মায়ের পেটে শিশু গুলিবিদ্ধ: মায়ের মুখে হাসি চিকিৎসকেরা খুশি
জন্মের ১৪ দিনের মাথায় প্রথম মায়ের শরীরের
ঘ্রাণ ও বুকের ওম পেয়েছে। ছোট্ট মুখটি মায়ের বুকে লাগিয়ে স্তন্যপানও
করেছে। তাই হয়তো ওর মুখে হাসি ফুটেছে। চিকিৎসকেরা সেই হাসিমুখের ছবিও তুলে
রেখেছেন। মা প্রথমবার মেয়েকে কোলে নিয়ে মেয়ের কী রেখে কী দেখবেন তাই ভেবে
দিশেহারা। ওমা, ও তো তাকাচ্ছে! তাই দেখে মায়ের মুখে হাসি। আর মায়ের মুখের
হাসিতে চিকিৎসকেরাও খুশি।
মেয়ের বাবা বাচ্চু ভূঁইয়ার তাতে খানিকটা অভিমান হয়েছে। কণ্ঠে খুশির আবেশ নিয়েই বললেন, ‘মা-মেয়ে যখন এক হইছে, তখন আমারে নেয় নাই। ডাক্তারেরা কইছে, তোমারে তো দুইবার মেয়ের মুখ দেখাইছি, মা তো একবারও কাছে যায় নাই। তাই তুমি এখন থাকো। তবে আমার মেয়ের মা মেয়েকে দেখে ফিরা খালি মেয়ের কথা কয় আর হাসে।’
গতকাল বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতকদের বিশেষ সেবাকেন্দ্রে (স্ক্যাবু) সবার মুখে শুধুই হাসি আর স্বস্তি। যাক, দেরিতে হলেও মায়ের বুকে মেয়েকে দেওয়া গেছে।
এতক্ষণ বলা হচ্ছিল বর্তমানের আলোচিত শিশু ‘বেবি অব নাজমা’র কথা। না এখন ও আর ‘বেবি অব নাজমা’ নয়। বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া এখন তার নাম রেখেছেন সুরাইয়া। তাঁর আরেক মেয়ের নাম সুমাইয়া। তবে সেই মেয়ে বাবার আবেগ, আদর, ভালোবাসা সেভাবে বুঝতে পারে না। সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তাই স্ত্রী নাজমা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে বাচ্চু ভূঁইয়া একটি সুস্থ ও ফুটফুটে মেয়ের স্বপ্ন দেখেছেন। সব ঠিকও ছিল।
কিন্তু গত ২৩ জুলাই ঘটে যায় অঘটন। মাগুরায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় নিজের ঘরের বারান্দায় মা গুলিবিদ্ধ হন। আর পেটে নিরাপদে থাকা অবস্থায় মেয়েটিও গুলিবিদ্ধ হয়। তারপর থেকে বাচ্চু ভূঁইয়া নাওয়া-খাওয়া প্রায় ভুলে গেছেন। মা ও মেয়ের মুখে একটু স্বস্তি আনার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। অবশেষে গতকাল এসেছে সেই দিনটি।
সংকটাপন্ন অবস্থায় গত রোববার ভোর সাড়ে চারটায় তাকে আনা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শিশুটির মাকে ঢাকায় আনা হয় গত বৃহস্পতিবার।
মেয়ের বাবা বাচ্চু ভূঁইয়ার তাতে খানিকটা অভিমান হয়েছে। কণ্ঠে খুশির আবেশ নিয়েই বললেন, ‘মা-মেয়ে যখন এক হইছে, তখন আমারে নেয় নাই। ডাক্তারেরা কইছে, তোমারে তো দুইবার মেয়ের মুখ দেখাইছি, মা তো একবারও কাছে যায় নাই। তাই তুমি এখন থাকো। তবে আমার মেয়ের মা মেয়েকে দেখে ফিরা খালি মেয়ের কথা কয় আর হাসে।’
গতকাল বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতকদের বিশেষ সেবাকেন্দ্রে (স্ক্যাবু) সবার মুখে শুধুই হাসি আর স্বস্তি। যাক, দেরিতে হলেও মায়ের বুকে মেয়েকে দেওয়া গেছে।
এতক্ষণ বলা হচ্ছিল বর্তমানের আলোচিত শিশু ‘বেবি অব নাজমা’র কথা। না এখন ও আর ‘বেবি অব নাজমা’ নয়। বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া এখন তার নাম রেখেছেন সুরাইয়া। তাঁর আরেক মেয়ের নাম সুমাইয়া। তবে সেই মেয়ে বাবার আবেগ, আদর, ভালোবাসা সেভাবে বুঝতে পারে না। সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তাই স্ত্রী নাজমা বেগম অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে বাচ্চু ভূঁইয়া একটি সুস্থ ও ফুটফুটে মেয়ের স্বপ্ন দেখেছেন। সব ঠিকও ছিল।
কিন্তু গত ২৩ জুলাই ঘটে যায় অঘটন। মাগুরায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় নিজের ঘরের বারান্দায় মা গুলিবিদ্ধ হন। আর পেটে নিরাপদে থাকা অবস্থায় মেয়েটিও গুলিবিদ্ধ হয়। তারপর থেকে বাচ্চু ভূঁইয়া নাওয়া-খাওয়া প্রায় ভুলে গেছেন। মা ও মেয়ের মুখে একটু স্বস্তি আনার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। অবশেষে গতকাল এসেছে সেই দিনটি।
সংকটাপন্ন অবস্থায় গত রোববার ভোর সাড়ে চারটায় তাকে আনা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শিশুটির মাকে ঢাকায় আনা হয় গত বৃহস্পতিবার।
জন্মের ১৪ দিন পর মায়ের কোলে শিশু সুরাইয়া। গতকাল বেলা পৌনে দুইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতকদের বিশেষ সেবাকেন্দ্রে সবার মুখে ছিল স্বস্তি l ছবি: সংগৃহীত |
বাচ্চু
ভূঁইয়ার কথা যেন শেষ হতে চায় না। ঘুরেফিরে শুধুই মা ও মেয়ের গল্প। ‘আপা
জানেন, আজ প্রথম মেয়ের মাকে গোসল করানো হইছে। তারপর মেয়ের কাছে গেছে।
আসার পর থেকেই দেখছি মেয়ের মায়ের মনটা আজ খুব ভালো। তাই দেখে খুব ভালো
লাগছে। মেয়ে তো ওর মায়ের দুধও খাইছে। মা ওরে কোলে নিয়া মেলা সময় বসে ছিল।
আমার মেয়ে দেখতেও ভালো হইছে। আল্লাহর কাছে এমন মেয়েই চাইছিলাম। কিন্তু যে
ঘটনা হইল...এমন ঘটনা এই জীবনে আর শুনি নাই।’
বাচ্চু ভূঁইয়া ও নাজমা বেগমের ১৫ বছর বয়সী আরেক ছেলে আছে। ও এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। বাচ্চু ভূঁইয়া বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান।
মা, মেয়ে ও বাবার মুখে হাসি দেখে চিকিৎসকেরাও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কানিজ হাসিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক ঝড়-ঝাপটার পর অবশেষে মায়ের কোলে মেয়েকে তুলে দিতে পেরেছি। এটি খুবই আনন্দদায়ক ঘটনা। মা তো মেয়েকে কোলে নিয়ে খালি হাসে। মা খুশি, বাবা খুশি, আমরাও খুশি। এমনকি সুরাইয়াও খুশি। ওর মুখ দেখে মনে হয়েছে ও আজ হেসেছে।’
কানিজ হাসিনা জানালেন, মা নাজমা বেগম মেয়ের কাছে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো ছিলেন। এ সময় তিনি বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেছেন। তবে দুপুর ১২টার দিকেই সুরাইয়াকে মায়ের বুকের দুধ এনে খাওয়ানো হয়েছিল। ফলে ওর একটু ঘুম ঘুম ভাব ছিল। তারপরও ও মায়ের স্তন্যপানের চেষ্টা করেছে। কাল (আজ) আবার সুযোগ বুঝে মাকে মেয়ের কাছে আনা হবে।
মা নাজমা বেগম মেয়েকে দেখে আসার পর থেকে ঘুমাচ্ছেন। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘মা ও মেয়ের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তবে এখনই মেয়েকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। গুলিবিদ্ধ হয়ে অপরিণত বয়সে কম ওজন নিয়ে ওর জন্ম। ওর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা খুব কম। হার্টেও সমস্যা আছে।’ আবিদ হোসেন মোল্লা সুরাইয়ার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বাচ্চু ভূঁইয়া ও নাজমা বেগমের ১৫ বছর বয়সী আরেক ছেলে আছে। ও এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। বাচ্চু ভূঁইয়া বাজারে ছোট একটি চায়ের দোকান চালান।
মা, মেয়ে ও বাবার মুখে হাসি দেখে চিকিৎসকেরাও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কানিজ হাসিনা প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক ঝড়-ঝাপটার পর অবশেষে মায়ের কোলে মেয়েকে তুলে দিতে পেরেছি। এটি খুবই আনন্দদায়ক ঘটনা। মা তো মেয়েকে কোলে নিয়ে খালি হাসে। মা খুশি, বাবা খুশি, আমরাও খুশি। এমনকি সুরাইয়াও খুশি। ওর মুখ দেখে মনে হয়েছে ও আজ হেসেছে।’
কানিজ হাসিনা জানালেন, মা নাজমা বেগম মেয়ের কাছে প্রায় আধা ঘণ্টার মতো ছিলেন। এ সময় তিনি বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করেছেন। তবে দুপুর ১২টার দিকেই সুরাইয়াকে মায়ের বুকের দুধ এনে খাওয়ানো হয়েছিল। ফলে ওর একটু ঘুম ঘুম ভাব ছিল। তারপরও ও মায়ের স্তন্যপানের চেষ্টা করেছে। কাল (আজ) আবার সুযোগ বুঝে মাকে মেয়ের কাছে আনা হবে।
মা নাজমা বেগম মেয়েকে দেখে আসার পর থেকে ঘুমাচ্ছেন। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা বলেন, ‘মা ও মেয়ের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। তবে এখনই মেয়েকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। গুলিবিদ্ধ হয়ে অপরিণত বয়সে কম ওজন নিয়ে ওর জন্ম। ওর রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা খুব কম। হার্টেও সমস্যা আছে।’ আবিদ হোসেন মোল্লা সুরাইয়ার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
No comments