চা দোকানির মৃত্যু: মামলা তদন্তে ডিবি
চুলার আগুনে দগ্ধ চা দোকানি বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের জড়িত থাকার অভিযোগের মধ্যেই তার মেয়ের করা মামলাটি তদন্তের জন্য মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর হয়েছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপ কমিশনার মো.মারুফ হোসেন সরদার গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে শাহ আলী থানাধীন মিরপুরের গুদারা ঘাট এলাকায় চা বিক্রেতা বাবুল দোকানের চুলার আগুনে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান। বাবুলের পরিবারের অভিযোগ, চাঁদা না পেয়ে শাহ আলীর থানার পুলিশ বাবুলের দোকানের কেরোসিনের চুলায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেছিল। এতে কেরোসিন ছিটকে বাবুলের গায়ে আগুন ধরে যায়। ঘটনার পর পুলিশ অগ্নিদগ্ধ বাবুলকে হাসপাতালের বদলে থানায় নিয়েছিল বলে অভিযোগ করে তার পরিবারের সদস্যরা। থানা থেকে পরে পরিবারের সদস্যরাই দগ্ধ বাবুলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে থানা থেকে বলা হয়েছে, পুলিশ নয়, সোর্স দেখে পালাতে গিয়ে বাবুল দগ্ধ হন। আর বাবুল নিজেও মাদক বিক্রেতা ছিলেন। তবে এ ঘটনা ঘটার চার ঘণ্টার মধ্যে বুধবার মধ্যরাতে অনেকটা তড়িঘড়ি করেই স্থানীয় কয়েকজন ‘মাদক বিক্রেতাকে’ আসামি করে একটি মামলা নেয় শাহ আলী থানা, যাতে পুলিশের কোনো সদস্যকে আসামি করা হয়নি। রাত দেড়টার দিকে করা এ মামলার বাদী নিহত বাবুল মাতুব্বরের মেয়ে রোকসানা আকতার। এ মামলার পর পারুল নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করে দুইদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলাটিতে প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া শাহআলী থানার এসআই মো. মোকতারুজ্জামান। তিনি বলেন, “পুলিশ মনে করছে, মাদক ব্যবসার আধিপত্যের জের ধরে বাবুল তার প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে মারা যান। এখানে পুলিশের কেউ জড়িত থাকলে মামলার এজাহারে তো নাম থাকতো।” তবে বাবুলের মৃত্যুর পর তার পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, ঘটনার পর পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা করতে তারা থানায় গেলেও ঘটনার সঙ্গে নিজেদের সংশ্লিষ্টতা আড়াল করতেই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা না নিয়ে এই মামলা করিয়েছে পুলিশ। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় শাহ আলী থানার ওসিকে প্রত্যাহার এবং আরও পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনা তদন্তে পুলিশের করা কমিটি ইতোমধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যাতে পুলিশ সদস্যদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা।
No comments