরে পূর্ণাঙ্গ রায় লিখলেও কোনোভাবেই ‘মূল আদেশ’ পরির্বতন করা যাবে না। রাতের আঁধারে যারা মূল আদেশ (অর্ডার পোরশন) পরিবর্তন করেন তারা ফৌজদারি অপরাধ করেন। এখন সেটা হচ্ছে। সে জন্যই হয়তো প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেছেন।
বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন বলেন, পরাধীন আমলেও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জামিন পেয়েছেন। আইয়ুবের মার্শাল ল’য়ের সময়ও এটা পেয়েছি। কিন্তু এখন জামিন পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। সংবিধান আর এই প্রতিষ্ঠানকে (বিচার বিভাগ) যারা চায় না তাদেরকে আমরা দেখেছি। এই প্রতিষ্ঠানকে কিভাবে রক্ষা করা যায় সেটা ভাবতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তির নয়, এটা ১৬ কোটি মানুষের। আমি বিশ্বাস করি, আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, যারা এই প্রতিষ্ঠান চায় না, যারা বিচার বিভাগ চায় না, ’৭৫-এ আমরা কি দেখি নাই যে, সংবিধান নেই? এখনতো তাও সাংবিধান আছে। তিনি বলেন, যারা রাষ্ট্রক্ষমতা নিয়ে অসুস্থ হয়ে আছে, আর যারা তাদের আনুগত্য করে এসব ভুলে আছে, আল্লাহ তাদের সুস্থ করে দিন।
হাইকোর্ট বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সবকিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। আমরা দেখছি, আর নীরব দর্শকের মতো চুপ করে বসে আছি। তিনি বলেন, সমস্যা কেবল চিহ্নিত করলেই হবে না, সমাধানের উপায় নিয়েও আলোচনা করতে হবে। আইনজীবীদের উদ্দেশে এই বিচারপতি বলেন, আপনারা ন্যায়বিচারের মশাল, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার মশাল। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আপনাদের দল থাকবে, কিন্তু যখন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্ন আসবে তখন আপনাদের ঐক্যবদ্ধ না থাকার কোনো কারণ দেখি না।
নজরুল ইসলাম চৌধুরী আরো বলেন, বিচারকদের সাহস থাকতে হয়। সাহস না থাকলে তাদের এখানে আসা উচিত না। হাইকোর্টে ১৫ বছরের মতো বিচারক ছিলাম। কেউ কোনো দিন তদবির করার সাহস করেনি।
অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, বিচারকদের রায় নিয়ে এখন প্রায় প্রত্যেক বিচারপ্রার্থী অভিযোগ করে থাকেন। এই অভিযোগের কিছু বাস্তব ভিত্তিও রয়েছে। নি¤œ আদালতে পেশকাররা সবচেয়ে শক্তিশালী। তারা সেখানে কোর্ট চালায়। আর উচ্চ আদালতে বেঞ্চ অফিসাররা রাজা। বিচার বিভাগের পরিস্থিতি যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তাতে অচিরেই বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। বিচারকদের প্রমোশনের ক্ষেত্রে কারো আত্মীয়, কারো ঘনিষ্ঠজন, কারো পরিবারের সদস্যÑ এই হলো যোগ্যতা।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সুদৃঢ় নয়। বর্তমান পরিস্থিতি বিব্রতকর। তিনি আরো বলেন, শিশু আবদুল্লাহ হত্যার সাথে জড়িত একজনকে ক্রয়ফায়ারে হত্যা করা হলো। টিভিতে দেখলাম- এলাকাবাসী উল্লাস করছে, বলছে- ন্যায়বিচার হয়েছে। তাহলে আমাদের অবস্থান কোথায়? জনগণ মনে করছে- এটাই বিচার। তিনি বলেন, আমি মনে করি- এটা জনগণকে মনে করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এর অর্থ দাঁড়ায়, আমরা আইজীবীরা ব্যর্থ। আমাদের ওপর জনগণের আস্থা নেই।
আইনের এই শিক্ষক আরো বলেন, যে সমাজে বিচার নেই, সেই সমাজ ধ্বংস হয়ে যায়। তিনি আফগানিস্তান থেকে লিবিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমরাও সে পথে হাঁটছি কি না? কারণ, আমরা মানুষ মারার পর উল্লাস করছি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবচেয়ে মূল কথা হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। এর জন্য ’৭২-এর সংবিধানের ষষ্ঠ অধ্যায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
No comments