দেশে ঋণখেলাপির সংখ্যা এখন পৌনে দুই লাখ by ফখরুল ইসলাম
দেশের ১ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮১ জন মানুষ এখন ঋণখেলাপি। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ৩ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে এ তথ্য দিয়েছেন।
সংসদে এক প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, মোট খেলাপির মধ্যে ৫০ হাজার টাকার খেলাপি যেমন রয়েছেন, রয়েছেন ১০ হাজার থেকে তারও বেশি টাকা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নেওয়া ঋণখেলাপিও। তবে কার কাছে, কোন ব্যাংকের, কত টাকা খেলাপি রয়েছে সংসদে এই দফায় অর্থমন্ত্রী সেই তথ্য আর দেননি।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত জুন পর্যন্ত হিসাবমতে দেশে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। এর বাইরে আরও ৩৭ হাজার কোটি টাকা রাইট-অফ বা অবলোপন করা হয়েছে। অর্থাৎ দেশের পৌনে দুই কোটি ঋণখেলাপির হাতে আটকা আছে প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা, যার বড় অংশই আর আদায় হবে না।
বছরের পর বছর আদায় করতে না পেরে ব্যাংকগুলো একপর্যায়ে ব্যাংকের স্থিতিপত্র বা ব্যালান্সশিট থেকে কিছু খেলাপি ঋণের (মন্দ বা কুঋণ) হিসাব বাদ দিয়ে দেয়। একেই বলা হয় ঋণ অবলোপন। খেলাপি ঋণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ২০০২ সালে এই ঋণ অবলোপন পদ্ধতি চালু হয়েছিল।
ঋণখেলাপিদের নিয়ে গবেষণা করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মইনুল ইসলাম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৌনে দুই লাখ ঋণখেলাপির মোট তথ্য দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিষয়টিকে জলো করে ফেলেছেন। এর মধ্যে রাঘববোয়াল খেলাপি আড়াই হাজারের বেশি হবে না। আগেরবার বড় খেলাপি ছিল দুই হাজার ১১৭ জন।’
অর্থনীতির এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘এভাবে গড়ে ঋণখেলাপির সংখ্যা বেশি দেখানোর পরিবর্তে বরং এক কোটি টাকার বেশি ঋণের খেলাপিদের তালিকা করা উচিত। তাহলেই মানুষের পক্ষে বোঝা সহজ হবে যে কার কাছে কত টাকা আটকে আছে।’
অর্থমন্ত্রী অবশ্য সংসদকে জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের বার্ষিক পারফরম্যান্স চুক্তি (এপিসি) রয়েছে এবং প্রতি মাসেই তা তদারকি হয়। অর্থঋণ আদালতসহ অন্যান্য বিচারাধীন মামলা তদারকির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে বিশেষ সেল রয়েছে। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তার তদারকি হয় এই সেল থেকে। এর বাইরেও রয়েছে বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে খেলাপি অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা—অর্থমন্ত্রী এসব কথাও জানিয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়ে নতুন করে বিকল্প পদ্ধতি চালুর চিন্তাভাবনা চলছে। ইতিমধ্যে একটি ধারণাপত্রও তৈরি করা হয়েছে। মতামত চেয়ে ধারণাপত্রটি শিগগির বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হবে।’ খেলাপি ঋণ আদায় করে দিলে আদায় করা অর্থের একটি অংশ কমিশন পাবে, এমন তৃতীয় কোনো পক্ষকে সরকারের অনুমতি নিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানান সচিব।
এর আগে গত জুনে অর্থমন্ত্রী সংসদকে মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের একটি হিসাব দিয়েছিলেন। সে সময় পর্যন্ত তা ছিল ৫৪ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংকের খেলাপিই ২২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। আর ৩৯টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ২২ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকগুলো এক বছরে ৩৭ হাজার ২৫২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে।
অবলোপন পদ্ধতি চালু তো আছেই, বর্তমান সরকার ঋণ গ্রহণকারীদের দিয়েছে আরও নতুন সুযোগ। যেমন ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহণকারীদের ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে ঋণ পুনর্গঠনের এই সুযোগ খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে পারবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সুযোগের সাফল্যের কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানান অধ্যাপক মইনুল ইসলাম।
সংসদে এক প্রশ্নোত্তরে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, মোট খেলাপির মধ্যে ৫০ হাজার টাকার খেলাপি যেমন রয়েছেন, রয়েছেন ১০ হাজার থেকে তারও বেশি টাকা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নেওয়া ঋণখেলাপিও। তবে কার কাছে, কোন ব্যাংকের, কত টাকা খেলাপি রয়েছে সংসদে এই দফায় অর্থমন্ত্রী সেই তথ্য আর দেননি।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত জুন পর্যন্ত হিসাবমতে দেশে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৫২ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। এর বাইরে আরও ৩৭ হাজার কোটি টাকা রাইট-অফ বা অবলোপন করা হয়েছে। অর্থাৎ দেশের পৌনে দুই কোটি ঋণখেলাপির হাতে আটকা আছে প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা, যার বড় অংশই আর আদায় হবে না।
বছরের পর বছর আদায় করতে না পেরে ব্যাংকগুলো একপর্যায়ে ব্যাংকের স্থিতিপত্র বা ব্যালান্সশিট থেকে কিছু খেলাপি ঋণের (মন্দ বা কুঋণ) হিসাব বাদ দিয়ে দেয়। একেই বলা হয় ঋণ অবলোপন। খেলাপি ঋণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ২০০২ সালে এই ঋণ অবলোপন পদ্ধতি চালু হয়েছিল।
ঋণখেলাপিদের নিয়ে গবেষণা করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মইনুল ইসলাম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৌনে দুই লাখ ঋণখেলাপির মোট তথ্য দিয়ে অর্থমন্ত্রী বিষয়টিকে জলো করে ফেলেছেন। এর মধ্যে রাঘববোয়াল খেলাপি আড়াই হাজারের বেশি হবে না। আগেরবার বড় খেলাপি ছিল দুই হাজার ১১৭ জন।’
অর্থনীতির এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘এভাবে গড়ে ঋণখেলাপির সংখ্যা বেশি দেখানোর পরিবর্তে বরং এক কোটি টাকার বেশি ঋণের খেলাপিদের তালিকা করা উচিত। তাহলেই মানুষের পক্ষে বোঝা সহজ হবে যে কার কাছে কত টাকা আটকে আছে।’
অর্থমন্ত্রী অবশ্য সংসদকে জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের বার্ষিক পারফরম্যান্স চুক্তি (এপিসি) রয়েছে এবং প্রতি মাসেই তা তদারকি হয়। অর্থঋণ আদালতসহ অন্যান্য বিচারাধীন মামলা তদারকির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে বিশেষ সেল রয়েছে। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তার তদারকি হয় এই সেল থেকে। এর বাইরেও রয়েছে বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে খেলাপি অর্থ আদায়ের ব্যবস্থা—অর্থমন্ত্রী এসব কথাও জানিয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়ে নতুন করে বিকল্প পদ্ধতি চালুর চিন্তাভাবনা চলছে। ইতিমধ্যে একটি ধারণাপত্রও তৈরি করা হয়েছে। মতামত চেয়ে ধারণাপত্রটি শিগগির বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হবে।’ খেলাপি ঋণ আদায় করে দিলে আদায় করা অর্থের একটি অংশ কমিশন পাবে, এমন তৃতীয় কোনো পক্ষকে সরকারের অনুমতি নিয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানান সচিব।
এর আগে গত জুনে অর্থমন্ত্রী সংসদকে মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের একটি হিসাব দিয়েছিলেন। সে সময় পর্যন্ত তা ছিল ৫৪ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন চার ব্যাংকের খেলাপিই ২২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা। আর ৩৯টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ২২ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা। একই সময়ে ব্যাংকগুলো এক বছরে ৩৭ হাজার ২৫২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ অবলোপন করেছে।
অবলোপন পদ্ধতি চালু তো আছেই, বর্তমান সরকার ঋণ গ্রহণকারীদের দিয়েছে আরও নতুন সুযোগ। যেমন ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহণকারীদের ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। তবে ঋণ পুনর্গঠনের এই সুযোগ খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে পারবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই সুযোগের সাফল্যের কোনো সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানান অধ্যাপক মইনুল ইসলাম।
No comments