তাঁর হাতে স্নাইপার গান ছিল কেন?

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ওই ঘটনার এক দিন পর স্নাইপার গান দিয়ে অনুশীলন করেছিলেন। এ বিষয়ে সদর দপ্তরের কোনো অনুমোদন নেননি তিনি।
অথচ ফায়ারিং অনুশীলনের জন্য র‌্যাব সদর দপ্তরের অনুমোদন নিতে হয় এবং অনুশীলন শেষে সদর দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠাতে হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, অস্ত্র নিয়ে অনুশীলনের জন্য র‍্যাব সদর দপ্তরের অনুমোদন নিতে হয় এবং অনুশীলন শেষে প্রতিবেদন পাঠাতে হয়।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, অপহরণের দিনে রাতেই অপহৃত ব্যক্তিদের হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
গত ৯ অক্টোবর লে. কর্নেল মো. আনোয়ার লতিফ খানের পাঠানো প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার এক দিন পর অর্থাৎ ২৯ এপ্রিল র‌্যাব-১১-এর সে সময়কার অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ অনুমোদন ছাড়াই স্নাইপার গান ব্যবহার করেন। র‌্যাব-১১-এর কার্যালয়ের পেছনের ফাঁকা জায়গায় বালুর বস্তা (স্যান্ডব্যাগ) ব্যবহার করে নয়টি গুলি করেন। ওই সময় তাঁর জন্য ফায়ারিং রেঞ্জ বরাদ্দ ছিল না বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। উইকিপিডিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাই দূর থেকে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করেন। সাধারণ অস্ত্র ব্যবহার করে এই কাজ করা সম্ভব না। মডেল ভেদে স্নাইপার রাইফেল দিয়ে ৬০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ মিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা সম্ভব। র‍্যাব-১১-এর কাছে দুটি স্নাইপার রাইফেল ছিল।
র‍্যাব-১১-এর ওই প্রতিবেদনে সদর দপ্তরকে জানানো হয়, গুলি ছোড়ার (ফায়ারিং) জন্য আগে র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে মৌখিক কোনো অনুমোদন ছিল কি না, জানা নেই। তবে লিখিত অনুমোদনের কোনো নথিপত্র ওই ব্যাটালিয়নে সংরক্ষিত নেই। এ ছাড়া গুলি ছোড়া অনুশীলনের পরে র‌্যাব সদর দপ্তরে এ বিষয়ে কোনো লিখিত প্রতিবেদনও পাঠানো হয়নি।
স্নাইপার গান দিয়ে অনুশীলন ও ব্যবহার করা গোলাবারুদের হিসাব চেয়ে গত ৩ অক্টোবর র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে চিঠি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ অক্টোবর র‌্যাব-১১-এর সহকারী পরিচালক রবিউল হক একটি হিসাব পাঠান। একই বিষয়ে ৮ অক্টোবর র‌্যাব সদর দপ্তরের আরেকটি চিঠি পাঠানো হয়। গত ৯ অক্টোবর এই চিঠির জবাব দেন র‍্যাব-১১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আনোয়ার লতিফ খান।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের এবং এর পরদিন ওই নদী থেকে আরও একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ফতুল্লা মডেল থানায় কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। অন্যদিকে চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক একটি মামলা করেন।
এই ঘটনায় র‌্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

1 comment:

  1. This horrendous seven or more
    murder cases is in a quandary.
    It is widely perceived that the
    whole government machinery is involved
    in the gruesome murder. So there exist
    no hope for fair trial least to say trtrial.
    All are out and out a mockery.

    ReplyDelete

Powered by Blogger.