স্কুল-কলেজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কোচিং সেন্টার by মোশতাক আহমেদ ও আনোয়ার পারভেজ
সরকারি হিসাবে বগুড়া সদর উপজেলায় স্কুল ও কলেজ আছে ১৯৮টি। এর বাইরে আছে বেশ কিছু কিন্ডারগার্টেন। তবে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাড়ছে কোচিং সেন্টার। কেবল লাইসেন্স পাওয়া কোচিং সেন্টারের সংখ্যা এখন ৩৬০টি।
তবে পৌরসভার লাইসেন্স শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, কোচিং সেন্টার ছাড়াও রয়েছে ‘প্রাইভেট হোম’। এসব প্রাইভেট হোম মূলত একজন শিক্ষক চালান। সেখানে ব্যাচ করে শিক্ষার্থীরা পড়ে। ওই কর্মকর্তার আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, শহরে এমন প্রাইভেট হোম ও কোচিং সেন্টার হবে হাজার খানেক।
গত শনি ও রোববার বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট হোমে প্রতিদিন সকাল-বিকেল-রাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্রোত নামে। স্কুল-কলেজের সমান্তরালে শ্রেণিকক্ষের মতো আয়োজন করে এখানে পড়ানো হচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, বগুড়া সদরে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সদর উপজেলায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষার্থী পৌনে দুই লাখ। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, এমনকি স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও এখন কোচিং-প্রাইভেটমুখী হয়ে পড়ছে। স্কুল-কলেজে ঠিকমতো পড়াশোনা না হওয়ায় এবং অভিভাবকদের প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে পড়াশোনা কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেটনির্ভর হয়ে পড়ছে।
গত রোববার সকাল সোয়া ১০টায় বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় কথা হয় ওয়াইএমসিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র জোবায়ের জিসানের সঙ্গে। সেখানে সে একটি কোচিং সেন্টারে ইংরেজি পড়ে। সে জানায়, সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত একজন শিক্ষকের কাছে গণিত, নয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আরেকজন শিক্ষকের কাছে রসায়ন পড়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত স্কুলের ক্লাসে থাকবে। বিকেল পাঁচটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে প্রাইভেট পড়বে। যেদিন এসব বিষয়ে প্রাইভেট থাকে না, সেদিন আরেকজন শিক্ষকের কাছে জীববিদ্যা পড়তে যায়। তার পাঁচটি বিষয়ে মাসে প্রাইভেট ও কোচিং খরচ হয় আড়াই হাজার টাকা।
জোবায়ের বলছিল, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর কোচিং-প্রাইভেট আর স্কুলের ক্লাসেই প্রায় সব সময় চলে যায়। স্কুলে ভালোভাবে পড়াশোনা না হওয়ার কারণে তাকে কোচিং-প্রাইভেট পড়তে হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী শিক্ষকদের নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগ নেই। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড়জোর ১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
কিন্তু বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী, কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই নিয়ম মানছেন না বগুড়ার অনেক শিক্ষক। তাঁরা ক্লাসের বাইরে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যেমন পড়াচ্ছেন, আবার অন্য প্রতিষ্ঠানের ৫০-৬০ জন করেও শিক্ষার্থী পড়াচ্ছেন। কোনো কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেই প্রাইভেট পড়ান।
বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক বিদ্যালয়ের ভেতরে গণিত, ইংরেজি, বাংলা ও জীববিদ্যা বিষয়ে প্রাইভেট পড়ান।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত ক্লাস হিসেবে তাঁরা পড়ান। তাঁর দাবি, অভিভাবকদের মধ্যে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে স্কুলে ক্লাস হওয়া সত্ত্বেও সন্তানদের কোচিং-প্রাইভেট পড়ান।
গত শনিবার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দুজন শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ও মাকেটিং বিভাগের তিনজন শিক্ষকের কাছে কলেজের শ্রেণিকক্ষেই প্রাইভেট পড়েন। এর মধ্যে সকাল নয়টায় একজন শিক্ষকের কাছে, বেলা একটায় আরেকজনের কাছে এবং বেলা তিনটায় আরেক শিক্ষক পড়ান। শিক্ষকের স্বল্পতায় এই বিভাগে ঠিকমতো ক্লাস হয় না।
জানতে চাইলে অবশ্য কলেজের অধ্যক্ষ সামস্-উল আলম বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
সকাল-বিকেল এমনকি রাতেও জলেশ্বরীতলাসহ নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় কোচিং-প্রাইভেট পড়তে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভিড় জমে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষার্থীরাও শহরে মেস ভাড়া করে থাকে শুধু কোচিং-প্রাইভেট পড়ার জন্য। জ্বলেশ্বরীতলায় কোনো কোনো ভবনে একসঙ্গে গড়ে উঠেছে কয়েকটি কোচিং সেন্টার।
কোচিং সেন্টার হিসেবে পরিচিত প্রগ্রেস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শুধু জলেশ্বরীতলাতেই দেড় শতাধিক কোচিং বা প্রাইভেট হোম রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি সমিতিভুক্ত। তাঁর দাবি, স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের জবাবদিহি না থাকায় তাঁরা ঠিকভাবে পড়ান না। এ জন্য শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়েই কোচিং-প্রাইভেট পড়তে হয়।
জলেশ্বরীতলা ছাড়া উপশহর, সেউজগাড়ী, কামারগাড়ী, খান্দার, জহুরুলনগর, ফুলবাড়ী, বৃন্দাবনপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় ‘কোচিং ব্যবসা’ এখন জমজমাট। জলেশ্বরীতলা এলাকায় কোনো কোনো কোচিং সেন্টার সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নাম পাল্টিয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজ বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলার কালাই বিএম কলেজের শিক্ষক গোলাম রসুল বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দিনে ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ান। তবে তাঁর দাবি, ক্লাসের বাইরের সময়ে তিনি পড়ান।
সদর উপজেলার বাইরের শিক্ষার্থীরাও শহরে প্রাইভেট ও কোচিং পড়তে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। দুপচাঁচিয়ার পাইলট স্কুলের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হিল আসিফ জানায়, শুধু প্রাইভেট পড়তেই সে বগুড়া শহরে থাকে। থাকা-খাওয়া ছাড়াই কোচিং ও প্রাইভেট পড়ার খরচ হয় সাড়ে সাত হাজার টাকা। স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। মাঝেমধ্যে সে স্কুলে যায়।
বগুড়া শহরে কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের অধীন কোনো শিক্ষক যদি আদেশ লঙ্ঘন করে কিছু করেন, তাহলে ব্যবস্থা নেবেন।
অবশ্য এই শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্যে আশ্বস্ত নন বগুড়ার সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি বজলুল করিম বাহার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় মূলত সরকারি তদারকি না থাকার কারণেই শিক্ষার্থীরা কোচিং-প্রাইভেটমুখী হচ্ছে। এটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বনাশ ডেকে এনেছে। তিনি এ বিষয়ে অভিভাবকদের সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানান।
তবে পৌরসভার লাইসেন্স শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, কোচিং সেন্টার ছাড়াও রয়েছে ‘প্রাইভেট হোম’। এসব প্রাইভেট হোম মূলত একজন শিক্ষক চালান। সেখানে ব্যাচ করে শিক্ষার্থীরা পড়ে। ওই কর্মকর্তার আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, শহরে এমন প্রাইভেট হোম ও কোচিং সেন্টার হবে হাজার খানেক।
গত শনি ও রোববার বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এসব কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট হোমে প্রতিদিন সকাল-বিকেল-রাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্রোত নামে। স্কুল-কলেজের সমান্তরালে শ্রেণিকক্ষের মতো আয়োজন করে এখানে পড়ানো হচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, বগুড়া সদরে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সদর উপজেলায় এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে শিক্ষার্থী পৌনে দুই লাখ। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, এমনকি স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরাও এখন কোচিং-প্রাইভেটমুখী হয়ে পড়ছে। স্কুল-কলেজে ঠিকমতো পড়াশোনা না হওয়ায় এবং অভিভাবকদের প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে পড়াশোনা কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেটনির্ভর হয়ে পড়ছে।
গত রোববার সকাল সোয়া ১০টায় বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় কথা হয় ওয়াইএমসিএ স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র জোবায়ের জিসানের সঙ্গে। সেখানে সে একটি কোচিং সেন্টারে ইংরেজি পড়ে। সে জানায়, সকাল আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত একজন শিক্ষকের কাছে গণিত, নয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আরেকজন শিক্ষকের কাছে রসায়ন পড়েছে। দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত স্কুলের ক্লাসে থাকবে। বিকেল পাঁচটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে প্রাইভেট পড়বে। যেদিন এসব বিষয়ে প্রাইভেট থাকে না, সেদিন আরেকজন শিক্ষকের কাছে জীববিদ্যা পড়তে যায়। তার পাঁচটি বিষয়ে মাসে প্রাইভেট ও কোচিং খরচ হয় আড়াই হাজার টাকা।
জোবায়ের বলছিল, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পর কোচিং-প্রাইভেট আর স্কুলের ক্লাসেই প্রায় সব সময় চলে যায়। স্কুলে ভালোভাবে পড়াশোনা না হওয়ার কারণে তাকে কোচিং-প্রাইভেট পড়তে হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী শিক্ষকদের নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সুযোগ নেই। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বড়জোর ১০ জন শিক্ষার্থীকে পড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
কিন্তু বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী, কয়েকজন অভিভাবক ও শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই নিয়ম মানছেন না বগুড়ার অনেক শিক্ষক। তাঁরা ক্লাসের বাইরে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যেমন পড়াচ্ছেন, আবার অন্য প্রতিষ্ঠানের ৫০-৬০ জন করেও শিক্ষার্থী পড়াচ্ছেন। কোনো কোনো শিক্ষক নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরেই প্রাইভেট পড়ান।
বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক বিদ্যালয়ের ভেতরে গণিত, ইংরেজি, বাংলা ও জীববিদ্যা বিষয়ে প্রাইভেট পড়ান।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, অতিরিক্ত ক্লাস হিসেবে তাঁরা পড়ান। তাঁর দাবি, অভিভাবকদের মধ্যে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে স্কুলে ক্লাস হওয়া সত্ত্বেও সন্তানদের কোচিং-প্রাইভেট পড়ান।
গত শনিবার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের দুজন শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং ও মাকেটিং বিভাগের তিনজন শিক্ষকের কাছে কলেজের শ্রেণিকক্ষেই প্রাইভেট পড়েন। এর মধ্যে সকাল নয়টায় একজন শিক্ষকের কাছে, বেলা একটায় আরেকজনের কাছে এবং বেলা তিনটায় আরেক শিক্ষক পড়ান। শিক্ষকের স্বল্পতায় এই বিভাগে ঠিকমতো ক্লাস হয় না।
জানতে চাইলে অবশ্য কলেজের অধ্যক্ষ সামস্-উল আলম বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।
সকাল-বিকেল এমনকি রাতেও জলেশ্বরীতলাসহ নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় কোচিং-প্রাইভেট পড়তে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভিড় জমে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষার্থীরাও শহরে মেস ভাড়া করে থাকে শুধু কোচিং-প্রাইভেট পড়ার জন্য। জ্বলেশ্বরীতলায় কোনো কোনো ভবনে একসঙ্গে গড়ে উঠেছে কয়েকটি কোচিং সেন্টার।
কোচিং সেন্টার হিসেবে পরিচিত প্রগ্রেস পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শুধু জলেশ্বরীতলাতেই দেড় শতাধিক কোচিং বা প্রাইভেট হোম রয়েছে। এর মধ্যে ৫০টি সমিতিভুক্ত। তাঁর দাবি, স্কুলগুলোতে শিক্ষকদের জবাবদিহি না থাকায় তাঁরা ঠিকভাবে পড়ান না। এ জন্য শিক্ষার্থীদের বাধ্য হয়েই কোচিং-প্রাইভেট পড়তে হয়।
জলেশ্বরীতলা ছাড়া উপশহর, সেউজগাড়ী, কামারগাড়ী, খান্দার, জহুরুলনগর, ফুলবাড়ী, বৃন্দাবনপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় ‘কোচিং ব্যবসা’ এখন জমজমাট। জলেশ্বরীতলা এলাকায় কোনো কোনো কোচিং সেন্টার সরকারি অনুমোদন ছাড়াই নাম পাল্টিয়ে স্কুল অ্যান্ড কলেজ বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
জয়পুরহাট জেলার কালাই বিএম কলেজের শিক্ষক গোলাম রসুল বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দিনে ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়ান। তবে তাঁর দাবি, ক্লাসের বাইরের সময়ে তিনি পড়ান।
সদর উপজেলার বাইরের শিক্ষার্থীরাও শহরে প্রাইভেট ও কোচিং পড়তে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে। দুপচাঁচিয়ার পাইলট স্কুলের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ হিল আসিফ জানায়, শুধু প্রাইভেট পড়তেই সে বগুড়া শহরে থাকে। থাকা-খাওয়া ছাড়াই কোচিং ও প্রাইভেট পড়ার খরচ হয় সাড়ে সাত হাজার টাকা। স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। মাঝেমধ্যে সে স্কুলে যায়।
বগুড়া শহরে কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র সরকার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের অধীন কোনো শিক্ষক যদি আদেশ লঙ্ঘন করে কিছু করেন, তাহলে ব্যবস্থা নেবেন।
অবশ্য এই শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্যে আশ্বস্ত নন বগুড়ার সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি বজলুল করিম বাহার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় মূলত সরকারি তদারকি না থাকার কারণেই শিক্ষার্থীরা কোচিং-প্রাইভেটমুখী হচ্ছে। এটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বনাশ ডেকে এনেছে। তিনি এ বিষয়ে অভিভাবকদের সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ জানান।
No comments