মাহজাবিন হত্যা মামলা সিআইডিতে
দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তের জন্য ডা. শামারুখ মাহজাবিনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হবে বুধবার। এর আগে গত শনিবার মামলাটি তদন্তের ভার দেয়া হয় সিআইডিকে। তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ টিম আজ মঙ্গলবার যশোর আসছে। ডা. শামারুখের পিতা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)-র প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর মামলাটি তদন্তের ভার সিআইডিতে ন্যস্ত করেছে। ইতিমধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে সিআইডির এএসপি মুন্সি রুহুল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছেন স্পেশাল সুপার আবদুল কাহহার আখন্দ।’ তিনি জানান, তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে সিআইডির টিম আগামীকাল মঙ্গলবার যশোর আসছে। পরদিন বুধবার শামারুখের লাশ উত্তোলন করে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হবে। যশোরের পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বুধবার সকাল ১০টা-সাড়ে ১০টার দিকে লাশ উত্তোলন করা হবে। সিভিল সার্জন সংশ্লিষ্ট সিআইডি কর্মকর্তার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় কথা বলেছেন বলে এসপি নিশ্চিত করেন। সিভিল সার্জন ডা. আতিকুর রহমান খান অবশ্য সরাসরি কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, লাশ উত্তোলনের দায়িত্ব পুলিশের। তারা আসুক। তারপর কি হয় দেখা যাবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী লাশ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের জন্য যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের তিন সদস্যের কমিটি করার কথা। সিভিল সার্জন বলেন, ‘দেখা যাক কি হয়। বড্ড ঝামেলায় আছি।’ গত ১৩ই নভেম্বর রাজধানীর ধানম-ি এলাকার বাসভবনে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় ডা. শামারুখ মাহজাবিনকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ওই রাতেই তার পিতা নূরুল ইসলাম ধানম-ি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য (যশোর-৫) টিপু সুলতান, তার স্ত্রী ডা. জেসমিন ও ছেলে সাদাবকে আসামি করা হয়। সাদাবকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। আর টিপু সুলতান ও তার স্ত্রী উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন নেন। ডা. মাহজাবিনের লাশের ময়নাতদন্ত হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত ২৩শে নভেম্বর প্রকাশিত ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ডা. মাহজাবিন আত্মহত্যা করেছেন বলে বলা হয়। এর আগে ২০শে নভেম্বর প্রেস ক্লাব যশোরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম আশঙ্কা করেন, প্রভাবশালী টিপু সুলতান ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। ঢামেকের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করে গত মঙ্গলবার প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম আদালতের শরণাপন্ন হন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার সাহা ওই দিনই ডা. মাহজাবিনের লাশ উত্তোলন করে আবার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন যশোরের সিভিল সার্জনকে। গত শনিবার সকালে নূরুল ইসলাম নিজের ও ছেলে শাহানুর মো. শরীফের জীবনাশঙ্কা ব্যক্ত করে যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। একই দিন তিনি যশোরের কারবালা কবরস্থান পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক এবং পীর নূর বোরহান শাহ হাফিজিয়া মাদরাসার সাধারণ সম্পাদক বরাবর একটি আবেদন করেন। তার আশঙ্কা বিবাদী পক্ষের লোকেরা আলামত নষ্ট করার জন্য শামারুখের লাশ গায়েব করতে পারে। যশোরের পুলিশ সুপার ও কোতোয়ালি থানার ওসির কাছেও তিনি একই আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন। পুলিশ কারবালা কবরস্থানের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।
No comments