কোকোর কবরে কাঁদলেন খালেদা
প্রথমবারের
মতো ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়া। গাড়ি থেকে নেমে কবরের সামনে গিয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
টিস্যু দিয়ে বারবার চোখের পানি মুছলেও থামছিল না অশ্রুপাত। অনেকক্ষণ ধরে
অঝোর ধারায় তার এ কান্না সেখানে এক শোকাবহ পরিবেশ তৈরি করে। এ সময় পাশ থেকে
তাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেন ছোটভাই শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ
ফাতেমা। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত তার ছোট ছেলে কোকো যখন আকস্মিক মৃত্যুবরণ
করেন তখন তিনি আন্দোলন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নিজের গুলশান রাজনৈতিক
কার্যালয়ে অনেকটাই অবরুদ্ধ। দেশে লাশ আনার পর কার্যালয়ের উঠোনেই শেষবারের
মতো ছেলেকে দেখেছিলেন তিনি। তারপর আন্দোলনের স্বার্থেই তিনি কার্যালয় থেকে
বের হননি। তাই ছেলের কবরও জিয়ারত করা হয়নি। ফলে গতকাল স্বাভাবিকভাবেই উথলে
উঠেছিল তার মাতৃত্বের আবেগ। এর আগে বিকাল ৪টার দিকে কোকোর কবরের ওপরে
টানানো হয় ত্রিপল আর খালেদা জিয়ার বসার জন্য আনা হয় চেয়ার। বিকাল থেকেই জড়ো
হতে থাকেন দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিকাল ৫টা ৩৯
মিনিটে তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হন খালেদা জিয়া। বিকাল ৫টা ৪৯
মিনিটে তিনি বনানী কবরস্থানে পৌঁছান। খালেদা জিয়া কবরস্থান এলাকায় পৌঁছালে
নেতাকর্মীদের প্রচণ্ড ভিড় লেগে যায়। ভিড়ের জন্য প্রায় ১০ মিনিট গাড়িতে বসে
অপেক্ষা করেন তিনি। সিএসএফ সদস্যরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলে তিনি গাড়ি
থেকে নেমে ছেলের কবরের সামনে দাঁড়ান। এসময় কবরের পাশে ছিলেন মহিলা দলের
নেত্রী ও সিনিয়র নেতারা। বনানী সিটি করপোরেশন কবরস্থানে ছেলের কবরের সামনে
কান্নায় ভেঙে পড়েন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। উপস্থিত দলের নেতাকর্মীরা চোখের
পানি ধরে রাখতে পারেননি। কিছুসময় পর কোকোর আত্মার শান্তি কামনায় অনুষ্ঠিত
মোনাজাতে অংশ নেন খালেদা জিয়া। মোনাজাত শেষে কোকোর কবরের পাশে একটি চেয়ারে
কিছু সময় বসে থাকেন তিনি। প্রায় ১০ মিনিট চেয়ারে বসে কোরআন তেলাওয়াত করেন।
যতক্ষণ কবরের পাশে ছিলেন ততক্ষণ ছেলের স্মৃতি মনে করে কাঁদেন সাবেক এই
প্রধানমন্ত্রী। একপর্যায়ে বাঁশের বেড়ার ওপর দিয়ে নুইয়ে ছেলের কবরে মমতাময়ী
মায়ের হাতের স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেন। এরপর ৬টা ২০ মিনিটে কোকোর কবরপ্রাঙ্গণ
ত্যাগ করেন তিনি। কবরস্থানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ
আহমদ, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড.
আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন
চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন, মীর
নাছিরউদ্দিন, সাহিবউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন
খোকন, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ
আবদুল মালেক, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নেছারউদ্দিন আহমেদ, কৃষক দলের যুগ্ম
সম্পাদক আসাদুজ্জামান সম্রাট, মহিলা দলের নেত্রী নুরে আরা সাফা, শিরিন
সুলতানা, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, শাম্মী আক্তার, নিলুফার চৌধুরী
মনি, শামা ওবায়েদসহ কয়েক সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, গত
২৪শে জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৪৫ বছর বয়সে মারা যান
আরাফাত রহমান কোকো। ২৭শে জানুয়ারি তার লাশ দেশে এনে বনানী কবরস্থানে
বি-ব্লকের ১৮নং সারিতে অবস্থিত ১,৮৩৮/১৪৭নং কবরে দাফন করা হয়। ওদিকে
সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়ে ৩রা জানুয়ারি রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে
অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। এরপর কার্যালয় থেকেই ছেলেকে শেষ বিদায় জানান
তিনি। কার্যালয় থেকে বের হতে না পারায় ছেলের কবর জিয়ারত করতে পারেননি। ৯২
দিন পর রোববার গুলশান কার্যালয় থেকে বের হয়ে আদালতে জামিন প্রার্থনা করেন
তিনি। আদালত জামিন দিলে বাসায় ফিরে যান খালেদা জিয়া। এরপর প্রথমবারের মতো
ছেলের কবর জিয়ারত করতে যান তিনি। এর আগে ২৮শে জানুয়ারি কোকো’র কবর জিয়ারত
করেছেন তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান, দুই সন্তান জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমান,
বড় মামি নাসরিন সাঈদ, ছোট মামা শামীম ইস্কান্দার, ছোট মামি কানিজ ফাতেমাসহ
পরিবারের সদস্যরা।
খালেদার সঙ্গে কাজী জাফরের বৈঠক
স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ। গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠক শেষে কাজী জাফর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় দলের মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারও উপস্থিত ছিলেন। কোকোর কবর জিয়ারত শেষে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় ফিরে আসার পরপরই কাজী জাফরের গাড়ি ওই বাসায় ঢোকে। এরপর প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন তারা। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কাজী জাফর আহমেদ আজ রাতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে কাজী জাফরের মেয়ে থাকেন।
ফজলুল রহমানের মৃত্যুতে খালেদার শোক
এদিকে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনের সাবেক এমপি, জেলা বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও গফরগাঁও থানা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. ফজলুর রহমান সুলতানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবাণী তিনি বলেন, মো. ফজলুর রহমান সুলতানের মৃত্যুতে তার এলাকাবাসীর ন্যায় আমিও গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ করেই মরহুম মো. ফজলুুুুুুুুর রহমান সুলতান নিজ রাজনৈতিক আদর্শ থেকে কখনোই বিচ্যুত হননি। রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে দলের সকল কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত রাখেন নানাবিধ সংকট ও দুঃসময়ের মধ্যে। তার মৃত্যুতে শুধু ময়মনসিংহবাসীই নয় বরং দেশবাসী একজন প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদকে হারালো যার শূন্যস্থান সহজে পূরণ হওয়ার নয়। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান খালেদা জিয়া।
খালেদার সঙ্গে কাজী জাফরের বৈঠক
স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ। গতকাল সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠক শেষে কাজী জাফর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এসময় দলের মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দারও উপস্থিত ছিলেন। কোকোর কবর জিয়ারত শেষে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় ফিরে আসার পরপরই কাজী জাফরের গাড়ি ওই বাসায় ঢোকে। এরপর প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন তারা। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কাজী জাফর আহমেদ আজ রাতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে কাজী জাফরের মেয়ে থাকেন।
ফজলুল রহমানের মৃত্যুতে খালেদার শোক
এদিকে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসনের সাবেক এমপি, জেলা বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও গফরগাঁও থানা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. ফজলুর রহমান সুলতানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবাণী তিনি বলেন, মো. ফজলুর রহমান সুলতানের মৃত্যুতে তার এলাকাবাসীর ন্যায় আমিও গভীরভাবে শোকাহত ও মর্মাহত। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে প্রবেশ করেই মরহুম মো. ফজলুুুুুুুুর রহমান সুলতান নিজ রাজনৈতিক আদর্শ থেকে কখনোই বিচ্যুত হননি। রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে দলের সকল কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত রাখেন নানাবিধ সংকট ও দুঃসময়ের মধ্যে। তার মৃত্যুতে শুধু ময়মনসিংহবাসীই নয় বরং দেশবাসী একজন প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ ও জনপ্রিয় রাজনীতিবিদকে হারালো যার শূন্যস্থান সহজে পূরণ হওয়ার নয়। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান খালেদা জিয়া।
No comments