গড়ে উঠছে আধুনিক নগর by মামুন আব্দুল্লাহ
কেরানীগঞ্জ এখন নতুন এক আধুনিক নগরী গড়ে ওঠার পথে। আবাসন ব্যবসার বিপুল সম্ভাবনার আভাস পেয়ে ইতিমধ্যে এখানে অনেকটা হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ সুবাদে একের পর এক প্রকল্পের ফিতে কাটার ধুম পড়েছে। এর ফলে তিলোত্তমা রাজধানী ঢাকার পাশে নতুন এক ঝলমলে শহর গড়ে ওঠার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে, যা হবে রাজধানীর উত্তরাঞ্চলের পর দক্ষিণাঞ্চলের (বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে) অভাবনীয় উন্নয়ন।
উন্নয়নের এই দূরদর্শনকে ব্যবসায়ীরা আর বেশি দূরে মনে করছেন না। তাদের মতে, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়ে গেলে কেরানীগঞ্জ আধুনিক নগরীর খেতাবও অর্জন করবে, যা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ইতিমধ্যে সরকারও এ বিষয়টি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ও এখানে আবাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ ছাড়াও শ্রীনগর, লৌহজং এলাকার বহু মানুষ আমেরিকা, লন্ডন, সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন। যাদের কাছে প্রচুর অর্থ থাকলেও পরিকল্পিত নগরীর অভাবে এতদিন তারা বিনিয়োগ করতে পারেননি। কিন্তু এখন কেরানীগঞ্জে অপার সম্ভাবনার দ্বারোন্মোচিত হওয়ায় প্রবাসীদের মনেও জন্মভূমি নিয়ে আশার আলো উঁকি দিয়েছে। তারা সুন্দর ও আধুনিক পরিবেশে দেশে থাকা পরিবার পরিজনের জন্য মানসম্পন্ন বাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখছেন। মূলত এসব প্রবাসীরাই এসব আবাসন প্রকল্পের প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্রেতা। অনেকে আবার সরাসরি আবাসন প্রকল্পে অর্থলগ্নী করছেন। এছাড়া রাজধানী ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষও এখানে প্লট-ফ্ল্যাট কেনার প্রতি ঝুঁকছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় কোণ্ডা এলাকার বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ বলেন, ইছামতি, ধলেশ্বরী ,কালিগঙ্গা আর বুড়িগঙ্গা এই চার নদী দ্বারা কেরানীগঞ্জ বেষ্টিত। বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে অবস্থিত হলেও কেরানীগঞ্জের গুরুত্ব দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় একটু বেশি। পূর্বে মুন্সীগঞ্জ, পশ্চিমে সাভার, উত্তরে ঢাকা আর দক্ষিণে নবাবগঞ্জ মিলে গুরুত্বপূর্ণ এই চারটি এলাকার মাঝেই কেরানীগঞ্জ উপজেলা। এছাড়া উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বুড়িগঙ্গা। এ নদীর মাঝ পথেই রয়েছে চিরচেনা সদরঘাট। ফলে গুরুত্বের দিক দিয়ে এর অবস্থান অনেক উপরে। কিন্তু এতদিন পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন এই অঞ্চলে হয়নি। তবে খুব শিগগিরিই এর পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন তিনি। ফারুক আহম্মেদের ভাষায়- এক সময় মেগা সিটি হয়ে রাজধানীর গৌরব হয়ে দাঁড়াবে এই কেরানীগঞ্জ।
একটি আবাসন কোম্পানির পরিচালক যুগান্তরকে বলেন, কেরানীগঞ্জের এই সম্ভাবনার কথা বুঝতে পেরে তারা এখানে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছেন। রাজউকও ঝিলমিল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হয়ে গেলে কেরানীগঞ্জ মেগা সিটিতে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সরকারি উদ্যোগে এ অঞ্চলে গড়ে উঠছে রাজউকের ঝিলমিল আবাসন প্রকল্প, বিসিক শিল্প নগরী, লাখির চর অবাসন প্রকল্প, সেনাবাহিনীর নিউ ডিওএইচএস আবাসন প্রকল্প, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রকল্প প্রভৃতি। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারিভাবে এই এলাকায় বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় কেরানীগঞ্জের সার্বিক চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বিদ্যুৎ প্রকল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রশস্ত রাস্তা তৈরির প্রকল্পও চলমান রয়েছে। এছাড়া কেরানীগঞ্জেই গড়ে উঠছে দেশের সর্ববৃহৎ জেলখানা। এটিকে কেন্দ্র করেও এখানকার পতিত জমির দামও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
আবাসন ব্যবসায়ীদের মতে, ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে কেন্দ্র করে আধুনিক ঢাকাকে আরও বড় করে গড়ে তুলতে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। কেরানীগঞ্জে সবচেয়ে বড় আকারে আবাসন ব্যবসায় প্রকল্প হাতে নিয়েছে বসুন্ধারা গ্রুপ। ১৫ বছর আগে বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে প্রকল্প হাতে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আরও তিনটি প্রকল্প হাতে নেয় বসুন্ধরা। এগুলো হল- বসুন্ধারা সিটি ভিউ, দক্ষিণা ও গ্রিন সিটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধারা গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক বলেন, কেরানীগঞ্জের মতো এলাকাকে আধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তোলা যায় এটা কেউ এক সময় চিন্তাও করত না। কিন্তু এখন সেটা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জের প্রকল্পগুলো হবে সর্বাধুনিক ও সৌন্দর্যমণ্ডিত আবাসন ব্যবস্থা। থাকবে প্রশস্ত রাস্তা, নাগরিকদের জন্য সব রকম সুযোগ-সুবিধা। যার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অনেকে প্লট কিনে বাড়িঘরও তুলতে শুরু করেছেন।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে একটি সম্ভাবনাময়ী আধুনিক উপজেলা। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে কোন্ডা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, বাস্তা, আগানগর, জিনজিরা , কালিন্দি , রোহিতপুর, শাক্তা, তারানগর, কলাতিয়া ও হযরতপুর। এই ১২টি ইউনিয়নের কোন্ডা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, বাস্তা, কালিন্দি, রোহিতপুর, কলাতিয়া ও হযরতপুর ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পগুলো। এলাকার নিচু ও পতিত জমি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রকল্প। সবচেয়ে বেশি আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে কেরানীগঞ্জের কোন্ডা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, বাস্তা, রোহিতপুর ও হযরতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারিভাবে এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করার চিন্তা থেকেই গড়ে উঠছে নতুন নতুন বসতি, স্থাপনা, সুউচ্চ অট্টালিকা। এক সময়ের পতিত জমিগুলো এখন মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়েছে। জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এই এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক মানও বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকের অভাব ঘুচেছে। স্থানীয়রা স্বপ্ন দেখছেন সমৃদ্ধ জীবনযাপনের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা অন্যান্য আবাসন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, প্রিয়প্রাঙ্গণ সিটি, সুমনা হাউজিং, সানওয়ে আপন সিটি, এনশিওর ল্যান্ড মার্ক, প্রত্যয় রিয়েল স্টেট, ভেনাস ল্যান্ড মার্ক, লেকভিউ সিটি, সবুজ ছায়া আবাসন, স্টার প্লাস সিটি, এ্যাপলো হাউজিং, নিউভিশন হাউজিং, তানশির সিটি, জমিদার সিটি, সিফা হাউজিং, চুনকুঠিয়া হাউজিং অ্যান্ড সমিতি, ইকবাল নগর আবাসন, ডিসি হাউজিং, মুজিহিদ নগর, নবধারা হাউজিং, সাউথ টাউন, প্রাইমসিটি, সোনারবাংলা আবাসন, আরবান রিয়েল স্টেট, বুড়িগঙ্গা আরশি নগর, ওলামা সিটি, ফিউচার সিটি, লন্ডন সিটি, কিংডম সিটি, রিভেরা সিটি, মনপুরা সিটি, বসতভিটা আবাসন প্রকল্প, আলী আজগর নগর, দিশারী সিটি, তায়েফ সিটি, ঢাকা নিরাপদ সিটি মুন্সি প্রপার্টিজ, একে হাউজিং অ্যান্ড রিয়েল স্টেট, অলিনগর, রউফনগর, ইস্পাহানি আবাসিক এলাকাসহ শতাধিক ছোটবড় হাউজিং প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সেক্রেটারি ওয়াহেদুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, অনেক আবাসন ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি করা উচিত ছিল আরও পরিকল্পিতভাবে। কেননা, রাজউকের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) আওতায় করা না হলে আধুনিক নগর গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন
উন্নয়নের এই দূরদর্শনকে ব্যবসায়ীরা আর বেশি দূরে মনে করছেন না। তাদের মতে, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়ে গেলে কেরানীগঞ্জ আধুনিক নগরীর খেতাবও অর্জন করবে, যা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ইতিমধ্যে সরকারও এ বিষয়টি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য গৃহায়ন ও পূর্ত মন্ত্রণালয়ও এখানে আবাসন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ ছাড়াও শ্রীনগর, লৌহজং এলাকার বহু মানুষ আমেরিকা, লন্ডন, সৌদি আরবসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন। যাদের কাছে প্রচুর অর্থ থাকলেও পরিকল্পিত নগরীর অভাবে এতদিন তারা বিনিয়োগ করতে পারেননি। কিন্তু এখন কেরানীগঞ্জে অপার সম্ভাবনার দ্বারোন্মোচিত হওয়ায় প্রবাসীদের মনেও জন্মভূমি নিয়ে আশার আলো উঁকি দিয়েছে। তারা সুন্দর ও আধুনিক পরিবেশে দেশে থাকা পরিবার পরিজনের জন্য মানসম্পন্ন বাড়ি তৈরির স্বপ্ন দেখছেন। মূলত এসব প্রবাসীরাই এসব আবাসন প্রকল্পের প্লট ও ফ্ল্যাটের ক্রেতা। অনেকে আবার সরাসরি আবাসন প্রকল্পে অর্থলগ্নী করছেন। এছাড়া রাজধানী ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষও এখানে প্লট-ফ্ল্যাট কেনার প্রতি ঝুঁকছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় কোণ্ডা এলাকার বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ বলেন, ইছামতি, ধলেশ্বরী ,কালিগঙ্গা আর বুড়িগঙ্গা এই চার নদী দ্বারা কেরানীগঞ্জ বেষ্টিত। বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে অবস্থিত হলেও কেরানীগঞ্জের গুরুত্ব দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় একটু বেশি। পূর্বে মুন্সীগঞ্জ, পশ্চিমে সাভার, উত্তরে ঢাকা আর দক্ষিণে নবাবগঞ্জ মিলে গুরুত্বপূর্ণ এই চারটি এলাকার মাঝেই কেরানীগঞ্জ উপজেলা। এছাড়া উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে বুড়িগঙ্গা। এ নদীর মাঝ পথেই রয়েছে চিরচেনা সদরঘাট। ফলে গুরুত্বের দিক দিয়ে এর অবস্থান অনেক উপরে। কিন্তু এতদিন পরিকল্পিত কোনো উন্নয়ন এই অঞ্চলে হয়নি। তবে খুব শিগগিরিই এর পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন তিনি। ফারুক আহম্মেদের ভাষায়- এক সময় মেগা সিটি হয়ে রাজধানীর গৌরব হয়ে দাঁড়াবে এই কেরানীগঞ্জ।
একটি আবাসন কোম্পানির পরিচালক যুগান্তরকে বলেন, কেরানীগঞ্জের এই সম্ভাবনার কথা বুঝতে পেরে তারা এখানে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছেন। রাজউকও ঝিলমিল প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হয়ে গেলে কেরানীগঞ্জ মেগা সিটিতে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সরকারি উদ্যোগে এ অঞ্চলে গড়ে উঠছে রাজউকের ঝিলমিল আবাসন প্রকল্প, বিসিক শিল্প নগরী, লাখির চর অবাসন প্রকল্প, সেনাবাহিনীর নিউ ডিওএইচএস আবাসন প্রকল্প, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রকল্প প্রভৃতি। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারিভাবে এই এলাকায় বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় কেরানীগঞ্জের সার্বিক চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে বিদ্যুৎ প্রকল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রশস্ত রাস্তা তৈরির প্রকল্পও চলমান রয়েছে। এছাড়া কেরানীগঞ্জেই গড়ে উঠছে দেশের সর্ববৃহৎ জেলখানা। এটিকে কেন্দ্র করেও এখানকার পতিত জমির দামও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
আবাসন ব্যবসায়ীদের মতে, ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে কেন্দ্র করে আধুনিক ঢাকাকে আরও বড় করে গড়ে তুলতে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। কেরানীগঞ্জে সবচেয়ে বড় আকারে আবাসন ব্যবসায় প্রকল্প হাতে নিয়েছে বসুন্ধারা গ্রুপ। ১৫ বছর আগে বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে প্রকল্প হাতে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আরও তিনটি প্রকল্প হাতে নেয় বসুন্ধরা। এগুলো হল- বসুন্ধারা সিটি ভিউ, দক্ষিণা ও গ্রিন সিটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুন্ধারা গ্রুপের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক বলেন, কেরানীগঞ্জের মতো এলাকাকে আধুনিক সিটি হিসেবে গড়ে তোলা যায় এটা কেউ এক সময় চিন্তাও করত না। কিন্তু এখন সেটা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জের প্রকল্পগুলো হবে সর্বাধুনিক ও সৌন্দর্যমণ্ডিত আবাসন ব্যবস্থা। থাকবে প্রশস্ত রাস্তা, নাগরিকদের জন্য সব রকম সুযোগ-সুবিধা। যার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। অনেকে প্লট কিনে বাড়িঘরও তুলতে শুরু করেছেন।
জানা গেছে, কেরানীগঞ্জ ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে একটি সম্ভাবনাময়ী আধুনিক উপজেলা। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে কোন্ডা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, বাস্তা, আগানগর, জিনজিরা , কালিন্দি , রোহিতপুর, শাক্তা, তারানগর, কলাতিয়া ও হযরতপুর। এই ১২টি ইউনিয়নের কোন্ডা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, বাস্তা, কালিন্দি, রোহিতপুর, কলাতিয়া ও হযরতপুর ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন আবাসন প্রকল্পগুলো। এলাকার নিচু ও পতিত জমি ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে এসব প্রকল্প। সবচেয়ে বেশি আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে কেরানীগঞ্জের কোন্ডা, তেঘরিয়া, শুভাঢ্যা, বাস্তা, রোহিতপুর ও হযরতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন মৌজায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারিভাবে এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করার চিন্তা থেকেই গড়ে উঠছে নতুন নতুন বসতি, স্থাপনা, সুউচ্চ অট্টালিকা। এক সময়ের পতিত জমিগুলো এখন মূল্যবান সম্পদে পরিণত হয়েছে। জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এই এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক মানও বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকের অভাব ঘুচেছে। স্থানীয়রা স্বপ্ন দেখছেন সমৃদ্ধ জীবনযাপনের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা অন্যান্য আবাসন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, প্রিয়প্রাঙ্গণ সিটি, সুমনা হাউজিং, সানওয়ে আপন সিটি, এনশিওর ল্যান্ড মার্ক, প্রত্যয় রিয়েল স্টেট, ভেনাস ল্যান্ড মার্ক, লেকভিউ সিটি, সবুজ ছায়া আবাসন, স্টার প্লাস সিটি, এ্যাপলো হাউজিং, নিউভিশন হাউজিং, তানশির সিটি, জমিদার সিটি, সিফা হাউজিং, চুনকুঠিয়া হাউজিং অ্যান্ড সমিতি, ইকবাল নগর আবাসন, ডিসি হাউজিং, মুজিহিদ নগর, নবধারা হাউজিং, সাউথ টাউন, প্রাইমসিটি, সোনারবাংলা আবাসন, আরবান রিয়েল স্টেট, বুড়িগঙ্গা আরশি নগর, ওলামা সিটি, ফিউচার সিটি, লন্ডন সিটি, কিংডম সিটি, রিভেরা সিটি, মনপুরা সিটি, বসতভিটা আবাসন প্রকল্প, আলী আজগর নগর, দিশারী সিটি, তায়েফ সিটি, ঢাকা নিরাপদ সিটি মুন্সি প্রপার্টিজ, একে হাউজিং অ্যান্ড রিয়েল স্টেট, অলিনগর, রউফনগর, ইস্পাহানি আবাসিক এলাকাসহ শতাধিক ছোটবড় হাউজিং প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সেক্রেটারি ওয়াহেদুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, অনেক আবাসন ব্যবসায়ীরা এই অঞ্চলে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটি করা উচিত ছিল আরও পরিকল্পিতভাবে। কেননা, রাজউকের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) আওতায় করা না হলে আধুনিক নগর গড়ে তোলা কঠিন হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি দেলোয়ার হোসেন
No comments