ক্ষত কাটিয়ে উঠেছে হিরোশিমা
হিরোশিমা : ‘লিটল বয়’ আর ‘ফ্যাট ম্যান’ দুটো বিস্ফোরণ। শেষ হয়ে গিয়েছিল কয়েক লাখ জীবন। ৭০ বছরের আগের সেই দিনটিকে স্মরণ করল জাপান। উদযাপিত হল ৭০তম হিরোশিমা দিবস। প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে পরমাণু বোমামুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ সব বিশ্বনেতাকে পরমাণু অস্ত্রবিহীন পৃথিবী তৈরি করতে। সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে হিরোশিমা ‘পিস পার্ক’-এ দাঁড়িয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালন করলেন জাপানবাসী। ১৯৪৫ সালের এ দিনটাতে ঠিক এই সময়ে, এই জায়গাতেই বোমাটি ফেলেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকার তৈরি পরমাণু বোমা ‘লিটল বয়’ ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম পরমাণু বোমা। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষের। তিনদিন পর নাগাসাকিতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় আরও একটি পরমাণু বোমা ‘ফ্যাট ম্যান’-এর। মৃত্যু ৭০ হাজার মানুষের।
এর পরেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণ করে জাপান। ওই ঘটনার পরেও এই দুই বিস্ফোরণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবে জাপানে মৃত্যু হয় আরও ৪ লাখ মানুষের। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে হিরোশিমার আকাশে উড়ে এসে আমেরিকার বোমারু বিমান এনোলা গে হামলা চালায়। বোমাটি মাটি থেকে প্রায় ৬০০ মিটার উঁচুতে বিস্ফোরিত হয়। সেই অ্যাটম বোমার বিস্ফোরণের ক্ষত আজও বয়ে বেড়াতে হচ্ছে হিরোশিমাবাসীকে। পরমাণু বোমার তেজস্ক্রিয়তার প্রভাব কয়েক প্রজন্মজুড়ে দেখা যায়, যখন এ কারণে জন্ম নেয় বিকলাঙ্গ শিশু। এদিন আবে বলেন, ‘পরমাণু বোমার আঘাতে শুধু হাজারো মানুষের মৃত্যুই হয়নি, অবর্ণনীয় কষ্ট ও যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে লাখো মানুষকে। তবে হিরোশিমা আজ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেই ক্ষত কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। আবারও জেগে উঠেছে হিরোশিমা। এটি এখন সংস্কৃতি ও সমৃদ্ধির শহরে পরিণত হয়েছে। তবে পরমাণু বোমা হামলার ৭০ বছর পূর্তিতে দাঁড়িয়ে আমি বিশ্বশান্তির গুরুত্ব আবারও উল্লেখ করছি।’ তিনি আরও বলেন, পরমাণু অস্ত্রমুক্ত একটি বিশ্ব গড়তে আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যাব। আনবিক বোমার শিকার একমাত্র দেশ হিসেবে পরমাণু অস্ত্র দূরীকরণের ক্ষেত্রে জাপান অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এদিন তারা শান্তি কামনায় শান্তির বার্তা লেখা কাগজ উড়িয়ে দেন।
No comments