দরজা ভাঙা নোংরা দুর্গন্ধময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল by আরিফুল হক
উচিত ছিল রোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে রংপুর মেডিকেলের গোসলখানা ও শৌচাগারগুলোতে। -প্রথম আলো |
পানি জমে মেঝে পিচ্ছিল। দরজাগুলো ভাঙা। কোনোটির আবার কপাটই নেই। দেয়াল স্যাঁতসেঁতে। ময়লা নোংরা দুর্গন্ধ পরিবেশ।
এই দশা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের জন্য তৈরি গোসলখানা ও শৌচাগারগুলোর। অবস্থা এতটাই বেগতিক যে ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োজন সারতে হয় রোগী ও তাঁদের স্বজনদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে ৪০টি ওয়ার্ড। এসব ওয়ার্ডে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন শয্যাসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। সেই সঙ্গে রোগীদের স্বজন মিলে হাসপাতালে মোট লোকের সংখ্যা দাঁড়ায় দিনে প্রায় পাঁচ হাজার। রংপুর বিভাগের আট জেলার মানুষ এখানে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে আসেন।
৪০টি ওয়ার্ডে ১১০টি গোসলখানা ও শৌচাগার রয়েছে। সংস্কারের অভাবে ও নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এগুলো এখন পূতিগন্ধময় স্থানে পরিণত হয়েছে। দিনে দুবার করে এগুলো পরিষ্কার করার কথা থাকলেও অনেক সময় একবারও করা হয় না বলে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের অভিযোগ।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ গোসলখানা ও শৌচাগার বেহাল। পানি পড়তে পড়তে সেগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। মেঝেগুলো নোংরা-অপরিষ্কার। সেখানে হাঁটাচলাই কষ্টকর। পা টিপে টিপে সাবধানে রোগী ও স্বজনেরা চলাফেরা করেন।
হৃদ্রোগ ওয়ার্ডে পুরুষদের জন্য ব্যবহৃত দুটি শৌচাগারে দরজা নেই। গোসলখানার দরজার নিচের অংশ ভাঙা। মেঝেতে ময়লার কারণে দুর্গন্ধে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। তবে এই ওয়ার্ডের মহিলাদের জন্য ব্যবহৃত গোসলখানা ও শৌচাগার কিছুটা ভালো রয়েছে। তবে এই ওয়ার্ডে কোনো বেসিন দেখা যায়নি।
পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া একজন রোগীর স্বজন তৈয়বুর রহমান বলেন, শৌচাগারে গেলে দরজায় আরেকজনকে পাহারা দিতে হয়।
হৃদ্রোগ ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন আমিরুল ইসলাম বলেন, গোসলখানার এমন দুরবস্থা যে রোগী নিয়া যাওয়াই মুশকিল।
মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডের দুই পাশের গোসলখানা ও শৌচাগারই নোংরা। বিধ্বস্ত অবস্থা দরজাগুলোর। দেয়ালে শেওলা জমে গেছে। পুরুষ ওয়ার্ডের একজন রোগীকে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় সাবধানে শৌচাগারে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর দুজন স্বজন। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে আসা ওই রোগীর এক স্বজন বলরাম রায় বললেন, ‘খুব কষ্টে বাথরুম যাওয়া-আসা করা লাগে। ভয় লাগে কখন যে পিছলে পড়ে যাই।’
কয়েকজন রোগী ও তাঁদের স্বজনের অভিযোগ, ওয়ার্ডগুলোর শৌচাগার ব্যবস্থাপনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তেমন নজর নেই। এর একটাই কারণ, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা শৌচাগার রয়েছে। সেগুলোর অবস্থা ভালো।
মেডিসিন মহিলা ওয়ার্ডের গোসলখানা ও শৌচাগারে ঢোকার মুখে এলোমেলোভাবে পড়ে ছিল রোগীদের নোংরা কাপড়। পানি জমে মেঝে পিচ্ছিল সেখানে। ওয়ার্ডের দর্শনার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘হাসপাতালোত চিকিৎসা কইরবার আসিয়া এমন অবস্থা যে বাথরুমোত ঢোকায় যায় না। এত গন্ধ যে বমি আইসে।’
এভাবে সার্জিক্যাল, গাইনি ও শিশু ওয়ার্ডসহ ১১টি ওয়ার্ডের গোসলখানা ও শৌচাগারে একই চিত্র দেখা যায়। এই ১১ ওয়ার্ডে কোনো বেসিন দেখা যায়নি।
হাসপাতালে ১০৬ জন সুইপারের মধ্যে ২৮ জন সুইপারের পদ শূন্য রয়েছে। বাকি ৭৮ জন সুইপার দিয়েও গোসলখানা ও শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।
হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক বিমল কুমার বর্মণ বলেন, এগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে তাঁদের পক্ষ থেকে তদারক করা হয়। তবে রোগী ও স্বজনদের চাপে এগুলো পরিষ্কার রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরও জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে নিয়মিত তদারকের মাধ্যমে এগুলো ব্যবহারের উপযোগী করে রাখতে। গোসলখানা ও শৌচাগার ব্যবহারে সবার সচেতন হওয়াও প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এই দশা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের জন্য তৈরি গোসলখানা ও শৌচাগারগুলোর। অবস্থা এতটাই বেগতিক যে ঝুঁকি নিয়ে প্রয়োজন সারতে হয় রোগী ও তাঁদের স্বজনদের।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এক হাজার শয্যার হাসপাতালটিতে ৪০টি ওয়ার্ড। এসব ওয়ার্ডে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন শয্যাসংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ। সেই সঙ্গে রোগীদের স্বজন মিলে হাসপাতালে মোট লোকের সংখ্যা দাঁড়ায় দিনে প্রায় পাঁচ হাজার। রংপুর বিভাগের আট জেলার মানুষ এখানে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটে আসেন।
৪০টি ওয়ার্ডে ১১০টি গোসলখানা ও শৌচাগার রয়েছে। সংস্কারের অভাবে ও নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এগুলো এখন পূতিগন্ধময় স্থানে পরিণত হয়েছে। দিনে দুবার করে এগুলো পরিষ্কার করার কথা থাকলেও অনেক সময় একবারও করা হয় না বলে রোগী ও তাঁদের স্বজনদের অভিযোগ।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ গোসলখানা ও শৌচাগার বেহাল। পানি পড়তে পড়তে সেগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। মেঝেগুলো নোংরা-অপরিষ্কার। সেখানে হাঁটাচলাই কষ্টকর। পা টিপে টিপে সাবধানে রোগী ও স্বজনেরা চলাফেরা করেন।
হৃদ্রোগ ওয়ার্ডে পুরুষদের জন্য ব্যবহৃত দুটি শৌচাগারে দরজা নেই। গোসলখানার দরজার নিচের অংশ ভাঙা। মেঝেতে ময়লার কারণে দুর্গন্ধে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। তবে এই ওয়ার্ডের মহিলাদের জন্য ব্যবহৃত গোসলখানা ও শৌচাগার কিছুটা ভালো রয়েছে। তবে এই ওয়ার্ডে কোনো বেসিন দেখা যায়নি।
পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া একজন রোগীর স্বজন তৈয়বুর রহমান বলেন, শৌচাগারে গেলে দরজায় আরেকজনকে পাহারা দিতে হয়।
হৃদ্রোগ ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন আমিরুল ইসলাম বলেন, গোসলখানার এমন দুরবস্থা যে রোগী নিয়া যাওয়াই মুশকিল।
মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডের দুই পাশের গোসলখানা ও শৌচাগারই নোংরা। বিধ্বস্ত অবস্থা দরজাগুলোর। দেয়ালে শেওলা জমে গেছে। পুরুষ ওয়ার্ডের একজন রোগীকে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় সাবধানে শৌচাগারে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর দুজন স্বজন। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে আসা ওই রোগীর এক স্বজন বলরাম রায় বললেন, ‘খুব কষ্টে বাথরুম যাওয়া-আসা করা লাগে। ভয় লাগে কখন যে পিছলে পড়ে যাই।’
কয়েকজন রোগী ও তাঁদের স্বজনের অভিযোগ, ওয়ার্ডগুলোর শৌচাগার ব্যবস্থাপনা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তেমন নজর নেই। এর একটাই কারণ, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা শৌচাগার রয়েছে। সেগুলোর অবস্থা ভালো।
মেডিসিন মহিলা ওয়ার্ডের গোসলখানা ও শৌচাগারে ঢোকার মুখে এলোমেলোভাবে পড়ে ছিল রোগীদের নোংরা কাপড়। পানি জমে মেঝে পিচ্ছিল সেখানে। ওয়ার্ডের দর্শনার্থী আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ‘হাসপাতালোত চিকিৎসা কইরবার আসিয়া এমন অবস্থা যে বাথরুমোত ঢোকায় যায় না। এত গন্ধ যে বমি আইসে।’
এভাবে সার্জিক্যাল, গাইনি ও শিশু ওয়ার্ডসহ ১১টি ওয়ার্ডের গোসলখানা ও শৌচাগারে একই চিত্র দেখা যায়। এই ১১ ওয়ার্ডে কোনো বেসিন দেখা যায়নি।
হাসপাতালে ১০৬ জন সুইপারের মধ্যে ২৮ জন সুইপারের পদ শূন্য রয়েছে। বাকি ৭৮ জন সুইপার দিয়েও গোসলখানা ও শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।
হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্বে থাকা সহকারী পরিচালক বিমল কুমার বর্মণ বলেন, এগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে তাঁদের পক্ষ থেকে তদারক করা হয়। তবে রোগী ও স্বজনদের চাপে এগুলো পরিষ্কার রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরপরও জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে নিয়মিত তদারকের মাধ্যমে এগুলো ব্যবহারের উপযোগী করে রাখতে। গোসলখানা ও শৌচাগার ব্যবহারে সবার সচেতন হওয়াও প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
No comments