রানা প্লাজার মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা by কামরুল হাসান
রানা
প্লাজা ধসের ঘটনায় সাভার উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ছয়
কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি দেয়নি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো।
তারপরও শুধু নির্বাহী কর্মকর্তার নাম বাদ দিয়ে বাকি পাঁচজনের নামসহ মোট ৪১
জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ
তদন্ত বিভাগ সিআইডি। এ সপ্তাহেই অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হচ্ছে।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ছয়জনের বাকি পাঁচজনের নাম অভিযোগপত্রে যুক্ত করা হলেও সরকারের ‘পূর্ব অনুমতি’ না থাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে কোনো আদালত তা আমলে নিতে পারবেন না। এতে এই পাঁচ আসামি মামলার শুরুতেই অব্যাহতি পাবেন। আর এঁরা যদি অব্যাহতি পান, তাহলে অন্য আসামিদের বিরুদ্ধেও আর অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হবে না। মামলার কোনো ভিত্তিই থাকবে না।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারা অনুসারে, সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সাভারের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবির উদ্দিন সরদার ছাড়াও আরও যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার অনুমতি মেলেনি, তাঁরা হলেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. ইউসুফ আলী ও সহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান দপ্তরের যুগ্ম শ্রম পরিচালক এম এ জামশেদুর রহমান, টঙ্গীর শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (আইআরআই) প্রকল্পের পরিচালক বেলায়েত হোসেন এবং রাজউকের ইমারত পরিদর্শক আওলাদ হোসেন।
সিআইডি পুলিশ জানায়, এসব কর্মকর্তার মধ্যে সাভারের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবির উদ্দিন সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ভবনে ফাটল দেখার পরও স্থানীয় প্রশাসক হিসেবে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ফাটলের ব্যাপারে ভুল তথ্য পরিবেশন করে কারখানার মালিককে কারখানা চালু রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। এমনকি ঘটনার পর থেকে নির্বাহী কর্মকর্তা পলাতক আছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত না করা এবং সময়মতো নজরদারি করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে রাজউকের ইমারত পরিদর্শক আওলাদ হোেসনের বিরুদ্ধে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, ভুয়া নকশার ওপর ভিত্তি করে কারখানার অনুমোদন।
অভিযোগপত্র দেওয়ার অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রমসচিব মিকাইল শিপার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রম আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করার বিষয়ে শুধুমাত্র শ্রম আদালতে মামলা করা যায়। অন্য কোনো আদালতে এ বিষয়ে মামলা রুজু করা যায় না।’
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, অনুমতি না পাওয়া এবং চাপের মুখে শুধু নির্বাহী কর্মকর্তার নাম তাঁরা বাদ দিয়েছেন। কিন্তু অন্য পাঁচজনের ব্যাপারে সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হলে মামলার ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ ভবন ধসে পড়ার দায় কারও ওপর পড়বে না। রানাসহ সবাই নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। তা ছাড়া, এই পাঁচজনের নাম বাদ দিলে অন্য কারও নামে অভিযোগপত্র দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। এ কারণে বাধ্য হয়েই অভিযোগপত্রে তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করছে সিআইডি।
দুটি মামলায় এ সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগপত্র দেবে সিআইডি, নির্বাহী কর্মকর্তার নাম বাদ, পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের অনুমতি দেয়নি মন্ত্রণালয় এভাবে অভিযোগপত্রে নাম যুক্ত করলে মামলার কী লাভ জানতে চাইলে সিআইডির তদন্তকারী ও সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর বলেন, ‘এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ ও পরিস্থিতি আমরা আদালতকে জানাব। এখন আদালত নির্ধারণ করবেন তাঁদের নাম থাকবে কি থাকবে না। আমরা যেহেতু তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি, সে কারণে তাঁদের বাদ দিতে পারি না।’
সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, এ মামলার তদন্তে মোট ৪২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এঁদের ১৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি সবাই পলাতক আছেন। এ তালিকায় ১৩ জনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
মামলা তদন্ত: ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এই শিল্প দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৪ জন নিহত হন। আহত ও পঙ্গু হয়ে যান প্রায় দুই হাজার মানুষ। মর্মান্তিক এ ঘটনা নিয়ে মোট পাঁচটি মামলা হয়। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় সাভার থানায় একটি মামলা করেন। একই দিন সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ একই থানায় আরও একটি মামলা করেন। পুলিশের করা মামলায় রানা প্লাজার ধসকে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে অভিযোগ আনা হয়। এ দুটি মামলা সিআইডি তদন্ত করছে।
এ ছাড়া পোশাকশ্রমিক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শিউলী আক্তার বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে রানা প্লাজা ধসকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে আরেকটি মামলা করেন। আদালত এই মামলাটিও তদন্ত করতে সিআইডিকে আদেশ দেন।
সিআইডির তদন্তকারী সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর প্রথম আলোকে বলেন, রাজউক ও পুলিশের করা মামলার তদন্তের সঙ্গে শিউলি আক্তারের অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।
এ ছাড়া ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহিন শাহ পারভেজ ধামরাই থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করেছিলেন। এ দুটি মামলার অভিযোগপত্র আগেই দেওয়া হয়েছে।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ছয়জনের বাকি পাঁচজনের নাম অভিযোগপত্রে যুক্ত করা হলেও সরকারের ‘পূর্ব অনুমতি’ না থাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে কোনো আদালত তা আমলে নিতে পারবেন না। এতে এই পাঁচ আসামি মামলার শুরুতেই অব্যাহতি পাবেন। আর এঁরা যদি অব্যাহতি পান, তাহলে অন্য আসামিদের বিরুদ্ধেও আর অভিযোগ প্রমাণ করা সম্ভব হবে না। মামলার কোনো ভিত্তিই থাকবে না।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৭ ধারা অনুসারে, সরকারি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দপ্তরের অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সাভারের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবির উদ্দিন সরদার ছাড়াও আরও যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়ার অনুমতি মেলেনি, তাঁরা হলেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. ইউসুফ আলী ও সহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান দপ্তরের যুগ্ম শ্রম পরিচালক এম এ জামশেদুর রহমান, টঙ্গীর শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (আইআরআই) প্রকল্পের পরিচালক বেলায়েত হোসেন এবং রাজউকের ইমারত পরিদর্শক আওলাদ হোসেন।
সিআইডি পুলিশ জানায়, এসব কর্মকর্তার মধ্যে সাভারের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবির উদ্দিন সরদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। ভবনে ফাটল দেখার পরও স্থানীয় প্রশাসক হিসেবে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ফাটলের ব্যাপারে ভুল তথ্য পরিবেশন করে কারখানার মালিককে কারখানা চালু রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন। এমনকি ঘটনার পর থেকে নির্বাহী কর্মকর্তা পলাতক আছেন।
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত না করা এবং সময়মতো নজরদারি করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে রাজউকের ইমারত পরিদর্শক আওলাদ হোেসনের বিরুদ্ধে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে, ভুয়া নকশার ওপর ভিত্তি করে কারখানার অনুমোদন।
অভিযোগপত্র দেওয়ার অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রমসচিব মিকাইল শিপার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রম আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করার বিষয়ে শুধুমাত্র শ্রম আদালতে মামলা করা যায়। অন্য কোনো আদালতে এ বিষয়ে মামলা রুজু করা যায় না।’
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, অনুমতি না পাওয়া এবং চাপের মুখে শুধু নির্বাহী কর্মকর্তার নাম তাঁরা বাদ দিয়েছেন। কিন্তু অন্য পাঁচজনের ব্যাপারে সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হলে মামলার ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাবে। কারণ ভবন ধসে পড়ার দায় কারও ওপর পড়বে না। রানাসহ সবাই নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। তা ছাড়া, এই পাঁচজনের নাম বাদ দিলে অন্য কারও নামে অভিযোগপত্র দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। এ কারণে বাধ্য হয়েই অভিযোগপত্রে তাঁদের নাম অন্তর্ভুক্ত করছে সিআইডি।
দুটি মামলায় এ সপ্তাহের মধ্যে অভিযোগপত্র দেবে সিআইডি, নির্বাহী কর্মকর্তার নাম বাদ, পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের অনুমতি দেয়নি মন্ত্রণালয় এভাবে অভিযোগপত্রে নাম যুক্ত করলে মামলার কী লাভ জানতে চাইলে সিআইডির তদন্তকারী ও সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর বলেন, ‘এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ ও পরিস্থিতি আমরা আদালতকে জানাব। এখন আদালত নির্ধারণ করবেন তাঁদের নাম থাকবে কি থাকবে না। আমরা যেহেতু তথ্য-প্রমাণ পেয়েছি, সে কারণে তাঁদের বাদ দিতে পারি না।’
সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, এ মামলার তদন্তে মোট ৪২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এঁদের ১৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি সবাই পলাতক আছেন। এ তালিকায় ১৩ জনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।
মামলা তদন্ত: ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ধসে পড়ে সাভারের রানা প্লাজা। দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ এই শিল্প দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৪ জন নিহত হন। আহত ও পঙ্গু হয়ে যান প্রায় দুই হাজার মানুষ। মর্মান্তিক এ ঘটনা নিয়ে মোট পাঁচটি মামলা হয়। এর মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১৯৫২ সালের ইমারত নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় সাভার থানায় একটি মামলা করেন। একই দিন সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওয়ালী আশরাফ একই থানায় আরও একটি মামলা করেন। পুলিশের করা মামলায় রানা প্লাজার ধসকে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত করে অভিযোগ আনা হয়। এ দুটি মামলা সিআইডি তদন্ত করছে।
এ ছাড়া পোশাকশ্রমিক জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী শিউলী আক্তার বাদী হয়ে ঢাকা মহানগর মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে রানা প্লাজা ধসকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে আরেকটি মামলা করেন। আদালত এই মামলাটিও তদন্ত করতে সিআইডিকে আদেশ দেন।
সিআইডির তদন্তকারী সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর প্রথম আলোকে বলেন, রাজউক ও পুলিশের করা মামলার তদন্তের সঙ্গে শিউলি আক্তারের অভিযোগেরও তদন্ত হচ্ছে।
এ ছাড়া ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শাহিন শাহ পারভেজ ধামরাই থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করেছিলেন। এ দুটি মামলার অভিযোগপত্র আগেই দেওয়া হয়েছে।
No comments