‘বাঁচাও’ by সরওয়ার আলম শাহীন
বোন
আমাকে বাঁচাও, দালালেরা আড়াই মাস ধরে মালয়েশিয়ার জঙ্গলে তাদের বন্দিশালায়
আটকে রেখে আমাকে নির্যাতন করছে। সপ্তাহে দুয়েক দিন দিনের বেলা ডালভাত
জুটলেও উপবাসে আমার যায় যায় অবস্থা। দালালরা বলছে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা
পরিশোধ না করলে আমাকে মেরে ফেলা হবে। বোন যেভাবে হোক আমার জন্য টাকা
পাঠাবার ব্যবস্থা কর। কথাগুলো গত সপ্তাহে মুঠোফোনে তার বড় বোন রোকেয়া
বেগমকে বলেছিল মালয়েশিয়া জঙ্গলে আটক উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের
পশ্চিম দরগাহবিল গ্রামের মৃত মির আহমদের ছেলে জসিম উদ্দিন (১৬)। জসিম অসহায়
ভাবে বাঁচার জন্য আকুতি জানালেও বোনের কান্না ছাড়া কিছু করার ছিল না। বোন
জানে না তার প্রাণপ্রিয় ভাই মারা গেছে, নাকি বেঁচে আছে। মালয়েশিয়া জঙ্গলে
আবারো গণকবরের সন্ধানের খবরে জসিমের মতো দালালদের হাতে আটকে থাকা অনেকের
পরিবার উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় রয়েছে।
জসিমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত আড়াই মাস পূর্বে উপজেলার ডিগলিয়াপালং গ্রামের কবির আহমদের ছেলে আলি আহমদ তাকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে উপকূলের সোনাইছড়ি ঘাট দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচার করে দেয়।
২০১২ সাল থেকে উখিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকা জালিয়াপালং ইউনিয়নের চোয়াংখালী ঘাট দিয়ে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারের যাত্রা শুরু হয়। পরে পাচারের ঘাট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলের ১৩টি পয়েন্ট দিয়ে দিনে রাতে মানব পাচার চলতে থাকে। পুলিশ মাঝেমধ্যে হানা দিয়ে দালালসহ মালয়েশিয়া যাত্রীদের আটক করলেও প্রকৃত গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় কোন প্রকার প্রভাব পড়েনি মানব পাচারের উপর। এক সময় পাচারে সহায়তাকারী হিসেবে পুলিশের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়ে। বারবার সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা এলেও মাঠপর্যায়ে তার বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে মানব পাচার হয়েছে বাধাহীনভাবে। এদিকে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ মৌলভী পাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে হোছাইনের (২৫) সঙ্গে একই গ্রামের জাফর আলমের মেয়ে কোটবাজার ফাতেমাতুজ জাহ্রা বালিকা দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা বেগমের (১৯) বিয়ে হয় ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সংসার জীবনে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে চলতি বছরের ১৩ মার্চ হোছাইন দালালের হাত ধরে মালয়েশিয়া পাড়ি জমায়।
হোছাইনের স্ত্রী আয়েশা জানান, আড়াই লাখ টাকার চুক্তিতে নগদ ৩০ হাজার টাকা প্রদান করলে স্থানীয় দালাল দুদু মিয়ার ছেলে ছিদ্দিক আহমদ ও মৃত রশিদ আহমদের ছেলে ছৈয়দ হোছনের হাত ধরে তার স্বামী মালয়েশিয়া পৌঁছে টাকা পরিশোধের কথা বললে যথাসময়ে বাকি টাকা দালালদের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু দালাল চক্র ওই টাকা পাওয়ার পরও মালয়েশিয়াস্থ দালালের ছেলে সোহেলকে টাকা পরিশোধের কথা অস্বীকার করায় সেখানে হোছাইনের উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। আয়েশা আরও জানান, এভাবে তাকে ১৫ দিন অনাহারে, অর্ধাহারে বন্দিশালায় আটক রেখে নির্যাতনের একপর্যায়ে সে মারা যায়। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ছৈয়দের বড় ভাই পেঠান আলী মুঠোফোনে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে জানালে গ্রামের বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। হয়তো মালয়েশিয়ায় আবিষ্কৃত গণকবরেই তার ঠাঁই হয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম খান জানান, দালালের সুনির্দিষ্ট কোন তালিকা না থাকলেও ২০১২ সাল থেকে উখিয়া থানায় প্রায় ৩৫টি মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ২০ জনেরও অধিক দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাদবাকি দালালদের আটকের জন্য পুলিশ প্রতিরাতেই বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
জসিমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত আড়াই মাস পূর্বে উপজেলার ডিগলিয়াপালং গ্রামের কবির আহমদের ছেলে আলি আহমদ তাকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে উপকূলের সোনাইছড়ি ঘাট দিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচার করে দেয়।
২০১২ সাল থেকে উখিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকা জালিয়াপালং ইউনিয়নের চোয়াংখালী ঘাট দিয়ে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারের যাত্রা শুরু হয়। পরে পাচারের ঘাট বৃদ্ধি পেয়ে উপকূলের ১৩টি পয়েন্ট দিয়ে দিনে রাতে মানব পাচার চলতে থাকে। পুলিশ মাঝেমধ্যে হানা দিয়ে দালালসহ মালয়েশিয়া যাত্রীদের আটক করলেও প্রকৃত গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় কোন প্রকার প্রভাব পড়েনি মানব পাচারের উপর। এক সময় পাচারে সহায়তাকারী হিসেবে পুলিশের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাও জড়িয়ে পড়ে। বারবার সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে মানব পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা এলেও মাঠপর্যায়ে তার বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে মানব পাচার হয়েছে বাধাহীনভাবে। এদিকে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমখাঁ মৌলভী পাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে হোছাইনের (২৫) সঙ্গে একই গ্রামের জাফর আলমের মেয়ে কোটবাজার ফাতেমাতুজ জাহ্রা বালিকা দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী আয়েশা বেগমের (১৯) বিয়ে হয় ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সংসার জীবনে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে চলতি বছরের ১৩ মার্চ হোছাইন দালালের হাত ধরে মালয়েশিয়া পাড়ি জমায়।
হোছাইনের স্ত্রী আয়েশা জানান, আড়াই লাখ টাকার চুক্তিতে নগদ ৩০ হাজার টাকা প্রদান করলে স্থানীয় দালাল দুদু মিয়ার ছেলে ছিদ্দিক আহমদ ও মৃত রশিদ আহমদের ছেলে ছৈয়দ হোছনের হাত ধরে তার স্বামী মালয়েশিয়া পৌঁছে টাকা পরিশোধের কথা বললে যথাসময়ে বাকি টাকা দালালদের হাতে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু দালাল চক্র ওই টাকা পাওয়ার পরও মালয়েশিয়াস্থ দালালের ছেলে সোহেলকে টাকা পরিশোধের কথা অস্বীকার করায় সেখানে হোছাইনের উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। আয়েশা আরও জানান, এভাবে তাকে ১৫ দিন অনাহারে, অর্ধাহারে বন্দিশালায় আটক রেখে নির্যাতনের একপর্যায়ে সে মারা যায়। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ছৈয়দের বড় ভাই পেঠান আলী মুঠোফোনে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে পরিবারের কাছে জানালে গ্রামের বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। হয়তো মালয়েশিয়ায় আবিষ্কৃত গণকবরেই তার ঠাঁই হয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জহিরুল ইসলাম খান জানান, দালালের সুনির্দিষ্ট কোন তালিকা না থাকলেও ২০১২ সাল থেকে উখিয়া থানায় প্রায় ৩৫টি মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ২০ জনেরও অধিক দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাদবাকি দালালদের আটকের জন্য পুলিশ প্রতিরাতেই বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
No comments