দেশের পরিবেশ ব্যবসাবান্ধব না
দেশের ব্যবসায়ীদের একটি অংশ মনে করেন এখানে ব্যবসা করার মতো সহায়ক পরিবেশ নেই। সে কারণে এ বছর তাঁদের বিনিয়োগও কমে যেতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) করা এক তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন জরিপে এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে গতকাল বুধবার বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিপিডি। ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে এই জরিপটিও প্রকাশ করে সংস্থাটি।
এই জরিপে অংশ নেওয়া ৬২ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নেই। আগের বছরের জরিপে ব্যবসায়ীরা দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান বলে মত দিয়েছিলেন।
জরিপে শুধু যে নেতিবাচক তথ্যই উঠে এসেছে এমন নয়। এতে অংশ নেওয়া ৬৯ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে। আবার তাঁদের ৮০ শতাংশ চলমান অবকাঠামো প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহে আছেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদন ও তাৎক্ষণিক জরিপ প্রতিবেদনের নানা দিক তুলে ধরেন সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, এবারের জরিপে অংশ নিয়েছেন ৫৬ জন ব্যবসায়ী, যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি টাকার ওপরে। গত বছরের জরিপে অংশ নিয়েছিলেন ৭৭ জন ব্যবসায়ী।
জরিপে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের কাছে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশের ব্যবসার পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। অবশ্য জরিপটি করা হয়েছে এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মে পর্যন্ত। বিশ্বের ১৪০টি দেশে একই সময়ে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা জরিপের কাজটি করা হয়। একই ব্যবসায়ীদের ওপরই তাৎক্ষণিক জরিপটি চালায় সিপিডি।
ব্যবসায়ীরা প্রায়ই সভা-সেমিনারে ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার নিয়ে সোচ্চার হন। এটাকে কমিয়ে এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে আনার দাবি জানান তাঁরা। তবে সিপিডির এই তাৎক্ষণিক জরিপে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। দেশে সুদের হার কমে আসায় জরিপে অংশ নেওয়া ৬৪ শতাংশ ব্যবসায়ী এখন আর এটিকে অতটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখেন না। তবে ৩০ শতাংশ ব্যবসায়ী এখনো মনে করেন, উচ্চ সুদের হার ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সুশাসনে পেছনের সারিতে বাংলাদেশ: বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগোলেও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ এখনো পেছনের সারিতে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদনে সুশাসনের দিক থেকে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩২। আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-দপ্তরে ঘুষ দেওয়ার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯।
জরিপ অনুযায়ী, ৯১ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, আমদানি-রপ্তানিসংক্রান্ত ক্ষেত্রে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। ৮৪ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, সরকারি সেবা পেতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। ৮৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর মতে, কর পরিশোধের সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। আর ৮৮ শতাংশ বলেছেন, সরকারি চুক্তি কিংবা লাইসেন্স পেতেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়।
অবশ্য দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট নৈতিকতাও বেশ দুর্বল বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কমেছে বলেও ৫৪ শতাংশ ব্যবসায়ী মন্তব্য করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনীতিকদের নৈতিক মান খুবই নিম্ন। সরকার খুব কম ক্ষেত্রেই ব্যবসা করার জন্য একটি টেকসই নীতি দিতে পারেন। সরকারি সেবাও যথেষ্ট নয়। শুধু তা-ই নয়, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া কিংবা চুক্তি করার ক্ষেত্রে খাতিরের কোম্পানির প্রতি পক্ষপাত করেন দেশের সরকারি কর্মকর্তারা।
ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিতে ১৫টি বড় ঝুঁকি: সিপিডি গতকাল ‘২০১৫ সালে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিবেশ’ নামেও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এটি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদনেরই অংশ। ওই প্রতিবেদনে দেশের ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিতে আগামী ১০ বছরে বড় বৈশ্বিক ঝুঁকিগুলো উঠে এসেছে। প্রধান তিনটি ঝুঁকি হলো, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার ধাক্কা, জাতীয়ভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়া।
এ ছাড়া অন্য বড় ঝুঁকিগুলো হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারা, আর্থিক খাত ও প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা, নগর পরিকল্পনায় ব্যর্থতা, গভীর সামাজিক অস্থিরতা, সম্পদের অতিমূল্যায়ন, জীববৈচিত্র্য ক্ষয় ও বাস্তুসংস্থানে ধস, সাইবার আক্রমণ, আন্তদেশীয় দ্বন্দ্ব, আর্থিক খাতের সংকট, মনুষ্যসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো ভেঙে পড়া এবং তথ্য চুরি।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) করা এক তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন জরিপে এমন তথ্যই বেরিয়ে এসেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পক্ষে রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে গতকাল বুধবার বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিপিডি। ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে এই জরিপটিও প্রকাশ করে সংস্থাটি।
এই জরিপে অংশ নেওয়া ৬২ শতাংশ ব্যবসায়ী মনে করেন, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নেই। আগের বছরের জরিপে ব্যবসায়ীরা দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান বলে মত দিয়েছিলেন।
জরিপে শুধু যে নেতিবাচক তথ্যই উঠে এসেছে এমন নয়। এতে অংশ নেওয়া ৬৯ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে। আবার তাঁদের ৮০ শতাংশ চলমান অবকাঠামো প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহে আছেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদন ও তাৎক্ষণিক জরিপ প্রতিবেদনের নানা দিক তুলে ধরেন সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, এবারের জরিপে অংশ নিয়েছেন ৫৬ জন ব্যবসায়ী, যাঁদের সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি টাকার ওপরে। গত বছরের জরিপে অংশ নিয়েছিলেন ৭৭ জন ব্যবসায়ী।
জরিপে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের কাছে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশের ব্যবসার পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। অবশ্য জরিপটি করা হয়েছে এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মে পর্যন্ত। বিশ্বের ১৪০টি দেশে একই সময়ে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা জরিপের কাজটি করা হয়। একই ব্যবসায়ীদের ওপরই তাৎক্ষণিক জরিপটি চালায় সিপিডি।
ব্যবসায়ীরা প্রায়ই সভা-সেমিনারে ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার নিয়ে সোচ্চার হন। এটাকে কমিয়ে এক অঙ্কের ঘরে নামিয়ে আনার দাবি জানান তাঁরা। তবে সিপিডির এই তাৎক্ষণিক জরিপে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। দেশে সুদের হার কমে আসায় জরিপে অংশ নেওয়া ৬৪ শতাংশ ব্যবসায়ী এখন আর এটিকে অতটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখেন না। তবে ৩০ শতাংশ ব্যবসায়ী এখনো মনে করেন, উচ্চ সুদের হার ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সুশাসনে পেছনের সারিতে বাংলাদেশ: বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগোলেও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ এখনো পেছনের সারিতে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদনে সুশাসনের দিক থেকে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩২। আর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান-দপ্তরে ঘুষ দেওয়ার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯।
জরিপ অনুযায়ী, ৯১ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, আমদানি-রপ্তানিসংক্রান্ত ক্ষেত্রে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। ৮৪ শতাংশ ব্যবসায়ী বলেছেন, সরকারি সেবা পেতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। ৮৯ শতাংশ ব্যবসায়ীর মতে, কর পরিশোধের সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়। আর ৮৮ শতাংশ বলেছেন, সরকারি চুক্তি কিংবা লাইসেন্স পেতেও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে ঘুষ দিতে হয়।
অবশ্য দেশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর করপোরেট নৈতিকতাও বেশ দুর্বল বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কমেছে বলেও ৫৪ শতাংশ ব্যবসায়ী মন্তব্য করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনীতিকদের নৈতিক মান খুবই নিম্ন। সরকার খুব কম ক্ষেত্রেই ব্যবসা করার জন্য একটি টেকসই নীতি দিতে পারেন। সরকারি সেবাও যথেষ্ট নয়। শুধু তা-ই নয়, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া কিংবা চুক্তি করার ক্ষেত্রে খাতিরের কোম্পানির প্রতি পক্ষপাত করেন দেশের সরকারি কর্মকর্তারা।
ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিতে ১৫টি বড় ঝুঁকি: সিপিডি গতকাল ‘২০১৫ সালে বাংলাদেশের ব্যবসার পরিবেশ’ নামেও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এটি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা প্রতিবেদনেরই অংশ। ওই প্রতিবেদনে দেশের ব্যবসায়ীদের দৃষ্টিতে আগামী ১০ বছরে বড় বৈশ্বিক ঝুঁকিগুলো উঠে এসেছে। প্রধান তিনটি ঝুঁকি হলো, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার ধাক্কা, জাতীয়ভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থতা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন না হওয়া।
এ ছাড়া অন্য বড় ঝুঁকিগুলো হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারা, আর্থিক খাত ও প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা, নগর পরিকল্পনায় ব্যর্থতা, গভীর সামাজিক অস্থিরতা, সম্পদের অতিমূল্যায়ন, জীববৈচিত্র্য ক্ষয় ও বাস্তুসংস্থানে ধস, সাইবার আক্রমণ, আন্তদেশীয় দ্বন্দ্ব, আর্থিক খাতের সংকট, মনুষ্যসৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো ভেঙে পড়া এবং তথ্য চুরি।
No comments