অভ্যুত্থান এড়াতে পারবেন কী ইংলাক by মাসুদ আনোয়ার
থাইল্যান্ড এমন একটি দেশ, যে দেশকে
পর্যটনের স্বর্গ বলা যায়। সারাবছরই এর সূর্যস্নাত সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে আসে
দুনিয়ার সব প্রান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ। পর্যটন খাত থাইল্যান্ডকে তুলে
নিচ্ছে আর্থিক সক্ষমতার চূড়ায়। কিন্তু রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে দেশটিতে
আবারও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। অভ্যুত্থানপ্রবণ দেশটি কি আরেকটি সামরিক
অভ্যুত্থান এড়াতে পারবে_ এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার
সবচেয়ে বড় অর্থনীতিসমৃদ্ধ দেশটিতে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। আট বছর আগে
দেশটিতে ৮০ বছরের ইতিহাসে ১৮ বারের মতো সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। তাতে ক্ষমতা
থেকে বিতাড়িত হন থাকসিন সিনাওয়াত্রা। এর পরের বছরগুলোয় থাই
প্রধানমন্ত্রীদের ক্ষমতায় আসা আর যাওয়ার রিহার্সেল চলে যেন। শেষ পর্যন্ত
দেশটির প্রধানমন্ত্রী হন থাকসিনের বোন ইংলাক সিনাওয়াত্রা। বর্তমানে
থাইল্যান্ডের বিরোধী পক্ষগুলো তাকেও ক্ষমতা ছাড়ার জন্য আন্দোলন শুরু করেছে।
প্রায় দু'মাস ধরে চলছে বিক্ষোভ। এখন তারা ব্যাংকক অবরোধ করার মতো চরম
ব্যবস্থাও নিয়েছে। ফলে পুরো থাইল্যান্ডে চলছে অনিশ্চয়তা। বিক্ষোভকারীদের
নেতা সুথেপ থাগসুবানের নেতৃত্বে চলতি সপ্তাহে রাজধানী ব্যাংককের ব্যস্ততম
কিছু এলাকা দখল করে নিয়েছে হলুদ শার্টধারীরা। তিনি বলেন, জনগণ এ সরকারকে
চায় না। তারা পদত্যাগ করুক। এ সরকার দুর্নীতিবাজ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী।
তারা চায় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ক্ষমতা দিয়ে তারা সরে দাঁড়াক।
সরকার সমর্থকরাও পরিষ্কার বলে দিয়েছে, সরকার ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন দিয়েছে। ক্ষমতায় কারা যাবে, সেটা ওই নির্বাচনেই নির্ধারণ করা হবে। বিরোধীরা এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ তারা জানে, জনগণ তাদের পেছনে নেই। তারা ভোটে জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হবে। অবশ্য জনগণের মধ্যে এমনও আছে, যারা শাসক পুয়ে থাই পার্টি কিংবা বিক্ষোভকারী বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট_ কাউকেই চায় না। তারা দুই দলের বর্তমান হানাহানিতে অসন্তুষ্ট, শঙ্কিত। এরই মধ্যে আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তাদের আশঙ্কা, এই হানাহানি আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। তারা চায়, বর্তমান অশান্তির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান, একটি স্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। কারণ রাজনৈতিক সহিংসতা তারা এর আগেও দেখেছে। থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে সরাতে গিয়ে দেশ যে খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল, তারা সে অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখেছে।
বুদ্ধিপংসে পুন্নাকান্তা থাইল্যান্ডের পিপলস ডেমোক্রেটিক রিফর্ম কমিটির নেতা। এই দলটি ব্যাংকক বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এর পক্ষে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'ব্যাংকক বন্ধের ঘোষণা দিয়ে আমরা ঠিক কাজটিই করেছি। তার মতে, আবার নতুন করে নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে এমনকি ইংলাক সিনাওয়াত্রা যদি ফের নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় বসেন, তাতেও কোনো আপত্তি থাকবে না কারও। কারণ সে নির্বাচন হবে নতুন নিয়মের মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ তো গেল একজন রাজনীতিবিদের মতামত। সাধারণ মানুষ কীভাবে ভাবছে? বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে থেকে বাঁশি বিক্রেতা চাম্পলপাত্রা পিনোরাশাদাপং বলেন, '২৪ নভেম্বর থেকে আমি এখানে বাঁশি বেচছি। ২০ হাজারেরও বেশি বাঁশি বেচা হয়ে গেছে এ পর্যন্ত।' কিন্তু চাম্পলপাত্রা পিনোরাশাদাপং চান না এভাবে চলতে থাকুক। তার মতে, দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে বিক্ষোভ বন্ধ করা উচিত। ইংলাকের সমর্থক লাল শার্টধারীদের একজন সমবাট বুঙ্গামাঙ্গোস বলেন, আমি চাই একটা নির্বাচন হোক, অবশ্যই নির্বাচনই সব সমস্যার সমাধান করে দেবে, এটা মনে করি না। কিন্তু নির্বাচন না হলে চলমান অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে। কেউ কেউ অবশ্য এটাও বলছে, নির্বাচন হলেও তা হবে সহিংসতায় ভরা। কিন্তু না হলেও তার চেয়ে ভয়ানক অবস্থার জন্য তৈরি হতে হবে। কারণ দেশে এখন কোনো আইন আছে বলে মনে হয় না। সাধারণ একজন সরকারবিরোধী লানালি গামডি বলেন, আমি সব কিছু সংস্কার চাই। কারণ সিনাওয়াত্রা পরিবার রাষ্ট্রীয় সব কলকব্জা নিজেদের হাতে নিয়েছে। ফলে সরকার এখন ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। মানুষ এজন্য তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপেছে। এখন থাইল্যান্ডের সামনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যেটা, তা হলো তারা কি মিসরের অবস্থায় নিজেদের নিয়ে যাবে, নাকি দক্ষিণ কোরিয়াকে অনুসরণ করবে? মিসরের মতো একটি দেশ অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে এখন পঙ্গু হয়ে গেছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে দেশটিতে চলছে এখন যুদ্ধাবস্থা। পিরামিডের দেশ মিসর শুধু পর্যটন খাতে যে আয় করত, তাতে ভাটা পড়েছে। অস্থির মিসরে পর্যটক যাচ্ছে না। দ্রুত অর্থনৈতিক অবনতি গ্রাস করছে দেশটাকে। সূত্র : ব্লুমবার্গ
সরকার সমর্থকরাও পরিষ্কার বলে দিয়েছে, সরকার ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন দিয়েছে। ক্ষমতায় কারা যাবে, সেটা ওই নির্বাচনেই নির্ধারণ করা হবে। বিরোধীরা এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ তারা জানে, জনগণ তাদের পেছনে নেই। তারা ভোটে জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হবে। অবশ্য জনগণের মধ্যে এমনও আছে, যারা শাসক পুয়ে থাই পার্টি কিংবা বিক্ষোভকারী বিরোধী দল ডেমোক্র্যাট_ কাউকেই চায় না। তারা দুই দলের বর্তমান হানাহানিতে অসন্তুষ্ট, শঙ্কিত। এরই মধ্যে আটজনের প্রাণহানি ঘটেছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। তাদের আশঙ্কা, এই হানাহানি আরও ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। তারা চায়, বর্তমান অশান্তির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান, একটি স্থায়ী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। কারণ রাজনৈতিক সহিংসতা তারা এর আগেও দেখেছে। থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে সরাতে গিয়ে দেশ যে খাদের কিনারে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল, তারা সে অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখেছে।
বুদ্ধিপংসে পুন্নাকান্তা থাইল্যান্ডের পিপলস ডেমোক্রেটিক রিফর্ম কমিটির নেতা। এই দলটি ব্যাংকক বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। এর পক্ষে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'ব্যাংকক বন্ধের ঘোষণা দিয়ে আমরা ঠিক কাজটিই করেছি। তার মতে, আবার নতুন করে নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে এমনকি ইংলাক সিনাওয়াত্রা যদি ফের নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় বসেন, তাতেও কোনো আপত্তি থাকবে না কারও। কারণ সে নির্বাচন হবে নতুন নিয়মের মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ তো গেল একজন রাজনীতিবিদের মতামত। সাধারণ মানুষ কীভাবে ভাবছে? বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে থেকে বাঁশি বিক্রেতা চাম্পলপাত্রা পিনোরাশাদাপং বলেন, '২৪ নভেম্বর থেকে আমি এখানে বাঁশি বেচছি। ২০ হাজারেরও বেশি বাঁশি বেচা হয়ে গেছে এ পর্যন্ত।' কিন্তু চাম্পলপাত্রা পিনোরাশাদাপং চান না এভাবে চলতে থাকুক। তার মতে, দেশকে সামনে এগিয়ে নিতে হলে বিক্ষোভ বন্ধ করা উচিত। ইংলাকের সমর্থক লাল শার্টধারীদের একজন সমবাট বুঙ্গামাঙ্গোস বলেন, আমি চাই একটা নির্বাচন হোক, অবশ্যই নির্বাচনই সব সমস্যার সমাধান করে দেবে, এটা মনে করি না। কিন্তু নির্বাচন না হলে চলমান অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাবে। কেউ কেউ অবশ্য এটাও বলছে, নির্বাচন হলেও তা হবে সহিংসতায় ভরা। কিন্তু না হলেও তার চেয়ে ভয়ানক অবস্থার জন্য তৈরি হতে হবে। কারণ দেশে এখন কোনো আইন আছে বলে মনে হয় না। সাধারণ একজন সরকারবিরোধী লানালি গামডি বলেন, আমি সব কিছু সংস্কার চাই। কারণ সিনাওয়াত্রা পরিবার রাষ্ট্রীয় সব কলকব্জা নিজেদের হাতে নিয়েছে। ফলে সরকার এখন ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। মানুষ এজন্য তাদের বিরুদ্ধে ক্ষেপেছে। এখন থাইল্যান্ডের সামনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন যেটা, তা হলো তারা কি মিসরের অবস্থায় নিজেদের নিয়ে যাবে, নাকি দক্ষিণ কোরিয়াকে অনুসরণ করবে? মিসরের মতো একটি দেশ অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে এখন পঙ্গু হয়ে গেছে। মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে দেশটিতে চলছে এখন যুদ্ধাবস্থা। পিরামিডের দেশ মিসর শুধু পর্যটন খাতে যে আয় করত, তাতে ভাটা পড়েছে। অস্থির মিসরে পর্যটক যাচ্ছে না। দ্রুত অর্থনৈতিক অবনতি গ্রাস করছে দেশটাকে। সূত্র : ব্লুমবার্গ
No comments